আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ by বদরুদ্দীন উমর
আগামী
নির্বাচন সম্পর্কিত অনেক জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কোনো সুরাহা এখনও
পর্যন্ত না হলেও নির্বাচনী দলগুলোর প্রত্যেকটি নিজের নির্বাচনী প্রস্তুতি
এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের যুদ্ধাপরাধীদের
বিরুদ্ধে মামলা ও তাদের শাস্তি নিয়ে হরতালের নামে রাস্তায় নেমে খুনখারাবি,
অগ্নিসংযোগ, জনজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ইত্যাদিতে বেশি ব্যস্ত থাকলেও অন্যরা
আগামী নির্বাচন সামনে রেখেই কাজ করছে। এদের মধ্যে সরকারি দল আওয়ামী লীগকেই
সব থেকে বেশি তৎপর দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে থেকে নিয়ে তার দলের লোকরা
সরকারে থাকার সময় সরকারি খরচেই নিজেদের দলীয় নির্বাচনী প্রচারণা বেশ
নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে তার পুত্রকে
নির্বাচনী প্রচারণার জন্য আমদানি করে দেশে এনেছেন। বাংলাদেশের সংসদীয়
রাজনীতি এমন এক খেলো ব্যাপারে পরিণত হয়েছে যাতে প্রধানমন্ত্রীর এ কাজ করতে
কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর পিতার বংশধররা কেউই দেশপ্রেমিক
হিসেবে দেশে থাকেন না! প্রধানমন্ত্রীও এমনভাবে দেশে থাকেন যাতে মনে হয় তিনি
তার পরিবারের রাজনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার জন্যই দায়ে পড়ে এখনও পর্যন্ত দেশে
পড়ে আছেন। তার পুত্র, কন্যা, বোন ও তাদের ছেলেমেয়েরা মাঝে মাঝে বাংলাদেশে
ভ্রমণে আসেন এবং একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে, বিশেষত সরকারি
রাজনৈতিক দলের লোক হিসেবে দেশের লোককে অনেক উপদেশ ও পরামর্শ খয়রাত করেন।
এদেশ থেকে যা নেয়ার সেটা তারা ইংল্যান্ড-আমেরিকায় জমা করে নিজেদের ঘর
গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। অনেক দেশেই পারিবারিক শাসন কায়েম থাকলেও এভাবে
জনবিচ্ছিন্ন ও দেশ বিচ্ছিন্ন কোনো পরিবারের শাসন দুনিয়াতে আর দেখা যায় না।
অন্য যেসব দেশে কোনো না কোনো ধরনের পারিবারিক শাসন আছে তারা দেশেই থাকে,
দেশেই বসবাস করে তারা সরাসরি দেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু
বাংলাদেশে তার প্রয়োজন হয় না। দিনরাত, প্রয়োজনে-নিষ্প্রয়োজনে মুখে দেশপ্রেম
ও স্বাদেশিকতার খৈ ফোটালেও দেশে থাকার কোনো প্রয়োজন তারা বোধ করে না।
স্থূলভাবে কথাটি বলতে গেলে বলতে হয়, দেশপ্রেমের নামে দেশের সম্পদ লুণ্ঠন
থেকে নিয়ে হাজার রকম সুযোগ-সুবিধা আদায় করাই তাদের আসল কাজ। দেশে আসা-যাওয়া
এবং দেশের রাজনীতিতে ঢিলেঢালা অংশগ্রহণ এ উদ্দেশ্যেই তারা করে থাকে।
নির্বাচনের মাঠে প্রকৃত অবস্থা যাই হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় তার দলের বিজয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই তার বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তার কথা হল, গত পাঁচ বছরে তারা দেশের সব ক্ষেত্রে এত উন্নতি সাধন করেছেন, তার দিকে তাকিয়ে দেশের লোক তাদের ভোট না দিয়ে পারে না। বিরোধী দলের নেত্রীর উদ্দেশেও শেখ হাসিনা প্রায়ই বলছেন, তিনিও যে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বা দেখেন না তা নয়। কাজেই সবকিছু জেনেশুনেই তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ভোটের বাক্স ভারি করার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, এসব দেখার কোনো অসুবিধা হলে তার উচিত নিজের চোখের চিকিৎসা করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ জোরের সঙ্গেই বলছেন, দেশের লোক তাদের সুকীর্তির দিকে তাকিয়ে বিএনপিকে কিছুতেই ভোট দিতে পারে না। অবাক হওয়ার ব্যাপার, তিনি একথা বলছেন সদ্য অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির বিরাট জয় এবং নিজেদের শোচনীয় পরাজয়ের পর! শুধু এ কথাই নয়, প্রধানমন্ত্রী, তার পুত্র, আজ্ঞাবাহী মন্ত্রীরা এমন আরও সব কথা নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে বলছেন, যা শুনে সভাস্থলে উপস্থিত শ্রোতারা বেশ মজা পাচ্ছেন!!
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ভোটারদের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা প্রথম বিপ্লব সফল করেছেন। এখন সময় এসেছে দ্বিতীয় বিপ্লব সম্পন্ন করার। এই ‘মহৎ’ কাজ সম্পন্ন করার জন্য আর একটি আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্য উপায় নেই। আওয়ামী লীগই পারে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সফল করতে! ওই দ্বিতীয় বিপ্লবের মর্মার্থ বোঝা জনগণের পক্ষে মুশকিল। প্রায় অসম্ভব। কারণ আওয়ামী লীগের প্রথম বিপ্লবটি কী সেটা তারা জানেন না। তারা শুধু জানেন, আওয়ামী লীগ তাদের বিগত পাঁচ বছরের শাসন আমলে দেশে এক চরম বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক জীবনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এটাই হল আজকের বাস্তবতা। এই বাস্তবতার কারণে বিগত পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়েছে। এই বাস্তবতার দিক থেকে চোখ সম্পূর্ণ অন্যদিকে সরিয়ে রেখে এক কাল্পনিক ও ইচ্ছাপূরণের ভাবনার মধ্যে হাবুডুবু খেতে খেতে প্রধানমন্ত্রী, তার সফরকারী পুত্র এবং আজ্ঞাবাহী মন্ত্রী ও দলীয় নেতা-নেত্রীরা নিজেদের নির্বাচনী জনসভাগুলোতে যেসব কথা বলছেন তার থেকে বোঝা যায় এ সরকার এবং এই দলটির ও এদের জোটের জনবিচ্ছিন্নতা। এই জনবিচ্ছিন্ন লোকদের বক্তৃতা শুনে যে শ্রোতারা বেশ মজা পাচ্ছেন এটা আগেই বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারি অর্থ ব্যয় করে যে সভাগুলোর আয়োজন করছে সেগুলোতে মানুষ আসছে মেলা দেখতে আসার মতো করে। এগুলোতে লোকের সমাগম সত্ত্বেও মনে করার কারণ নেই যে, এসব লোক নিজেদের ভোট আওয়ামী লীগের বাক্সে ফেলবে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ভোট দাও ভোট দাও বলে মানুষের কাছে অশ্লীল কায়দায় ভোট চাইছেন এবং কারা তাদের ভোট দেবেন তাদের হাত তুলতে বলছেন, এর একটা প্রতিক্রিয়া মানুষের মধ্যে হচ্ছে। এটা এমন এক ধরনের ছ্যাবলামি যা কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মানায় না। কিন্তু যে দেশে ছ্যাবলামি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর এই আচরণে বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু নেই।
তবে আওয়ামী লীগের এ অবস্থা দেখে মনে করার কারণ নেই যে, আগামী নির্বাচন যেভাবে এবং যখনই অনুষ্ঠিত হোক, তাতে বিরোধী দল ক্ষমতায় এসে পরিস্থিতির কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটাবে। এমন আশার কোনো শর্ত বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে নেই। মনে রাখা দরকার, আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও এর আগে দু’বার ক্ষমতায় এসেছে। তাদের ক্ষমতার ব্যবহারের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। ক্ষমতার ব্যবহারের স্টাইলের পার্থক্য ছাড়া। তাছাড়া বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর মতো এমন একটি রাজনৈতিক দলকে নিজের গাঁটছড়ায় শক্তভাবে বেঁধে রেখেছে, যে দলটি দ্রুতগতিতে ক্রিমিনালাইজড হয়ে ইতিমধ্যে ভয়াবহ চরিত্র পরিগ্রহ করেছে। অবস্থা দেখে মনে হয়, পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত এবং বিএনপি বিরাট বিজয় অর্জন করবে। কিন্তু বিএনপির এ বিজয়কে জনগণের বিজয় মনে করা ভুল হবে। জনগণ আওয়ামী লীগকে তার গত পাঁচ বছরের কৃতকর্মের জন্য, তাদের চুরি, ঘুষ, দুর্নীতি, লুটতরাজ, ঔদ্ধত্য, নির্যাতন ইত্যাদির জন্য শাস্তি দেয়ার আকাক্সক্ষার মধ্যেই আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য বিজয়ের কারণ নিহিত থাকবে।
বাংলাদেশে সবকিছু মিলিয়ে এখন এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের জন্য সৃষ্টি করেছে এক অনিবার্য শর্ত এবং উর্বর ক্ষেত্র। এ কারণে বাংলাদেশ এখন সর্বপ্রকার দেশী-বিদেশী চক্রান্তের লীলাভূমি। দেশের এ অবস্থায় ‘দেশ কোন পথে?’- এ প্রশ্ন খুব বাস্তবসম্মত হলেও এর কোনো সঠিক জবাব দেয়া এখন কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
নির্বাচনের মাঠে প্রকৃত অবস্থা যাই হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় তার দলের বিজয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই তার বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তার কথা হল, গত পাঁচ বছরে তারা দেশের সব ক্ষেত্রে এত উন্নতি সাধন করেছেন, তার দিকে তাকিয়ে দেশের লোক তাদের ভোট না দিয়ে পারে না। বিরোধী দলের নেত্রীর উদ্দেশেও শেখ হাসিনা প্রায়ই বলছেন, তিনিও যে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বা দেখেন না তা নয়। কাজেই সবকিছু জেনেশুনেই তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ভোটের বাক্স ভারি করার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, এসব দেখার কোনো অসুবিধা হলে তার উচিত নিজের চোখের চিকিৎসা করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ জোরের সঙ্গেই বলছেন, দেশের লোক তাদের সুকীর্তির দিকে তাকিয়ে বিএনপিকে কিছুতেই ভোট দিতে পারে না। অবাক হওয়ার ব্যাপার, তিনি একথা বলছেন সদ্য অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির বিরাট জয় এবং নিজেদের শোচনীয় পরাজয়ের পর! শুধু এ কথাই নয়, প্রধানমন্ত্রী, তার পুত্র, আজ্ঞাবাহী মন্ত্রীরা এমন আরও সব কথা নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে বলছেন, যা শুনে সভাস্থলে উপস্থিত শ্রোতারা বেশ মজা পাচ্ছেন!!
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ভোটারদের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা প্রথম বিপ্লব সফল করেছেন। এখন সময় এসেছে দ্বিতীয় বিপ্লব সম্পন্ন করার। এই ‘মহৎ’ কাজ সম্পন্ন করার জন্য আর একটি আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্য উপায় নেই। আওয়ামী লীগই পারে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সফল করতে! ওই দ্বিতীয় বিপ্লবের মর্মার্থ বোঝা জনগণের পক্ষে মুশকিল। প্রায় অসম্ভব। কারণ আওয়ামী লীগের প্রথম বিপ্লবটি কী সেটা তারা জানেন না। তারা শুধু জানেন, আওয়ামী লীগ তাদের বিগত পাঁচ বছরের শাসন আমলে দেশে এক চরম বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক জীবনে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এটাই হল আজকের বাস্তবতা। এই বাস্তবতার কারণে বিগত পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়েছে। এই বাস্তবতার দিক থেকে চোখ সম্পূর্ণ অন্যদিকে সরিয়ে রেখে এক কাল্পনিক ও ইচ্ছাপূরণের ভাবনার মধ্যে হাবুডুবু খেতে খেতে প্রধানমন্ত্রী, তার সফরকারী পুত্র এবং আজ্ঞাবাহী মন্ত্রী ও দলীয় নেতা-নেত্রীরা নিজেদের নির্বাচনী জনসভাগুলোতে যেসব কথা বলছেন তার থেকে বোঝা যায় এ সরকার এবং এই দলটির ও এদের জোটের জনবিচ্ছিন্নতা। এই জনবিচ্ছিন্ন লোকদের বক্তৃতা শুনে যে শ্রোতারা বেশ মজা পাচ্ছেন এটা আগেই বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারি অর্থ ব্যয় করে যে সভাগুলোর আয়োজন করছে সেগুলোতে মানুষ আসছে মেলা দেখতে আসার মতো করে। এগুলোতে লোকের সমাগম সত্ত্বেও মনে করার কারণ নেই যে, এসব লোক নিজেদের ভোট আওয়ামী লীগের বাক্সে ফেলবে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ভোট দাও ভোট দাও বলে মানুষের কাছে অশ্লীল কায়দায় ভোট চাইছেন এবং কারা তাদের ভোট দেবেন তাদের হাত তুলতে বলছেন, এর একটা প্রতিক্রিয়া মানুষের মধ্যে হচ্ছে। এটা এমন এক ধরনের ছ্যাবলামি যা কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মানায় না। কিন্তু যে দেশে ছ্যাবলামি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সংস্কৃতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর এই আচরণে বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু নেই।
তবে আওয়ামী লীগের এ অবস্থা দেখে মনে করার কারণ নেই যে, আগামী নির্বাচন যেভাবে এবং যখনই অনুষ্ঠিত হোক, তাতে বিরোধী দল ক্ষমতায় এসে পরিস্থিতির কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটাবে। এমন আশার কোনো শর্ত বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে নেই। মনে রাখা দরকার, আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিও এর আগে দু’বার ক্ষমতায় এসেছে। তাদের ক্ষমতার ব্যবহারের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। ক্ষমতার ব্যবহারের স্টাইলের পার্থক্য ছাড়া। তাছাড়া বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর মতো এমন একটি রাজনৈতিক দলকে নিজের গাঁটছড়ায় শক্তভাবে বেঁধে রেখেছে, যে দলটি দ্রুতগতিতে ক্রিমিনালাইজড হয়ে ইতিমধ্যে ভয়াবহ চরিত্র পরিগ্রহ করেছে। অবস্থা দেখে মনে হয়, পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত এবং বিএনপি বিরাট বিজয় অর্জন করবে। কিন্তু বিএনপির এ বিজয়কে জনগণের বিজয় মনে করা ভুল হবে। জনগণ আওয়ামী লীগকে তার গত পাঁচ বছরের কৃতকর্মের জন্য, তাদের চুরি, ঘুষ, দুর্নীতি, লুটতরাজ, ঔদ্ধত্য, নির্যাতন ইত্যাদির জন্য শাস্তি দেয়ার আকাক্সক্ষার মধ্যেই আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য বিজয়ের কারণ নিহিত থাকবে।
বাংলাদেশে সবকিছু মিলিয়ে এখন এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের জন্য সৃষ্টি করেছে এক অনিবার্য শর্ত এবং উর্বর ক্ষেত্র। এ কারণে বাংলাদেশ এখন সর্বপ্রকার দেশী-বিদেশী চক্রান্তের লীলাভূমি। দেশের এ অবস্থায় ‘দেশ কোন পথে?’- এ প্রশ্ন খুব বাস্তবসম্মত হলেও এর কোনো সঠিক জবাব দেয়া এখন কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
No comments