আন্তর্জাতিক- 'জাতিসংঘ বনাম যুক্তরাষ্ট্র' by শহিদুল ইসলাম
এক.জাতিসংঘের ওপর মানব জাতির আস্থা অপরিসীম। বিশ্বসংস্থা হিসেবে ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর ৫১টি দেশ নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাতিসংঘ। বর্তমানে এর সংখ্যা ১৯২টি। বিশ্বের কোথাও কোনো 'ক্রাইসিস' দেখা দিলে মানুষ জাতিসংঘের দিকে তাকিয়ে থাকে তার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ সমাধানের জন্য।
জাতিসংঘ অনেক ভালো কাজ করে ঠিক, কিন্তু এর চলার পথের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, জাতিসংঘের ভূমিকা যথেষ্ট বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের ভূমিকা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মাঝ থেকে জাতিসংঘের জন্ম। ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে। ইউরোপীয় উপনিবেশবাদ ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। সারা পৃথিবীতে উপনিবেশবিরোধী সংগ্রাম তখন তুঙ্গে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আঁচ তেমন গায়ে না লাগলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। ইউরোপ তছনছ। ভারতবর্ষ স্বাধীনতা-জ্বরে কাঁপছে। জাপান বিধ্বস্ত। চীনে মার্কিনসমর্থিত চিয়াংকাই শেক সাম্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। মধ্যপ্রাচ্যেও স্বাধীনতা সংগ্রাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থার মধ্যে জাতিসংঘের জন্ম। ষাটের দশক পর্যন্ত জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্ব লক্ষ করা যায়। কারণ, তখন জাতিসংঘের সদস্য-রাষ্ট্রের অধিকাংশই রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল। তাই ১৯৬০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলেছে, সদস্য-রাষ্ট্রগুলো তাই করেছে। যাকে বা যে প্রস্তাবে 'হ্যাঁ' ভোট দিতে বলেছে, তারা তাই দিয়েছে। 'না' বললে 'না' করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন তখনো যুদ্ধের আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কাজেই তার পক্ষে জোর ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়নি। তবে এ সময়ে সে একটা কাজ করেছে, তা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে জাতিসংঘ যে সিদ্ধান্ত নিত, সোভিয়েত ইউনিয়ন তাতে 'ভেটো' দিত। 'ভেটো' দেওয়া তখন তার ও চীনের একমাত্র কাজ ছিল। কিন্তু ষাটের দশকে 'ডি-কলোনাইজেশনের' ফলে একের পর এক দেশ স্বাধীনতা লাভ করে এবং জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত হয়। তখন আমেরিকার পক্ষে জাতিসংঘে তার আগের একক কর্তৃত্ব ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে ওঠে। তা ছাড়া জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন জোরদার হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বেশ অসুবিধায় পড়ে। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন পৃথিবীর সব সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ায় অধিকাংশ স্বাধীন দেশ তার প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করে। সোভিয়েত ইউনিয়নও সদ্যস্বাধীন দেশগুলোর পক্ষে দাঁড়ায়। তাদের সমস্যাগুলো সমর্থন করে। ফলে ষাটের দশকের শেষ ও সত্তর দশকের শুরু থেকে জাতিসংঘে মার্কিন প্রভাব দারুণ হ্রাস পায়। ফলে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং প্রতিটি প্রস্তাবে 'ভেটো' প্রদান করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন মূল প্রস্তাবের পক্ষে থাকায় ঠাণ্ডাযুদ্ধ জমে ওঠে। নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। এখন জাতিসংঘ মানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।দুই.আমার ছাত্রের সে কথার জবাব লিখতে বসলে বিরাট এক থিসিস হয়ে যায়। এর ওপর প্রচুর বই, পত্রপত্রিকা ছাপা হয়েছে। একটা কলামে এর হাজার ভাগের এক ভাগও লেখা সম্ভব নয়। তাই অবিকল এ বিষয়টি নিয়ে নোয়াম চমস্কিকে যে প্রশ্ন করেছিলেন দুই সাংবাদিক, তাতে চমস্কির দেওয়া উত্তরটা আমার হাতের কাছেই আছে, সেখান থেকেই আমি পাঠকের সামনে কিছু তুলে ধরব। তার আগে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান যে ১৯৯৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাষণ দিয়েছিলেন, তাঁর কথাটি বলা দরকার। কারণ ওই ভাষণে তিনি বিশ্বসভা জাতিসংঘকে একটি আঞ্চলিক 'সামরিক প্যাক্ট' ন্যাটোর সমমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘের সঙ্গে ন্যাটো বাহিনীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা উচিত নয়। আমাদের অনেক কাজ আছে, যা উভয় সংস্থাই করতে পারে। আমরা ভালোভাবে কাজ করতে পারি, যদি উভয়ের শান্তিরক্ষায় আমাদের আস্থা থাকে এবং উভয়ে যদি তাদের পরস্পর কাজের মধ্যে নাক না গলায়।' (শহিদুল ইসলাম, বিশ্বশান্তির জন্য ন্যাটোর অবলুপ্তি অপরিহার্য, ডিসেম্বর ৩০, ২০০৯, ইঋউজ পৃষ্ঠা-২৬)। নিরাপত্তা পরিষদের বিনা অনুমতিতে ১৯৯৯ সালে ন্যাটো কঙ্গোতে আক্রমণ করে, তখন জাতিসংঘের সঙ্গে ন্যাটোর সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে কফি আনান ওপরের মন্তব্য করেন। পাঠক জানেন, ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল যখন 'ন্যাটো' গঠিত হয়, তখন তার সদস্যসংখ্যা ছিল ১২, এখন ২৮। সেই ক্ষুদ্র একটি সামরিক জোট পৃথিবীর সব মানুষের সংস্থা জাতিসংঘকে তুড়ি মেরে সেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কসোভো আক্রমণ করেছিল। প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী আন্দ্রে গুন্টার ফ্রাঙ্কের ভাষায় তা ছিল 'First dangerously criminal and then criminally dangerous' কেবল একজন মহাসচিব পেরেজ ডি কুয়েলার যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করে পদত্যাগ করেছিলেন এবং ন্যাটো থেকে ফ্রাঙ্ককে প্রত্যাহার করেছিলেন। ১৯৯০-৯১ সালে বিশ্বের চোখে ধুলো দিয়ে জাতিসংঘের নামে যুক্তরাষ্ট্র যখন প্রথমবার ইরাক আক্রমণ করে, তখন পেরেজ ডি কুয়েলার সে যুদ্ধকে 'A US war, not a UN war' বলে পদত্যাগ করেছিলেন।তিন.থাক সে কথা। সাংবাদিকরা চমস্কিকে প্রশ্ন করেছিলেন, 'আপনি কি মনে করেন জাতিসংঘ কোনো ধনাত্মক ভূমিকা পালন করতে পারে? এই ধরুন, শান্তিরক্ষা মিশনে মার্কিন দখলদার বাহিনী না পাঠিয়ে জাতিসংঘের বাহিনী পাঠানো।'চমস্কি : জাতিসংঘ তখনই ধনাত্মক ভূমিকা পালন করতে পারে, যদি সুপারপাওয়ার তা চায়। কোনো বিষয়ে সুপারপাওয়ার যদি ঐকমত্যে পেঁৗছাতে পারে, তাহলে জাতিসংঘকে তখন প্রয়োজনীয় মনে হয়; কিন্তু তারা যদি একমত না হয়, তাহলে জাতিসংঘ কোনো কাজ করতে পারে না। ১৯৭০ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক রিচার্ড বার্গস্টাইনের একটি প্রবন্ধের উল্লেখ করেন চমস্কি। ওই প্রবন্ধে রিচার্ড প্রশ্ন তোলেন, 'সারা বিশ্ব কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভোটদান করে? আমেরিকার দোষটা কোথায়?' ১৯৬০ সালের পর একের পর এক স্বাধীন রাষ্ট্র যখন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়, তখন আগেই বলেছি, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের ওপর তেমন আর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। প্রায় প্রতিটি প্রস্তাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন মূলধারার সঙ্গে থাকে। আমেরিকা পরাস্ত হয়, আর বলে 'সংখ্যাগরিষ্ঠের সন্ত্রাস'। সংখ্যাগরিষ্ঠতার সন্ত্রাসের অর্থ অন্য দেশে 'গণতন্ত্র'। কিন্তু আমেরিকা সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে হেরে গেলেই সেটা ছিল 'সংখ্যাগরিষ্ঠতার সন্ত্রাস'। ১৯৭০ সালের শুরুতে বলা যায় আমেরিকার 'ভেটো' প্রদান শুরু হয়। সবকিছুতেই তার তখন 'ভেটো' প্রদান। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী প্রস্তাব, ইসরায়েলের ওপর সর্বসম্মত প্রস্তাব কিংবা অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের সর্ববাদী সব প্রস্তাব, সব প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আমেরিকা 'ভেটো' প্রদান করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রস্তাবের সমর্থক। তাই হঠাৎ করেই চলি্লশ-পঞ্চাশের দশকের 'প্রিয়' জাতিসংঘ সত্তরের দশকের শুরুতেই আমেরিকার জন্য এক ভয়ানক সংস্থায় পরিণত হয়।চার.আন্তর্জাতিক কোর্ট অন জাস্টিস জাতিসংঘের একটি বিচারিক সংস্থা। সাধারণভাবে বিশ্ব আদালত নামে খ্যাত। ১৯৮৬ সালের জুন মাসে নিকারাগুয়ায় আমেরিকার অবৈধ শক্তিপ্রয়োগ ও অবৈধ অর্থনীতিক অবরোধের বিরুদ্ধে একটি সর্বজনসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে। চমস্কি বলেন, 'আমরা তার কোনো মূল্য দিই না। সম্পূর্ণ অস্বীকার করি।' শুধু তাই নয়। এক সপ্তাহ পরে আমেরিকার কংগ্রেস সেশনে দখলদার সেনার জন্য আরো ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়। নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট লেখে, ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘ নিজেকেই অপমানিত করেছে। কাজেই আমাদের সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার দরকার নেই। কিছুদিন পর নিরাপত্তা পরিষদ কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে একটি প্রস্তাবে সব দেশকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানালে আমেরিকা তাতে 'ভেটো' দেয়। তিনটি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ১১টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। ওই প্রস্তাবটি যখন সাধারণ পরিষদে যায়, তখন প্রথমে আমেরিকা, ইসরায়েল ও এল সালভাদর বিপক্ষে ভোট দেয়। দ্বিতীয়বার ভোট হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল বিপক্ষে ভোট দেয়। আমেরিকার কোনো কাগজে বিষয়টি জায়গা পায়নি। 'গ্রেট পাওয়ার' বা পরাশক্তি বলতে কী বোঝায়, বোঝ।সবাই জানেন ইউনেস্কো জাতিসংঘেরই একটি সংস্থা, যা তৃতীয় বিশ্বের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে। সত্তরের দশকে আমেরিকা তার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চালায় এবং বার্ষিক চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে মার্কিন প্রেস কোনো খবর পরিবেশন করে না।সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, 'কেন?'চমস্কি : আমেরিকার মিডিয়ার একটি সুনির্দিষ্ট কাজ আছে। তা হলো মানুষ যেন পৃথিবী সম্পর্কে প্রকৃত কোনো ধারণা লাভ না করতে পারে তা দেখা, আর তাদের মগজ ধোলাই করা। ১৯৮৭ সালের জাতিসংঘ যখন আফগানিস্তানে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করে, তখন আমেরিকার সব প্রধান সংবাদপত্র তা সম্মুখ পাতায় হেড লাইনে প্রকাশ করে। আর 'বিশ্ব আদালতের' সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতিসংঘ যখন পৃথিবীর সব দেশের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার এক সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণ করে তার মাত্র সপ্তাহখানেক পর, তা আমেরিকার কোনো সংবাদপত্রে সামান্য জায়গা পায়নি। এটাই মার্কিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা-বস্তুনিষ্ঠতা। ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র ওহঃবৎসরফরধঃব-ৎধহমব ঘঁপষবধৎ ঋড়ৎপবং (ও.ঘ.ঋ) সংক্রান্ত চুক্তি সই করে। তখন আমেরিকার প্রেস 'রিগান বন্দনায়' নেচে ওঠে। 'শান্তির দূত রিগান', 'রিগান আমাদের এক নতুন যুগে নিয়ে গেছেন', 'মারণাস্ত্র ধ্বংসে রিগানের কৃতিত্ব' বিশেষণে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রচারণা তুঙ্গে ওঠে। খুব ভালো কথা। ওই একই মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে 'নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি' পাস হয়। আকাশ যুদ্ধ (ঝঃধৎ ডধৎং) বন্ধ করতে এবং মহাশূন্যে সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় ওই প্রস্তাবে। চুক্তিটি ১৫৪ ভোটে পাস হয়। একটিমাত্র দেশ সে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। সেই দেশটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একই অধিবেশনে মানববিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈরি বন্ধে যে চুক্তিটি পাস হয় ১৬৫টি দেশের সমর্থনে_যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে সমর্থন দিয়েছিল। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে যে প্রস্তাব পাস হয়, তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে সঙ্গে পায়। এই ইতিহাস তুলে ধরে চমস্কি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, 'তোমরা কি মনে কর এসব খবর যুক্তরাষ্ট্রের পত্রপত্রিকায় স্থান পেয়েছিল?' না, পায়নি। কারণ সেগুলো ছিল ভুল গল্প। সত্য ঘটনা ছিল : 'রিগান', 'দি পিসমেকার', 'পৃথিবীতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে আমেরিকা যে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে' সেটা খবর নয়। এমনকি দি নিউইয়র্ক টাইমস ওই বছর জাতিসংঘের যে কার্যবিবরণী তৈরি করেছিল, ওই সব সিদ্ধান্ত সম্পর্কে একটা শব্দ উচ্চারণ করেনি। কাজেই তোমরা যে 'বস্তুনিষ্ঠ', 'সত্য' সংবাদ পরিবেশনের কথা বল, তার আগে বাছাই করতে হবে কোন্টা 'বস্তুনিষ্ঠ', কোন্টা 'সত্য'। আমেরিকার করপোরেট শক্তির কোনো ক্ষতি হয়, তা তোমাদের চোখে যতই 'সত্য' হোক না কেন, আমেরিকার সংবাদ জগতে তা 'বস্তুনিষ্ঠ' বলে জায়গা পাবে না।গত ১২ নভেম্বর ২০১০ কালের কণ্ঠের খবর : 'বুশের বিচার দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল'। গত ৬০ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে বুশ যতই মানবাধিকার লংঘন করুক, গণহত্যা পরিচালনা করুক, তার কোনো বিচার হবে না। মার্কিন প্রশাসন আদর-যত্ন করে যাদের সন্ত্রাসী তৈরি করেছিল, আজ তাদের ধরে ধরে বিচারে সোপর্দ করছে। যেমন লাদেন, পলপট প্রমুখ। কিন্তু বুশের বিচার ও শান্তি বর্তমান বিশ্বে অসম্ভব। জাতিসংঘের আইনে যত জোরেই বলা হোক-সব রাষ্ট্র সমান, তা মিথ্যা। বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমান নয়-হতে পারে না।==========================গল্পালোচনা- 'দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ?' by মহসীন মহসীন হাবিব স্বাস্থ্য আলোচনা- 'প্রসূতিসেবায় পিছিয়ে দেশ' by শেখ সাবিহা আলম রাজনৈতিক আলোচনা- 'বন্দিত কান্না, নিন্দিত হরতাল আর রাজকীয় অশ্রুপাতের গল্প' by ফারুক ওয়াসিফ খবর- উত্তর কোরিয়ার নতুন পরমাণু প্ল্যান্ট দেখে 'তাজ্জব' মার্কিন বিজ্ঞানীরা গল্পসল্প- 'মুজিব একবার আসিয়া সোনার বাংলা যাওরে দেখিয়ারে' by মোস্তফা হোসেইন আন্তর্জাতিক- 'ওবামা কি ক্লিনটনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবেন?' by সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী কৃষি আলোচনা- 'পোষের শেষ মাঘের বারো' by ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস মণিপুরি মহা রাসলীলা উৎসবের ইতিকথা by মুজিবুর রহমান প্রকৃতি- সমুদ্রে উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রবাল মড়ক মণিপুরি রাসমেলা উৎসব by আকমল হোসেন নিপু যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'মডার্ন হাম্মুরাবি এবং কাঠের ঘোড়া' by আলমগীর সাত্তার আলোচনা- 'কারাগার থেকে সংশোধনাগার প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু শিল্প-অর্থনীতি 'ক্ষুদ্রঋণের বিড়ম্বনা' by আহমদ রফিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যেলেখকঃ শহিদুল ইসলাম
এই গল্পালোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments