দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অর্থ-সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে নেদারল্যান্ড
নেদারল্যান্ড সরকার তার বেসরকারি খাত উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষি বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অর্থ-সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে আবেদন করলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে এসব অর্থ ছাড় করা হবে।
গতকাল সোমবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ঢাকায় নেদারল্যান্ড দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বাণিজ্য-সহায়তা’বিষয়ক এক সেমিনারে নেদারল্যান্ড দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে আয়োজিত এই সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি জাফর ওসমান। অনুষ্ঠানে ঢাকায় নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত আলফোনজ জে এ জে এম জি হেন্নেকেনস সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি নেদারল্যান্ডস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড কো-অপারেশনের (ইভিডি) কর্মকর্তা পল সুনমেকার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত সভাপতি আবুল কাশেম খান (সেজাদ)।
নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নেদারল্যান্ড সরকার তার বেসরকারি খাত উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বেসরকারি খাতকে আর্থিক ও পরামর্শসহায়তা দিয়ে থাকে।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে অর্থসহায়তা পাওয়ার জন্য আবেদন করার আহ্বান জানান।
আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নেদারল্যান্ড সরকারের এ ধরনের সহায়তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বড় ধরনের সহায়তা করবে।’ তিনি নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তাপুষ্ট পুরোনো প্রকল্পে সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন প্রকল্পে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মাহবুবুর রহমান নেদারল্যান্ড সরকারের দেওয়া আর্থিক সহায়তা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
জাফর ওসমান বলেন, নেদারল্যান্ড সরকারের বেসরকারি খাত উন্নয়ন কর্মসূচি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন ও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া এ ধরনের প্রকল্প নেদারল্যান্ড ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প স্থাপন করতে সহায়তা করবে।
মূল প্রবন্ধে পল সুনমেকার বলেন, নেদারল্যান্ড সরকার মূলত বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কর্মসূচি (পিএসআই), ম্যাচ মেকিং ফ্যাসিলিটি ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচির (বা অরিয়ো কর্মসূচি) মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বেসরকারি খাতকে সহায়তা করে থাকে।
পল সুনমেকার জানান, পিএসআই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিটি প্রকল্পে সর্বোচ্চ সাড়ে সাত লাখ ইউরো সহায়তা দেওয়া হয়। এ জন্য নেদারল্যান্ডের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে শিল্প স্থাপন করতে হবে। ম্যাচ মেকিং ফ্যাসিলিটির আওতায় নেদারল্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে শিল্প স্থাপনের জন্য কোনো পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া হলে অর্থসহায়তা পাওয়া যাবে।
অবশ্য অরিয়ো কর্মসূচিতে কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ২০ লাখ ইউরো থেকে ছয় কোটি ইউরো সহায়তা পাওয়া যাবে। এ জন্য বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠান নেদারল্যান্ড বা অন্য যেকোনো দেশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ করলে অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয়ের ৫০ শতাংশ সহায়তা করা হয়।
No comments