গাজার গণহত্যাকে ‘মানবতার লজ্জা’ আখ্যা দিয়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান তুর্কি প্রেসিডেন্টের

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের গণহত্যাকে ‘মানবতার লজ্জা’ আখ্যা দিয়ে সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। সার্বিয়া সফরে যাওয়ার পথে বলকানে প্রথম যাত্রা বিরতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে বলা হয়, তুর্কি প্রেসিডেন্টের দাবি- গাজায় ইসরাইলের পদক্ষেপ ‘গণহত্যা’ সৃষ্টি করেছে। তিনি আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামের সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ গণহত্যাকে ‘মানবতার লজ্জা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এরদোগান আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহ আমাদের সকলকে অবশ্যই অবিলম্বে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা এবং ইসরাইলের ওপর প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, গত এক বছর ধরে গাজায় যে গণহত্যা চলছে তা সমগ্র মানবতার জন্য অভিন্ন লজ্জা।

ইসরাইলি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা এএফপি’র হিসেব অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার ফলে এক হাজার ২০৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। আর হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাস-ইসরাইল সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজায় এ পর্যন্ত ৪২ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘও এ পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে অভিহিত করেছে।

এরদোগান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘গাজার কসাই’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং তাকে নাৎসি জার্মানির অ্যাডলফ হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নেতানিয়াহু সরকারের নেতৃত্বে আগ্রাসন এখন এই অঞ্চলের বাইরে বিশ্ব ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিনের শেষে এরদোগান আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এদি রামার সাথে তিরানার গ্রেট মসজিদ উদ্বোধন করেন। বলকানের বৃহত্তম এই মসজিদে একসঙ্গে ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। তুরস্কের অর্থায়নে এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩০ মিলিয়ন ইউরো। তুরস্ক আলবেনিয়ার প্রধান জনশক্তি নিয়োগকারী একটি দেশ। এরদোগান গত ফেব্রুয়ারিতে বলেছেন, ছয় শতাধিক তুর্কি কোম্পানি তার দেশে ১৫ হাজারেরও বেশি কর্মীকে চাকরি দিচ্ছে। তিনি বলেন, এটি আলবেনিয়ার পাঁচটি বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি। ন্যাটো সদস্য দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক। তুরস্ক তার বায়রাক্টার টিবি-২ ড্রোন তিরানায় সরবরাহ করে।

অন্যদিকে সার্বিয়ায় তুর্কি বিনিয়োগ গত এক দশকে এক মিলিয়ন থেকে ৪০০ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। তুর্কি-সার্বিয়া বিজনেস কাউন্সিল তুর্কির এ তথ্য আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে। সার্বিয়ান সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে তুর্কি রপ্তানি ২০২২ সালে ছিল ২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২০ সালে ছিল ১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন। তুর্কি পর্যটকরাও সার্বিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বসনিয়া থেকে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যার পরেই তুর্কিরা সার্বিয়ার পর্যটন খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.