সাবেক এমপি হাবিব ও তার পুত্রের সম্পদের পাহাড় by প্রতীক ওমর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ার কথিত এক সাংবাদিক ছিলেন হাবিবের অবৈধ টাকা আয়ের আদায়কারী। বিভিন্ন দপ্তর থেকে নানাভাবে ওই সাংবাদিকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতো বাপ ও ছেলে। আদায়কৃত ঘুষের টাকার একটা অংশ পেতেন ওই কথিত সাংবাদিক। একটি টেলিভিশনের লোগো হাতে থাকতো ওই সাংবাদিকের। ফলে দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করা সহজ হতো। প্রতিমাসেই আদায় হতো কোটি টাকার উপরে। কথিত ওই সাংবাদিক ২০১৮ সালে তার স্ত্রীর বড় ভাইকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে ধুনটে বদলি করে এনে বসান। ধুনটের চর এবং প্রত্যন্ত এলকায় কাজ করার নামে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ এনে লুট করে নিয়েছে ২০১৮ সাল থেকে শুরু করে ৫ই আগস্টের আগ পর্যন্ত। ওই কর্মকর্তা এখন বহাল তবিয়তে আছেন। ২০১৮ সালের আগেও ওই দপ্তর থেকে টাকা হরিলুটের সঙ্গে জড়িত ছিল হাবিব এমপির খাস লোক ওই সাংবাদিক। তার হাত দিয়েই সেই টাকার মোটা অংশ চলে যেতো এমপি এবং তার ছেলের ড্রয়ারে। অনুসন্ধানে তাদের দুর্নীতির আরও তথ্য বেরিয়ে আসছে। হাবিব ২০০৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ধুনটের দশ ইউনিয়নে লক্ষাধিক বড় গাছ কেটে নিয়েছেন। ওই গাছগুলো বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনবসতি রক্ষার জন্য লাগনো হয়েছিল। ওই গাছগুলো কাটার পর ধুনটে বন্যা নিয়ন্ত্রণ নাগালের বাইরে চলে গেছে।
এমপিপুত্র সনি বেশির ভাগ সময় মাদকাসক্ত অবস্থায় থাকতো। একবার ধুনটে মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে রাস্তার পাশে একটি বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনা বেশ আলোচিত হয়েছিল। পরে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মীমাংসা করেছেন।
বগুড়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাবেক এমপি হাবিবের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে ঢাকা থেকে তদন্ত হচ্ছে। বড় বিষয় বিধায় আমাদের অফিসের কিছু করার নেই।
এদিকে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পরিবারসহ আত্মগোপনে অভিযুক্ত হাবিবর রহমান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নিহতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলা হয়েছে ধুনটের আলোচিত জ্যোতি হত্যার ঘটনাতেও। বিএনপি’র সাবেক এমপি গোলাম মো. সিরাজকে হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করেও বাপ-বেটার নামে সম্প্রতি মামলা হয়েছে।
No comments