বিরোধীমুক্ত ভারতের লক্ষ্য অর্জনে বিজেপির গেম প্লান by ভেনকিটেশ রামকৃষ্ণান
‘হারারে
ওপর ওয়ালে নাম্বার ওয়ান ইয়া নাম্বার টু কা আদেশ হোয়া তো ২৪ ঘণ্টে ভি আপকি
সরকার নাহি চালেগি’ (আমাদের শীর্ষ এক বা দুই নম্বর যদি কোনো আদেশ দেন, তবে
আপনার সরকার ২৪ ঘণ্টাও টিকবে না)।’
বিরোধী দলের শাসনে থাকা রাজ্য সরকারগুলোকে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গেম প্লান নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে মধ্য প্রদেশ বিধান সভায় বিরোধী দলের নেতা গোপাল ভারগবার এই বক্তব্য তা নিরসনের জন্য যথেষ্ট। জনতা দল (সেক্যুলার) ও কংগ্রেসের নেতৃত্বাত্বধীন সরকারকে বিজেপি উৎখাত করার পর ভারগবার এ মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, কমল নাথ সরকার মধ্য প্রদেশে সাত মাস শাসন করেছে। এটাই অনেক বেশি।
কর্নাটকে ‘অপারেশন লোটাস’ (সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা) বাস্তবায়ন করতে ১৪ মাস সময় লেগেছে। নিয়মিত ব্যবধানে ছয়বার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।
লক্ষৌভিত্তিক এক সিনিয়র আরএসএস অ্যাক্টিভিস্ট ফ্রন্টলাইনকে বলেছেন, কর্নাটককে সফট টার্গেট বিবেচনা করা হয়েছিল। কারণ সদ্য পদত্যাগকারী কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেসের মন্ত্রী ও এমএলএরা জুনিয়র পার্টনারের ভূমিকা গ্রহণ করে সাধারণভাবে সরকারের জন্য ও বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামরির দৈনন্দিন কার্যক্রমে সমস্যার সৃষ্টি করে চলেছিল। অবশ্য, নানা জটিলতা সত্ত্বেও জেডি (এস)-কংগ্রেস জোট কোনোভাবে টিকে যাচ্ছিল। আর তা হচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী ও কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমারের ধৈর্যশীল জোট ব্যবস্থাপনা দক্ষতার কারণে। এছাড়া এই জোটের কারণেই রাজ্য পর্যায়ে ও স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনেও দুই দল লাভবান হচ্ছিল। ফলে তারা জোটটি টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী ছিলেন। এর ফলেই বিজেপির চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হচ্ছিল।
কিন্তু এপ্রিল/মে মাসে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলে এই ঐক্য ভেঙে যায়। বিজেপি ও আরএসএস যৌথভাবে চূড়ান্ত আক্রমণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানে যে কৌশল গ্রহণ করে তা প্রয়োগ করা হয় কর্নাটকে।
এবার তারা সফল হয়। ২৬ জুলাই বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা বি এস ইয়েদিয়ুরাপ্পা চতুর্থবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে কংগ্রেস ও জেডি (এস)-এর দলত্যাগ করা সদস্যদের সমর্থনও তিনি পান।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য কৌশল
উত্তর ভারতের সঙ্ঘ পরিবারের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার জন্যও একই কৌশল অবলম্বন করা হবে। কর্নাটক নাটক চলার সময়ই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, খুব শিগগিরই তৃণমূলের শতাধিক এমএলএ বিজেপিতে যোগ দেবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতি দিয়েছিলেন। এ ধরনের মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে আসা উচিত নয় বলেই অনেকে বলেছেন। মোদি বলেছিলেন যে তৃণমূলের ৪০ জন এমএলএ প্রতিনিয়ত তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়, তিনটি রাজ্যে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরে এখন পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারে বেশ আগ্রাসী হয়ে পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য যেসব পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে সঙ্ঘ পরিবার-বিজেপি জোট সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সরাসরি অর্থ দিয়ে তৃণমূল থেকে নেতাদের সরিয়ে আনা, সরকারি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে তাদেরকে দলত্যাগ করতে বাধ্য করা। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই), আয়কর বিভাগ অনেক এমএলএকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।
বিরোধী দলের শাসিত রাজ্য সরকারগুলো উৎখাত করা ছাড়াও বিজেপি ও সঙ্ঘ পরবারের আরেকটি অন্যতম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত লক্ষ্য হচ্ছে আঞ্চলিক সেক্যুলার দলগুলোকে দুর্বল করে দেয়া। এক্ষেত্রে তাদের অন্যতম টার্গেট হচ্ছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)। ত্রিপুরার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদেরও দলে টানার উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি।
বিজেপির এসব পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কিছুই করতে পারছে না। কংগ্রেস তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের জটিলতাই এখন পর্যন্ত সমাধান করতে পারেনি। তারা সৃষ্টিশীল কোনো পরিকল্পনাই গ্রহণ করতে পারেনি।
বিরোধী দলের শাসনে থাকা রাজ্য সরকারগুলোকে নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গেম প্লান নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে মধ্য প্রদেশ বিধান সভায় বিরোধী দলের নেতা গোপাল ভারগবার এই বক্তব্য তা নিরসনের জন্য যথেষ্ট। জনতা দল (সেক্যুলার) ও কংগ্রেসের নেতৃত্বাত্বধীন সরকারকে বিজেপি উৎখাত করার পর ভারগবার এ মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, কমল নাথ সরকার মধ্য প্রদেশে সাত মাস শাসন করেছে। এটাই অনেক বেশি।
কর্নাটকে ‘অপারেশন লোটাস’ (সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা) বাস্তবায়ন করতে ১৪ মাস সময় লেগেছে। নিয়মিত ব্যবধানে ছয়বার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালানো হয়েছে।
লক্ষৌভিত্তিক এক সিনিয়র আরএসএস অ্যাক্টিভিস্ট ফ্রন্টলাইনকে বলেছেন, কর্নাটককে সফট টার্গেট বিবেচনা করা হয়েছিল। কারণ সদ্য পদত্যাগকারী কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেসের মন্ত্রী ও এমএলএরা জুনিয়র পার্টনারের ভূমিকা গ্রহণ করে সাধারণভাবে সরকারের জন্য ও বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামরির দৈনন্দিন কার্যক্রমে সমস্যার সৃষ্টি করে চলেছিল। অবশ্য, নানা জটিলতা সত্ত্বেও জেডি (এস)-কংগ্রেস জোট কোনোভাবে টিকে যাচ্ছিল। আর তা হচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী ও কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমারের ধৈর্যশীল জোট ব্যবস্থাপনা দক্ষতার কারণে। এছাড়া এই জোটের কারণেই রাজ্য পর্যায়ে ও স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনেও দুই দল লাভবান হচ্ছিল। ফলে তারা জোটটি টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী ছিলেন। এর ফলেই বিজেপির চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হচ্ছিল।
কিন্তু এপ্রিল/মে মাসে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলে এই ঐক্য ভেঙে যায়। বিজেপি ও আরএসএস যৌথভাবে চূড়ান্ত আক্রমণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানে যে কৌশল গ্রহণ করে তা প্রয়োগ করা হয় কর্নাটকে।
এবার তারা সফল হয়। ২৬ জুলাই বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা বি এস ইয়েদিয়ুরাপ্পা চতুর্থবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে কংগ্রেস ও জেডি (এস)-এর দলত্যাগ করা সদস্যদের সমর্থনও তিনি পান।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য কৌশল
উত্তর ভারতের সঙ্ঘ পরিবারের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার জন্যও একই কৌশল অবলম্বন করা হবে। কর্নাটক নাটক চলার সময়ই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, খুব শিগগিরই তৃণমূলের শতাধিক এমএলএ বিজেপিতে যোগ দেবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতি দিয়েছিলেন। এ ধরনের মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে আসা উচিত নয় বলেই অনেকে বলেছেন। মোদি বলেছিলেন যে তৃণমূলের ৪০ জন এমএলএ প্রতিনিয়ত তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়, তিনটি রাজ্যে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরে এখন পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারে বেশ আগ্রাসী হয়ে পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য যেসব পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে সঙ্ঘ পরিবার-বিজেপি জোট সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সরাসরি অর্থ দিয়ে তৃণমূল থেকে নেতাদের সরিয়ে আনা, সরকারি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে তাদেরকে দলত্যাগ করতে বাধ্য করা। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই), আয়কর বিভাগ অনেক এমএলএকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।
বিরোধী দলের শাসিত রাজ্য সরকারগুলো উৎখাত করা ছাড়াও বিজেপি ও সঙ্ঘ পরবারের আরেকটি অন্যতম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত লক্ষ্য হচ্ছে আঞ্চলিক সেক্যুলার দলগুলোকে দুর্বল করে দেয়া। এক্ষেত্রে তাদের অন্যতম টার্গেট হচ্ছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)। ত্রিপুরার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদেরও দলে টানার উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি।
বিজেপির এসব পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি, বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কিছুই করতে পারছে না। কংগ্রেস তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের জটিলতাই এখন পর্যন্ত সমাধান করতে পারেনি। তারা সৃষ্টিশীল কোনো পরিকল্পনাই গ্রহণ করতে পারেনি।
No comments