জ্বলে-পুড়ে খাক হচ্ছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ by রাজিউল হাসান
আগুন
লেগেছে আমাজনে, ভয়াবহ আগুন। দিকে দিকে সে আগুনে পুড়ে কয়লা হচ্ছে শতসহস্র
বর্গমাইলের চিরহরিৎ বন। প্রাণ বাঁচাতে আগুনের মুখে ছুটছে অবলা প্রাণিকুল,
না পেরে পড়ে থাকছে অঙ্গার হয়ে। কিন্তু কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না
সে আগুন, পুড়ে খাক হচ্ছে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’।
প্রায় ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আমাজন বন আকারে ইউরোপ মহাদেশের প্রায় অর্ধেক। ব্রাজিলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেশির ভাগ এলাকা, কলম্বিয়া, পেরুসহ দক্ষিণ আমেরিকার নয়টি দেশে বিস্তৃত এই বন। তবে এই বনের সিংহভাগ পড়েছে ব্রাজিলে। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ আমাজনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত নদী আমাজনসহ অনেকগুলো নদ-নদী। এই বনে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। এ ছাড়া প্রায় ১০ লাখ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বাস এখানে। বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন তৈরি করে এই বন।
আমাজনে নানা কারণেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মানবসৃষ্ট কারণ ছাড়াও বজ্রপাত, প্রচণ্ড গরমের সময় গাছের ডালে ডালে ঘর্ষণসহ নানা প্রাকৃতিক কারণও এসব অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই বনে আগুনের ঘটনা বেড়ে গেছে। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের তথ্যমতে, গত বছর প্রথম আট মাসে আমাজনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে ৪০ হাজার বার। এ বছর একই সময় ব্যবধানে, অর্থাৎ চলতি আগস্ট পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৭৪ হাজার বার। অর্থাৎ আগুনের ঘটনা বেড়েছে ৮৫ শতাংশ। এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলীয় রোরাইমা, আক্রে, রন্ডোনিয়া ও আমাজোনাস অঙ্গরাজ্যের বনাঞ্চল। ২২ আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন আমাজনের ব্রাজিল অংশে আড়াই হাজার এলাকায় আগুন জ্বলছিল।
আমাজনের এই আগুনে কেবল বনই উজাড় হচ্ছে না, পরিবেশেরও ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপারনিকাস অ্যাটমোসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের (ক্যামস) তথ্যমতে, আমাজনের আগুনের কারণে তৈরি হওয়া ধোঁয়া সুদূর আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। এই বন থেকে প্রায় তিন হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে সাও পাওলোর আকাশ ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আগুনের কারণে বায়ুমণ্ডলে যোগ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড। আমাজনের আগুনের ভয়াবহতার কারণেই এই বন রক্ষায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবেদন জানানো হচ্ছে। বিশ্বনেতারাও বসে নেই। গতকাল শুক্রবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এক টুইটে লেখেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই আমাদের বাড়ি পুড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন বনে আগুন। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংকট। জি-সেভেন সদস্যরা, আসুন আমরা দুদিনের মধ্যে এই জরুরি অবস্থা নিয়ে আলোচনায় বসি।’
প্রায় ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আমাজন বন আকারে ইউরোপ মহাদেশের প্রায় অর্ধেক। ব্রাজিলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেশির ভাগ এলাকা, কলম্বিয়া, পেরুসহ দক্ষিণ আমেরিকার নয়টি দেশে বিস্তৃত এই বন। তবে এই বনের সিংহভাগ পড়েছে ব্রাজিলে। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ আমাজনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত নদী আমাজনসহ অনেকগুলো নদ-নদী। এই বনে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। এ ছাড়া প্রায় ১০ লাখ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বাস এখানে। বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন তৈরি করে এই বন।
আমাজনে নানা কারণেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মানবসৃষ্ট কারণ ছাড়াও বজ্রপাত, প্রচণ্ড গরমের সময় গাছের ডালে ডালে ঘর্ষণসহ নানা প্রাকৃতিক কারণও এসব অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই বনে আগুনের ঘটনা বেড়ে গেছে। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের তথ্যমতে, গত বছর প্রথম আট মাসে আমাজনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে ৪০ হাজার বার। এ বছর একই সময় ব্যবধানে, অর্থাৎ চলতি আগস্ট পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৭৪ হাজার বার। অর্থাৎ আগুনের ঘটনা বেড়েছে ৮৫ শতাংশ। এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলীয় রোরাইমা, আক্রে, রন্ডোনিয়া ও আমাজোনাস অঙ্গরাজ্যের বনাঞ্চল। ২২ আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন আমাজনের ব্রাজিল অংশে আড়াই হাজার এলাকায় আগুন জ্বলছিল।
আমাজনের এই আগুনে কেবল বনই উজাড় হচ্ছে না, পরিবেশেরও ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপারনিকাস অ্যাটমোসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের (ক্যামস) তথ্যমতে, আমাজনের আগুনের কারণে তৈরি হওয়া ধোঁয়া সুদূর আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। এই বন থেকে প্রায় তিন হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে সাও পাওলোর আকাশ ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আগুনের কারণে বায়ুমণ্ডলে যোগ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড। আমাজনের আগুনের ভয়াবহতার কারণেই এই বন রক্ষায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবেদন জানানো হচ্ছে। বিশ্বনেতারাও বসে নেই। গতকাল শুক্রবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এক টুইটে লেখেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই আমাদের বাড়ি পুড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন বনে আগুন। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংকট। জি-সেভেন সদস্যরা, আসুন আমরা দুদিনের মধ্যে এই জরুরি অবস্থা নিয়ে আলোচনায় বসি।’
- ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আমাজন বন নয়টি দেশে বিস্তৃত।
- এই বনে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী।
- বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন তৈরি করে এই বন।
- চলতি বছরে এ পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৭৪ হাজার।
এ
ছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস
জনসন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলসহ অনেক নেতাই আমাজনের
অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো আমাজনের আগুনকে তাঁর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে অভিহিত করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বিদেশি কোনো শক্তিকে এ ব্যাপারে নাক না গলানোর পরামর্শও দিয়েছেন। যদিও গত বৃহস্পতিবার বলসোনারো বলেছিলেন, আমাজনের আগুন মোকাবিলা করার মতো সরঞ্জাম তাঁর দেশের নেই। আগুনের জন্য তিনি দায় চাপান বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) ওপর। তাঁর ভাষ্য, তাঁর সরকার এনজিওগুলোর অর্থায়ন কমিয়ে দেওয়ায় প্রতিশোধ নিতে তারা এই আগুন লাগিয়েছে। ওই দিনই ফেসবুকে এক লাইভ ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘কে এই আগুন লাগিয়েছে, আমি জানি না। কৃষক, এনজিও, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী—যে কেউ এই আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।’ পরে এনজিওর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কি সরাসরি এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি? আমি তো আমার সন্দেহের কথা বলেছি।’
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস অভিযোগ করেছে, বলসোনারোর সরকার স্থানীয় কৃষকদের আমাজনে আগুন দিতে উৎসাহ দিচ্ছে। এই উৎসাহের কারণেই দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া আমাজনের অগ্নিকাণ্ড এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ব্রাজিল সরকারের একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, আমাজন অঞ্চলকে বহুপক্ষীয় সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে যে প্রকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নের বিরোধী বলসোনারোর সরকার। গত জানুয়ারিতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া বলসোনারো এই প্রকল্প রুখতে কৌশলগতভাবে আমাজন এলাকা ‘দখল’ করতে চান। আর এ জন্য তিনি ওই এলাকায় বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করার পক্ষে। নথিতে বলা হয়, ‘তথাকথিত সংরক্ষিত এলাকা গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক যে চাপ, তা মোকাবিলায় দেশের বাকি অঞ্চলগুলোর সঙ্গে আমাজন অঞ্চলকে একীভূত করতে হবে। এর জন্য আমাজন অববাহিকায় অবশ্যই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে ট্রমবেটাস নদী জলবিদ্যুৎকেন্দ্র, আমাজন নদীর ওপর সেতু এবং সুরিনামের সঙ্গে ব্রাজিলকে সড়কপথে যুক্ত করতে মহাসড়ক প্রকল্প।’
তবে ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো আমাজনের আগুনকে তাঁর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে অভিহিত করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বিদেশি কোনো শক্তিকে এ ব্যাপারে নাক না গলানোর পরামর্শও দিয়েছেন। যদিও গত বৃহস্পতিবার বলসোনারো বলেছিলেন, আমাজনের আগুন মোকাবিলা করার মতো সরঞ্জাম তাঁর দেশের নেই। আগুনের জন্য তিনি দায় চাপান বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) ওপর। তাঁর ভাষ্য, তাঁর সরকার এনজিওগুলোর অর্থায়ন কমিয়ে দেওয়ায় প্রতিশোধ নিতে তারা এই আগুন লাগিয়েছে। ওই দিনই ফেসবুকে এক লাইভ ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘কে এই আগুন লাগিয়েছে, আমি জানি না। কৃষক, এনজিও, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী—যে কেউ এই আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।’ পরে এনজিওর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কি সরাসরি এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি? আমি তো আমার সন্দেহের কথা বলেছি।’
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস অভিযোগ করেছে, বলসোনারোর সরকার স্থানীয় কৃষকদের আমাজনে আগুন দিতে উৎসাহ দিচ্ছে। এই উৎসাহের কারণেই দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া আমাজনের অগ্নিকাণ্ড এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ব্রাজিল সরকারের একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, আমাজন অঞ্চলকে বহুপক্ষীয় সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে যে প্রকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নের বিরোধী বলসোনারোর সরকার। গত জানুয়ারিতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া বলসোনারো এই প্রকল্প রুখতে কৌশলগতভাবে আমাজন এলাকা ‘দখল’ করতে চান। আর এ জন্য তিনি ওই এলাকায় বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করার পক্ষে। নথিতে বলা হয়, ‘তথাকথিত সংরক্ষিত এলাকা গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক যে চাপ, তা মোকাবিলায় দেশের বাকি অঞ্চলগুলোর সঙ্গে আমাজন অঞ্চলকে একীভূত করতে হবে। এর জন্য আমাজন অববাহিকায় অবশ্যই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে ট্রমবেটাস নদী জলবিদ্যুৎকেন্দ্র, আমাজন নদীর ওপর সেতু এবং সুরিনামের সঙ্গে ব্রাজিলকে সড়কপথে যুক্ত করতে মহাসড়ক প্রকল্প।’
No comments