রাতজাগা জীবন তাঁদের by মো. আল-আমিন
>>গাজীপুরের টঙ্গী বাজার এলাকার একটি মার্কেটের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে এই নৈশপ্রহরী। রোববার রাতে তোলা। ছবি: প্রথম আলো।
মনু
মিয়ার বয়স ৬৪ বছর। চুল-দাড়ি পাকা। চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ স্পষ্ট। এই বয়সে
তাঁর অবসরে থাকার কথা। কিন্তু জীবিকার তাগিদে তিনি এখন নৈশপ্রহরী। রাত
কাটে পরের সম্পদ পাহারা দিয়ে, কখনো খানিকটা বসে, কখনো দাঁড়িয়ে।
শুধু মনু মিয়া নন, গাজীপুর নগরের বিভিন্ন এলাকায় আছেন এমন অনেক নৈশপ্রহরী, যাঁদের অনেকের বয়স ৬০ থেকে ৭০–এর মধ্যে। পরিবারের খরচ, সন্তানের লেখাপড়া আর চিকিৎসাসহ নানা কারণে তাঁদের করতে হচ্ছে রাত জাগার চাকরি। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে পাহারা দিতে হয় পরের সম্পদ। থাকে প্রতিমুহূর্তে বিপদের ঝুঁকি।
রাত পৌনে ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী বাজার, আনারকলি রোড, মধুমিতা রোড, টঙ্গী বিসিক, পাগাড়, মিরাশপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কিছু নৈশপ্রহরীর দেখা পাওয়া যায়। তাঁদের সবার হাতে লাঠি, টর্চ ও বাঁশি। কারও কারও পরনে কোম্পানির ইউনিফরম। সবাই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, মার্কেটের সামনে পায়চারি করছেন। রাত গভীর হলেই একটু পরপর বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছেন।
টঙ্গী বাজার এলাকায় গাজী মার্কেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মনু মিয়া। বাঁ হাতে টর্চ আর ডান হাতে লাঠি নিয়ে বসেছিলেন একটি চেয়ারে। এদিক-ওদিক বারবার তাকাচ্ছিলেন। কথা হলে তিনি বলেন, রাত হইলেই খারাপ মানুষের আনাগোনা বেশি বাড়ে। একটু অসতর্ক হইলেই চোর-ছিনতাইকারী হামলা চালায়। তাই সব সময় চোখ-কান খোলা রাখা লাগে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো সময় কাটে মনু মিয়ার। তবে ঝড়–বৃষ্টি হলেই পড়েন বেকায়দায়। রাতের অন্ধকারে কোথাও যেতে পারেন না। তাই বৃষ্টিতে অনেকটা ভিজেই রাত কাটাতে হয় তাঁকে। জানতে চাইলে অনেকটা গলা ধরে আসছিল মনু মিয়ার। তিনি বলেন, ‘কী করব? গরিব মানুষ। চাকরি না করলে পুরা পরিবার বইসা যাইব। পেটের দায়ে সব কষ্ট সহ্য কইরা চাকরি করতে হয়।’
একই অবস্থা মো. হারুন অর রশিদের। টঙ্গী মধুমিতা রোডের অগ্রণী টাওয়ারের নিরাপত্তাকর্মী তিনি। প্রায় ৪০ বছর ধরে নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরি করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে নানা চড়াই-উতরাইয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু পরিবারের দিকে তাকিয়ে কখনোই চাকরি ছাড়েননি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাতে ডিউটি করলে নানাজনের নানা কথা শুনতে হয়। কেউ একটা গালি দিলেও হজম করি। কারণ, কিছু বললে আবার একা পাইয়া যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হইতে পারে। বিপদের তো হাত-পা নাই।’
সাধারণত বাসাবাড়ি, দোকান, মার্কেটের নৈশপ্রহরীরা নিরস্ত্র। হাতিয়ার হিসেবে হাতে থাকে শুধু লাঠি। খালি হাতে দায়িত্ব পালনে ভয় লাগে কি না, জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ভয় তো লাগেই। কিন্তু কি করমু। পরিবারের দিকে তাকালে আর ভয় থাকে না। দুমুঠো খাবার আর সন্তানদের শিক্ষার আলো দিতেই চাকরি করতে হয়।’
এই নৈশপ্রহরীর বেতন পাঁচ-আট হাজার টাকার মধ্যে। যে টাকা পান, তা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে তাঁদের। কখনো কখনো পান থেকে চুন খসলেই চাকরি হারানোর ভয় থাকে তাঁদের। নাম না প্রকাশের শর্তে একটি মার্কেটের এক নৈশপ্রহরী বলেন, ‘সব সময় চাকরি হারানোর ভয়ে থাকি। অনেক সময় বেতন আটকায় দেয়। কোনো কোনো মালিক গালিগালাজও করেন। সবকিছু সহ্য কইরাই চাকরি করতে হয়।’
শুধু মনু মিয়া নন, গাজীপুর নগরের বিভিন্ন এলাকায় আছেন এমন অনেক নৈশপ্রহরী, যাঁদের অনেকের বয়স ৬০ থেকে ৭০–এর মধ্যে। পরিবারের খরচ, সন্তানের লেখাপড়া আর চিকিৎসাসহ নানা কারণে তাঁদের করতে হচ্ছে রাত জাগার চাকরি। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে পাহারা দিতে হয় পরের সম্পদ। থাকে প্রতিমুহূর্তে বিপদের ঝুঁকি।
রাত পৌনে ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী বাজার, আনারকলি রোড, মধুমিতা রোড, টঙ্গী বিসিক, পাগাড়, মিরাশপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কিছু নৈশপ্রহরীর দেখা পাওয়া যায়। তাঁদের সবার হাতে লাঠি, টর্চ ও বাঁশি। কারও কারও পরনে কোম্পানির ইউনিফরম। সবাই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, মার্কেটের সামনে পায়চারি করছেন। রাত গভীর হলেই একটু পরপর বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছেন।
টঙ্গী বাজার এলাকায় গাজী মার্কেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মনু মিয়া। বাঁ হাতে টর্চ আর ডান হাতে লাঠি নিয়ে বসেছিলেন একটি চেয়ারে। এদিক-ওদিক বারবার তাকাচ্ছিলেন। কথা হলে তিনি বলেন, রাত হইলেই খারাপ মানুষের আনাগোনা বেশি বাড়ে। একটু অসতর্ক হইলেই চোর-ছিনতাইকারী হামলা চালায়। তাই সব সময় চোখ-কান খোলা রাখা লাগে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো সময় কাটে মনু মিয়ার। তবে ঝড়–বৃষ্টি হলেই পড়েন বেকায়দায়। রাতের অন্ধকারে কোথাও যেতে পারেন না। তাই বৃষ্টিতে অনেকটা ভিজেই রাত কাটাতে হয় তাঁকে। জানতে চাইলে অনেকটা গলা ধরে আসছিল মনু মিয়ার। তিনি বলেন, ‘কী করব? গরিব মানুষ। চাকরি না করলে পুরা পরিবার বইসা যাইব। পেটের দায়ে সব কষ্ট সহ্য কইরা চাকরি করতে হয়।’
একই অবস্থা মো. হারুন অর রশিদের। টঙ্গী মধুমিতা রোডের অগ্রণী টাওয়ারের নিরাপত্তাকর্মী তিনি। প্রায় ৪০ বছর ধরে নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরি করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে নানা চড়াই-উতরাইয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু পরিবারের দিকে তাকিয়ে কখনোই চাকরি ছাড়েননি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাতে ডিউটি করলে নানাজনের নানা কথা শুনতে হয়। কেউ একটা গালি দিলেও হজম করি। কারণ, কিছু বললে আবার একা পাইয়া যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হইতে পারে। বিপদের তো হাত-পা নাই।’
সাধারণত বাসাবাড়ি, দোকান, মার্কেটের নৈশপ্রহরীরা নিরস্ত্র। হাতিয়ার হিসেবে হাতে থাকে শুধু লাঠি। খালি হাতে দায়িত্ব পালনে ভয় লাগে কি না, জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ভয় তো লাগেই। কিন্তু কি করমু। পরিবারের দিকে তাকালে আর ভয় থাকে না। দুমুঠো খাবার আর সন্তানদের শিক্ষার আলো দিতেই চাকরি করতে হয়।’
এই নৈশপ্রহরীর বেতন পাঁচ-আট হাজার টাকার মধ্যে। যে টাকা পান, তা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে তাঁদের। কখনো কখনো পান থেকে চুন খসলেই চাকরি হারানোর ভয় থাকে তাঁদের। নাম না প্রকাশের শর্তে একটি মার্কেটের এক নৈশপ্রহরী বলেন, ‘সব সময় চাকরি হারানোর ভয়ে থাকি। অনেক সময় বেতন আটকায় দেয়। কোনো কোনো মালিক গালিগালাজও করেন। সবকিছু সহ্য কইরাই চাকরি করতে হয়।’
No comments