মিয়ানমারকে চাপ দিন -ওআইসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ
বাড়াতে ওআইসি তথা বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকায় ৫৭
মুসলিম রাষ্ট্রের জোট ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৪৫তম সম্মেলনের
উদ্বোধনীতে তিনি এ আহ্বান জানান। বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দৃঢ়ভাবে
দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে
স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে ওআইসিকে
অবশ্যই নেপিদোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। হযরত মুহম্মদ (সা.)
এর বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়ানোর অমোঘ বাণীর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নবী নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা
দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের
মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’ গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু
আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী ওই সম্মেলনের উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে সরকার প্রধান বলেন- রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও
মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার এবং জীবন জীবিকার অধিকার রাখে।’ অনুষ্ঠানে কানাডার
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ এ
ওসাইমিন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। আইভরিকোস্ট-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এবং ৪৪তম সিএফএম’র সভাপতি মার্সেল আমন-তানোহ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আবুল হাসান মাহমুদ আলীর কাছে ৪৫তম সিএফএম’র সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন।
তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতির প্রতিনিধি
বেকির বোজড্যাগসহ এশিয়া, আরব এবং আফ্রিকার পক্ষে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত ভাইস মিনিস্টার আবদুর রাহমান মোহাম্মাদ ফাসির, সৌদি
আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দেল বিন আহমেদ আল জুবায়ের এবং সেনেগালের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিদকি কাবা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে দেয়া দীর্ঘ
বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিপীড়িত মানবতার জন্য আমরা
আমাদের চিত্ত ও সীমান্ত দুই-ই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। মিয়ানমারের প্রায় ১১
লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা আশ্রয় দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে তাদের (বাস্তুচ্যুত হয়ে এদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী
রোহিঙ্গা) জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যথায়
ব্যথিত। কারণ, আমার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ
পরিবারের ১৮ জন সদস্য নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর আমি ছয় বছর দেশে ফিরতে
পারিনি, উদ্বাস্তু হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছি। কাজেই জোরপূর্বক
বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ওআইসিকে
তাদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইতিহাসের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে ঢাকায় ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলন হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি যখন প্রযুক্তি প্রবাহ ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং যুব সমাজের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে অসমতা, অসহিষ্ণুতা ও সামাজিক অবিচার এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব। এসবের সমন্বিত প্রভাবে আমাদের ইসলামী চিন্তা-চেতনার মৌলিক ভিত্তি আজ হুমকির সম্মুখীন। এমন অবস্থা আগে কখনো আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। তিনি বলেন, এখনকার মতো মুসলিম বিশ্ব আগে কখনো এত বেশি পরিমাণ সংঘাত, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ, বিভাজন ও অস্থিরতার মুখোমুখি হয়নি। লক্ষ্য করা যায়নি এত ব্যাপক হারে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর দেশান্তর। আজকে মুসলমান পরিচয়কে ভুলভাবে সহিংসতা ও চরমপন্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময় এসেছে আমাদের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার। সময় এসেছে টেকসই শান্তি, সংহতি ও সমৃদ্ধির আলোকে আমাদের ভবিষ্যৎকে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানোর। ইসলামী বিশ্বের রূপকল্প এমন হতে হবে যাতে আমরা আমাদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারি। নিজেরাই সকল দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সমাধান করতে পারি। দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ফলাফল-কেন্দ্রিক নতুন কৌশল-সম্বলিত একটি রূপান্তরিত ওআইসি। অনুষ্ঠানে ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ এ ওসাইমিন প্রধানমন্ত্রীকে পবিত্র কাবা শরীফের গিলাব উপহার দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম বৈঠক (সিএফএম) উপলক্ষে অনুষ্ঠানে স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী প্রেসিডেন্ট: এদিকে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সর্বদা জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করে আসছে, অতএব সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ওআইসি সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় আসা সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল জুবের গতকাল বিকালে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইসলামে সন্ত্রাসবাদের কোনো জায়গা নেই- এই সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ সৌদি সরকারের সঙ্গে এক যোগে কাজ করবে।’ এ সময় রিয়াদে ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশন (আইএমসিটিসি) গঠনে সৌদি বাদশাহ’র প্রচেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন: কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাখাইনে ধর্মভিত্তিক বৈষম্য ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চালানো নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের নৃশংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেটা নির্ভর করছে আমাদের ওপর।’ তিনি রাখাইনে চালানো নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দোষীদের জবাবদিহি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এজন্য মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওআইসির সদস্য দেশগুলো রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে। আর এতে পূর্ণ সমর্থন দেবে কানাডা। মন্ত্রী উল্লেখ করেন, তার দেশ ইতিমধ্যেই রাখাইন অভিযানের দায়িত্বে থাকা জেনারেল মং মং সো’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এই মন্ত্রী। বক্তৃতায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সেখানে শরণার্থীদের দুঃখ-কষ্ট শুনেছি। ভূমিধসে এক শিশু নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। জীবনের ঝুঁকিতে থাকা এসব রোহিঙ্গার নিরাপদ আশ্রয় প্রয়োজন। তিনি বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরেন। বলেন, নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর পক্ষে যখন কেউ থাকে না, তখন তাদের সঙ্গে কি ঘটে তা আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, রাখাইনে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। নির্যাতিত নারীরা বলেছে, বাড়ির টয়লেট ভেঙে ফেলে তাদেরকে বাইরের টয়লেট ব্যবহারে বাধ্য করা হয়েছে। যেন সহজেই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো যায়। এই নির্যাতনের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
ইতিহাসের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে ঢাকায় ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলন হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি যখন প্রযুক্তি প্রবাহ ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং যুব সমাজের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে অসমতা, অসহিষ্ণুতা ও সামাজিক অবিচার এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব। এসবের সমন্বিত প্রভাবে আমাদের ইসলামী চিন্তা-চেতনার মৌলিক ভিত্তি আজ হুমকির সম্মুখীন। এমন অবস্থা আগে কখনো আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। তিনি বলেন, এখনকার মতো মুসলিম বিশ্ব আগে কখনো এত বেশি পরিমাণ সংঘাত, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ, বিভাজন ও অস্থিরতার মুখোমুখি হয়নি। লক্ষ্য করা যায়নি এত ব্যাপক হারে বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীর দেশান্তর। আজকে মুসলমান পরিচয়কে ভুলভাবে সহিংসতা ও চরমপন্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময় এসেছে আমাদের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার। সময় এসেছে টেকসই শান্তি, সংহতি ও সমৃদ্ধির আলোকে আমাদের ভবিষ্যৎকে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানোর। ইসলামী বিশ্বের রূপকল্প এমন হতে হবে যাতে আমরা আমাদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারি। নিজেরাই সকল দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সমাধান করতে পারি। দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ফলাফল-কেন্দ্রিক নতুন কৌশল-সম্বলিত একটি রূপান্তরিত ওআইসি। অনুষ্ঠানে ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ এ ওসাইমিন প্রধানমন্ত্রীকে পবিত্র কাবা শরীফের গিলাব উপহার দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম বৈঠক (সিএফএম) উপলক্ষে অনুষ্ঠানে স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী প্রেসিডেন্ট: এদিকে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ ও উগ্র-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সর্বদা জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করে আসছে, অতএব সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ওআইসি সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় আসা সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল জুবের গতকাল বিকালে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইসলামে সন্ত্রাসবাদের কোনো জায়গা নেই- এই সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ সৌদি সরকারের সঙ্গে এক যোগে কাজ করবে।’ এ সময় রিয়াদে ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশন (আইএমসিটিসি) গঠনে সৌদি বাদশাহ’র প্রচেষ্টার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন: কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাখাইনে ধর্মভিত্তিক বৈষম্য ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চালানো নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের নৃশংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর সেটা নির্ভর করছে আমাদের ওপর।’ তিনি রাখাইনে চালানো নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দোষীদের জবাবদিহি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এজন্য মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওআইসির সদস্য দেশগুলো রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে। আর এতে পূর্ণ সমর্থন দেবে কানাডা। মন্ত্রী উল্লেখ করেন, তার দেশ ইতিমধ্যেই রাখাইন অভিযানের দায়িত্বে থাকা জেনারেল মং মং সো’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এই মন্ত্রী। বক্তৃতায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সেখানে শরণার্থীদের দুঃখ-কষ্ট শুনেছি। ভূমিধসে এক শিশু নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। জীবনের ঝুঁকিতে থাকা এসব রোহিঙ্গার নিরাপদ আশ্রয় প্রয়োজন। তিনি বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরেন। বলেন, নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর পক্ষে যখন কেউ থাকে না, তখন তাদের সঙ্গে কি ঘটে তা আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, রাখাইনে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। নির্যাতিত নারীরা বলেছে, বাড়ির টয়লেট ভেঙে ফেলে তাদেরকে বাইরের টয়লেট ব্যবহারে বাধ্য করা হয়েছে। যেন সহজেই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো যায়। এই নির্যাতনের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
No comments