সামরিকভাবে গোপনে আরো শক্তিশালী হচ্ছে চীন! by মোহাম্মদ আবুল হোসেন
ক্রমশ
বিশ্বে পরাশক্তি হয়ে উঠছে চীন। বৈশ্বিক, আঞ্চলিক সব অঙ্গনেই আধিপত্য
বিস্তারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বা হয়েছে দেশটি। এক্ষেত্রে ভারত অনেকটা পিছিয়ে
পড়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সামরিক দিক দিয়েও চীন অনেকটা এগিয়ে গেছে
বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আলোচনায় এসেছে যে, চীনের সামরিক যুদ্ধ
বিমান, যেটাকে বোমারু বিমান বলা হয় তাতে যুক্ত হয়েছে বা হচ্ছে নিঃশব্দ
বোমারু বিমান। এমান যুদ্ধবিমানকে ইংরেজিতে বলা হয় স্টিলদি বোম্বার
এয়ারক্রাফট। এটি সাধারণত এইচ-২০ যুদ্ধবিমান নামে পরিচিত। আসলে স্টিলথ
বোম্বার যুদ্ধবিমান কি এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। এমন প্রথম
যুদ্ধবিমানের অধিকারী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বে এটাই প্রথম নিঃশব্দ
যুদ্ধবিমান। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে এটি যুক্ত হয়। এর নাম বি-২
স্পিরিট। ১৯৯০ এর দশকে এটি প্রথম বিমানবাহিনীর সার্ভিসে যুক্ত হয়। এখন
পর্যন্ত বি-২ হলো বিশ্বে যেকোন সামরিক বাহিনীতে সার্ভিসে যুক্ত থাকা একক
নিঃশব্দ বোমারু যুদ্ধবিমান। এর থেকেও উন্নততর এক যুদ্ধবিমান তৈরির চেষ্টা
করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর নাম দেয়া হবে বি-২১ রাইডার। ২০২০ এর দশকের মাঝামাঝি
তা সার্ভিসে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়াও তাদের নিজেদের
মতো করে একই ধরনের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। এর সাধারণ নাম পিএকে ডিএ।
সেক্ষেত্রে এমন যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষেত্রে চীন হলো তৃতীয় দেশ। বি-২
যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৯৯ সালে। ওই সময় কসোভোতে
হস্তক্ষেপ করে ন্যাটো। তখন সেখানে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে বোমা হামলা চালায়
বি-২। যুক্তরাষ্ট্র এটাকে একটি দুর্ঘটনা বলে ব্যাখ্যা দেয়। এর আগে পর্যন্ত
বি-২ এর সক্ষমতার বিষয়ে সচেতন বা জানতেন না চীনা কর্মকর্তারা। ওই হামলার পর
তারা এ বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠে। এমন যুদ্ধবিমান অর্জনের আকাঙ্খার বিষয়ে মুখ
বন্ধ করে রাখে চীনা কর্মকর্তারা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা বি-২ সংক্রান্ত
প্রযুক্তি অর্জনের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করতে থাকে চীন। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা
যায়, চীনের এমন প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানের প্রতি আকাঙ্খা তৈরি হয়েছিল। তবে
বিষয়টি বাইরে থেকে বোঝা যায় নি। এরপর ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ধরে নেয়া
হয়, এ সময়ে তারা এমন যুদ্ধবিমান তৈরির গবেষণা ও উন্নয়নমুলক কাজ শুরু করে। এ
সময় প্রত্যাশা করা হয় যে, চীন একদিন এমন যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তির উন্নয়ন
করবে এবং তারা এমন বিমান তৈরি করবে। তবে এর ভবিষ্যত কি তা অজ্ঞাত। এমন
বিমান থাকার কথা সরকারি ভাবে স্বীকার করা হয় না। কিন্তু বিভিন্ন ভাবে বলা
হয়, চীনের হাতে আছে এইচ-৮, এইচ-৯, এইচ-১০ ও এইচ-এক্সের মতো যুদ্ধবিমান।
২০১০ সালের শেষের দিকে জে-২০ যুদ্ধবিমান এবং ২০১২ সালে কৌশলগত পরিবহন
ওয়াই-২০ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। এর ফলে এইচ-এক্স নিয়ে যে প্রত্যাশা বা
পূর্বাভাস প্রকাশ করা হয় তার হিসাব নিকাশ পাল্টে যায়। ধারণা করা হয়, চীন
আরো উন্নততর প্রযুক্তির ও বিশাল আকারের যুদ্ধবিমান তৈরি করতে যাচ্ছে। এ
নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সামনে চলে এসেছে। যেমন- দীর্ঘদিন ধরে এমন যুদ্ধবিমান
তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। ৬০৩ ইন্সটিটিউট এবং এক্সএসি’র নতুন
অগ্রাধিকারে চলে আসে বিষয়টি। ওয়াই-২০ নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের ফলে এক্ষেত্রে
নজর দেয়া হয়। ফলে পরীক্ষামুলক পদক্ষেপ নেয়া হয়। এইচ-২০ যুদ্ধবিমান ডিজাইনে
যুদ্ধবিমান তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই যুদ্ধবিমানটি অস্ত্র বহন করে
উড়তে পারবে এমনভাবে তৈরি করা হয়। এইচ-২০তে চারটি ইঞ্জিন থাকার কথা বলা হয়।
(দ্য ডিপ্লোম্যাট অবলম্বনে)
(দ্য ডিপ্লোম্যাট অবলম্বনে)
No comments