রোহিঙ্গারা জাতিবিদ্বেষী আচরণের শিকার- অ্যামনেস্টি
রাষ্ট্রীয়
মদতপুষ্ট জাতিবিদ্বেষ, প্রাতিষ্ঠানিকীকৃত বৈষম্যের জালে আটকে পড়েছে
মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। একে বর্ণবাদী প্রথা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
সেখানে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের আলাদা করছে কর্তপক্ষ। এটা করা হচ্ছে
বর্ণবাদী অমানবিক এক ব্যবস্থায়। সেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিনিয়ত
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তারা নিষ্পেষিত হচ্ছেন।
ক্রমাগত
এ নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু’বছর রাখাইনের চলমান পরিস্থিতি তদন্ত করে
একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল। তাতেই এসব কথা বলা হয়েছে। ‘কেজড উইথআউট এ রুফ’ শীর্ষক
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘উন্মুক্ত কারাগারে’ নির্যাতন করা হয় রোহিঙ্গাদের। এ
তদন্তে রাখাইনে বর্তমানের রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূল কারণ উদঘাটিত হয়েছে বলে
জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, সেখানে পর্যায়ক্রমিকভাবে যে মাত্রার বৈষম্য
চালানো হয় তা মানবতার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অপরাধ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার
নিজস্ব ওয়েব সাইটে এ বিষয়ে দীর্ঘ একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে,
সাম্প্রতিক নৃশংসতায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে নিরাপত্তা
রক্ষাকারীরা। তারা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। নির্বিচারে করেছে
ধর্ষণ। এসব নৃশংসতার কারণে জীবন বাঁচাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে
পাড়ি জমিয়েছে কমপক্ষে ৬ লাখ রোহিঙ্গা। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিভাবে
কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের সমস্ত রকম অধিকার কঠোরভাবে সীমিত করে দিয়েছে,
তাদেরকে কার্যত অবরুদ্ধে করে রেখেছে, তারা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এমনকি
গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি পায় নাÑ এসবই ফুটে উঠেছে তদন্তে। সেখানে বর্তমানে
যে পরিস্থিতি বিরাজমান তার প্রতিটিই মানবতার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী বা
জাতিবিদ্বেষী অপরাধ। অ্যামনেস্টির গবেষণা বিষয়ক সিনিয়র পরিচালক আনা
নেইস্টাট বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নিরাশ করে তোলা এবং
যতটা সম্ভব মানবাধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য সব কিছু সাজানো হয়েছে। নিরাপত্তা
রক্ষাকারীরা গত তিন মাসে জাতি নিধনে নৃশসংতা চালিয়েছে। এটা তাদের আরেকটি
আতঙ্কজনক উদাহরণ। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ইস্যুতে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে তাতে
এসব অধিকার লঙ্ঘনের সবটাই হয়তো দৃশ্যমান নয়। এ অপরাধগুলো শুধুই ভয়াবহ
এমনটাই বলা যায়। এই নির্যাতন বন্ধ করতে এবং রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরা নিশ্চিত
করতে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বর্তমান সঙ্কটের শিকড়ে হাত দিতে হবে।
No comments