এক গাছে ৫১ প্রজাতির আম
কোনোটা লাল, কোনোটা হলুদ, কোনোটা আবার সবুজ। কোনোটা দেখতে গোল, কোনোটা আবার ঠিক যেন বাংলার পাঁচ! থোকা থোকা হয়ে একটি গাছেই ঝুলছে এমন হরেকরকম আম। সম্প্রতি একটি গাছে ৫১ প্রজাতির আম ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। তার নাম রবি মারশেতওয়্যার। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার রবি ২০০১ সালে উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে মহারাষ্ট্রে তার জন্মস্থান ওয়াসিম গ্রামে চলে যান। তারপর সেখানেই চাষাবাদ শুরু করেন। চাষীদের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্যেই তার এই সিদ্ধান্ত বলে তিনি জানান। দেশটির সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে বলেছে, অবশ্য প্রথমেই এই পরিকল্পনা আসেনি রবির মাথায়। তিনি তার প্রায় ৩ একর জমিতে বিভিন্ন ফল এবং সবজি চাষ শুরু করেন। জৈব সার তৈরি করে কীভাবে চাষের কাজে লাগানো যায়, গ্রামের চাষীদের তা শেখানো শুরু করেন। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্বন্ধেও চাষীদের জানান। এ সময়েই পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক সুভাষ পালেকরের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। প্রথমে তার থেকেই গ্রাফটিং পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন। সুভাষ পালেকর তাকে দেভরিকর নামে আর এক ব্যক্তির সন্ধান দেন।
রবি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের ওসমানাবাদ জেলায় গিয়ে দেভরিকরের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি একটি গাছে ১৫ ধরনের আম ফলিয়েছিলেন। তার থেকেই গ্রাফটিং পদ্ধতি শিখেছি। তারপর সিদ্ধান্ত নিই লুপ্তপ্রায় আমের প্রজাতি রক্ষা করব।’ বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে একটি গাছে মোট ৫১ প্রজাতির আম ফলান তিনি। আলফানসো থেকে মহারাজা প্রায় সব প্রজাতির আমই ফলেছে একটি গাছে! রবি জানান, তবে তার সবকটি গ্রাফটিং সফল হয়নি। ওই আমগাছে ১ হাজার ৩৫০টি গ্রাফটিং করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে মাত্র কয়েকশ’ সফল হয়। তিনি আরও জানান, তার বাগানের ওই আমগাছ ৫০ বছরের পুরনো। বয়স বাড়ায় ফলনও কমে যায়। কমে যায় আমের মিষ্টতাও। আর এখন গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে সব মিলিয়ে মোট ৫১ প্রজাতির আম ফলেছে গাছটিতে। আগে যেখানে আম বিক্রি করে মাত্র ১ হাজার টাকা উপার্জন করতেন, চলতি মৌসুমে তিনি একটি মাত্র গাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করেছেন।
No comments