রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রবেশ করলো বৃটেন
আগাম
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বৃটেন নতুন করে রাজনৈতিক এক অস্থিরতায় প্রবেশ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র পদত্যাগ দাবি করছেন তার নিজ দল কনজারভেটিভের
অনেক নেতাকর্মী। আর মাত্র ১০ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট আলোচনা
শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক এই পরিস্থিতিতে তা বিলম্বিত হতে পারে।
অনলাইন সিএনএনে এসব লিখেছেন সাংবাদিক অ্যানজেলা দেওয়ান ও জেমস ম্যাস্টারস।
তারা লিখেছেন, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাকে আরো পাকাপোক্ত করার জন্য আগাম
পার্লামেন্ট নির্বাচন দিয়েছিলেন। কিন্তু বৃটিশ ভোটাররা বিস্ময়কর এক আঘাত
হেনেছেন তার প্রতি। এতে পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাচ্ছেন তিনি।
বেশির ভাগ আসনের ফলই প্রকাশ হয়েছে। তেরেসা মে’র দল কনজারভেটিভ বেশি আসনে
বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য একটি দলকে যতগুলো আসন
পেতে হয় সেই পরিমাণ আসন তিনি পাচ্ছেন না। তেরেসা মে’র জন্য এটা একটা
বিপর্র্যয়। শিডিউল অনুযায়ী এ নির্বাচন আরো তিন বছর পরে হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু তিনি আগাম নির্বাচন দিয়েছেন। জনমত জরিপ অনুযায়ী তিনি বিরোধী লেবার
দল জেরেমি করবিনের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন। এতে নতুন করে রাজনৈতিক
ফ্যাসাদের এক যুগে প্রবেশ করছে বৃটেন। তাদের সামনে রয়েছে ব্রেক্সিট আলোচনা।
নির্বাচনের কারণে তা বিলম্বিত হতে পারে। নির্বাচনে তেরেসা মে’র কর্তৃত্ব
খর্ব করেছে। এরই মধ্যে কনজারভেটিভদের সার্কেলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র পদত্যাগ করা উচিত বলে তারা শলাপরামর্শ করছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কাছ থেকে এক বছরেরও কম সময় আগে তিনি
ক্ষমতা নিয়েছিলেন। ব্রেক্সিট গণভোটের পর পদত্যাগ করেন ডেভিড ক্যামেরন। এরই
মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন পদত্যাগ করেছেন। তিনি আইটিভিকে
বলেছেন, তার দলের এ পারফরমেন্স বিপর্যয়কর। কনজারভেটিভ দলের এমপি আনা
সাউব্রি বলেছেন, এখন নিজের অবস্থান সম্পর্কে তেরেসা মে’কে বিবেচনা করতে
হবে। নির্বাচনের এ ফল বৃটেনকে আরেক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ফেলবে, যেখানে
ব্রেক্সিট নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ১০ দিনের মধ্যে। এরই
মধ্যে নির্বাচনের ফলে পাউন্ডের দরপতন হয়েছে। ওদিকে নিজের আসন মেইডেনহেড
আসনের ফল ঘোষণার পর তেরেসা মে বলেছেন, এখন এই সময়ে এ দেশে প্রয়োজন একটি
স্থিতিশীলতা। এ ছাড়া নির্বাচনে তার দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও তিনি
নতুন সরকার গঠনে তৎপর থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তবে বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি
করবিন বলেছেন, প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী তার ম্যান্ডেট
হারিয়েছেন। তাই তিনি তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন
যুক্তরাজ্যজুড়ে হতাশা। স্কটল্যান্ডে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি আসন হারাচ্ছে।
স্কটল্যান্ডের সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স স্যামন্ড তার আসনে পরাজিত
হয়েছেন। সেখানে কনজারভেটিভ দল বিরল বিজয় পাচ্ছে। ব্রেক্সিট বিরোধি লিবারেল
ডেমোক্রেটিক পার্টি তাদের আশানুরূফ ফল পাচ্ছে না। এ দলের সাবেক উপ
প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ শেফিল্ড হ্যালাম আসনে পরাজিত হয়েছেন। দলটির
বর্তমান নেতা টিম ফ্যারোন সামান্য ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তেরেসা মের
ঘনিষ্ঠ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড তার আসন হ্যাস্টিংস অ্যান্ড রাই
সামান্য ভোটের ব্যবধানে ধরে রেখেছেন। সেখানে ভোট পুনর্গণনায় লেবার দলের
প্রার্থী অপেক্ষা মাত্র ৩০০ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা একমত যে, এই নির্বাচনের ফল প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র জন্য অত্যন্ত খারাপ। সিএনএনের জন্য জেন মেরিক লিখেছেন, দেশের কর্তৃত্ব, কনজারভেটিভ পার্টির কর্তৃত্ব ধরে রাখার ব্যাপারে এটা তেরেসা মের জন্য বিরাট এক বিপর্যয়। কারণ, তিনি এই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেকে আরো শক্তিশালী ও স্থিতিশীল নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। তিনি এ নির্বাচনকে তেরেসা মের জন্য একটি গণভোটে দাঁড় করে দিয়েছিলেন এবং তাতে তিনি পরাজিত হয়েছেন। এখন সামনের দিনগুলোতে যেসব বিষয় আসবে তার মধ্যে ব্রেক্সিট সমঝোতা অন্যতম। যদি তেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে যান তাহলেও এ আলোচনা হয়ে উঠবে কঠিন। তিনি ‘হার্ড ব্রেক্সিট’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কাস্টমস ইউনিয়নের একক বাজার থেকে বের করে আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে তিনি উত্থান-পতন লক্ষ্য করেছেন। কনজারভেটিভ ও লেবার দলের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি থেকে কমে শতকরা মাত্র ১ পয়েন্টে এসে দাঁড়ায় শেষের দিকে। বেশ কিছু ভুল পদক্ষেপের কারণে দলের নির্বাচনী প্রচারণায় ছন্দপতন হয়। ফলে কনজারভেটিভদের সফলতা নিয়ে নানা রকম পূর্বাভাষ করা হতে থাকে। সামাজিক কল্যাণ ইস্যুতে উল্টো নীতি গ্রহণের জন্য তেরেসা মের সমালোচনা হতে থাকে। প্রবীণদের দেখাশোনার জন্য গৃহীত নীতিতে কাদের অর্থ দেয়া উচিত তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান তেরেসা মে। এ ইস্যুকে বড় করে তুলে ধরেছে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী এ নির্বাচনকে দেখেছেন ব্রেক্সিট-নির্বাচন হিসেবে। কিন্তু ম্যানচেস্টার ও লন্ডন হামলার মতো ভয়াবহ দুটি হামলায় তার সেই প্রচারণায় কালো মেঘ ফেলে দেয়। প্রচারণা থেমে যায়। এ হামলার পর তেরেসা মে’র নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তিনি যখন বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন পুলিশের সংখ্যা কমিয়ে তিনি জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। হামলার পর উত্তপ্ত বিতর্ক চলতে থাকে। বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর পর্যাপ্ত জনবল বা রিসোর্স আছে কিনা। তেরেসা মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে বৃটেনজুড়ে পুলিশের সংখ্যা ২০ হাজার কমিয়ে আনা হয়।
রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা একমত যে, এই নির্বাচনের ফল প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র জন্য অত্যন্ত খারাপ। সিএনএনের জন্য জেন মেরিক লিখেছেন, দেশের কর্তৃত্ব, কনজারভেটিভ পার্টির কর্তৃত্ব ধরে রাখার ব্যাপারে এটা তেরেসা মের জন্য বিরাট এক বিপর্যয়। কারণ, তিনি এই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেকে আরো শক্তিশালী ও স্থিতিশীল নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। তিনি এ নির্বাচনকে তেরেসা মের জন্য একটি গণভোটে দাঁড় করে দিয়েছিলেন এবং তাতে তিনি পরাজিত হয়েছেন। এখন সামনের দিনগুলোতে যেসব বিষয় আসবে তার মধ্যে ব্রেক্সিট সমঝোতা অন্যতম। যদি তেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেকে যান তাহলেও এ আলোচনা হয়ে উঠবে কঠিন। তিনি ‘হার্ড ব্রেক্সিট’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কাস্টমস ইউনিয়নের একক বাজার থেকে বের করে আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে তিনি উত্থান-পতন লক্ষ্য করেছেন। কনজারভেটিভ ও লেবার দলের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি থেকে কমে শতকরা মাত্র ১ পয়েন্টে এসে দাঁড়ায় শেষের দিকে। বেশ কিছু ভুল পদক্ষেপের কারণে দলের নির্বাচনী প্রচারণায় ছন্দপতন হয়। ফলে কনজারভেটিভদের সফলতা নিয়ে নানা রকম পূর্বাভাষ করা হতে থাকে। সামাজিক কল্যাণ ইস্যুতে উল্টো নীতি গ্রহণের জন্য তেরেসা মের সমালোচনা হতে থাকে। প্রবীণদের দেখাশোনার জন্য গৃহীত নীতিতে কাদের অর্থ দেয়া উচিত তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান তেরেসা মে। এ ইস্যুকে বড় করে তুলে ধরেছে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী এ নির্বাচনকে দেখেছেন ব্রেক্সিট-নির্বাচন হিসেবে। কিন্তু ম্যানচেস্টার ও লন্ডন হামলার মতো ভয়াবহ দুটি হামলায় তার সেই প্রচারণায় কালো মেঘ ফেলে দেয়। প্রচারণা থেমে যায়। এ হামলার পর তেরেসা মে’র নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তিনি যখন বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন পুলিশের সংখ্যা কমিয়ে তিনি জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। হামলার পর উত্তপ্ত বিতর্ক চলতে থাকে। বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর পর্যাপ্ত জনবল বা রিসোর্স আছে কিনা। তেরেসা মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে বৃটেনজুড়ে পুলিশের সংখ্যা ২০ হাজার কমিয়ে আনা হয়।
No comments