মগজের বৃহত্তম ‘জাদুঘর’

আআআ
মানসিকভাবে অসুস্থ, মৃগী ও আলঝেইমার রোগী এমনকি মুষ্টিযোদ্ধাও রয়েছেন তালিকায়। বেলজিয়ামের দুফেলের মনোরোগ হাসপাতাল সম্প্রতি পেয়েছে এ রকম বিভিন্ন ধরনের মানুষের প্রায় তিন হাজার মস্তিষ্কের এক ‘চালান’। যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ জায়গার অভাবে তাদের সংগ্রহের একটি বড় অংশ পাঠিয়ে দিয়েছে বেলজিয়ামে। আর এই ফরমালডিহাইড বা প্যারাফিনে চোবানো মগজসম্ভার গবেষণার অমূল্য উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে। দুফেলের মনোরোগ হাসপাতালের পাওয়া মস্তিষ্কের সম্ভারটি বিশ্বে এককভাবে এ ধরনের বৃহত্তম সংগ্রহ। এ বিচিত্র সংগ্রহের মূল কৃতিত্ব ব্রিটিশ স্নায়ুরোগবিশারদ জন কর্সেলিসের। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অন্তত ৪০ বছর ধরে এসব মস্তিষ্ক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেছেন। দুফেলের ওই হাসপাতালের গবেষণা পরিচালক ম্যানুয়েল মোরেনস বলেন, ‘আমরা যত দূর জানি, এটাই এক জায়গায় সবচেয়ে বেশি মস্তিষ্কের সংগ্রহশালা। কোনো রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর সত্যিকারের টিস্যু আপনি ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন—আজকের বেলজিয়ামে এটা একেবারে অসম্ভব না হলেও বেশ কঠিন।
কারণ, মস্তিষ্কের টিস্যু সংগ্রহের ব্যাপারে যেসব নৈতিক নির্দেশনা রয়েছে, সেগুলো খুবই কঠোর।’ মোরেনস আরও বলেন, ‘সাধারণত আমরা মস্তিষ্কের কাজের ধরন জানতে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে থাকি। কিন্তু এখন আসল জিনিসই সরাসরি দেখার সুযোগ মিলেছে।’ পুরোনো দিনের ওই সব মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণার বড় সুবিধা হলো, সেগুলো আধুনিক কিছু ওষুধের প্রভাব থেকে একেবারেই মুক্ত। কারণ, ওই সময়ে এসব ওষুধের প্রচলন ছিল না। গবেষণা পরিচালক মোরেনস বলেন, এখনকার মস্তিষ্কগুলো যেসব রোগীর শরীর থেকে নেওয়া হয়েছে তাঁরা বিভিন্ন চিকিৎসা নিয়েছিলেন। কিন্তু গবেষকেরা এমন মস্তিষ্ক নিয়ে কাজ করতে চান, যার মধ্যে অসুখটা সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত রূপে বিরাজ করছিল। ওষুধের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়নি। জন কর্সেলিসের সংগৃহীত মস্তিষ্কগুলো ইংল্যান্ডের একটি মনোরোগ হাসপাতালে সংরক্ষিত ছিল। নানা রকমের মনোরোগে আক্রান্ত লোকজনের মৃতদেহ থেকে এগুলো নেওয়া হয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.