ফারাক্কা-রামপাল: বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কের বাধা
যা মানুষকে কঠিন বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করছে, যে ক্ষতি পূরণ করা কখনোই সম্ভব নয়, যে ক্ষতি বহন করা মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য, সেই ক্ষতি নিয়েও ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের হাসিঠাট্টামিশ্রিত ‘কোনো ক্ষতি হয়নি’ ‘কিংবা হবে না’ শুনে শুনে আমরা অভ্যস্ত। তাঁরা তাঁদের দিক থেকে যে খুব অসত্য বলছেন তা-ও নয়, কেননা ক্ষতি তো তাঁদের হয়ইনি, হবেও না কোনো দিন। তাঁরা মানুষ ও জনপদের অপরিসীম ক্ষতি করেন, লাভবান হন এবং তারপর চলে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রথমে একটি বাঁধের কথা বলি। গত শতকের ষাটের দশকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর ওপর যখন ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ চলছিল, তখনই এ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। ভারতের কয়েকজন বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞও দীর্ঘ মেয়াদে এই বাঁধের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়েই উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। কিন্তু এর প্রতি কোনো গুরুত্ব না দিয়ে এই বাঁধ নির্মাণ শেষ করা হয় এবং ১৯৭৫ সালে তা চালু হয়। এই বাঁধের কারণে এত বছরে, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে, বাংলাদেশের প্রধান একটি নদীর পানিপ্রবাহ ভয়াবহ মাত্রায় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। তার ফলে এর সঙ্গে সংযুক্ত আরও ছোট-বড় নদীর পানিপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলাফল বহুমাত্রিক বিপর্যয়, শুধু যে এসব নদীর অববাহিকায় জীবন, জীবিকা, ফসল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা-ই নয়, প্রতিবেশগত ভারসাম্য বিপর্যস্ত হয়ে জীবনমান স্বাস্থ্য প্রাণবৈচিত্র্যও বিপদাপন্ন হয়েছে। এর আর্থিক মূল্য বের করা কঠিন।
এই ফারাক্কা বাঁধের পর বাংলাদেশে নেমে আসা আরও নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত, আরও পরিকল্পনাধীন আছে। এর ওপর ‘নদী-সংযোগ পরিকল্পনা’ নামে যে ভয়াবহ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে ভারত তা পুরো অঞ্চলে নদী ও নদীনির্ভর জীবন ও অর্থনীতির ওপর মরণ আঘাত হানবে। আন্তর্জাতিক পানি কনভেনশন অনুযায়ী ভারত একতরফাভাবে কিছু করতে পারে না এবং ক্ষয়ক্ষতির দায় ভারতের ওপরই বর্তাবে। কিন্তু বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এর সুরাহা করবে কি, তার নিজের উন্নয়ন মডেলেই যথেচ্ছাচার বাঁধ নির্মাণ, নদী দখল ও দূষণ দিয়ে নদীর বাকি অস্তিত্বের ক্ষতিসাধন করে চলেছে। নদীর ওপর যথেচ্ছাচার বাঁধ নির্মাণের সুবিধাভোগী বিশ্বজোড়া নির্মাণ কোম্পানি, কনসালট্যান্ট, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ীদের জোট গত শতকের শেষ কয়েক দশকে বিশ্বের বহু দেশে বন্যানিয়ন্ত্রণ, সেচ ও সবুজ বিপ্লবের নামে নদীপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের এসব কর্মসূচি নিয়েছে। এর বিরূপ ফলাফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। ভাটার দেশগুলো যে বড় বিপর্যয়ের সামনে পতিত হচ্ছে, তার দৃষ্টান্ত বিশ্বজোড়া। উজানের দেশগুলোতেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। সে কারণে নিজের মতো করে ভারত যে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করেছে, বাংলাদেশের মতামত ও অধিকারের তোয়াক্কা না করে যে বাঁধ চালু করেছে, শুকনো মৌসুমে পানি আটকে বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে ভেবেছে এতে ভাটির দেশের ক্ষতি হলে কী—ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, ঘটনা তা ঘটেনি।
এই ফারাক্কা বাঁধের পর বাংলাদেশে নেমে আসা আরও নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত, আরও পরিকল্পনাধীন আছে। এর ওপর ‘নদী-সংযোগ পরিকল্পনা’ নামে যে ভয়াবহ প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে ভারত তা পুরো অঞ্চলে নদী ও নদীনির্ভর জীবন ও অর্থনীতির ওপর মরণ আঘাত হানবে। আন্তর্জাতিক পানি কনভেনশন অনুযায়ী ভারত একতরফাভাবে কিছু করতে পারে না এবং ক্ষয়ক্ষতির দায় ভারতের ওপরই বর্তাবে। কিন্তু বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এর সুরাহা করবে কি, তার নিজের উন্নয়ন মডেলেই যথেচ্ছাচার বাঁধ নির্মাণ, নদী দখল ও দূষণ দিয়ে নদীর বাকি অস্তিত্বের ক্ষতিসাধন করে চলেছে। নদীর ওপর যথেচ্ছাচার বাঁধ নির্মাণের সুবিধাভোগী বিশ্বজোড়া নির্মাণ কোম্পানি, কনসালট্যান্ট, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ীদের জোট গত শতকের শেষ কয়েক দশকে বিশ্বের বহু দেশে বন্যানিয়ন্ত্রণ, সেচ ও সবুজ বিপ্লবের নামে নদীপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের এসব কর্মসূচি নিয়েছে। এর বিরূপ ফলাফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। ভাটার দেশগুলো যে বড় বিপর্যয়ের সামনে পতিত হচ্ছে, তার দৃষ্টান্ত বিশ্বজোড়া। উজানের দেশগুলোতেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। সে কারণে নিজের মতো করে ভারত যে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করেছে, বাংলাদেশের মতামত ও অধিকারের তোয়াক্কা না করে যে বাঁধ চালু করেছে, শুকনো মৌসুমে পানি আটকে বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে ভেবেছে এতে ভাটির দেশের ক্ষতি হলে কী—ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, ঘটনা তা ঘটেনি।
বরং ভারতের দিকে নতুন নতুন সমস্যা ক্রমে জমে এখন ভয়াল আকার ধারণ করেছে। এর শিকার হচ্ছে অনেক এলাকা, বিহার তার অন্যতম, এই বাঁধের কারণে নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে, বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বিহারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে এই বছরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে ফেলতে (বাংলাদেশের মানুষের মনের কথাও তাই। কিন্তু কখনো সরকার বা প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল তা বলেনি)। কিন্তু ভারতপন্থী ও ভারত বিরোধিতার নামে পরিচালিত রাজনীতির দুষ্টচক্রের কারণে বাংলাদেশে এ নিয়ে সুস্থ আলোচনা হয় না কখনো। কিন্তু সর্বসাধারণের মনের মধ্যেই এ বিষয়ে ক্ষোভ আছে। বরাবর ভারত এটি উপেক্ষা করতে চেয়েছে ‘এগুলো নিছক ভারতবিদ্বেষী রাজনীতি’—এই আওয়াজ দিয়ে। ফারাক্কার জন্য ক্ষতি কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তার প্রমাণ সুন্দরবন। সুন্দরবন যেসব নদী ও শাখা নদীর পানিপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল, সেই নদীগুলো আবার গঙ্গা-পদ্মার পানিপ্রবাহের সঙ্গে সংযুক্ত। ফারাক্কা কাজ শুরুর পর থেকে নদীগুলোর রুগ্ণতাপ্রাপ্তিতে তাই সুন্দরবনে মিঠাপানির প্রবাহ দুর্বল হয়ে যায়, ফলে সুন্দরবনে বিপরীত থেকে সমুদ্রের নোনাপানির প্রবাহ ভারসাম্যহীনভাবে বেড়ে যায়। এক গবেষণার ফলাফলে তাই দেখা যায়,
‘গঙ্গা নদীর মিঠাপানি গড়াই হয়ে পশুর নদ ও শিবসা নদীর মাধ্যমে সুন্দরবনে প্রবাহিত হয়। ফারাক্কা বাঁধের পর পানিপ্রবাহ কমে গেছে।...মিঠাপানির প্রবাহ কম থাকায় লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ছে বনের মধ্যে। এ কারণে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ বেঁচে থাকতে পারছে না।...বাঁধ চালুর পর শুষ্ক মৌসুমে সুন্দরবন প্রতি সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১৭০ ঘনমিটার পলিযুক্ত মিঠাপানি গ্রহণ করেছে। সেখানে লবণাক্ততার পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য কমপক্ষে ১৯৪ দশমিক ৪ ঘনমিটার পানিপ্রবাহ প্রয়োজন। কম পানিপ্রবাহ থাকায় সাগরের লবণাক্ত পানি বনের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। যদিও ১ শতাংশের বেশি লবণাক্ততা থাকলে সুন্দরীগাছের বেঁচে থাকা কঠিন।’ (প্রথম আলো, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬) বছরের পর বছর এই পরিস্থিতি সুন্দরবনকে অনেক দিক থেকে দুর্বল করেছে। বাংলাদেশের জন্য শুধু নয়, ভারত বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীপ্রবাহ এবং বিস্তীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য সুন্দরবনের গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা বা দায়বদ্ধতা যদি দুই দেশের সরকারের থাকত, তাহলেও ফারাক্কা নিয়ে গভীর পর্যালোচনা ও নতুন চিন্তা দেখা যেত। কিন্তু তা না থাকার ফলে দশকের পর দশক ফারাক্কা প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশের ক্ষতি করে গেছে। সুন্দরবনকে এই বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা না করে একই দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটিয়ে সুন্দরবনবিনাশী প্রকল্প হাজির করা হয়েছে, সেটি হলো রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।
এর প্রধান উদ্যোক্তা এবং পরিচালক ভারতের এনটিপিসি, এই কেন্দ্র নির্মাণ করবে ভারতের একটি কোম্পানি, এর জন্য ঋণ জোগান দেবে ভারতের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক (এর জন্য সার্বভৌম গ্যারান্টি দেবে বাংলাদেশ সরকার) এবং সব লক্ষণ বলছে কয়লা জোগান দেবে ভারতের কয়লা কোম্পানি। তার মানে কাগজপত্রে ৫০: ৫০ মালিকানা ও মুনাফা দেখানো হলেও বিনিয়োগ, নানা কিছু বিক্রি, কর্মসংস্থান ও মুনাফা সবকিছুতেই ভারতের বিভিন্ন কোম্পানিরই সুবিধা। বিপরীতে বাংলাদেশের শুধুই ক্ষতি, সুন্দরবন হারানোর মতো অপূরণীয় অচিন্তনীয় ক্ষতি, বহু মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষতি, কয়েক কোটি মানুষের জীবন নিরাপত্তার ঝুঁকি, তারপরও ঘাড়ে ঋণ আর আর্থিক বোঝা। কিন্তু ক্ষতি কি শুধু বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে? না। প্রকৃতি অবিচ্ছিন্ন, সীমান্তে কাঁটাতার দিয়ে তার সর্বনাশ আসা ঠেকানো যায় না। সে জন্য সুন্দরবন বাংলাদেশ অংশে বিপর্যস্ত হলে ভারতের অংশের সুন্দরবনও তার থেকে বাঁচবে না। তাই কলকাতায় সুন্দরবনবিনাশী প্রকল্পের বিরুদ্ধে এক সমাবেশে সংহতি জানাতে এসেছিলেন সেই এলাকার কয়েকজন অধিবাসী। তাঁদের একজন আমাকে বললেন, ‘আমরা ওই এলাকায় ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করি। সুন্দরবনের ক্ষতি হলে আমাদের সর্বনাশ। তাই আমরাও এই লড়াইয়ে আছি।’ মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকায় বাংলাদেশের মানুষ একটি বড় আশ্রয় পেয়েছিল, তার কারণে বাংলাদেশের মানুষের মনে সব সময়ই একটা কৃতজ্ঞতাবোধ আছে। কিন্তু আবার ভারতের শাসকদের গৃহীত কোনো কোনো নীতি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ক্ষোভও আছে। এগুলো মানুষ ভুলে যেতে চাইলেও পারে না।
ফারাক্কা এর একটি, তারপর আরও বাঁধ, তারপর নদী-সংযোগ পরিকল্পনা, সীমান্তে মানুষ হত্যা, বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা, ট্রানজিটের নামে পুরো যোগাযোগব্যবস্থার ওপর সুবিধা আদায় ইত্যাদি। সর্বশেষ সুন্দরবনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প। আগেরগুলো সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে, তারপরও মানুষ আশা নিয়ে থাকে হয়তো এসবের সমাধান একদিন পাওয়া যাবে। পুরোনো উন্নয়ন মডেলে নদীসহ প্রকৃতির ওপর কর্তৃত্বকেই মানুষের ক্ষমতা আর উন্নয়নের প্রদর্শনী ভাবা হতো, এখন তার পরিণাম যত স্পষ্ট হচ্ছে ততই ভুল সংশোধনের পথ খুঁজছে মানুষ। এমনকি বাঁধ ভেঙে হলেও নদীকে স্বাভাবিক প্রবাহের মধ্যে নিয়ে যাওয়া, প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়ন চিন্তা ক্রমে শক্তিশালী হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশকেও সেই পথই ধরতে হবে। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে যখন সুন্দরবনের বিনাশ ঘটবে, সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকবে না, সুন্দরবনের এই ক্ষতি আর কোনো কিছু দিয়েই পূরণ করা যাবে না। ফলে তখন মানুষের তীব্র ক্ষোভ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আমরা চাই না এ রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হোক। ‘কোনো ক্ষতি হয়নি, কোনো ক্ষতি হবে না’ আপ্তবাক্য উচ্চারণ আওড়িয়ে সত্য আড়াল করা যাবে না। সে জন্য আমরা চাই দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বের স্বার্থেই বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার দ্রুত এই প্রকল্প থেকে সরে আসবে। আমরা এখনো আশা করি, সমমর্যাদার ভিত্তিতে দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত হবে, বন্ধুত্ব হবে প্রকৃতই বিকাশমুখী এবং উভয়ের জন্য কল্যাণকর। দুই দেশের সজাগ মানুষ জনপন্থী উন্নয়নের ধারার জন্য যৌথ চিন্তা ও লড়াই শক্তিশালী করলে নিশ্চয়ই দুই দেশের মানুষের প্রকৃত বন্ধুত্বের ভিত মজবুত হবে।
আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
anu@juniv.edu/anujuniv@gmail.com
আনু মুহাম্মদ: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
anu@juniv.edu/anujuniv@gmail.com
No comments