মামুনুলকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছে!
জাতীয় ফুটবল দল থেকে অধিনায়ক মামুনুল ইসলামকে হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে জাতীয় দলের বেলজিয়ান কোচ টম সেন্টফিটকে। সোমবার ভুটান ম্যাচের জন্য ঘোষিত দল থেকে বাদ দেয়ায় আবেগপ্রবণ হয়ে অবসরের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন মামুনুল ইসলাম। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) একটি প্রভাবশালী মহল অনেকদিন ধরেই মামুনুলের ওপর চটে ছিল। প্রায় বছরদুয়েক আগে মামুনুলের সঙ্গে বাফুফের এক কর্মচারীর বাদানুবাদের জের ধরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বাফুফের সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়ালকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তদন্ত করার জন্য। ওই কর্মচারীর অভিযোগ ছিল, জাতীয় দলের অধিনায়ক বাফুফের মহিলা কমিটির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে চেয়ারম্যান) মাহফুজা আক্তার কিরনকে গালাগাল দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময় মামুনুল শেখ জামালের খেলোয়াড় থাকায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেনি ওই মহল। কেননা, তখন শেখ জামালের সভাপতি মনজুর কাদেরের প্রচণ্ড প্রভাব ছিল বাফুফেতে। মামুনুলকে বলা হয়েছিল, কিরনের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ব্যাপারটি মিটমাট করে নিতে।
কিন্তু তাতে রাজি হননি এই মিডফিল্ডার। বিষয়টি তখন ধামাচাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে কাদেরের সঙ্গে বাফুফের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাপে-নেউলে সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। মামুনুলও শেখ জামাল ছেড়ে চট্টগ্রাম আবাহনীতে যোগ দেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর শীর্ষ কর্মকর্তা শামসুল হক চৌধুরী এমপি ও তরফদার রুহুল আমিনের খুঁটির জোর থাকায় মামুনুলের কিছু করতে পারছিল না ওই মহল। শেষ পর্যন্ত জাতীয় দল থেকে তাকে সরে যেতে বাধ্য করে সেই প্রতিশোধ নেয়া হয়। অবসরের ঘোষণা দেয়া মামুনুল মঙ্গলবার যুগান্তরের প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘দেশ ও জাতিকে আরও অনেক কিছু দেয়ার সুযোগ ছিল আমার। দেশের জন্য ২/৩ বছর অনায়াসেই খেলতে পারতাম। কিন্তু সেই সুযোগ পেলাম না। কোচ আমার সম্পর্কে যেসব কথা বলেছেন, তা সত্যি নয়। নৌবাহিনী কর্তৃপক্ষ বাফুফের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই আমাদের খেলার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু এখন কোচ বলছেন অন্য কথা।’ মামুনুল বলেন, ‘জাতীয় দল থেকে আমি অবসর নিয়েছি এটাই সত্যি। দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলাম। এটাই আমার কষ্ট। সোমবার সারারাত ঘুমাতে পারিনি। বারবার মনে পড়ছিল, খেলার মাঠের কথা।’
No comments