১১ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর অচলাবস্থার অবসান
হামলার পর কেয়ার দপ্তরের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য। এএফপি |
আফগানিস্তানের কাবুলে বিদেশি সাহায্য সংস্থা কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের দপ্তরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ১১ ঘণ্টার অচলাবস্থার ইতি টেনেছে। ওই হামলা শুরু হয় গত সোমবার রাতে। কোনো জঙ্গি সংগঠন গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক তালেবান কার্যক্রমের অংশ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে সোমবারই দুপুরে কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জোড়া বিস্ফোরণে উচ্চপদস্থ এক সেনা কর্মকর্তাসহ ২৪ জন নিহত ও ৯১ জন আহত হয়। কাবুলে দাতব্য প্রতিষ্ঠান কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের দপ্তরে সশস্ত্র জঙ্গিরা দফায় দফায় আত্মঘাতী হামলা চালায়। এ আক্রমণ শুরু হয় সোমবার রাতে। জঙ্গিরা প্রথমে একটি শক্তিশালী গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই তালেবান যোদ্ধারা আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছাকাছি এলাকায় দুটি আত্মঘাতী হামলা চালায়। কাবুলের শের-ই নাও এলাকায় কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের দপ্তরে হামলা শুরুর পর চারপাশে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের ঠিক কোন অংশে হামলা হয়েছিল, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট ছিল না। কারণ, সেখানে ইট-পাথরের টুকরো এবং ভাঙা কাচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। গতকাল সকাল পর্যন্ত বিস্ফোরণ ও গোলাগুলি চলে। কেয়ার কর্তৃপক্ষ বলেছে,
তাদের কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র একটি দল এ হামলা চালায়। সম্ভবত তারা কেয়ারের দপ্তরটিকে সরকারি ভবন ভেবেছিল। কারণ, খুব কাছেই এ রকম একটি সরকারি ভবন রয়েছে। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে ২০ জন বিদেশিসহ ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হামলায় কেউ মারা যায়নি। তবে প্রথমে একজনের মৃত্যুর খবর প্রচার হয়েছিল। পরে তদন্তে দেখা যায়, কেবল ছয়জন আহত হয়েছেন। হামলাকারীর সংখ্যা ছিল তিন। তাঁদের সবাইকে গুলি করে হত্যা করেছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী। কেয়ারের দপ্তরে হামলার আগে সোমবার দুপুরেই তালেবান জঙ্গিরা কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যস্ত এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে সেনা কর্মকর্তাসহ অনেকে হতাহত হন। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সোমবারের ওই জোড়া বিস্ফোরণের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের শত্রুরা নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণেই তারা বিভিন্ন মহাসড়ক, নগর, মসজিদ, বিদ্যালয় ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করছে।’ তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ টুইটারে লিখেছেন, ওই হামলার প্রথম লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পুলিশ ছিল দ্বিতীয় লক্ষ্য।
No comments