নতুন রাজনৈতিক যুগে ঢুকছে আমেরিকা by থমাস পিকেটি
সাউথ ক্যারোলাইনার বিতর্কে হিলারি ক্লিনটন ও বার্নি স্যান্ডার্স |
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারিতে ‘সমাজতন্ত্রী’ প্রার্থী বার্নি
স্যান্ডার্সের অবিশ্বাস্য সাফল্যকে আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি?
ভারমন্টের এই সিনেটর এখন ৫০-এর নিচের বয়সী ডেমোক্রেটিক ভাবাপন্ন ভোটারদের
মধ্যে হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে জনপ্রিয়। আর হিলারি সার্বিকভাবে এগিয়ে আছেন
প্রবীণ প্রজন্মের ভোটারদের সমর্থনের জোরে।
ক্লিনটন মেশিন আর মূলধারার রক্ষণশীল গণমাধ্যমের চাপেতাপে স্যান্ডার্স হয়তো শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে জিততে পারবেন না। কিন্তু ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে অন্য কোনো স্যান্ডার্স—যিনি হয়তো হবেন আরেকটু তরুণ ও কম শ্বেতাঙ্গ—হয়তো একদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন এবং দেশটাকে বদলে দেবেন। অনেক বিচারেই বলা যায়, ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রোনাল্ড রিগ্যানের বিজয়ের মধ্যে দিয়ে যে রাজনৈতিক-আদর্শিক চক্র বাড়তে শুরু করেছিল, আমরা এখন তার অবসান চাক্ষুষ করছি।
একটু পেছনে ফেরা যাক। ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৭৯-এর দশক পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র একগুচ্ছ উচ্চাভিলাষী নীতি বাস্তবায়নে আগুয়ান ছিল। বৈষম্য কমিয়ে আনাই ছিল এসবের লক্ষ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দেশটি খুবই প্রগতিশীল আয় ও সম্পদ করের ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছিল এবং এমন এক অগ্রসর রাজস্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা আটলান্টিকের এপারে, ইউরোপে, কখনোই প্রয়োগ করা হয়নি। ১৯৩০ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত এই ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ আয়ের ওপর (বছরে এক মিলিয়ন ডলারের বেশি) কর ছিল গড়ে ৮২ শতাংশ এবং ১৯৪০ থেকে ১৯৬০-এর দশকে (রুজভেল্ট থেকে কেনেডির আমলে) তা সর্বোচ্চ ৯১ শতাংশে উঠেছিল। এমনকি ১৯৮০-তে রিগ্যানের নির্বাচিত হওয়ার বছরেও তা ছিল বেশিই—৭০ শতাংশ।
এই নীতি কোনোভাবেই যুদ্ধ–পরবর্তী মার্কিন অর্থনীতির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করেনি। সন্দেহ নেই, কারণ সুপার-ম্যানেজারদের যেখানে ১ মিলিয়ন ডলার দিলেই চলে, সেখানে ১০ মিলিয়ন দেওয়ার যুক্তি ছিল না। বড় ধনীদের বেলায় সম্পদ কর দশকের পর দশকজুড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। (জার্মানি ও ফ্রান্সে কখনোই তা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি ওঠেনি।) এতে করে মার্কিন পুঁজির পুঞ্জীভবন দারুণভাবে কমে গিয়েছিল।
এক কাল্পনিক পুঁজিবাদ: ১৯৩০-এর দশকে ইউরোপীয় দেশগুলোর অনেক আগেই যুক্তরাষ্ট্রও ফেডারেল পর্যায়ে নিম্নতম মজুরি ধার্য করেছিল। ১৯৬০ দশকের শেষাশেষি তা ছিল ঘণ্টায় ১০ ডলারের সমান (২০১৬ সালের ডলারের মূল্যে)। সে সময়ের মানে এটাই ছিল সর্বোচ্চ। আর এর সবই করা গিয়েছিল প্রায় বিনা বেকারত্বে। যেহেতু উৎপাদনশীলতা ও শিক্ষাব্যবস্থার স্তর এর পক্ষেই ছিল। এটা ছিল সেই সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে তখন পর্যন্ত আইনত চালু থাকা অগণতান্ত্রিক বর্ণবাদী বৈষম্যের অবসান ঘটে এবং নতুন সামাজিক কর্মসূচি চালু হয়।
এসব পরিবর্তন শক্তিশালী বিরোধীদের ক্ষিপ্ত করে। বিশেষ করে মুদ্রারাক্ষস ও শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেকার প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে। ১৯৭০-এর দশকে ভিয়েতনামে পরাস্ত আমেরিকা দেখল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজিতরাও (জার্মানি ও জার্মানি ছিল যাদের সামনের সারিতে) তুমুল গতিতে আমেরিকাকে ধরে ফেলতে চাইছে। এ ছাড়া তেল-সংকট, মুদ্রাস্ফীতি ও করের হারের হ্রাসকরণের জন্যও ভুগতে হলো যুক্তরাষ্ট্রকে। এসব হতাশার ঢেউয়ে ভেসে অতীতকালের কোনো এক কাল্পনিক পুঁজিবাদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচিত হলেন রোনাল্ড রিগ্যান। সেটা ১৯৮০ সাল। এই নতুন কর্মসূচির পরিণতি ১৯৮৬-এর কর-সংস্কার। ইতি ঘটল অর্ধশতকের প্রগতিশীল করব্যবস্থার। সর্বোচ্চ আয়ের ওপর কর ধরা হলো মাত্র ২৮ শতাংশ।
ডেমোক্র্যাটরা সত্যিকারভাবে ক্লিনটন ও ওবামার সময়ের এই বদলকে চ্যালেঞ্জ না করায় আগের ৫০ বছরের করের হারের অর্ধেক অবনতিই স্থায়িত্ব পেল। এতে করে সূচিত হলো বৈষম্যের বিস্ফোরণ। উচ্চ পদধারীদের জন্য যতটা সম্ভব ততটা বেশি বেতনও চালু হলো। পাশাপাশি আমেরিকার বেশির ভাগ অঞ্চলে দেখা গেল রাজস্ব আয়ের স্থবিরতা। এগুলোর সঙ্গী হলো নিম্ন প্রবৃদ্ধি।
একটি প্রগতিশীল কর্মসূচি: একই সঙ্গে রিগ্যান ফেডারেল নিম্নতম মজুরির মাত্রাকেও আটকে দিলেন (যা আসলে তত দিনে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে উবে গিয়ে ২০১৬ সালের মানে ঘণ্টায় ৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে, ১৯৬৯ সালে যা ছিল ঘণ্টায় ১১ ডলার)। ক্লিনটন ও ওবামার আমলে এসবেরও কোনো প্রতিকার করা হলো না।
স্যান্ডার্সের সাফল্য এখানেই যে তিনি দেখাতে পারলেন, বাড়তে থাকা বৈষম্য এবং তথাকথিত রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে আমেরিকা দারুণ ক্লান্ত। পাশাপাশি তিনি আমেরিকার প্রগতিশীল কর্মসূচি ও কল্যাণমূলক ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার অভিপ্রায়েরও পুনর্জীবন দিলেন। হিলারি ক্লিনটনও যেভাবে স্থিতাবস্থার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তা আসলে রিগ্যান-ক্লিনটন-ওবামার ধারাবাহিকতা বজায় রাখারই চেষ্টা।
স্যান্ডার্স পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তিনি করব্যবস্থাকে প্রগতিশীল করবেন এবং নিম্নতম মজুরি আরও বাড়াবেন (ঘণ্টায় ১৫ ডলার)। এর সঙ্গে তিনি এমন এক দেশে নিখরচায় স্বাস্থ্যসেবা ও উচ্চশিক্ষা দেওয়ারও অঙ্গীকার করেছেন, যেখানে উচ্চশিক্ষায় চলছে অভূতপূর্ব বৈষম্য। বেশির ভাগ মার্কিন ও সিস্টেমের সুবিধাভোগীদের মাঝখানে বিরাট ব্যবধান তিনি দেখিয়ে দিলেন।
এর মধ্যে রিপাবলিকান পার্টি উগ্র জাতীয়তাবাদী, অভিবাসী ও ইসলামবিরোধী চিন্তাভাবনা আর ধনী শ্বেতাঙ্গদের প্রতি অঢেল প্রশংসার খাদে ডুবছে। রিগ্যান ও বুশের আমলে নিযুক্ত বিচারকেরা ইতিমধ্যে রাজনীতিতে ব্যক্তিগত টাকা ব্যবহারের সমস্ত সীমা তুলে দিয়েছেন। এসবের কারণে স্যান্ডার্সের মতো প্রার্থীদের লড়াই হয়ে গেছে আরও কঠিন।
তাহলেও নতুন ধরনের রাজনৈতিক আলোড়ন ও গণচাঁদার শক্তি আমেরিকাকে নতুন রাজনৈতিক বৃত্তের দিকে নিয়ে যাবে। ইতিহাসের অবসান ঘোষণার অশুভ ভবিষ্যদ্বাণী থেকে আমরা এখনো অনেক দূরে।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ ফারুক ওয়াসিফ
থমাস পিকেটি: ফরাসি অর্থনীতিবিদ। তাঁর সাড়া জাগানো গ্রন্থ ক্যাপিটাল ইন দ্য টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি।
ক্লিনটন মেশিন আর মূলধারার রক্ষণশীল গণমাধ্যমের চাপেতাপে স্যান্ডার্স হয়তো শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে জিততে পারবেন না। কিন্তু ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে অন্য কোনো স্যান্ডার্স—যিনি হয়তো হবেন আরেকটু তরুণ ও কম শ্বেতাঙ্গ—হয়তো একদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন এবং দেশটাকে বদলে দেবেন। অনেক বিচারেই বলা যায়, ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রোনাল্ড রিগ্যানের বিজয়ের মধ্যে দিয়ে যে রাজনৈতিক-আদর্শিক চক্র বাড়তে শুরু করেছিল, আমরা এখন তার অবসান চাক্ষুষ করছি।
একটু পেছনে ফেরা যাক। ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৭৯-এর দশক পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র একগুচ্ছ উচ্চাভিলাষী নীতি বাস্তবায়নে আগুয়ান ছিল। বৈষম্য কমিয়ে আনাই ছিল এসবের লক্ষ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দেশটি খুবই প্রগতিশীল আয় ও সম্পদ করের ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছিল এবং এমন এক অগ্রসর রাজস্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা আটলান্টিকের এপারে, ইউরোপে, কখনোই প্রয়োগ করা হয়নি। ১৯৩০ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত এই ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ আয়ের ওপর (বছরে এক মিলিয়ন ডলারের বেশি) কর ছিল গড়ে ৮২ শতাংশ এবং ১৯৪০ থেকে ১৯৬০-এর দশকে (রুজভেল্ট থেকে কেনেডির আমলে) তা সর্বোচ্চ ৯১ শতাংশে উঠেছিল। এমনকি ১৯৮০-তে রিগ্যানের নির্বাচিত হওয়ার বছরেও তা ছিল বেশিই—৭০ শতাংশ।
এই নীতি কোনোভাবেই যুদ্ধ–পরবর্তী মার্কিন অর্থনীতির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করেনি। সন্দেহ নেই, কারণ সুপার-ম্যানেজারদের যেখানে ১ মিলিয়ন ডলার দিলেই চলে, সেখানে ১০ মিলিয়ন দেওয়ার যুক্তি ছিল না। বড় ধনীদের বেলায় সম্পদ কর দশকের পর দশকজুড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। (জার্মানি ও ফ্রান্সে কখনোই তা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি ওঠেনি।) এতে করে মার্কিন পুঁজির পুঞ্জীভবন দারুণভাবে কমে গিয়েছিল।
এক কাল্পনিক পুঁজিবাদ: ১৯৩০-এর দশকে ইউরোপীয় দেশগুলোর অনেক আগেই যুক্তরাষ্ট্রও ফেডারেল পর্যায়ে নিম্নতম মজুরি ধার্য করেছিল। ১৯৬০ দশকের শেষাশেষি তা ছিল ঘণ্টায় ১০ ডলারের সমান (২০১৬ সালের ডলারের মূল্যে)। সে সময়ের মানে এটাই ছিল সর্বোচ্চ। আর এর সবই করা গিয়েছিল প্রায় বিনা বেকারত্বে। যেহেতু উৎপাদনশীলতা ও শিক্ষাব্যবস্থার স্তর এর পক্ষেই ছিল। এটা ছিল সেই সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে তখন পর্যন্ত আইনত চালু থাকা অগণতান্ত্রিক বর্ণবাদী বৈষম্যের অবসান ঘটে এবং নতুন সামাজিক কর্মসূচি চালু হয়।
এসব পরিবর্তন শক্তিশালী বিরোধীদের ক্ষিপ্ত করে। বিশেষ করে মুদ্রারাক্ষস ও শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যেকার প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে। ১৯৭০-এর দশকে ভিয়েতনামে পরাস্ত আমেরিকা দেখল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজিতরাও (জার্মানি ও জার্মানি ছিল যাদের সামনের সারিতে) তুমুল গতিতে আমেরিকাকে ধরে ফেলতে চাইছে। এ ছাড়া তেল-সংকট, মুদ্রাস্ফীতি ও করের হারের হ্রাসকরণের জন্যও ভুগতে হলো যুক্তরাষ্ট্রকে। এসব হতাশার ঢেউয়ে ভেসে অতীতকালের কোনো এক কাল্পনিক পুঁজিবাদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচিত হলেন রোনাল্ড রিগ্যান। সেটা ১৯৮০ সাল। এই নতুন কর্মসূচির পরিণতি ১৯৮৬-এর কর-সংস্কার। ইতি ঘটল অর্ধশতকের প্রগতিশীল করব্যবস্থার। সর্বোচ্চ আয়ের ওপর কর ধরা হলো মাত্র ২৮ শতাংশ।
ডেমোক্র্যাটরা সত্যিকারভাবে ক্লিনটন ও ওবামার সময়ের এই বদলকে চ্যালেঞ্জ না করায় আগের ৫০ বছরের করের হারের অর্ধেক অবনতিই স্থায়িত্ব পেল। এতে করে সূচিত হলো বৈষম্যের বিস্ফোরণ। উচ্চ পদধারীদের জন্য যতটা সম্ভব ততটা বেশি বেতনও চালু হলো। পাশাপাশি আমেরিকার বেশির ভাগ অঞ্চলে দেখা গেল রাজস্ব আয়ের স্থবিরতা। এগুলোর সঙ্গী হলো নিম্ন প্রবৃদ্ধি।
একটি প্রগতিশীল কর্মসূচি: একই সঙ্গে রিগ্যান ফেডারেল নিম্নতম মজুরির মাত্রাকেও আটকে দিলেন (যা আসলে তত দিনে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে উবে গিয়ে ২০১৬ সালের মানে ঘণ্টায় ৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে, ১৯৬৯ সালে যা ছিল ঘণ্টায় ১১ ডলার)। ক্লিনটন ও ওবামার আমলে এসবেরও কোনো প্রতিকার করা হলো না।
স্যান্ডার্সের সাফল্য এখানেই যে তিনি দেখাতে পারলেন, বাড়তে থাকা বৈষম্য এবং তথাকথিত রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে আমেরিকা দারুণ ক্লান্ত। পাশাপাশি তিনি আমেরিকার প্রগতিশীল কর্মসূচি ও কল্যাণমূলক ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার অভিপ্রায়েরও পুনর্জীবন দিলেন। হিলারি ক্লিনটনও যেভাবে স্থিতাবস্থার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তা আসলে রিগ্যান-ক্লিনটন-ওবামার ধারাবাহিকতা বজায় রাখারই চেষ্টা।
স্যান্ডার্স পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তিনি করব্যবস্থাকে প্রগতিশীল করবেন এবং নিম্নতম মজুরি আরও বাড়াবেন (ঘণ্টায় ১৫ ডলার)। এর সঙ্গে তিনি এমন এক দেশে নিখরচায় স্বাস্থ্যসেবা ও উচ্চশিক্ষা দেওয়ারও অঙ্গীকার করেছেন, যেখানে উচ্চশিক্ষায় চলছে অভূতপূর্ব বৈষম্য। বেশির ভাগ মার্কিন ও সিস্টেমের সুবিধাভোগীদের মাঝখানে বিরাট ব্যবধান তিনি দেখিয়ে দিলেন।
এর মধ্যে রিপাবলিকান পার্টি উগ্র জাতীয়তাবাদী, অভিবাসী ও ইসলামবিরোধী চিন্তাভাবনা আর ধনী শ্বেতাঙ্গদের প্রতি অঢেল প্রশংসার খাদে ডুবছে। রিগ্যান ও বুশের আমলে নিযুক্ত বিচারকেরা ইতিমধ্যে রাজনীতিতে ব্যক্তিগত টাকা ব্যবহারের সমস্ত সীমা তুলে দিয়েছেন। এসবের কারণে স্যান্ডার্সের মতো প্রার্থীদের লড়াই হয়ে গেছে আরও কঠিন।
তাহলেও নতুন ধরনের রাজনৈতিক আলোড়ন ও গণচাঁদার শক্তি আমেরিকাকে নতুন রাজনৈতিক বৃত্তের দিকে নিয়ে যাবে। ইতিহাসের অবসান ঘোষণার অশুভ ভবিষ্যদ্বাণী থেকে আমরা এখনো অনেক দূরে।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ ফারুক ওয়াসিফ
থমাস পিকেটি: ফরাসি অর্থনীতিবিদ। তাঁর সাড়া জাগানো গ্রন্থ ক্যাপিটাল ইন দ্য টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি।
No comments