শতবর্ষে নবকুমার ইনস্টিটিউশন by জাফরুল্লাহ চৌধুরী
মূল স্কুলটি স্থাপিত হয়েছিল ১৯১৬ সালে, প্রায় তিন একর জায়গার ওপর বকশীবাজারের আহমদিয়া মসজিদ থেকে ২০-২৫ গজ দূরে। সেখানে অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। মেয়েদের জন্য একটি কলেজ করার লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালে পূর্ব বাংলার সরকার নবকুমার স্কুল স্থানান্তরিত করে ১৬ নম্বর উমেশ দত্ত রোডে—গোবিন্দ কুটিরে। নবকুমার ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ স্কুল কম্পাউন্ডে সত্তরের দশকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ কলেজ স্থাপন করে। এর পেছনে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নানের বিশেষ অবদান ছিল।
উর্দু রোডের ঢাল থেকে এগুলো জয়নাগ রোড, যেটা উমেশ দত্ত রোডের সমান্তরাল একটি রাস্তা, যেখানে পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অবস্থিত ছিল। সেখানে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী নাসির উদ্দিন চৌধুরী ছিলেন, তাঁর ছেলে সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী, যিনি বছর খানেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্বরাষ্ট্রসচিবের ছেলে মনি আর মিন্টু পড়ত কলেজিয়েট স্কুলে। মনিদের উত্তর দিকের বাড়িতে থাকতেন এক কন্ট্রাক্টর, তাঁদের ভাই শামসুল আলম দিলদরাজ মানুষ ছিলেন। এই স্কুলের কয়েক বাড়ি পরে ২৬ নম্বর উমেশ দত্ত রোডে থাকতেন খাইরুল হুদা ও নাজমুল হুদা। তাঁরা নবকুমার ইনস্টিটিউশনে পড়তেন, তাঁদের বাবা পুলিশ ইন্সপেক্টর ছিলেন। তাঁদেরই আত্মীয় ছিলেন ফজলুর রহমান, যিনি পাকিস্তান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। এই ফজলুর রহমানই বাংলা ভাষার অক্ষর বিলোপ করে আরবি অক্ষরে বাংলা প্রচলনের প্রস্তাব করেছিলেন এবং তাঁর আমলেই ষোলো টাকা সেরে লবণ বিক্রি হয়েছিল।
ইডেন কলেজের পাশের বাড়িতেই থাকতেন রফিক, জাহাঙ্গীর ও তাঁদের অন্য ভাইবোনেরা। এঁদের বাবা দবির উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। রফিকের এক বোন সুলতানা, যিনি শেখ কামালকে বিয়ে করেছিলেন। সুলতানা আমার বোনদের সমবয়সী ছিলেন, নামকরা ক্রীড়াবিদ। শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল ওসমানীকে বহনকারী বিমানে সিলেট এলাকায় গুলি হলে চিফ অব স্টাফ জেনারেল এম এ রব ও শেখ কামাল আহত হন। আমি জেনারেল রবকে বিমানেই কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দিয়ে জীবনে ফিরিয়ে আনি।
আজ যেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল, ইঞ্জিনিয়ারিং হোস্টেল, আলিয়া মাদ্রাসা এবং পপুলার ও হাসিনা হোটেল, সেখানে ছিল ধু ধু মাঠ। ছোটবেলায় আমরা খেলতে আসতাম। এখানে একটা রেলপথ ছিল, যার ওপারেই ছিল আহছানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, যা বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (BUET) নামে পরিচিত।
নবকুমার স্কুলের শিক্ষকেরা, বিশেষত প্রধান শিক্ষক প্রতিটি ছাত্রকে যত্ন করতেন। স্কুলের হেড মৌলভি শফিকুল ইসলামের মার খায়নি এমন ছাত্র কমই ছিল। তাঁর ধমক ও বেতের কারণে পাকিস্তান আমলের ছাত্ররা সহজে উর্দু ভাষায় মোজাক্কার ও মোয়ান্নাস রপ্ত করে এবং উর্দুতে সাত সেতারা মুখস্থ করে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ৭০ থেকে ৮০ নম্বর পেয়েছে। আনন্দবাবুর পর প্রধান শিক্ষক হন আবদুল মান্নান। তাঁর নেতৃত্বে স্কুলের বেশ উন্নতি হয়েছিল। দুর্ঘটনায় তাঁর আকস্মিক মৃত্যু হয়। স্কুলের অপর স্মরণীয় শিক্ষক গণিতশাস্ত্রের ‘হামিদুল স্যার’ যিনি চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকলেও প্রাইভেট টিউশনি করেননি। তাঁর বহু ছাত্র সফল ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার, রাষ্ট্রদূত ও সচিব হয়েছেন। হামিদুল স্যার আমাকে গণিত শিখিয়েছেন। তাঁদের সবার প্রতি আমি ঋণী।
১৯৫০ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাবা আমাদের দুই ভাইকে তাঁর সাইকেলের সামনে ও পেছনে বসিয়ে সেন্ট্রাল জেলের সীমানা থেকে ১৫-২০ গজ দূরে গোবিন্দ কুটিরে নিয়ে আসেন। স্কুলের নাম নবকুমার ইনস্টিটিউশন। সামনে স্কুলের খেলার মাঠ। বাবা আমাদের নিয়ে ঢুকলেন হেডমাস্টারের আনন্দবাবুর রুমে। তিনি হেসে বাবার সঙ্গে কথা বললেন। জিজ্ঞেস করলেন কোন ক্লাসে ভর্তি হবে? আমি বললাম ক্লাস ফোরে, ছোট ভাই রচি বলল ক্লাস থ্রিতে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ফোর’ বানান করো, আমি বললাম FOUR। দুই ভাই ভর্তি হয়ে গেলাম। তিনি দুজন ক্লাস শিক্ষককে ডেকে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। হেডমাস্টারের রুমে বসে ছিলেন লম্বা দাড়িওয়ালা এক ভদ্রলোক। পরে জানলাম তিনি ভাষাতত্ত্ববিদ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্। তিনি বললেন তোমরা পড়তে এসেছ ভালো, আমার নাতিরাও তো এখানে পড়ে। তিনি খুবই স্নেহপরায়ণ ছিলেন, মাঝেমধ্যে স্কুলে আসতেন। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফজলুর রহমানের আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগের জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁর নাতি জিয়াউল হক খোকন আমার সমবয়সী ছিল। সে আরমানিটোলা স্কুলে পড়ত, পরে পাকিস্তান টেলিভিশনে যোগ দেয়, সে বিটিভির প্রথম ক্যামেরাম্যান। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ির সিঁড়িতে পড়ে থাকা তাঁর প্রথম ছবিগুলো জিয়ারই তোলা। প্রাণস্পর্শী সেই ছবি। তারা থাকত বেগম বাজারের কাছে আলীর নকী দেউড়িতে। জেলখানার ভেতর থেকে রাস্তা ছিল, সেটা পার হলেই আলীর নকী দেউড়ি। ওর বাবা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের প্রধান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, খুবই গুণী ব্যক্তি।
ভালো স্কুলের সংজ্ঞা কী? অনেকে মনে করেন, প্রবেশিকা পরীক্ষায় কতজন প্রথম ১০ জনের মধ্যে স্থান পেয়েছে, কতজন বৃত্তি পেয়েছে, তা দিয়ে ভালো স্কুল নির্ধারিত হয়। না, সেটাই একমাত্র মাপকাঠি নয়। দেখা দরকার স্কুল কতজন দেশপ্রেমিক নাগরিক সৃষ্টি করেছে, কতজন ছাত্রকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছে। কতজন জনসেবায় নিবেদিত হয়েছে। নবকুমার স্কুলের বহু ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এই স্কুলের ছাত্র মতিউর তো সংগ্রামের অগ্নিশিখা জ্বালিয়েছিল ২৪ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে। এই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শহীদ ছিল কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। বয়স কত ছিল? ১৪ বছর। শহীদ ঢাকা-দাউদকান্দি রোডে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেয় এবং ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। নবকুমার ইনস্টিটিউশন এ দেশের ইতিহাসের একটা অংশ। এটা বহুদিন উজ্জ্বল থাকবে। মতিউরকে লাল সালাম।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
উর্দু রোডের ঢাল থেকে এগুলো জয়নাগ রোড, যেটা উমেশ দত্ত রোডের সমান্তরাল একটি রাস্তা, যেখানে পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অবস্থিত ছিল। সেখানে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী নাসির উদ্দিন চৌধুরী ছিলেন, তাঁর ছেলে সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী, যিনি বছর খানেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্বরাষ্ট্রসচিবের ছেলে মনি আর মিন্টু পড়ত কলেজিয়েট স্কুলে। মনিদের উত্তর দিকের বাড়িতে থাকতেন এক কন্ট্রাক্টর, তাঁদের ভাই শামসুল আলম দিলদরাজ মানুষ ছিলেন। এই স্কুলের কয়েক বাড়ি পরে ২৬ নম্বর উমেশ দত্ত রোডে থাকতেন খাইরুল হুদা ও নাজমুল হুদা। তাঁরা নবকুমার ইনস্টিটিউশনে পড়তেন, তাঁদের বাবা পুলিশ ইন্সপেক্টর ছিলেন। তাঁদেরই আত্মীয় ছিলেন ফজলুর রহমান, যিনি পাকিস্তান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন। এই ফজলুর রহমানই বাংলা ভাষার অক্ষর বিলোপ করে আরবি অক্ষরে বাংলা প্রচলনের প্রস্তাব করেছিলেন এবং তাঁর আমলেই ষোলো টাকা সেরে লবণ বিক্রি হয়েছিল।
ইডেন কলেজের পাশের বাড়িতেই থাকতেন রফিক, জাহাঙ্গীর ও তাঁদের অন্য ভাইবোনেরা। এঁদের বাবা দবির উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। রফিকের এক বোন সুলতানা, যিনি শেখ কামালকে বিয়ে করেছিলেন। সুলতানা আমার বোনদের সমবয়সী ছিলেন, নামকরা ক্রীড়াবিদ। শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল ওসমানীকে বহনকারী বিমানে সিলেট এলাকায় গুলি হলে চিফ অব স্টাফ জেনারেল এম এ রব ও শেখ কামাল আহত হন। আমি জেনারেল রবকে বিমানেই কার্ডিয়াক ম্যাসেজ দিয়ে জীবনে ফিরিয়ে আনি।
আজ যেখানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল, ইঞ্জিনিয়ারিং হোস্টেল, আলিয়া মাদ্রাসা এবং পপুলার ও হাসিনা হোটেল, সেখানে ছিল ধু ধু মাঠ। ছোটবেলায় আমরা খেলতে আসতাম। এখানে একটা রেলপথ ছিল, যার ওপারেই ছিল আহছানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, যা বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (BUET) নামে পরিচিত।
নবকুমার স্কুলের শিক্ষকেরা, বিশেষত প্রধান শিক্ষক প্রতিটি ছাত্রকে যত্ন করতেন। স্কুলের হেড মৌলভি শফিকুল ইসলামের মার খায়নি এমন ছাত্র কমই ছিল। তাঁর ধমক ও বেতের কারণে পাকিস্তান আমলের ছাত্ররা সহজে উর্দু ভাষায় মোজাক্কার ও মোয়ান্নাস রপ্ত করে এবং উর্দুতে সাত সেতারা মুখস্থ করে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ৭০ থেকে ৮০ নম্বর পেয়েছে। আনন্দবাবুর পর প্রধান শিক্ষক হন আবদুল মান্নান। তাঁর নেতৃত্বে স্কুলের বেশ উন্নতি হয়েছিল। দুর্ঘটনায় তাঁর আকস্মিক মৃত্যু হয়। স্কুলের অপর স্মরণীয় শিক্ষক গণিতশাস্ত্রের ‘হামিদুল স্যার’ যিনি চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকলেও প্রাইভেট টিউশনি করেননি। তাঁর বহু ছাত্র সফল ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ার, রাষ্ট্রদূত ও সচিব হয়েছেন। হামিদুল স্যার আমাকে গণিত শিখিয়েছেন। তাঁদের সবার প্রতি আমি ঋণী।
১৯৫০ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাবা আমাদের দুই ভাইকে তাঁর সাইকেলের সামনে ও পেছনে বসিয়ে সেন্ট্রাল জেলের সীমানা থেকে ১৫-২০ গজ দূরে গোবিন্দ কুটিরে নিয়ে আসেন। স্কুলের নাম নবকুমার ইনস্টিটিউশন। সামনে স্কুলের খেলার মাঠ। বাবা আমাদের নিয়ে ঢুকলেন হেডমাস্টারের আনন্দবাবুর রুমে। তিনি হেসে বাবার সঙ্গে কথা বললেন। জিজ্ঞেস করলেন কোন ক্লাসে ভর্তি হবে? আমি বললাম ক্লাস ফোরে, ছোট ভাই রচি বলল ক্লাস থ্রিতে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ফোর’ বানান করো, আমি বললাম FOUR। দুই ভাই ভর্তি হয়ে গেলাম। তিনি দুজন ক্লাস শিক্ষককে ডেকে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। হেডমাস্টারের রুমে বসে ছিলেন লম্বা দাড়িওয়ালা এক ভদ্রলোক। পরে জানলাম তিনি ভাষাতত্ত্ববিদ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্। তিনি বললেন তোমরা পড়তে এসেছ ভালো, আমার নাতিরাও তো এখানে পড়ে। তিনি খুবই স্নেহপরায়ণ ছিলেন, মাঝেমধ্যে স্কুলে আসতেন। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফজলুর রহমানের আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের উদ্যোগের জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁর নাতি জিয়াউল হক খোকন আমার সমবয়সী ছিল। সে আরমানিটোলা স্কুলে পড়ত, পরে পাকিস্তান টেলিভিশনে যোগ দেয়, সে বিটিভির প্রথম ক্যামেরাম্যান। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ির সিঁড়িতে পড়ে থাকা তাঁর প্রথম ছবিগুলো জিয়ারই তোলা। প্রাণস্পর্শী সেই ছবি। তারা থাকত বেগম বাজারের কাছে আলীর নকী দেউড়িতে। জেলখানার ভেতর থেকে রাস্তা ছিল, সেটা পার হলেই আলীর নকী দেউড়ি। ওর বাবা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের প্রধান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, খুবই গুণী ব্যক্তি।
ভালো স্কুলের সংজ্ঞা কী? অনেকে মনে করেন, প্রবেশিকা পরীক্ষায় কতজন প্রথম ১০ জনের মধ্যে স্থান পেয়েছে, কতজন বৃত্তি পেয়েছে, তা দিয়ে ভালো স্কুল নির্ধারিত হয়। না, সেটাই একমাত্র মাপকাঠি নয়। দেখা দরকার স্কুল কতজন দেশপ্রেমিক নাগরিক সৃষ্টি করেছে, কতজন ছাত্রকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছে। কতজন জনসেবায় নিবেদিত হয়েছে। নবকুমার স্কুলের বহু ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এই স্কুলের ছাত্র মতিউর তো সংগ্রামের অগ্নিশিখা জ্বালিয়েছিল ২৪ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে। এই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শহীদ ছিল কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা। বয়স কত ছিল? ১৪ বছর। শহীদ ঢাকা-দাউদকান্দি রোডে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেয় এবং ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। নবকুমার ইনস্টিটিউশন এ দেশের ইতিহাসের একটা অংশ। এটা বহুদিন উজ্জ্বল থাকবে। মতিউরকে লাল সালাম।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী: ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
No comments