‘মাসুদ গলায় দড়ি প্যাঁচিয়ে ধরে আমরা দুজন টান দেই’ by নুরুজ্জামান লাবু
‘আমি
ঘুমাইয়্যা ছিলাম। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়। দেখি অচেনা রাস্তা দিয়ে গাড়ি
যাইতেছে। আমি মাসুদরে বলি, এইটা কোন রাস্তা। মাসুদ বলে, আমি চিনি। একটু পর
মাসুদ গাড়ি থামাইতে কয়। গাড়ি থামা মাত্রই পেছন থিকা ড্রাইভারের গলায়
প্লাস্টিকের একটা দড়ি প্যাঁচাইয়া ধরে। আমি আর মোফাজ্জল সেই রশি ধইরা টান
দেই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ড্রাইভার নীরব হইয়া যায়। পরে তারে রাস্তার পাশে
একটা বাঁশঝাড়ে ফেইলা দেই।’ এভাবেই নৃশংস এক খুনের আদ্যোপান্তর বর্ণনা দেয়
১৯ বছরের তরুণ আজহার। তিন বন্ধু আজহার, মোফাজ্জল ও মাসুদ মিলে খুন করে
জাহাঙ্গীর নামে প্রাইভেটকার চালককে। যিনি ওই প্রাইভেটকারের মালিকও। ঢাকার
ডেমরা থেকে ভাড়ায় নেত্রকোনা নিয়ে যাওয়ার নামে তাকে হত্যা করা হয়। পরে
গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় এই তিন দুর্বৃত্ত। এদের মধ্যে আজহার ও মোফাজ্জলকে
নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ- ডিবি। কিন্তু
মাসুদ পালিয়ে গেছে। মাসুদকে ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ডিবির
কর্মকর্তারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে এই প্রতিবেদকের কথা হয় গ্রেপ্তারকৃত দুই খুনির সঙ্গে। তাদের দাবি অনুযায়ী, গত ৩০শে নভেম্বর ঢাকায় আসে এই তিন বন্ধু। পরে যায় নারায়ণগঞ্জের তারাবতে। সেখানে তিন জন একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ নেয়। কিন্তু গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ আজহার ও মোফাজ্জলকে মাসে ৪ হাজার টাকা বেতন দিতে চায়। কাজের পূর্বাভিজ্ঞতা থাকায় মাসুদের বেতন একটু বেশি দিতে চেয়েছিল। ১লা ডিসেম্বর কাজও করে তারা। কিন্তু ৪ হাজার টাকায় পোষাবে না বলে কাজ ছেড়ে দেয় তিন জনই। গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কমলাকান্দায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পকেটে গাড়ি ভাড়া নেই। তিন জন মিলে বুদ্ধি আঁটে প্রাইভেটকার ভাড়া করে গ্রামে যাবে। এলাকায় গিয়ে প্রাইভেটকারের ভাড়া না দিয়েই পালিয়ে যাবে। এই উদ্দেশ্যে ভাড়ায় চলা প্রাইভেটকার খুঁজতে থাকে এই তিন জন। এক সিএনজি চালকের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর নামে এক প্রাইভেটাকারচালকের খোঁজ পায় তারা। তাকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন রকম মিথ্যা কথা বলে। বলে- বাসায় অসুস্থ স্বজন। দ্রুত তাদের দেখতে যেতে হবে। তাদের পকেটে টাকা নেই। কিন্তু ভাড়া যা হয় সব বাড়িতে গিয়ে দিয়ে দিবে। রাজধানীর বাসাবো কদমতলার বাসিন্দা প্রাইভেটকারের মালিক ও চালক জাহাঙ্গীরের মন গলে যায় তাদের কথায়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ডেমরা থেকে তাদের গাড়িতে তুলে নেন জাহাঙ্গীর। তারপর শুরু হয় নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
তিন কিলারের একজন আজহার জানায়, সে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিল। পেছনের সিটে বসেছিল মাসুদ ও মোফাজ্জল। নেত্রকোনার কমলাকান্দা থানাধীন গোড়গাঁও এলাকায় তাদের বাড়ি। বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে তারা প্রাইভেটকার থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাবে- এরকমই ছিল তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু গাড়িতে ঘুমিয়ে যায় আজহার। ঘুম থেকে উঠে দেখে তারা কমলাকান্দার রাস্তায় না গিয়ে পূর্বধলার হুগলা এলাকার দিকে যাচ্ছে। আজহার এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মাসুদ জানায় এটা শর্ট রাস্তা। প্রাইভেটকারটি পাকা রাস্তা ধরে কিছুদূর এগোয়। এরপর কাঁচারাস্তায় যায় আরও কিছুদূর। তখন ভোর হয়ে আসছিল। হঠাৎ মাসুদ প্রাইভেটকার চালককে গাড়ি থামাতে বলে। বলে- এসে গেছি। গাড়ি থামা মাত্রই পেছন থেকে লুকিয়ে রাখা প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে ড্রাইভারের গলায় প্যাঁচিয়ে ধরে মাসুদ। মাসুদের কথায় আজহার ও মোফাজ্জলও সেই দড়ি ধরে টান দেয়। চেপে ধরে গলা। মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে চালক জাহাঙ্গীর। তারপর তিন জন মিলে জাহাঙ্গীরের লাশ টেনে পাশের বাঁশঝাড়ে নিয়ে ফেলে দেয়।
আজাহার জানায়, দুই মাস আগে সে গাড়ি চালানো শিখেছিল। তাই নিজেই সেই গাড়িটি চালিয়ে পাশের জাড়িয়া বাজারে যায়। বাজারের পাশের একটি মাঠে গাড়িটি লক করে রাখে। হাতে কোন টাকা না থাকায় তারা শাহীন নামে পরিচিত এক বড় ভাইকে ফোন করে। পরে তার কাছ থেকে দেড় শ’ টাকা নিয়ে তিন জনই নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। আরেক কিলার মোফাজ্জল দাবি করে, প্রাইভেটকার ছিনিয়ে নেয়া কিংবা হত্যাকাণ্ডের কোন পরিকল্পনা ছিল না তাদের। তারা শুধু টাকা না থাকায় প্রাইভেটকার থেকে দৌড়ে নেমে যেতে চেয়েছিল। সকল পরিকল্পনা ছিল মাসুদের। মাসুদই সবকিছু করেছে। আজহার ও মোফাজ্জল জানায়, মাসুদ অনেকদিন গাজীপুরের মাওনায় ছিল। মাসুদের পরামর্শেই তারা ঢাকায় এসেছিল। সে হয়তো গাড়ি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতও থাকতে পারে। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, দুই খুনি সব দোষ মাসুদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে। টাকা না থাকায় শুধু পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য থাকলে চালককে খুন করতো না। এমনিতেই গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালাতে পারতো। আবার খুনের পর গাড়িটিও নিজেরা নিয়ে যেত না। গ্রেপ্তারকৃতরা আসলে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য। পরিকল্পনা করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে চালককে হত্যা করে গাড়িটি ছিনতাই করেছে তারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ইকবাল হোছাইন জানান, সবুজবাগ থানার একটি মামলার সূত্র ধরে এই দুই কিলারকে তারা নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। পূর্বধলা থানার জাড়িয়া বাজার থেকে চালককে হত্যার পর ছিনিয়ে নেয়া প্রাইভেটকারটিও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা বড় কোন গাড়ি চুরি দলের সদস্য কিনা তা খতিয়ে দেখতে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি। গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, শনিবার এই দু’জনকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ২রা ডিসেম্বর রাতে জাহাঙ্গীর নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পর ভোর থেকে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিখা আক্তার বিষয়টি জানিয়ে রাজধানীর সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। পরে বিষয়টি আমলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিম অনুসন্ধান শুরু করে। পরে প্রযুক্তির সহযোগিতায় যারা গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল তিন জনের মধ্যে দুজনকে আটক করে। নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিখা আক্তার জানান, মাস দুয়েক আগে তার স্বামী আড়াই লাখ টাকা দিয়ে প্রাইভেটকারটি কেনে। আরও লাখ খানেক টাকা খরচ করে সেটি ঠিকঠাক করে ভাড়ায় চালানো শুরু করে। এর আগে তার স্বামী সিএনজি চালাতো। শিখা আক্তার জানান, কয়েক মাস আগে তাদের সিএনজিটি ছিনতাই হয়েছিল। পরে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সেটি ফেরত এনেছিল। এরপর সিএনজি বিক্রি করে প্রাইভেটকারটি কেনে। শিখা জানান, তার স্বামী খুব সহজ-সরল ছিল। রাতে সাধারণত ঢাকার বাইরে কোথাও গাড়ি নিয়ে যেত না। কিন্তু সেদিন তারা এত অনুনয়-বিনয় করে যে সে উপকার করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দিল। শিখা জানান, তাদের জোনায়েদ নামে ছয় বছরের একটি সন্তান রয়েছে। তাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ থানার ডাঙ্গায়। বাসাবোর কদমতলার ৬৯/৪/সি/৩ নম্বর বাসায় স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে এই প্রতিবেদকের কথা হয় গ্রেপ্তারকৃত দুই খুনির সঙ্গে। তাদের দাবি অনুযায়ী, গত ৩০শে নভেম্বর ঢাকায় আসে এই তিন বন্ধু। পরে যায় নারায়ণগঞ্জের তারাবতে। সেখানে তিন জন একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ নেয়। কিন্তু গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ আজহার ও মোফাজ্জলকে মাসে ৪ হাজার টাকা বেতন দিতে চায়। কাজের পূর্বাভিজ্ঞতা থাকায় মাসুদের বেতন একটু বেশি দিতে চেয়েছিল। ১লা ডিসেম্বর কাজও করে তারা। কিন্তু ৪ হাজার টাকায় পোষাবে না বলে কাজ ছেড়ে দেয় তিন জনই। গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কমলাকান্দায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পকেটে গাড়ি ভাড়া নেই। তিন জন মিলে বুদ্ধি আঁটে প্রাইভেটকার ভাড়া করে গ্রামে যাবে। এলাকায় গিয়ে প্রাইভেটকারের ভাড়া না দিয়েই পালিয়ে যাবে। এই উদ্দেশ্যে ভাড়ায় চলা প্রাইভেটকার খুঁজতে থাকে এই তিন জন। এক সিএনজি চালকের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর নামে এক প্রাইভেটাকারচালকের খোঁজ পায় তারা। তাকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন রকম মিথ্যা কথা বলে। বলে- বাসায় অসুস্থ স্বজন। দ্রুত তাদের দেখতে যেতে হবে। তাদের পকেটে টাকা নেই। কিন্তু ভাড়া যা হয় সব বাড়িতে গিয়ে দিয়ে দিবে। রাজধানীর বাসাবো কদমতলার বাসিন্দা প্রাইভেটকারের মালিক ও চালক জাহাঙ্গীরের মন গলে যায় তাদের কথায়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ডেমরা থেকে তাদের গাড়িতে তুলে নেন জাহাঙ্গীর। তারপর শুরু হয় নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
তিন কিলারের একজন আজহার জানায়, সে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিল। পেছনের সিটে বসেছিল মাসুদ ও মোফাজ্জল। নেত্রকোনার কমলাকান্দা থানাধীন গোড়গাঁও এলাকায় তাদের বাড়ি। বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে তারা প্রাইভেটকার থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাবে- এরকমই ছিল তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু গাড়িতে ঘুমিয়ে যায় আজহার। ঘুম থেকে উঠে দেখে তারা কমলাকান্দার রাস্তায় না গিয়ে পূর্বধলার হুগলা এলাকার দিকে যাচ্ছে। আজহার এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মাসুদ জানায় এটা শর্ট রাস্তা। প্রাইভেটকারটি পাকা রাস্তা ধরে কিছুদূর এগোয়। এরপর কাঁচারাস্তায় যায় আরও কিছুদূর। তখন ভোর হয়ে আসছিল। হঠাৎ মাসুদ প্রাইভেটকার চালককে গাড়ি থামাতে বলে। বলে- এসে গেছি। গাড়ি থামা মাত্রই পেছন থেকে লুকিয়ে রাখা প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে ড্রাইভারের গলায় প্যাঁচিয়ে ধরে মাসুদ। মাসুদের কথায় আজহার ও মোফাজ্জলও সেই দড়ি ধরে টান দেয়। চেপে ধরে গলা। মুহূর্তেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে চালক জাহাঙ্গীর। তারপর তিন জন মিলে জাহাঙ্গীরের লাশ টেনে পাশের বাঁশঝাড়ে নিয়ে ফেলে দেয়।
আজাহার জানায়, দুই মাস আগে সে গাড়ি চালানো শিখেছিল। তাই নিজেই সেই গাড়িটি চালিয়ে পাশের জাড়িয়া বাজারে যায়। বাজারের পাশের একটি মাঠে গাড়িটি লক করে রাখে। হাতে কোন টাকা না থাকায় তারা শাহীন নামে পরিচিত এক বড় ভাইকে ফোন করে। পরে তার কাছ থেকে দেড় শ’ টাকা নিয়ে তিন জনই নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। আরেক কিলার মোফাজ্জল দাবি করে, প্রাইভেটকার ছিনিয়ে নেয়া কিংবা হত্যাকাণ্ডের কোন পরিকল্পনা ছিল না তাদের। তারা শুধু টাকা না থাকায় প্রাইভেটকার থেকে দৌড়ে নেমে যেতে চেয়েছিল। সকল পরিকল্পনা ছিল মাসুদের। মাসুদই সবকিছু করেছে। আজহার ও মোফাজ্জল জানায়, মাসুদ অনেকদিন গাজীপুরের মাওনায় ছিল। মাসুদের পরামর্শেই তারা ঢাকায় এসেছিল। সে হয়তো গাড়ি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতও থাকতে পারে। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, দুই খুনি সব দোষ মাসুদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করছে। টাকা না থাকায় শুধু পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য থাকলে চালককে খুন করতো না। এমনিতেই গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালাতে পারতো। আবার খুনের পর গাড়িটিও নিজেরা নিয়ে যেত না। গ্রেপ্তারকৃতরা আসলে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য। পরিকল্পনা করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে চালককে হত্যা করে গাড়িটি ছিনতাই করেছে তারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ইকবাল হোছাইন জানান, সবুজবাগ থানার একটি মামলার সূত্র ধরে এই দুই কিলারকে তারা নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। পূর্বধলা থানার জাড়িয়া বাজার থেকে চালককে হত্যার পর ছিনিয়ে নেয়া প্রাইভেটকারটিও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা বড় কোন গাড়ি চুরি দলের সদস্য কিনা তা খতিয়ে দেখতে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি। গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, শনিবার এই দু’জনকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ২রা ডিসেম্বর রাতে জাহাঙ্গীর নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পর ভোর থেকে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিখা আক্তার বিষয়টি জানিয়ে রাজধানীর সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। পরে বিষয়টি আমলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিম অনুসন্ধান শুরু করে। পরে প্রযুক্তির সহযোগিতায় যারা গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল তাদের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল তিন জনের মধ্যে দুজনকে আটক করে। নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী শিখা আক্তার জানান, মাস দুয়েক আগে তার স্বামী আড়াই লাখ টাকা দিয়ে প্রাইভেটকারটি কেনে। আরও লাখ খানেক টাকা খরচ করে সেটি ঠিকঠাক করে ভাড়ায় চালানো শুরু করে। এর আগে তার স্বামী সিএনজি চালাতো। শিখা আক্তার জানান, কয়েক মাস আগে তাদের সিএনজিটি ছিনতাই হয়েছিল। পরে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সেটি ফেরত এনেছিল। এরপর সিএনজি বিক্রি করে প্রাইভেটকারটি কেনে। শিখা জানান, তার স্বামী খুব সহজ-সরল ছিল। রাতে সাধারণত ঢাকার বাইরে কোথাও গাড়ি নিয়ে যেত না। কিন্তু সেদিন তারা এত অনুনয়-বিনয় করে যে সে উপকার করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে দিল। শিখা জানান, তাদের জোনায়েদ নামে ছয় বছরের একটি সন্তান রয়েছে। তাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ থানার ডাঙ্গায়। বাসাবোর কদমতলার ৬৯/৪/সি/৩ নম্বর বাসায় স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন।
No comments