সৌদি জোটে যোগদান
সন্ত্রাসবিরোধী জোট যখনই হয়, তখন তাতে সাধারণত পশ্চিমা বিশ্ব নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। সেদিক থেকে মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সমন্বয়ে সন্ত্রাসবাদবিরোধী পৃথক জোট গঠন হতেই পারে। জাতিসংঘের বাইরে ওআইসি ও আরব লিগের মতো যদি আলাদা সংস্থা থাকতে পারে, তাহলে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে একটি ইসলামি জোট নিশ্চয় গতিশীল ভূমিকা রাখতে পারে। পবিত্র ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও ক্রমবর্ধমান রক্তপাত ও হানাহানি দেখে বিচলিত হয়ে সৌদি আরব যদি তার পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে এবং সে অনুযায়ী তারা যদি জঙ্গিবাদ দমনে একটি অভিন্ন রণকৌশল প্রণয়নে উদ্যোগী হয়, তাহলে তা বিশ্বমানবতার জন্য সুসংবাদ। তবে সৌদি আরবকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তাকে সতর্ক থাকতে হবে যে অহেতুক বিতর্কে জড়ানো তার জন্য অতিরিক্ত স্পর্শকাতর এবং মূল্যটা হবে অনেক চড়া। প্রস্তাবিত ‘ইসলামি সামরিক জোটের’ লক্ষ্য ও কর্মপ্রক্রিয়া পরিষ্কার নয়। এটা সত্যিই সুন্নি দেশগুলোর মোর্চা হলে তা আইএসবিরোধী কার্যক্রম কতটা এগিয়ে নেবে, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।
সৌদি আরব তথা মধ্যপ্রাচ্যের আরব নেতৃত্বকে একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল থাকতে হবে। এটা অবশ্যই প্রত্যাশিত নয় যে মুসলিম দেশগুলো সন্ত্রাসবিরোধী জোট গঠন করতে গিয়ে নতুন করে কোনো টানাপোড়েন বা বিভেদের মধ্যে জড়িয়ে পড়ুক। বাংলাদেশকে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে। কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এর আগে বাংলাদেশ ইয়েমেনের ‘অনির্বাচিত’ সরকারের পতনে সৌদি সামরিক জোটে গেছে। এবারও নীরবে তারা প্রস্তাবিত জোটে নাম লিখিয়েছে, এই ধারাটা গ্রহণযোগ্য নয়। অবিভক্ত পাকিস্তান বিভিন্ন সামরিক জোটে নাম লিখিয়ে চরম মূল্য দিয়েছিল। আমরা আশা করি, সরকার এ বিষয়ে অবিলম্বে একটি আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ নেবে। সিদ্ধান্ত অপরিণামদর্শী বা আগ বাড়ানো হলে তাকে দ্রুত শোধরাতে হবে। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীর যুক্তিমতে, এটা অবশ্যই ‘সৌদির প্রবাসী শ্রমিকদের আইএস থেকে বাঁচানোর উপায়’ হতে পারে না।
No comments