বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড গুলোর নেপথ্যে কারা?
বাংলাদেশে
ধারাবাহিক বেশ কিছু হত্যাকাণ্ডে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। এসব
হত্যার জন্য দায়ী কারা সে বিষয়ে খুব সামান্যই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি
দুই বিদেশী নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় নতুন করে বাংলাদেশে নিরাপত্তা
নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এসব হত্যার পেছনে দায়ী কে তা নিয়ে বিবিসির
সাংবাদিক আকবর হোসেন একটি প্রতিবেদন লিখেছেন। ‘হু ইজ বিহাইন্ড দ্য বাংলাদেশ
কিলিংস?’ বা বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ড গুলোর নেপথ্যে কে- শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে
তিনি বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে তার বিশ্লেষণ করেছেন।
ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গিরা কি হামলা চালিয়ে থাকতে পারে?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি লিখেছেন- ইতালির এনজিও কর্মী সিজার তাভেলা ও জাপানের খামারি কুনিও হোশির ওপর হামলা একই ধরনের। বলা হচ্ছে, দুটি ঘটনায়ই আইএস হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে দ্রুততার সঙ্গে দেশে আইএস থাকার কথা অস্বীকার করেছে সরকার। নিরাপত্তা বিষয়ক সূত্রগুলো বিশ্বাস করছে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশে আইএস কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন দাবির বিষয়ে তারা সন্দিহান। সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আন্ডারগ্রাউন্ডের প্রতিটি জঙ্গি সংগঠনের কিছু আন্তঃসম্পর্ক থাকে। কারণ, তারা একই আদর্শ পোষণ করে। তবে আমি নিশ্চিত নই, বিদেশী হত্যাকাণ্ডে আইএসের কোন যোগসূত্র আছে কিনা।
বিদেশীদের ওপর হামলার জন্য কাকে দায়ী করা হচ্ছে?
এ প্রশ্ন তুলে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা দুই বিদেশী নাগরিককে হত্যার জন্য বিরোধী দল বিএনপিকে দায়ী করেছেন। তবে বিএনপি তা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তকে ব্যাহত করবে। খুনিদের চিহ্নিত করতে পুলিশের ওপর রয়েছে আন্তর্জাতিক চাপ। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জঙ্গি গ্রুপগুলোর উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।
অন্য হামলাগুলোয়ও কি কোন যোগসূত্র আছে?
জবাবে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশে হত্যা করা হয়েছে চারজন ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারকে। অন্য হামলাগুলোও মুসলিম প্রধান এই দেশটির ধর্মনিরপেক্ষতায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহে দেশের উত্তরাঞ্চলে খ্রিষ্টান এক ধর্মযাজকের গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে হামলাকারীরা। এজন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা’আতুল মুজাহিদীনের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি ইসলামের সুফি মতবাদের একজন পরামর্শক ছিলেন। তিনি পীর হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। গত বছর আরও দুজন পীরকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ঘাতকদের কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক ভাষ্যকার তারেক শামসুর রেহমান বলেন, একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন না এমন স্বধর্মীয় লোকদের টার্গেট করে জঙ্গিরা। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধারার ইসলাম প্রচলিত। এ দেশটি সুন্নিপ্রধান দেশ। যদিও এসব হামলার ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা- হত্যা করা হয়েছে বিদেশীকে, বাংলাদেশীকে, মুসলিমকে, হামলা হয়েছে একজন খ্রিষ্টানের ওপর, হত্যা করা হয়েছে নাস্তিক ব্লগারদের- তবে পুলিশ মনে করে এসব হামলার মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, একই গ্রুপ ব্লগার ও পীরদের হত্যার জন্য দায়ী থাকতে পারে। ওই গ্রুপই খ্রিষ্টান ধর্মযাজকের ওপর হামলা করে থাকতে পারে। কারণ, হামলার ধরণটা হুবহু একই রকম। পুলিশের আরেকটি সূত্র বলেছেন, ব্লগার ও বিদেশী হত্যার মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে, যদিও খুনিরা একই গ্রুপের নয়। পুলিশ বলেছে, ব্লগার হত্যায় জড়িত কট্টরপন্থি ইসলামিক গ্রুপ আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। চার ব্লগার হত্যায় ১০ থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা সরাসরি ওই গ্রুপের সঙ্গে জড়িত থাকবে এমন কথা নেই।
জঙ্গি সহিংসতা উত্থানের নেপথ্যে কি?
হামলার নেপথ্যে যারা তাদের বিষয়টি অস্পষ্ট। তবে এটা পরিষ্কার, জঙ্গি গ্রুপগুলো ক্রমাগত সক্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে এখন কতগুলো মৌলবাদী গ্রুপ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তা কেউ জানে না। তবে নিরাপত্তাবিষয়ক একটি সূত্র বলেছেন, এমন গ্রুপের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫। গত বছরে পুলিশ বিভিন্ন ইসলামিক গ্রুপের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে শতাধিক ব্যক্তিকে। এছাড়া তারা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক বৃটিশ নাগরিকসহ প্রায় ২০ জনকে আটক করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, তারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তারেক শামসুর রেহমান মনে করেন, জঙ্গি গ্রুপে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অবস্থা একটি ফ্যাক্টর। তিনি বলেন, অনেক মানুষ দারিদ্র্যে বসবাস করছেন। তাই ধর্মের নাম করে মানুষকে জঙ্গি তৎপরতায় টানা খুব সহজ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক যে অসন্তোষ তার সুযোগ নিচ্ছে ইসলামপন্থি জঙ্গিরা। এ সুযোগে তারা পুনর্গঠিত হচ্ছে। জঙ্গি কর্মকাণ্ডকে দমন করার চেয়ে সরকারবিরোধী কর্মীদের দমনে বেশি সময় ব্যয় করছে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রধান বিরোধী দলীয় জোট বর্জন করায় শেখ হাসিনা সরকারের বিষয়ে কিছু পশ্চিমা দেশের খুঁতখুঁতানি আছে। বছরের প্রথম তিন মাসে দেশের বেশির ভাগ অংশে ছিল অবরোধ। এ অবরোধ দিয়ে বিরোধীরা নতুন নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। এ অস্থিরতায় নিহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জঙ্গি হুমকি অবজ্ঞা করা উচিত নয় বাংলাদেশের। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে প্রয়োজন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গিরা কি হামলা চালিয়ে থাকতে পারে?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি লিখেছেন- ইতালির এনজিও কর্মী সিজার তাভেলা ও জাপানের খামারি কুনিও হোশির ওপর হামলা একই ধরনের। বলা হচ্ছে, দুটি ঘটনায়ই আইএস হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে দ্রুততার সঙ্গে দেশে আইএস থাকার কথা অস্বীকার করেছে সরকার। নিরাপত্তা বিষয়ক সূত্রগুলো বিশ্বাস করছে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশে আইএস কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন দাবির বিষয়ে তারা সন্দিহান। সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আন্ডারগ্রাউন্ডের প্রতিটি জঙ্গি সংগঠনের কিছু আন্তঃসম্পর্ক থাকে। কারণ, তারা একই আদর্শ পোষণ করে। তবে আমি নিশ্চিত নই, বিদেশী হত্যাকাণ্ডে আইএসের কোন যোগসূত্র আছে কিনা।
বিদেশীদের ওপর হামলার জন্য কাকে দায়ী করা হচ্ছে?
এ প্রশ্ন তুলে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা দুই বিদেশী নাগরিককে হত্যার জন্য বিরোধী দল বিএনপিকে দায়ী করেছেন। তবে বিএনপি তা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিরপেক্ষ তদন্তকে ব্যাহত করবে। খুনিদের চিহ্নিত করতে পুলিশের ওপর রয়েছে আন্তর্জাতিক চাপ। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জঙ্গি গ্রুপগুলোর উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।
অন্য হামলাগুলোয়ও কি কোন যোগসূত্র আছে?
জবাবে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশে হত্যা করা হয়েছে চারজন ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারকে। অন্য হামলাগুলোও মুসলিম প্রধান এই দেশটির ধর্মনিরপেক্ষতায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহে দেশের উত্তরাঞ্চলে খ্রিষ্টান এক ধর্মযাজকের গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে হামলাকারীরা। এজন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা’আতুল মুজাহিদীনের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি ইসলামের সুফি মতবাদের একজন পরামর্শক ছিলেন। তিনি পীর হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। গত বছর আরও দুজন পীরকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ঘাতকদের কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক ভাষ্যকার তারেক শামসুর রেহমান বলেন, একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন না এমন স্বধর্মীয় লোকদের টার্গেট করে জঙ্গিরা। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধারার ইসলাম প্রচলিত। এ দেশটি সুন্নিপ্রধান দেশ। যদিও এসব হামলার ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা- হত্যা করা হয়েছে বিদেশীকে, বাংলাদেশীকে, মুসলিমকে, হামলা হয়েছে একজন খ্রিষ্টানের ওপর, হত্যা করা হয়েছে নাস্তিক ব্লগারদের- তবে পুলিশ মনে করে এসব হামলার মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, একই গ্রুপ ব্লগার ও পীরদের হত্যার জন্য দায়ী থাকতে পারে। ওই গ্রুপই খ্রিষ্টান ধর্মযাজকের ওপর হামলা করে থাকতে পারে। কারণ, হামলার ধরণটা হুবহু একই রকম। পুলিশের আরেকটি সূত্র বলেছেন, ব্লগার ও বিদেশী হত্যার মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে, যদিও খুনিরা একই গ্রুপের নয়। পুলিশ বলেছে, ব্লগার হত্যায় জড়িত কট্টরপন্থি ইসলামিক গ্রুপ আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। চার ব্লগার হত্যায় ১০ থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা সরাসরি ওই গ্রুপের সঙ্গে জড়িত থাকবে এমন কথা নেই।
জঙ্গি সহিংসতা উত্থানের নেপথ্যে কি?
হামলার নেপথ্যে যারা তাদের বিষয়টি অস্পষ্ট। তবে এটা পরিষ্কার, জঙ্গি গ্রুপগুলো ক্রমাগত সক্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে এখন কতগুলো মৌলবাদী গ্রুপ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তা কেউ জানে না। তবে নিরাপত্তাবিষয়ক একটি সূত্র বলেছেন, এমন গ্রুপের সংখ্যা ১০ থেকে ১৫। গত বছরে পুলিশ বিভিন্ন ইসলামিক গ্রুপের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে শতাধিক ব্যক্তিকে। এছাড়া তারা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক বৃটিশ নাগরিকসহ প্রায় ২০ জনকে আটক করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, তারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তারেক শামসুর রেহমান মনে করেন, জঙ্গি গ্রুপে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অবস্থা একটি ফ্যাক্টর। তিনি বলেন, অনেক মানুষ দারিদ্র্যে বসবাস করছেন। তাই ধর্মের নাম করে মানুষকে জঙ্গি তৎপরতায় টানা খুব সহজ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক যে অসন্তোষ তার সুযোগ নিচ্ছে ইসলামপন্থি জঙ্গিরা। এ সুযোগে তারা পুনর্গঠিত হচ্ছে। জঙ্গি কর্মকাণ্ডকে দমন করার চেয়ে সরকারবিরোধী কর্মীদের দমনে বেশি সময় ব্যয় করছে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রধান বিরোধী দলীয় জোট বর্জন করায় শেখ হাসিনা সরকারের বিষয়ে কিছু পশ্চিমা দেশের খুঁতখুঁতানি আছে। বছরের প্রথম তিন মাসে দেশের বেশির ভাগ অংশে ছিল অবরোধ। এ অবরোধ দিয়ে বিরোধীরা নতুন নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। এ অস্থিরতায় নিহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জঙ্গি হুমকি অবজ্ঞা করা উচিত নয় বাংলাদেশের। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে প্রয়োজন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
No comments