দেশে বিচারহীনতা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে -ত্বকী মঞ্চের গোলটেবিল বৈঠকে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা। ছবিটি আজ জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে তোলা। ছবি: ফোকাস বাংলা |
শিক্ষাবিদ
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকদের দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর
সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে এই দুই গোষ্ঠীর বিভক্তির কারণে
সাধারণ মানুষের দাঁড়ানোর মতো কোনো স্থান থাকছে না। এই সুযোগে ত্বকীর মতো
নিষ্পাপ শিশুরা খুন হচ্ছে। দেশে বিচারহীনতা এখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত ‘ত্বকী হত্যার বিচারে রাষ্ট্রের অনীহা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। তিনি ত্বকী হত্যার বিচার না হওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে দায়ী করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশকে পেছনে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। বুদ্ধিজীবীদের এক পক্ষ ‘শত’ গঠন করছেন। অন্য পক্ষ দশ গুন বাড়িয়ে ‘সহস্র’ গঠন করছেন। তাঁদের লক্ষ্য নিজ নিজ রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় বসানো, অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করার সময় তাঁদের নেই। ত্বকীর হত্যা নিয়ে কথা বলার সময় তাঁদের নেই। তিনি বলেন, সাংবাদিকেরাও একই দোষে দুষ্ট। তাঁরাও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভক্ত। অথচ অতীতে দেশের প্রয়োজনে সব সময় সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। এখন শোনা যাচ্ছে জাতীয় প্রেসক্লাবও না কি দুই ভাগ হচ্ছে। গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, রিপোর্টাররা পরিশ্রম করে, নির্যাতন সহ্য করে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে। কিন্তু গণমাধ্যমের মালিকেরা তা প্রকাশ করেন না। কেননা গণমাধ্যম এখন আর সাংবাদিক দ্বারা পরিচালিত নয়, মালিকেরা নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য গণমাধ্যম গড়ে তোলেন।
সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, একটি চিঠি আদালত থেকে জেলে পৌঁছাতে সাত দিন লেগে যাচ্ছে। এর অর্থ সাধারণ মানুষ বোঝে। সরকার তলে তলে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছে। সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ সব হিংসার মূলে থাকছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর সেনবাহিনীকে তুষ্ট করতে টাকা দেওয়া হয়েছে। এখন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে নিজের জায়গা ঠিক রাখছে সরকার।
অজয় রায় বলেন, ত্বকীর হত্যার বিচার রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কারণে হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী এমন একটি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন যাদের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান কর্মকাণ্ড মোটেই ভালো না।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, রাষ্ট্র খুনিদের রক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কলঙ্কিত করেছে, আর এদের কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দীর্ঘ মেয়াদে বাধার সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান বলেন, মঞ্জুর হত্যা মামলার তারিখ নির্ধারণ হয় স্বৈরাচারী এরশাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্কের ভিত্তিতে। সম্পর্ক খারাপ হলে তারিখ পড়ে। আবার ভালো হলে তারিখের কোনো খবর থাকে না। তিনি বলেন, দেশে এখন এক ব্যক্তির স্বৈরাচারী শাসন চলছে।
সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সরকার অপরাধীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হককে তিনি কলম প্রস্তুত রাখতে বলেছেন, কেন না তাঁকে প্রচুর টেন্ডারে স্বাক্ষর করতে হবে। তিনি জনগণের ভোটে নয় বরং টেন্ডারবাজ ও সন্ত্রাসীদের ক্ষমতার জোরে নির্বাচনে জিতেছেন।
গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ। তিনি বলেন, তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে দুই বছর আগে ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে অপহরণ করা হয়। এর দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। গত বছর এই হত্যার অভিযোগপত্র তৈরি করে র্যাব। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তা আদালতে দাখিল করা হয়নি।
ত্বকীর বাবা ও মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী প্রমুখ।
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত ‘ত্বকী হত্যার বিচারে রাষ্ট্রের অনীহা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন। তিনি ত্বকী হত্যার বিচার না হওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে দায়ী করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশকে পেছনে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। বুদ্ধিজীবীদের এক পক্ষ ‘শত’ গঠন করছেন। অন্য পক্ষ দশ গুন বাড়িয়ে ‘সহস্র’ গঠন করছেন। তাঁদের লক্ষ্য নিজ নিজ রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় বসানো, অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করার সময় তাঁদের নেই। ত্বকীর হত্যা নিয়ে কথা বলার সময় তাঁদের নেই। তিনি বলেন, সাংবাদিকেরাও একই দোষে দুষ্ট। তাঁরাও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভক্ত। অথচ অতীতে দেশের প্রয়োজনে সব সময় সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। এখন শোনা যাচ্ছে জাতীয় প্রেসক্লাবও না কি দুই ভাগ হচ্ছে। গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, রিপোর্টাররা পরিশ্রম করে, নির্যাতন সহ্য করে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে। কিন্তু গণমাধ্যমের মালিকেরা তা প্রকাশ করেন না। কেননা গণমাধ্যম এখন আর সাংবাদিক দ্বারা পরিচালিত নয়, মালিকেরা নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য গণমাধ্যম গড়ে তোলেন।
সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, একটি চিঠি আদালত থেকে জেলে পৌঁছাতে সাত দিন লেগে যাচ্ছে। এর অর্থ সাধারণ মানুষ বোঝে। সরকার তলে তলে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছে। সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ সব হিংসার মূলে থাকছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর সেনবাহিনীকে তুষ্ট করতে টাকা দেওয়া হয়েছে। এখন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে নিজের জায়গা ঠিক রাখছে সরকার।
অজয় রায় বলেন, ত্বকীর হত্যার বিচার রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কারণে হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী এমন একটি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন যাদের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান কর্মকাণ্ড মোটেই ভালো না।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, রাষ্ট্র খুনিদের রক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কলঙ্কিত করেছে, আর এদের কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দীর্ঘ মেয়াদে বাধার সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান বলেন, মঞ্জুর হত্যা মামলার তারিখ নির্ধারণ হয় স্বৈরাচারী এরশাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্কের ভিত্তিতে। সম্পর্ক খারাপ হলে তারিখ পড়ে। আবার ভালো হলে তারিখের কোনো খবর থাকে না। তিনি বলেন, দেশে এখন এক ব্যক্তির স্বৈরাচারী শাসন চলছে।
সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সরকার অপরাধীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে বিচার হচ্ছে না। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হককে তিনি কলম প্রস্তুত রাখতে বলেছেন, কেন না তাঁকে প্রচুর টেন্ডারে স্বাক্ষর করতে হবে। তিনি জনগণের ভোটে নয় বরং টেন্ডারবাজ ও সন্ত্রাসীদের ক্ষমতার জোরে নির্বাচনে জিতেছেন।
গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ। তিনি বলেন, তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে দুই বছর আগে ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে অপহরণ করা হয়। এর দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। গত বছর এই হত্যার অভিযোগপত্র তৈরি করে র্যাব। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তা আদালতে দাখিল করা হয়নি।
ত্বকীর বাবা ও মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিলে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী প্রমুখ।
No comments