ধর্মনিরপেক্ষ ও বামপন্থিদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে জামায়াত -ভারতীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর বই থেকে
ভারতীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মাইদুল ইসলামের মতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রশ্নে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী উদ্বিগ্ন। জামায়াত নেতারা মনে করেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে জামায়াতের বিরুদ্ধে একটি ‘আমেরিকান ষড়যন্ত্র’ হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে আনতে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল। গত মার্চে ক্যাম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রকাশিত ‘লিমিটস অব ইসলামিজম জামায়াত-ই-ইসলামী ইন কনটেম্পরারি ইন্ডিয়া এন্ড বাংলাদেশ’ বইয়ে ওই মন্তব্য ছাপা হয়েছে। বইটির লেখক কলকাতা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ওই বইটি মূলত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল থিসিস, লেখক মর্যাদা সম্পন্ন ক্লারেনডন বৃত্তি পান। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তিনি থিসিসটি লিখেছেন, যেটি এখন বই আকারে বের হয়েছে।
অধ্যাপক মাইদুল দাবি করেছেন যে, ‘২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জুনের মধ্যে আমি যেসব জামায়াত নেতার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি তাদের অধিকাংশই এই ধারণা দিয়েছেন যে, তারা সবাই ২০০৮ সালের নির্বাচনে একটি ‘আমেরিকান ষড়যন্ত্রের’ কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। জামায়াত নেতারা মনে করেন, আমেরিকানরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতবিরোধী ভূমিকা রেখেছিল। যদিও তারা ঘরোয়াভাবে এটাও স্বীকার করেন যে, ওই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির মূলে রয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য গড়া।’
এরপর অধ্যাপক মাইদুল উল্লেখ করেন যে, ‘সে কারণেই তারা প্রকাশ্যে এই অবস্থান বজায় রেখে চলছে যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে কারচুপি ঘটেছে সেটা ‘আমেরিকান ষড়যন্ত্রের’ ফসল। জামায়াত নেতারা যুক্তি দেখান যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমেরিকান স্টাবলিশমেন্ট, স্থানীয় সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগের সহায়তায় ‘কারচুপি’ হয়েছিল। যখন তাদের জিজ্ঞেস করা হলো যে, এ ধরনের ঘটনা কেন কেবল তাদের বিরুদ্ধে ঘটল, কেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঘটল না, জামায়াত নেতারা তখন তার উত্তর দিতে পারেননি। অন্যকথায় বলা চলে, জামায়াত নেতারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় হতভম্ব হয়ে পড়েছিল আর সেকারণেই তারা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এর আড়ালে আশ্রয় নিয়েছেন।’
উল্লেখ্য যে, ৩৪৫ পৃষ্ঠার এই বইটিতে অধ্যাপক ইসলাম বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের জামায়াত ও বাংলাদেশের জামায়াতের মধ্যে একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ইসলাম লিখেছেন, ‘ভারতীয় জামায়াতের মতো বাংলাদেশী জামায়াত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী ভূমিকার বিষয়ে কম সরব রয়েছে। অথচ ভারতীয় জামায়াত আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন ভূমিকা রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতের তুলনায় অনেক বেশি উচ্চকিত থাকছে।’
তার বর্ণনায়, ‘ভারতীয় জামায়াত সাম্প্রতিককালে যখন ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক এবং বামপন্থিদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষ এবং বামপন্থি সংগঠনগুলোকে তাদের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটা খুবই নির্দিষ্ট কারণ, ভারত ও বাংলাদেশের দুটি আলাদা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা একই শক্তিকে মিত্র ও শত্রু হিসেবে ঠাহর করছে। ভারতীয় জামায়াত মনে করে হিন্দুত্ববাদের আড়ালে রয়েছে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বা ‘সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদ’। এবং ‘মার্কিন আধিপত্যবাদ’, ‘নয়া উদারনৈতিক আর্থিকনীতি’, ‘কর্পোরেট বিশ্বায়ন’ প্রভৃতি। আর এই দুটিকেই ভারতীয় জামায়াত মনে করে, এসব যে কেবল ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধাচরণ করছে তাই নয়, এসব সার্বিক বিচারে ভারতীয় জনগণের স্বার্থের পরিপন্থি। এর বিপরীতে বাংলাদেশী জামায়াত ধর্মনিরপেক্ষ ও বামপন্থিদের শক্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আর তারা একই সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, এই বামপন্থিদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নয়া উদারনৈতিকতাবাদ এবং কর্পোরেট বিশ্বায়ন সংক্রান্ত অর্থনৈতিক ইস্যুসমূহ প্রায় অনুপস্থিত।’
অধ্যাপক মাইদুল দাবি করেছেন যে, ‘২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জুনের মধ্যে আমি যেসব জামায়াত নেতার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি তাদের অধিকাংশই এই ধারণা দিয়েছেন যে, তারা সবাই ২০০৮ সালের নির্বাচনে একটি ‘আমেরিকান ষড়যন্ত্রের’ কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। জামায়াত নেতারা মনে করেন, আমেরিকানরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতবিরোধী ভূমিকা রেখেছিল। যদিও তারা ঘরোয়াভাবে এটাও স্বীকার করেন যে, ওই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির মূলে রয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য গড়া।’
এরপর অধ্যাপক মাইদুল উল্লেখ করেন যে, ‘সে কারণেই তারা প্রকাশ্যে এই অবস্থান বজায় রেখে চলছে যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে কারচুপি ঘটেছে সেটা ‘আমেরিকান ষড়যন্ত্রের’ ফসল। জামায়াত নেতারা যুক্তি দেখান যে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমেরিকান স্টাবলিশমেন্ট, স্থানীয় সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগের সহায়তায় ‘কারচুপি’ হয়েছিল। যখন তাদের জিজ্ঞেস করা হলো যে, এ ধরনের ঘটনা কেন কেবল তাদের বিরুদ্ধে ঘটল, কেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঘটল না, জামায়াত নেতারা তখন তার উত্তর দিতে পারেননি। অন্যকথায় বলা চলে, জামায়াত নেতারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় হতভম্ব হয়ে পড়েছিল আর সেকারণেই তারা ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এর আড়ালে আশ্রয় নিয়েছেন।’
উল্লেখ্য যে, ৩৪৫ পৃষ্ঠার এই বইটিতে অধ্যাপক ইসলাম বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের জামায়াত ও বাংলাদেশের জামায়াতের মধ্যে একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা করেছেন।
অধ্যাপক ইসলাম লিখেছেন, ‘ভারতীয় জামায়াতের মতো বাংলাদেশী জামায়াত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী ভূমিকার বিষয়ে কম সরব রয়েছে। অথচ ভারতীয় জামায়াত আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন ভূমিকা রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতের তুলনায় অনেক বেশি উচ্চকিত থাকছে।’
তার বর্ণনায়, ‘ভারতীয় জামায়াত সাম্প্রতিককালে যখন ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক এবং বামপন্থিদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষ এবং বামপন্থি সংগঠনগুলোকে তাদের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটা খুবই নির্দিষ্ট কারণ, ভারত ও বাংলাদেশের দুটি আলাদা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারা একই শক্তিকে মিত্র ও শত্রু হিসেবে ঠাহর করছে। ভারতীয় জামায়াত মনে করে হিন্দুত্ববাদের আড়ালে রয়েছে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ বা ‘সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদ’। এবং ‘মার্কিন আধিপত্যবাদ’, ‘নয়া উদারনৈতিক আর্থিকনীতি’, ‘কর্পোরেট বিশ্বায়ন’ প্রভৃতি। আর এই দুটিকেই ভারতীয় জামায়াত মনে করে, এসব যে কেবল ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধাচরণ করছে তাই নয়, এসব সার্বিক বিচারে ভারতীয় জনগণের স্বার্থের পরিপন্থি। এর বিপরীতে বাংলাদেশী জামায়াত ধর্মনিরপেক্ষ ও বামপন্থিদের শক্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আর তারা একই সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, এই বামপন্থিদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নয়া উদারনৈতিকতাবাদ এবং কর্পোরেট বিশ্বায়ন সংক্রান্ত অর্থনৈতিক ইস্যুসমূহ প্রায় অনুপস্থিত।’
No comments