সেশনজটে পিষ্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা by মোশতাক আহমেদ
অধ্যয়নরত
২০ লাখ শিক্ষার্থীই সেশনজটের জাঁতাকলে পিষ্ট। এখানে চার বছরের সম্মান ও এক
বছরের মাস্টার্স শেষ করতে সময় লাগছে কমপক্ষে সাত বছর
তানভীর মাহমুদ ২০১০ সালে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করে ২০১১-১২ সেশনে সম্মানে ভর্তি হয়েছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর তিতুমীর কলেজে কমার্সের একটি বিভাগে। এইচএসসি পাসের পাঁচ বছর পর ২০১৫ সালে এসে তিনি এখন মাত্র দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছেন। অথচ একই বছর এইচএসসি পাস করা তাঁর এক বন্ধু একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে এমবিএতে পড়ছেন। হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলছিলেন, কবে অনার্স পাস করতে পারব জানি না, চাকরি তো দূরের কথা।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত ২০ লাখশিক্ষার্থীই সেশনজটের জাঁতাকলে পিষ্ট। এখানে চার বছরের সম্মান ও এক বছরের মাস্টার্স শেষ করতে সময় লাগছে কমপক্ষে সাত বছর। গত বছর প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটকে ‘গুরুতর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সমস্যা মেটাতে অধিভুক্ত স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পড়ানো হয়, এমন সরকারি কলেজগুলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ঢিলেমি করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি।
গত বছরের ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ওই নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৭ ডিসেম্বর ইউজিসিতে উপাচার্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় পক্ষে মত এলে তা বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান করা হয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মাদ মোহাব্বত খানকে। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ মাস পরও দিতে পারেনি।
জানতে চাইলে কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মোহাব্বত খান স্বীকার করে বলেন, তাঁরা খুব এগোতে পারেননি। তবে প্রাথমিক কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ জন্য যে সময় ও যাদের দরকার তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।
তানভীর মাহমুদ ২০১০ সালে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস করে ২০১১-১২ সেশনে সম্মানে ভর্তি হয়েছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর তিতুমীর কলেজে কমার্সের একটি বিভাগে। এইচএসসি পাসের পাঁচ বছর পর ২০১৫ সালে এসে তিনি এখন মাত্র দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছেন। অথচ একই বছর এইচএসসি পাস করা তাঁর এক বন্ধু একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে এমবিএতে পড়ছেন। হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলছিলেন, কবে অনার্স পাস করতে পারব জানি না, চাকরি তো দূরের কথা।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত ২০ লাখশিক্ষার্থীই সেশনজটের জাঁতাকলে পিষ্ট। এখানে চার বছরের সম্মান ও এক বছরের মাস্টার্স শেষ করতে সময় লাগছে কমপক্ষে সাত বছর। গত বছর প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটকে ‘গুরুতর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সমস্যা মেটাতে অধিভুক্ত স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) পড়ানো হয়, এমন সরকারি কলেজগুলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ঢিলেমি করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি।
গত বছরের ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ওই নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৭ ডিসেম্বর ইউজিসিতে উপাচার্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় পক্ষে মত এলে তা বাস্তবায়নে একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান করা হয় ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মাদ মোহাব্বত খানকে। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ মাস পরও দিতে পারেনি।
জানতে চাইলে কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মোহাব্বত খান স্বীকার করে বলেন, তাঁরা খুব এগোতে পারেননি। তবে প্রাথমিক কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ জন্য যে সময় ও যাদের দরকার তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।
ইউজিসির সূত্র জানায়, ওই সভার পর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ সেশনজট কমানোর লক্ষ্যে ‘ক্র্যাশ’ প্রোগ্রামসহ বেশ কিছু উদ্যোগের
কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি কলেজগুলো যাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে না
যায়, সে জন্য সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বোঝানোর চেষ্টা
করছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক (৪৮ শতাংশ) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে পড়ছেন। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজ আছে ২ হাজার ১৫৪টি। এর মধ্যে ২৭৯টি সরকারি কলেজ। স্নাতক (সম্মান) পড়ানো ১৮১টি সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ২৬ হাজার। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সম্মান পড়ানো কলেজের সংখ্যা ৫৫৭টি। উপাচার্য হারুন–অর রশিদ জানান, সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।
সেশনজটই যেন স্বাভাবিক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, ঢাকা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলিয়ে অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষেই সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সেশনজটের কবলে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে করে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশসহ নানাভাবেই পিছিয়ে পড়ছেন। দেশের অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট কমলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে না কমায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দিন দিন বাড়ছে।
১১ মে ঢাকা কলেজে গিয়ে কথা হয় হিসাবরক্ষণ বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ সাহার সঙ্গে। তিনি জানান, ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৯-১০ সেশনে ওই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে চললে ২০১৩ সালে তাঁর অনার্স পরীক্ষা হওয়ার কথা, কিন্তু তাঁর এখনো পরীক্ষাই হয়নি।
অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত নাজমুল হাসান বলেন, এখানে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে অন্তত ১৮ মাস লেগে যায়। পরে আরও কয়েক মাস যুক্ত হয়। নাজমুল বলেন, এখানে কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।
ময়মনসিংহে অবস্থিত আনন্দ মোহন কলেজের ইংরেজি বিষয়ে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি ২০০৭ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা এখনো মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি।
জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছর ধরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছেন। ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ নেওয়ার পর তাঁরা এর সুফল পেতে শুরু করেছেন। এখন দুই-তিন মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হচ্ছে। ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন হলে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর সেশনজট থাকবে না।
সমস্যার শেষ নেই: কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে বছরের অর্ধেক সময়ই ক্লাস হয় না। এইচএসসির মতো পরীক্ষার সময় অনেক কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে কোনো কোনো কলেজে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস নেওয়া হয়। অন্যান্য পরীক্ষার সময়ও ঠিকমতো ক্লাস হয় না।
ঠিকমতো ক্লাস না হওয়ায় কমার্স ও বিজ্ঞানের কিছু বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ‘বাধ্যতামূলকভাবে’ প্রাইভেট পড়তে হয়। ঢাকা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, তিনি তিনটি কোর্সে প্রাইভেট পড়েন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, অনুমোদিত পদের চেয়ে প্রায় তিন হাজার শিক্ষক কম আছে কেবল সরকারি কলেজগুলোতেই। আবার শিক্ষা কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে থাকলেও শিক্ষকদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। নিয়ন্ত্রণের কাজটি করে মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত দুই হাজারের বেশি কলেজ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ‘দুরূহ’ কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাও স্বীকার করেন, তাঁরা কলেজগুলোকে ঠিকমতো তদারক করতে পারছেন না।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক (৪৮ শতাংশ) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে পড়ছেন। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজ আছে ২ হাজার ১৫৪টি। এর মধ্যে ২৭৯টি সরকারি কলেজ। স্নাতক (সম্মান) পড়ানো ১৮১টি সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ ২৬ হাজার। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সম্মান পড়ানো কলেজের সংখ্যা ৫৫৭টি। উপাচার্য হারুন–অর রশিদ জানান, সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।
সেশনজটই যেন স্বাভাবিক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা, ঢাকা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ, ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলিয়ে অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষেই সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সেশনজটের কবলে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে করে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশসহ নানাভাবেই পিছিয়ে পড়ছেন। দেশের অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট কমলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে না কমায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দিন দিন বাড়ছে।
১১ মে ঢাকা কলেজে গিয়ে কথা হয় হিসাবরক্ষণ বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ সাহার সঙ্গে। তিনি জানান, ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৯-১০ সেশনে ওই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে চললে ২০১৩ সালে তাঁর অনার্স পরীক্ষা হওয়ার কথা, কিন্তু তাঁর এখনো পরীক্ষাই হয়নি।
অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত নাজমুল হাসান বলেন, এখানে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে অন্তত ১৮ মাস লেগে যায়। পরে আরও কয়েক মাস যুক্ত হয়। নাজমুল বলেন, এখানে কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।
ময়মনসিংহে অবস্থিত আনন্দ মোহন কলেজের ইংরেজি বিষয়ে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি ২০০৭ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা এখনো মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি।
জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছর ধরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছেন। ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ নেওয়ার পর তাঁরা এর সুফল পেতে শুরু করেছেন। এখন দুই-তিন মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হচ্ছে। ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন হলে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর সেশনজট থাকবে না।
সমস্যার শেষ নেই: কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে বছরের অর্ধেক সময়ই ক্লাস হয় না। এইচএসসির মতো পরীক্ষার সময় অনেক কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে কোনো কোনো কলেজে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস নেওয়া হয়। অন্যান্য পরীক্ষার সময়ও ঠিকমতো ক্লাস হয় না।
ঠিকমতো ক্লাস না হওয়ায় কমার্স ও বিজ্ঞানের কিছু বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ‘বাধ্যতামূলকভাবে’ প্রাইভেট পড়তে হয়। ঢাকা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, তিনি তিনটি কোর্সে প্রাইভেট পড়েন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, অনুমোদিত পদের চেয়ে প্রায় তিন হাজার শিক্ষক কম আছে কেবল সরকারি কলেজগুলোতেই। আবার শিক্ষা কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে থাকলেও শিক্ষকদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। নিয়ন্ত্রণের কাজটি করে মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত দুই হাজারের বেশি কলেজ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ‘দুরূহ’ কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাও স্বীকার করেন, তাঁরা কলেজগুলোকে ঠিকমতো তদারক করতে পারছেন না।
No comments