রাজশাহীতে একের পর এক পুকুর ভরাট
রাজশাহী নগরের দেবিশিংপাড়া এলাকার এই পুকুরটিও গতকাল থেকে ভরাট করা শুরু হয়েছে l ছবি: প্রথম আলো |
আদালতের
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজশাহী নগরে একের পর এক পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।
অতীতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি মামলাও
করা হয়েছে। সম্প্রতি আর সেই উদ্যোগও নেই। ফলে অবৈধভাবে পুকুর ভরাট চলছেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে নগরের দেবিশিংপাড়া এলাকায় একটি পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। দুটি বড় ট্রলিতে করে মাটি এনে পুকুরে ফেলা হচ্ছে। বেশ আগে থেকেই পুকুরটির চারদিক থেকে দখল করে বাড়িঘর করা হয়েছে। পশ্চিম ও পূর্ব পাশে খানিকটা জায়গা ফাঁকা ছিল। গতকাল সকালে পুকুরটির পশ্চিম পাড়ের ওই ফাঁকা জায়গাটি দিয়ে মাটি ফেলতে দেখা যায়। বিকেলে পূর্ব পাশেও মাটি ফেলা শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক ছাড়া পুকুরটির মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। একজন শ্রমিকের কাছ থেকে যতটুকু জানা গেছে, করিম নামের এক ব্যক্তি তাঁদের মাটি ভরাটের কাজে নিয়োগ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুকুর ভরাট করছেন আব্দুস সালাম ও তাঁর অংশীদারেরা। অংশীদারদের মধ্যে শুধু আব্দুস সালামকে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তাঁদের শরিকদের চলাচলের সুবিধার্থে পুকুরের মাঝখান দিয়ে একটি রাস্তা তৈরি করার জন্য ভরাট করছেন। পরিবেশ আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ—বিষয়টি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, তিনি সেটা জানেন। তিনি স্বীকার করেন, তাঁদের পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে তাঁরা রাস্তাটি করলে সিটি করপোরেশনও ব্যবহার করতে পারবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নূর আলম বলেন, তাঁরা পুকুরটি পরিদর্শন করবেন। নোটিশ দেওয়া বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁরা পরিদর্শন করবেন, আপাতত এইটুকুই বলতে পারেন। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০-এর ২-এর (ক) এবং ৬ ঙ ধারা মোতাবেক অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতিরেকে জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। পুকুর ভরাটের কাজ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া রাজশাহী মহানগরের ভেতরে পুকুর ভরাট বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট মামলায় রুল জারি রয়েছে। মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের জলাশয় ভরাট বন্ধ রাখার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তার পরও রাজশাহীতে বেপরোয়াভাবে পুকুর ভরাট চলছেই। গত মাসে নগরের বিসিক এলাকায় একটি পুকুরের অংশবিশেষ ভরাট করে ভবন সম্প্রসারণের কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে এলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
গত জানুয়ারিতে নগরের গৌরহাঙ্গা এলাকায় একটি পুকুর ভরাট করা হয়। এই পুকুরটির উত্তর পাশে গৌরহাঙ্গা গোরস্থান। দক্ষিণ পাড়ে একটি মাদ্রাসা। কবরস্থানে আসা মানুষ যাতে পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১৯৯৮ সালে উত্তর পাশে একটি পাকা ঘাট করে দেওয়া হয়েছে। ঘাটের নাম দেওয়া হয় গৌরহাঙ্গা গোরস্থান ঘাট।
গত নভেম্বরে নগরের রামচন্দ্রপুর এলাকায় একটি পুকুরের অংশবিশেষ ভরাট করে ফেলা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোতে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। অধিদপ্তরের লোকজন চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ভরাটকাজের সঙ্গে জড়িত লোকজন নোটিশটি তুলে ফেলে দেয়। এর এক দিন পরেই ওই এলাকায় আরও একটি পুকুর ভরাট করা হয়। পুকুর ভরাট নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রাজশাহীতে তিনটি মামলা করা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে নগরের মুন্সিডাঙ্গা এলাকার ফাহিম মুন্সীকে বিবাদী করে সর্বশেষ মামলাটি করা হয়েছে। এর আগে নগরের সাগরপাড়া মৌজার সাগরপাড়া মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডসংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করার অভিযোগে এর মালিক মঞ্জুর ফারুক চৌধুরীর নামে নগরের বোয়ালিয়া থানায় অপর একটি মামলা হয়েছে।
প্রথম মামলাটি করা হয় গত বছরের এপ্রিলে। মামলায় নগরের রেশমপট্টি এলাকার রামপুর মৌজার একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগে বোয়ালিয়াপাড়ার গোলাম কিবরিয়াসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে নগরের দেবিশিংপাড়া এলাকায় একটি পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। দুটি বড় ট্রলিতে করে মাটি এনে পুকুরে ফেলা হচ্ছে। বেশ আগে থেকেই পুকুরটির চারদিক থেকে দখল করে বাড়িঘর করা হয়েছে। পশ্চিম ও পূর্ব পাশে খানিকটা জায়গা ফাঁকা ছিল। গতকাল সকালে পুকুরটির পশ্চিম পাড়ের ওই ফাঁকা জায়গাটি দিয়ে মাটি ফেলতে দেখা যায়। বিকেলে পূর্ব পাশেও মাটি ফেলা শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক ছাড়া পুকুরটির মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। একজন শ্রমিকের কাছ থেকে যতটুকু জানা গেছে, করিম নামের এক ব্যক্তি তাঁদের মাটি ভরাটের কাজে নিয়োগ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুকুর ভরাট করছেন আব্দুস সালাম ও তাঁর অংশীদারেরা। অংশীদারদের মধ্যে শুধু আব্দুস সালামকে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তাঁদের শরিকদের চলাচলের সুবিধার্থে পুকুরের মাঝখান দিয়ে একটি রাস্তা তৈরি করার জন্য ভরাট করছেন। পরিবেশ আইনে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ—বিষয়টি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, তিনি সেটা জানেন। তিনি স্বীকার করেন, তাঁদের পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে তাঁরা রাস্তাটি করলে সিটি করপোরেশনও ব্যবহার করতে পারবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নূর আলম বলেন, তাঁরা পুকুরটি পরিদর্শন করবেন। নোটিশ দেওয়া বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁরা পরিদর্শন করবেন, আপাতত এইটুকুই বলতে পারেন। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০-এর ২-এর (ক) এবং ৬ ঙ ধারা মোতাবেক অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতিরেকে জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। পুকুর ভরাটের কাজ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া রাজশাহী মহানগরের ভেতরে পুকুর ভরাট বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট মামলায় রুল জারি রয়েছে। মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের জলাশয় ভরাট বন্ধ রাখার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তার পরও রাজশাহীতে বেপরোয়াভাবে পুকুর ভরাট চলছেই। গত মাসে নগরের বিসিক এলাকায় একটি পুকুরের অংশবিশেষ ভরাট করে ভবন সম্প্রসারণের কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে এলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
গত জানুয়ারিতে নগরের গৌরহাঙ্গা এলাকায় একটি পুকুর ভরাট করা হয়। এই পুকুরটির উত্তর পাশে গৌরহাঙ্গা গোরস্থান। দক্ষিণ পাড়ে একটি মাদ্রাসা। কবরস্থানে আসা মানুষ যাতে পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১৯৯৮ সালে উত্তর পাশে একটি পাকা ঘাট করে দেওয়া হয়েছে। ঘাটের নাম দেওয়া হয় গৌরহাঙ্গা গোরস্থান ঘাট।
গত নভেম্বরে নগরের রামচন্দ্রপুর এলাকায় একটি পুকুরের অংশবিশেষ ভরাট করে ফেলা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোতে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। অধিদপ্তরের লোকজন চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ভরাটকাজের সঙ্গে জড়িত লোকজন নোটিশটি তুলে ফেলে দেয়। এর এক দিন পরেই ওই এলাকায় আরও একটি পুকুর ভরাট করা হয়। পুকুর ভরাট নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রাজশাহীতে তিনটি মামলা করা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে নগরের মুন্সিডাঙ্গা এলাকার ফাহিম মুন্সীকে বিবাদী করে সর্বশেষ মামলাটি করা হয়েছে। এর আগে নগরের সাগরপাড়া মৌজার সাগরপাড়া মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডসংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করার অভিযোগে এর মালিক মঞ্জুর ফারুক চৌধুরীর নামে নগরের বোয়ালিয়া থানায় অপর একটি মামলা হয়েছে।
প্রথম মামলাটি করা হয় গত বছরের এপ্রিলে। মামলায় নগরের রেশমপট্টি এলাকার রামপুর মৌজার একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগে বোয়ালিয়াপাড়ার গোলাম কিবরিয়াসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়।
No comments