সমস্যা গোলআলু by এবনে গোলাম সামাদ
গোলআলুর উত্পাদন এবার খুব বেশি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হলে যা হয় তাই হচ্ছে। পড়ে যাচ্ছে গোলআলুর দাম। কৃষককে হতে হচ্ছে আর্থিকভাবে ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত। গোলআলু হিমঘরে রেখে পরে বাজারদর উঠিয়ে বিক্রি করা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে যথেষ্ট হিমঘর নেই। আলু পড়ে থাকছে মাঠে, আর পচে যাচ্ছে সেখানে।
কৃষিপণ্যের বাজারদর ঠিক রাখা কঠিন। কৃষিপণ্য পচনশীল। শিল্পদ্রব্যের মতো ধরে রেখে পরে তা বিক্রি করা যায় না। গোলআলু সাধারণ শাকসব্জির মতো অতটা না পচলেও পচে। এরই মধ্যে অনেক গোলআলু পচে নষ্ট হতে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি ধনতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু ধনতান্ত্রিক দেশ হলেও সরকার সেই দেশে কৃষিপণ্যের দাম ঠিক রাখার জন্য সরকারিভাবে নানা ব্যবস্থা নেয়। এসব ব্যবস্থার মধ্যে চত্রপব ঝঁঢ়ঢ়ড়ত্ঃ ব্যবস্থার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। কোনো কৃষিপণ্যের দাম খুব কমে যেতে শুরু করলে সরকার তা কিনে নেয়, কৃষকের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে। কৃত পণ্যকে সংরক্ষণ করা হয়। বাজার দর বাড়লে পরে যথাসময়ে বিক্রি করা হয় ওই ক্রয় করা সংরক্ষিত পণ্যকে। কিন্তু আমাদের দেশে এরকম কোনো ব্যবস্থা নেই। চাল, ধান ও গম কিছু কিনে রাখার ব্যবস্থা অবশ্য আছে। কিন্তু গোলআলু এদের তুলনায় অনেক পচনশীল। গোল আলু সংরক্ষণের কোনো সরকারি ব্যবস্থা এখনও গড়ে উঠতে পারেনি। আমাদের দেশে কৃষক এক বছর কোনো কৃষিপণ্য বিক্রি করে লাভবান হলে পরের মৌসুমে তা আবার লাগাতে চান অনেক বেশি করে। ফলে উত্পাদন বেড়ে যায় চাহিদাকে ছাড়িয়ে। কৃষি পণ্যের উত্পাদন ও সরবরাহের মধ্যে বজায় থাকে না কোনো ভারসাম্য। কিন্তু অনেক দেশেই এখন কৃষিপণ্যের বাজারদর কী হতে পারে আগে থেকেই তার আভাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে উপযুক্ত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে। কৃষক এ আভাসকে নির্ভর করে করছেন কৃষিপণ্যের আবাদ। ফলে বহুল পরিমাণে এড়ানো সম্ভব হচ্ছে অতি উত্পাদন এবং তার ফলে কৃষিপণ্য উত্পাদনের সমস্যা। আমাদের কৃষি সমাজ এখনও অতি উত্পাদনের সমস্যা সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন নন। তাদের এ সমস্যা সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে সমস্যা থেকে যাবে সমস্যা হয়েই।
বাংলাদেশে এখন গোলআলুর চাষ হচ্ছে বেশি। কারণ, এদেশের মানুষ এখন গোলআলু খাচ্ছেন আগের তুলনায় বেশি। কিন্তু গোলআলু বেশি খেলেও তা হয়ে ওঠেনি ভাতের বিকল্প। ইউরোপে গোল আলু যেমন হয়ে উঠেছে গমের রুটির বিকল্প। এ দেশে তেমনভাবে গোলআলু ভাতের বিকল্প এখনও নয়। তবে গোলআলু খাওয়া ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই মনে হয়। গোলআলুর উত্পাদন এবার বেশি হয়েছে। এর প্রধান কারণ, আগের বছরের তুলনায় বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে গোলআলুর। কিন্তু ফলন বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো এ বছর গোলআলু আবাদের মৌসুমে প্রাকৃতিক আবহাওয়া ছিল খুবই অনুকূল। গোলআলু চাষে অনেক সময় ক্ষতি হয় ছত্রাকজনিত মোড়ক রোগে (চযুঃড়ঢ়যঃযড়ত্ধ রহভবংঃধহং)। কিন্তু এ বছর গোলআলু ক্ষেতে রোগটি হয়েছে কম। এ রোগের প্রকোপ বাড়ে বছরে বিশেষ সময়ে ঘন কুয়াশা হলে। এ বছর রোগ বাড়ার মতো কুয়াশা হয়নি যথাসময়ে। ফলে রোগটা হয়েছে কম। আর গোলআলুর উত্পাদন হয়েছে বেশি। অর্থাত্ গোলআলুর উত্পাদন বেশি হয়েছে বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে বলে। আর সেই সঙ্গে আবহাওয়াও ছিল উত্পাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট অনুকূলে। গোলআলুর উত্পাদন এবার বেশি হয়েছে। আর এই বাড়তি গোলআলু রাখার জায়গা হচ্ছে না হিমঘরে। এদেশে গোলআলু সংরক্ষণের জন্য আরও হিমঘর তৈরির প্রয়োজনীয়তা আছে। আমরা গোলআলু খাই খাদ্য ফসল হিসেবে। কিন্তু গোলআলু থেকে অন্যদেশে প্রস্তুত করা হয় অ্যালকোহল। যা নানা কাজে লাগে। গোলআলু থেকে প্রস্তুত করা হয় মাড়, যা ব্যবহার করা হয় বস্ত্রশিল্পে। কিন্তু আমাদের দেশে গোলআলুর এরকম কোনো ব্যবহার নেই। আমরা ইচ্ছা করলে গোলআলু থেকে বানাতে পারি চিপস। কিন্তু আমরা আমাদের দেশে পটেটো চিপস বানাচ্ছি না। আমদানি করছি বিদেশ থেকে। এক্ষেত্রে এদেশে উদ্যোগ নেয়া বাঞ্ছনীয়। এ উদ্যোগ নিলে গোলআলুর আবাদ বাড়ানোর আরও প্রয়োজনীয়তা হয়তো হবে। গোলআলু সিদ্ধ করে কেটে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা চলে। এভাবে সংরক্ষিত আলু ভেজে খাওয়া যায়। ডাল-ভাতের সঙ্গে এভাবে সংরক্ষিত আলুর ভাজা খেতে ভালোই লাগে। আলু পচে নষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আমরা এভাবে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছি না। করলে গোল আলু উত্পাদন নিয়ে সমস্যা কিছুটা কমতো।
আমরা চাচ্ছি দেশে দ্রুত শিল্পোন্নয়ন। কিন্তু শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের দেশে কর্মসংস্থান যে খুব বেশি বাড়বে তা নয়। কৃষি হয়ে থাকবে অধিকাংশ লোকের জীবিকার উপায়। কৃষকের আয় না বাড়লে, বাড়বে না দেশের বাজারে উত্পাদিত বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা। কৃষকের আয় বাড়াতে হবে, যদি আমরা চাই আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের সমৃদ্ধি। কৃষকরা শিল্প শ্রমিকদের মতো সংগঠিতভাবে ধর্মঘট করতে পারেন না। কারও কাছে দাবি করতে পারেন না মজুরি বৃদ্ধির। কৃষকদের নীরব শ্রমের ওপর টিকে আছে বাংলাদেশের অস্তিত্ব। আমাদের তাই শিল্প অর্থনীতি নয়, মূলদৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে কৃষি অর্থনীতির ওপর।
এক সময় ভাবা গিয়েছিল, দেশে পোশাক তৈরি করে বিদেশে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার কথা। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কট। বাংলাদেশ হারাতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার তৈরি পোশাক বিক্রি করে লাভবান হওয়ার সুযোগ। আমাদের তাই অর্থনীতির ক্ষেত্রে কৃষির ওপর দিতে হবে বাড়তি মনোযোগ। কারণ একমাত্র কৃষিতেই নিয়োজন সম্ভব আরো বেশি ব্যক্তি। আমরা খাদ্য উত্পাদন বাড়িয়ে তা রফতানি করতে পারি বিদেশে। তা থেকেও বাড়াতে পারি জাতীয় আয়। যে আয় দিয়ে বিদেশ থেকে কিনতে পারি নানা উত্পাদিত পণ্য। কৃষি অর্থনীতিকে খাটো করে দেখার তাই কোনো উপায় নেই। গোলআলু বেশি উত্পাদিত হওয়ায় কৃষক পড়েছেন বিপাকে। সরকারের নেয়া উচিত উত্পাদিত বেশি গোলআলু বিদেশে রফতানির উদ্যোগ।
বাংলাদেশে এখন গোলআলুর চাষ হচ্ছে বেশি। কারণ, এদেশের মানুষ এখন গোলআলু খাচ্ছেন আগের তুলনায় বেশি। কিন্তু গোলআলু বেশি খেলেও তা হয়ে ওঠেনি ভাতের বিকল্প। ইউরোপে গোল আলু যেমন হয়ে উঠেছে গমের রুটির বিকল্প। এ দেশে তেমনভাবে গোলআলু ভাতের বিকল্প এখনও নয়। তবে গোলআলু খাওয়া ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই মনে হয়। গোলআলুর উত্পাদন এবার বেশি হয়েছে। এর প্রধান কারণ, আগের বছরের তুলনায় বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে গোলআলুর। কিন্তু ফলন বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো এ বছর গোলআলু আবাদের মৌসুমে প্রাকৃতিক আবহাওয়া ছিল খুবই অনুকূল। গোলআলু চাষে অনেক সময় ক্ষতি হয় ছত্রাকজনিত মোড়ক রোগে (চযুঃড়ঢ়যঃযড়ত্ধ রহভবংঃধহং)। কিন্তু এ বছর গোলআলু ক্ষেতে রোগটি হয়েছে কম। এ রোগের প্রকোপ বাড়ে বছরে বিশেষ সময়ে ঘন কুয়াশা হলে। এ বছর রোগ বাড়ার মতো কুয়াশা হয়নি যথাসময়ে। ফলে রোগটা হয়েছে কম। আর গোলআলুর উত্পাদন হয়েছে বেশি। অর্থাত্ গোলআলুর উত্পাদন বেশি হয়েছে বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে বলে। আর সেই সঙ্গে আবহাওয়াও ছিল উত্পাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট অনুকূলে। গোলআলুর উত্পাদন এবার বেশি হয়েছে। আর এই বাড়তি গোলআলু রাখার জায়গা হচ্ছে না হিমঘরে। এদেশে গোলআলু সংরক্ষণের জন্য আরও হিমঘর তৈরির প্রয়োজনীয়তা আছে। আমরা গোলআলু খাই খাদ্য ফসল হিসেবে। কিন্তু গোলআলু থেকে অন্যদেশে প্রস্তুত করা হয় অ্যালকোহল। যা নানা কাজে লাগে। গোলআলু থেকে প্রস্তুত করা হয় মাড়, যা ব্যবহার করা হয় বস্ত্রশিল্পে। কিন্তু আমাদের দেশে গোলআলুর এরকম কোনো ব্যবহার নেই। আমরা ইচ্ছা করলে গোলআলু থেকে বানাতে পারি চিপস। কিন্তু আমরা আমাদের দেশে পটেটো চিপস বানাচ্ছি না। আমদানি করছি বিদেশ থেকে। এক্ষেত্রে এদেশে উদ্যোগ নেয়া বাঞ্ছনীয়। এ উদ্যোগ নিলে গোলআলুর আবাদ বাড়ানোর আরও প্রয়োজনীয়তা হয়তো হবে। গোলআলু সিদ্ধ করে কেটে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা চলে। এভাবে সংরক্ষিত আলু ভেজে খাওয়া যায়। ডাল-ভাতের সঙ্গে এভাবে সংরক্ষিত আলুর ভাজা খেতে ভালোই লাগে। আলু পচে নষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আমরা এভাবে আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছি না। করলে গোল আলু উত্পাদন নিয়ে সমস্যা কিছুটা কমতো।
আমরা চাচ্ছি দেশে দ্রুত শিল্পোন্নয়ন। কিন্তু শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমে আমাদের দেশে কর্মসংস্থান যে খুব বেশি বাড়বে তা নয়। কৃষি হয়ে থাকবে অধিকাংশ লোকের জীবিকার উপায়। কৃষকের আয় না বাড়লে, বাড়বে না দেশের বাজারে উত্পাদিত বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা। কৃষকের আয় বাড়াতে হবে, যদি আমরা চাই আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের সমৃদ্ধি। কৃষকরা শিল্প শ্রমিকদের মতো সংগঠিতভাবে ধর্মঘট করতে পারেন না। কারও কাছে দাবি করতে পারেন না মজুরি বৃদ্ধির। কৃষকদের নীরব শ্রমের ওপর টিকে আছে বাংলাদেশের অস্তিত্ব। আমাদের তাই শিল্প অর্থনীতি নয়, মূলদৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে কৃষি অর্থনীতির ওপর।
এক সময় ভাবা গিয়েছিল, দেশে পোশাক তৈরি করে বিদেশে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার কথা। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সঙ্কট। বাংলাদেশ হারাতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার তৈরি পোশাক বিক্রি করে লাভবান হওয়ার সুযোগ। আমাদের তাই অর্থনীতির ক্ষেত্রে কৃষির ওপর দিতে হবে বাড়তি মনোযোগ। কারণ একমাত্র কৃষিতেই নিয়োজন সম্ভব আরো বেশি ব্যক্তি। আমরা খাদ্য উত্পাদন বাড়িয়ে তা রফতানি করতে পারি বিদেশে। তা থেকেও বাড়াতে পারি জাতীয় আয়। যে আয় দিয়ে বিদেশ থেকে কিনতে পারি নানা উত্পাদিত পণ্য। কৃষি অর্থনীতিকে খাটো করে দেখার তাই কোনো উপায় নেই। গোলআলু বেশি উত্পাদিত হওয়ায় কৃষক পড়েছেন বিপাকে। সরকারের নেয়া উচিত উত্পাদিত বেশি গোলআলু বিদেশে রফতানির উদ্যোগ।
No comments