হলমার্ক নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বিরোধী দল ॥ সুরঞ্জিত

দফতরবিহীন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে রাজনীতিবিদদের ‘শিক্ষা’ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ওই ঘটনায় নিজের বক্তব্যের জন্য সংসদে দুঃখ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী নজির স্থাপন করেছেন।


তাঁর এই সরল স্বীকারোক্তির মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, যথাযথ তদন্ত শেষে হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে আত্মসাত করা অর্থ সরকারের কোষাগারে ফিরিয়ে আনা হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার কোন ধরনের দ্বিধাবোধ করবে না। তবে বিরোধী দল হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনার সুযোগ নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, জনতা ব্যাংকের পরিচালক বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের পরামর্শ দিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে যুবদল, ছাত্রদল আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেয়া চলবে না। প্রয়োজনে ইসি গঠনের ন্যায় সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ করতে হবে। যাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই, শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ না দিয়ে যাঁরা অর্থনীতি বোঝেন তাঁদের নিয়োগ দেয়া উচিত। এ বিষয়ে একটি আইন করাও প্রয়োজন। দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা ভালভাবে চলছে উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংসদে আওয়ামী লীগের এমপিরা অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো আমরাই আমাদের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। আমরা জনগণের পাশে থাকব, আবার আমরাই আমাদের সমালোচনা করে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো সংশোধন করব। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আফসোস করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেল, কেউ জানল না, বুঝল না; সবাই কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল?
শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া বলেন, গ্রামীণ ব্যাংককে হাতিয়ার বানিয়ে কায়েমী স্বার্থবাদী মহল রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে। তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কাজে লাগিয়ে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সাংবিধানিক ধারাকে ব্যাহত করতে চায় তারা। এই ষড়যন্ত্রকারীদের থেকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। কি পেলাম কি পেলাম না সেটা বড় কথা নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকল শক্তি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে দুটি ধারার রাজনীতি বিদ্যমান। একটি গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক। আরেকটি অগণতান্ত্রিক। গণতান্ত্রিক ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আর ওই অপশক্তি দেশকে পিছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, দেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট এবং ওয়ান ইলেভেনের আবহ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পত্রপত্রিকা ও বিরোধী দল মিলে এই আবহ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অপশক্তিকে ক্ষমতায় বসাতেই এই ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার যখন পরিণতির দিকে এগুচ্ছে তখন এই ষড়যন্ত্রকারীরা গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.