সাংসদদের গাড়িবিলাস
সাংসদদের আজকাল চলতি মডেলের দামি বিদেশি গাড়ি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকতে হয়। সম্প্রতি সাংসদদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুযোগ আবার অবারিত করা হয়েছে। তিন কোটি টাকা দামের গাড়ি এখন তাঁরা ৫০ লাখ টাকায়ই কিনতে পারবেন। তাঁদের জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ দিচ্ছে, গাড়ি ব্যবসায়ীরা পত্রিকায় গাড়ির বিজ্ঞাপন ছাপছেন আর বিদেশি গাড়ির সচিত্র বিবরণ তাঁদের বাড়িতেও পৌঁছে দিচ্ছেন। নবীন-প্রবীণ নির্বিশেষে সরকারি ও বিরোধী দলের সাংসদেরা একযোগে শুল্কমুক্ত গাড়ি পেতে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছেন। জনগণের করের টাকার প্রতিদানে সরকারি সেবা নিশ্চিত করা এবং জনগণের পক্ষে আইন তৈরি করাই যাঁদের দায়িত্ব, তাঁরা যখন আপন স্বার্থে বিধি প্রণয়নে দ্বিধা করেন না, তখন সাধারণ মানুষের হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় কী?
সাংসদদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা চালু হয় জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের সময়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তা রদ করা হলেও বর্তমানে আবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার আইনি বাধা অপসারণ করা হয়।
বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন চক্ষুলজ্জাহীন সুবিধা গ্রহণের নজির নেই। ব্রিটেনে এমপিরা সরকারি গাড়ির পুল থেকে প্রয়োজনমাফিক গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পান। ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সরকারি ট্রেনে যাতায়াত করতেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি মন্ত্রীদের শোফার (চালক) রাখার নিয়মও বাতিল করে দিয়েছেন। ব্রিটেনের আদালত, এমনকি কয়েকজন সাংসদের বিধিবহির্ভূত ব্যয় সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। ভারতেও একইভাবে সাংসদদের জন্য সরকারি পুল থেকে গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। বিপরীত দৃষ্টান্তেরও অভাব নেই। বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম জিম্বাবুয়ের সরকার এমপিদের জন্য বিলাসবহুল দামি গাড়ি সরবরাহ করেছে। যদিও দেশটি চরম আর্থিক সংকটে নিমজ্জিত। সেখানকার গোত্রপ্রধানেরাও একই রকম গাড়ি দাবি করেছেন এ যুক্তিতে যে নইলে জনগণের সামনে তাঁদের সম্মান থাকে না। আমাদের সাংসদেরাও বলতে পারেন, ব্যবসায়ীদের অনেকেই যেখানে বিলাসবহুল দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন, সেখানে তাঁদের সম্মান থাকে কী করে?
মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। এখনো এ দেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্য চলনসই পরিবহনব্যবস্থা সরকার গড়ে তুলতে পারেনি। এখনো রাজধানীর কোটি মানুষ বাদুড়ঝোলা অবস্থায় বাসে চলাচল করে, আর যানজটে আটকে থেকে গরমে সেদ্ধ হয়। এ রকম একটি দেশের জনপ্রতিনিধিদের দু-তিন কোটি টাকা দামের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় ৪০-৫০ লাখ টাকায় কিনতে চাওয়া অনৈতিক। দ্বিতীয়ত যাঁরা এসব গাড়ি কেনার অভিলাষ করেছেন, এরই মধ্যে তাঁদের ৯০ শতাংশেরই একাধিক দামি গাড়ি রয়েছে। তাঁরা যে ১৬৫০ থেকে ৪৫০০ সিসির ভারী গাড়ি চাইছেন, তা কি একজন জনপ্রতিনিধির খুবই প্রয়োজন? এসব গাড়ি দুর্গম এলাকায় জনসংযোগের জন্য, এমন দাবিও হাস্যকর।
সাংসদদের এমন অভিলাষ সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁদের মর্যাদা ও নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এতে অন্যরাও স্বার্থপর ভোগ ও দুর্নীতিতে উত্সাহিত হয়। তাঁদের মনে রাখতে হবে, জনগণ তাঁদের সংসদে পাঠিয়েছে জনস্বার্থ দেখার জন্য, আপন স্বার্থে সুবিধাবাদী আইন প্রণয়নের জন্য নয়।
সাংসদদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা চালু হয় জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের সময়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তা রদ করা হলেও বর্তমানে আবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার আইনি বাধা অপসারণ করা হয়।
বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এমন চক্ষুলজ্জাহীন সুবিধা গ্রহণের নজির নেই। ব্রিটেনে এমপিরা সরকারি গাড়ির পুল থেকে প্রয়োজনমাফিক গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পান। ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সরকারি ট্রেনে যাতায়াত করতেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি মন্ত্রীদের শোফার (চালক) রাখার নিয়মও বাতিল করে দিয়েছেন। ব্রিটেনের আদালত, এমনকি কয়েকজন সাংসদের বিধিবহির্ভূত ব্যয় সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। ভারতেও একইভাবে সাংসদদের জন্য সরকারি পুল থেকে গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। বিপরীত দৃষ্টান্তেরও অভাব নেই। বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম জিম্বাবুয়ের সরকার এমপিদের জন্য বিলাসবহুল দামি গাড়ি সরবরাহ করেছে। যদিও দেশটি চরম আর্থিক সংকটে নিমজ্জিত। সেখানকার গোত্রপ্রধানেরাও একই রকম গাড়ি দাবি করেছেন এ যুক্তিতে যে নইলে জনগণের সামনে তাঁদের সম্মান থাকে না। আমাদের সাংসদেরাও বলতে পারেন, ব্যবসায়ীদের অনেকেই যেখানে বিলাসবহুল দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন, সেখানে তাঁদের সম্মান থাকে কী করে?
মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। এখনো এ দেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্য চলনসই পরিবহনব্যবস্থা সরকার গড়ে তুলতে পারেনি। এখনো রাজধানীর কোটি মানুষ বাদুড়ঝোলা অবস্থায় বাসে চলাচল করে, আর যানজটে আটকে থেকে গরমে সেদ্ধ হয়। এ রকম একটি দেশের জনপ্রতিনিধিদের দু-তিন কোটি টাকা দামের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় ৪০-৫০ লাখ টাকায় কিনতে চাওয়া অনৈতিক। দ্বিতীয়ত যাঁরা এসব গাড়ি কেনার অভিলাষ করেছেন, এরই মধ্যে তাঁদের ৯০ শতাংশেরই একাধিক দামি গাড়ি রয়েছে। তাঁরা যে ১৬৫০ থেকে ৪৫০০ সিসির ভারী গাড়ি চাইছেন, তা কি একজন জনপ্রতিনিধির খুবই প্রয়োজন? এসব গাড়ি দুর্গম এলাকায় জনসংযোগের জন্য, এমন দাবিও হাস্যকর।
সাংসদদের এমন অভিলাষ সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁদের মর্যাদা ও নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এতে অন্যরাও স্বার্থপর ভোগ ও দুর্নীতিতে উত্সাহিত হয়। তাঁদের মনে রাখতে হবে, জনগণ তাঁদের সংসদে পাঠিয়েছে জনস্বার্থ দেখার জন্য, আপন স্বার্থে সুবিধাবাদী আইন প্রণয়নের জন্য নয়।
No comments