ফয়সাল ইনভেস্টমেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার
ফয়সাল ইনভেস্টমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এফআইএফ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধককে (আরজেএসসি) নিয়ে গত ২৩ জুলাই বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে এফআইএফের অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে বিতর্কিত যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক) ও আইটিসিএলের কার্যক্রমের মিল খুঁজে পান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি সার-সংক্ষেপ তৈরি করেছে, যা বাণিজ্যসচিবের দপ্তরে রয়েছে।
তবে আরজেএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, ১৫০ বছরের পুরোনো ১৮৬০ সালের সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়েছে এফআইএফ। কোনো প্রতিষ্ঠান বে-আইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও ওই আইনে নিবন্ধন বাতিলের কোনো ধারা নেই। সুতরাং আরজেএসসির পক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।
অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতে, যুবক ও আইটিসিএলের ব্যাপারে যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছিল, এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও তাদের দিক থেকেই আসতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে উভয় সংস্থা বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও বলেন, ফয়সাল ইনভেস্টমেন্টের বিরুদ্ধে এ ছাড়া রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশ বিভাগেরও দায়িত্বের বাইরে নয়।
একইভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এফআইএফের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রকৃতপক্ষে ফৌজদারি অপরাধ। বিষয়টি দেখবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টে নিবন্ধন বাতিলের ধারা না থাকারই সুযোগ নিচ্ছে এফআইএফ কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকিং নিবন্ধন নিয়ে অবৈধ ব্যাংকিং করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু থাকত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অবশ্য বলেছে, কয়েক দিন আগে এফআইএফের অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাদের মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষা করছেন বলেও জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
এদিকে এফআইএফ থেকে দুজন পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের পর এফআইএফে জমা রাখা ৮৭ লাখ টাকা ফেরতও চেয়েছেন তাঁরা।
জানা গেছে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠানটির দুজন পরিচালক সাবেক অতিরিক্ত সচিব মীর বেলায়েত হোসেন ও বিআইডব্লিউটিসির সাবেক চেয়ারম্যান ইনামুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তবে এখনো তাঁরা জমা রাখা অর্থ ফেরত পাননি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এফআইএফের অবৈধ ব্যাংকিং সম্পর্কে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কয়েক দিন পর সংস্থার দুই পরিচালক মীর বেলায়েত হোসেন ও ইনামুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন।
সূত্র জানায়, এফআইএফে মীর বেলায়েত হোসেনের নামে ২২ লাখ টাকা এবং ইনামুল হক চৌধুরীর নামে ৬৫ লাখ টাকা রয়েছে।
অসুস্থ থাকায় ইনামুল হক চৌধুরী কথা বলতে পারবেন না বলে জানান তাঁর জামাতা মামান আহমেদ। গত রোববার প্রথম আলোর কাছে তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামান আহমেদ জানান, ‘তাঁর পক্ষ থেকে সব প্রক্রিয়া আমাকেই করতে হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে টাকা পেয়ে যাব বলে এফআইএফের মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা আশ্বাস দিয়েছেন।’
মীর বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী সাফিয়া হোসেন পদত্যাগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক দিন থেকেই তিনি পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন।
যোগাযোগ করলে গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে জানান, পরিচালকদের কোনো ব্যাপারেই তিনি কথা বলবেন না। আর তাঁদের পদত্যাগের বিষয়টি চেয়ারম্যান জানেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ
গত ১৬ জুলাই প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ‘ফয়সাল ইনভেস্টমেন্টের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে ফয়সাল ইনভেস্টমেন্ট ফাউন্ডেশন (এফআইএফ)। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ রহমান (মোহাম্মদ আতাউর রহমান) স্বাক্ষরিত ২৭ জুলাই পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘এফআইএফ অবৈধ ব্যাংকিং করছে না, উচ্চহারে মুনাফার লোভ দেখিয়ে আমানতও সংগ্রহ করে না। এর চেয়ারম্যান বা অন্য কোনো পরিচালক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। যুবক ও আইটিসিএলের কার্যক্রমের সঙ্গে এফআইএফের কার্যক্রমের মিল নেই। ৪৬২ জনের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করার বিষয়টিও সঠিক নয়। এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক এফআইএফের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করেনি। কোনো পরিচালক এফআইএফ থেকে মাসোহারা নেন না।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য: বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আরজেএসসির মধ্যে এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে যেসব চিঠিপত্র বিনিময় হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতেই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া এফআইএফের পরিচালক ও ব্যবস্থাপকের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধককে (আরজেএসসি) নিয়ে গত ২৩ জুলাই বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে এফআইএফের অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে বিতর্কিত যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক) ও আইটিসিএলের কার্যক্রমের মিল খুঁজে পান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি সার-সংক্ষেপ তৈরি করেছে, যা বাণিজ্যসচিবের দপ্তরে রয়েছে।
তবে আরজেএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, ১৫০ বছরের পুরোনো ১৮৬০ সালের সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়েছে এফআইএফ। কোনো প্রতিষ্ঠান বে-আইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও ওই আইনে নিবন্ধন বাতিলের কোনো ধারা নেই। সুতরাং আরজেএসসির পক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।
অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতে, যুবক ও আইটিসিএলের ব্যাপারে যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছিল, এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও তাদের দিক থেকেই আসতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে উভয় সংস্থা বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও বলেন, ফয়সাল ইনভেস্টমেন্টের বিরুদ্ধে এ ছাড়া রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ। বিষয়টি পুলিশ বিভাগেরও দায়িত্বের বাইরে নয়।
একইভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এফআইএফের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রকৃতপক্ষে ফৌজদারি অপরাধ। বিষয়টি দেখবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টে নিবন্ধন বাতিলের ধারা না থাকারই সুযোগ নিচ্ছে এফআইএফ কর্তৃপক্ষ। ব্যাংকিং নিবন্ধন নিয়ে অবৈধ ব্যাংকিং করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু থাকত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র অবশ্য বলেছে, কয়েক দিন আগে এফআইএফের অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাদের মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষা করছেন বলেও জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
এদিকে এফআইএফ থেকে দুজন পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের পর এফআইএফে জমা রাখা ৮৭ লাখ টাকা ফেরতও চেয়েছেন তাঁরা।
জানা গেছে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠানটির দুজন পরিচালক সাবেক অতিরিক্ত সচিব মীর বেলায়েত হোসেন ও বিআইডব্লিউটিসির সাবেক চেয়ারম্যান ইনামুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তবে এখনো তাঁরা জমা রাখা অর্থ ফেরত পাননি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এফআইএফের অবৈধ ব্যাংকিং সম্পর্কে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের কয়েক দিন পর সংস্থার দুই পরিচালক মীর বেলায়েত হোসেন ও ইনামুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন।
সূত্র জানায়, এফআইএফে মীর বেলায়েত হোসেনের নামে ২২ লাখ টাকা এবং ইনামুল হক চৌধুরীর নামে ৬৫ লাখ টাকা রয়েছে।
অসুস্থ থাকায় ইনামুল হক চৌধুরী কথা বলতে পারবেন না বলে জানান তাঁর জামাতা মামান আহমেদ। গত রোববার প্রথম আলোর কাছে তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামান আহমেদ জানান, ‘তাঁর পক্ষ থেকে সব প্রক্রিয়া আমাকেই করতে হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে টাকা পেয়ে যাব বলে এফআইএফের মহাব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা আশ্বাস দিয়েছেন।’
মীর বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী সাফিয়া হোসেন পদত্যাগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক দিন থেকেই তিনি পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন।
যোগাযোগ করলে গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে জানান, পরিচালকদের কোনো ব্যাপারেই তিনি কথা বলবেন না। আর তাঁদের পদত্যাগের বিষয়টি চেয়ারম্যান জানেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ
গত ১৬ জুলাই প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ‘ফয়সাল ইনভেস্টমেন্টের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে ফয়সাল ইনভেস্টমেন্ট ফাউন্ডেশন (এফআইএফ)। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ রহমান (মোহাম্মদ আতাউর রহমান) স্বাক্ষরিত ২৭ জুলাই পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘এফআইএফ অবৈধ ব্যাংকিং করছে না, উচ্চহারে মুনাফার লোভ দেখিয়ে আমানতও সংগ্রহ করে না। এর চেয়ারম্যান বা অন্য কোনো পরিচালক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। যুবক ও আইটিসিএলের কার্যক্রমের সঙ্গে এফআইএফের কার্যক্রমের মিল নেই। ৪৬২ জনের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করার বিষয়টিও সঠিক নয়। এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক এফআইএফের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করেনি। কোনো পরিচালক এফআইএফ থেকে মাসোহারা নেন না।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য: বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আরজেএসসির মধ্যে এফআইএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে যেসব চিঠিপত্র বিনিময় হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতেই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া এফআইএফের পরিচালক ও ব্যবস্থাপকের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে।
No comments