বিক্রি পাঁচ-ছয় হাজার কোটি টাকা কমে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের- রমজান মাসে দোকান বন্ধের সময় বেঁধে না দেওয়ার দাবি

 
শবে বরাতের পরের দিন থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার সুবিধা চেয়েছেন দোকানের মালিকেরা। একই সঙ্গে তাঁরা রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই দোকানপাট বন্ধ করতে কোনো সময়ের বাধ্যবাধকতা না রাখার দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে আগামী রমজান মাসে অন্যবারের তুলনায় বেচা-বিক্রি পাঁচ থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত কম হবে বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
গতকাল সোমবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতারা এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির চেয়ারম্যান আমির হোসেন খান, সিনিয়র চেয়ারম্যান এম আকতারুজ্জামান, মহাসচিব এস এ কাদেরসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা বলেন, সরকার দিনের আলোর অধিকতর ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং অফিস আদালত, স্কুল-কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি অপরিবর্তিত রাখে। কিন্তু সমিতির পক্ষ থেকে দোকান খোলা রাখার সময়সীমা এক ঘণ্টা বাড়িয়ে নয়টা করার দাবি মেনে না নেওয়ায় এরই মধ্যে বেচা-বিক্রি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।
লিখিত বক্তব্যে এস এ কাদের বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্রেতাই সন্ধ্যার পর দোকানে কেনাকাটা করতে বা বিনোদনের জন্য বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে বেড়ায়। আর ক্রেতারা যখন কেনাকাটার করার কাজে বের হয়, তখনই মার্কেট বন্ধ থাকে। ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে আনার ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় যাই হোক না কেন, দোকান ব্যবসায়ীদের সর্বস্বান্ত করার প্রক্রিয়াটি সফলতার দিকে এগোচ্ছে।
এস এ কাদের আরও বলেন, সারা বছর দুটি ঈদ ও একটি শীতে বেশি বেচাকেনা হয়। তবে রমজানের ঈদেই সবচেয়ে বেশি বেচা-বিক্রি হয়।
আমির হোসেন খান বলেন, অন্য বছর ঈদের সময় ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকা বেচাবিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু সরকার সমিতির দাবি মেনে না নিলে এ বেচা-বিক্রির পরিমাণ কমে ১০ হাজার কোটি টাকায় নেমে যাবে।
আমির হোসেন আরও বলেন, সরকার দিনের আলো অধিক ব্যবহার করতে অফিসের সময়সূচি অপরিবর্তিত রাখলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে দোকান খোলা ও বন্ধের সময়সূচি পিছিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে দুপুর ১২টা থেকে দোকান খুলতেও তাঁদের কোনো আপত্তি নেই উল্লেখ করে তিনি দোকান বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন রমজান মাসে অধিক মুনাফার আশা না করে প্রয়োজনে কিছুটা ক্ষতি হলেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সারা দেশের দোকান মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.