জনপ্রশাসনের আদেশ: পররাষ্ট্রে অস্বস্তি by মিজানুর রহমান
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশ নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চুক্তিভিত্তিক চাকরিতে নিযুক্ত সরকারের একজন সিনিয়র সচিবকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পদায়নের জন্য সেগুনবাগিচায় ন্যস্ত করা হয়। তাকে পর্তুগালে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়া করতে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা গতকাল মানবজমিনকে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা ড. এম মাহফুজুল হককে রাষ্ট্রদূত হিসেবে পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন আদেশ জারি করতেই পারে। কিন্তু এগ্রিমো আসার আগে এমনকি এগ্রিমো চাওয়ার পূর্বে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করে ওই দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের সরকারি ঘোষণা প্রেরণকারী এবং গ্রহণকারী উভয় দেশের জন্যই অস্বস্তিকর। ওই কর্মকর্তা বলেন, কূটনৈতিক শিষ্টাচার হচ্ছে কাউকে কোনো দেশে রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার হিসেবে পাঠাতে গেলে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে প্রস্তাবিত দূতের প্রোফাইল পাঠিয়ে স্বাগতিক দেশের এগ্রিমো বা অনাপত্তি গ্রহণ করতে হয়। এটাই রেওয়াজ। কোনো দেশ প্রস্তাবিত দূতের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে। তাকে গ্রহণে রাজি না হতে পারে। এটি একান্তই স্বাগতিক দেশের সিদ্ধান্ত। কাউকে গ্রহণে বা বর্জনের অধিকার হোস্ট কান্ট্রি সংরক্ষণ করে। কিন্তু এগ্রিমো দেয়া না দেয়ার কমিউনিকেশনেও গোপনীয়তার ব্যত্যয় ঘটানো হয় না বরং যতটা সম্ভব উভয়ের সম্মান বজায় রেখে ডিপ্লোমেটিক্যালি তার কনভে করা হয়। অর্থাৎ নিঃশব্দে (আকারে-ইঙ্গিতে) এবং গোপনীয়তার সঙ্গে দূতকে গ্রহণ করা বা না করার বার্তা বিনিময় হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় এগ্রিমোর আগাম খবর প্রকাশে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো ছায়া পড়লেও শিষ্টাচারের বরখেলাফ করে না কোনো পক্ষই। বরং রেওয়াজ মেনে এ নিয়ে ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ কিংবা প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে সযত্নে বিরত থাকে উভয়ে। কিন্তু জনপ্রশাসনের আদেশে আগাম সব খোলাসা করে দেয়ায় রাষ্ট্রদূতের এগ্রিমোপ্রাপ্তি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। উল্লেখ্য, বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের শেষ দু’বছরে ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রস্তাবিত দু’জন রাষ্ট্রদূত প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।
No comments