যেভাবে খুন করা হয় নটর ডেমের লিপিকাকে
সাইদুর রহমান বলেন, জুয়েল রানা আগে নজরুলদের বাসায় মেসে খেতো। সেখান থেকেই তাদের পরিচয়। জুয়েল রানা নজরুলকে জানায় তার পাশের বিল্ডিং এর চতুর্থতলায় একজন মহিলা একা থাকে। তার কোনো স্বামী ও সন্তান নেই। তার বাসায় চুরি করলে অনেক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে। পরিকল্পনা মোতাবেক জুয়েল রানা তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ১০ই সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে নিজের বাসায় আসে। রাত ১টার দিকে নজরুল লিপিকার বাসার ছাদের উপর দিয়ে এসে রশির সাহায্যে ঝুলে ভিকটিমের বাসার পেছনের ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে দরজা খুলে দেয়। জুয়েল সেই দরজা দিয়ে চুপিসারে লিপিকার বাসায় ঢোকে। তারা দু’জনে বাসায় চুরি করার সময় শব্দ শুনে লিপিকা ঘুম থেকে উঠে পরে। তখন নজরুল একটি লোহার পাইপ দিয়ে লিপিকার মাথায় আঘাত করে আর জুয়েল বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরলে লিপিকার মৃত্যু হয়। এরপর তারা দু’জনে ওই বাসা থেকে লিপিকার দুটি মোবাইল ও হাত ব্যাগে থাকা টাকা, গয়না নিয়ে দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে বাসায় চলে যায়। পরে ব্যাগে থাকা টাকা, ফোন ও মালামাল দু’জনে ভাগ করে নেয়। সেই ফোনের একটি ফোন জুয়েল বিক্রি করে রিভার ভিউ রেস্টুরেন্টের স্টাফ নাজিমুদ্দিনের কাছে। সেই ফোনের সূত্র ধরেই জুয়েল ও নজরুলকে আটক করে পুুলিশ। আটকের পর তারা এই হত্যাকাণ্ডের পুরোটাই স্বীকার করেছে পিবিআইয়ের কাছে। তাদের কাছ থেকে লিপিকার বাসা থেকে খোয়া যাওয়া টাকা ও মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহত লিপিকা গোমেজের ছোট ভাই বারমুডা প্রবাসী অসিম গোমেজ বলেন, আমরা তিন ভাই বোন। বাবা-নেই। বড় বোন অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। আমি দেশের বাইরে থাকি। আমার পরিবারের সদস্যরা ফার্মগেটে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। আর লিপিকা সূত্রাপুরে বাসা নিয়ে একাই থাকতো। প্রতিদিনই মোবাইল ফোনে আমাদের কথা হতো। ঘটনার দিন রাতে আমার মেয়ের কাছ থেকে আমি জানতে পারি এই হত্যাকাণ্ডের কথা। ওইদিন আমি ফ্লাইটের টিকিট পাইনি। পরের দিনই আমি দেশে ফিরে আসি। অশ্রুসিক্ত হয়ে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করে আসছি। কখনো কারোর সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। কারোর সঙ্গে তেমন কোনো শত্রুতাও নেই। এরপরও আমার বোনকে তার ঘরের মধ্যে হত্যা করা হলো। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চাই।
No comments