সপ্তাহে ৭ দিনই বাসে হাফ ভাড়া দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব মেট্রোপলিটনে বাসে ছাত্রদের হাফ ভাড়া সপ্তাহে ৭ দিন কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম। তিনি বলেন, ছাত্রদের হাত ধরেই ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালের স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে। দেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। এই ছাত্রদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, সপ্তাহে ৭ দিনই ছাত্রদের কাছ থেকে বাস ভাড়া ৫০ শতাংশ ছাড় দিতে হবে। গতকাল দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমাদের অঙ্গীকার-নিরাপদ সড়ক হউক সবার, সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মালিক ও শ্রমিকদের সচেতনতামূলক’ সেমিনারে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সেমিনারে সাইফুল আলম বলেন, গত ২১শে আগস্টে পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করি। এই সভায় বাসে ছাত্রদের হাফ ভাড়া এবং পরিবহন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সভায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতারা জানান, বিআরটিএ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০২১ সালের ১লা ডিসেম্বর থেকে সপ্তাহে ৫ দিন (শুক্রবার-শনিবার ব্যতীত) বাসে ছাত্রদের হাফ ভাড়া কার্যকর করে। যাহা এখনো বলবৎ আছে। তাই সভায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসআ) নেতারা বাসে ছাত্রদের সপ্তাহে ৫ দিনের স্থলে ৭ দিন হাফ ভাড়া কার্যকর করার জন্য ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের নিকট অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, নিসআর আবেদন সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে ওই সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে বাসে ছাত্রদের হাফ ভাড়া সপ্তাহে ৫ দিনের স্থলে ৭ দিন আগামীকাল ২৪শে সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে (সকাল-৬টা হইতে রাত-১২টা পর্যন্ত)। হাফ পাসের জন্য অবশ্যই শিক্ষার্থীকে ইউনিফর্ম পরিহিত অথবা শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র মেট্রো এলাকায় কার্যকর থাকবে। সাইফুল আলমের এমন ঘোষণার পর সেমিনারে উপস্থিত নিসআর সদস্য হাততালি দিতে স্বাগত এবং ধন্যবাদ জানান।

প্রধান অতিথি হাইওয়ে পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক শ্যামল কুমার মুখার্জি বলেন, সবাই মিলে যখন দেশকে এই শহরকে ভালোবাসবে, তখন এ দেশের কোনোকিছুই অসুন্দর থাকবে না। নিজেদের জন্য ভালো কিছু করি, প্রজন্মের জন্য ভালো কিছু রেখে যাই। সবার মতামত, পরামর্শ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্ব ও আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিকল্পনা তৈরির কথা বলেছেন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক। তিনি রাস্তায় শৃঙ্খলা আনা ও  সড়ক নিরাপদ রাখার কথা বলেন। নগর পরিবহনের প্রকল্প যেভাবে অনুমোদিত হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই আবার চালু করার কথা বলেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন আহমেদ। ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার এটিই একমাত্র পথ বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বাতেন বলেন, সড়ককে সুন্দর, যানজটমুক্ত ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাবো। আমরা নিজেরা অন্যায় করবো না, যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করবো না। এমনকি নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যাত্রী ওঠানামা করবো না। যাদের বৈধ লাইসেন্স নাই তারা সেটি করে নিবো। মালিকরা ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় নামাবেন না। বিআরটিএ এর পরিচালককে অনুরোধ যে সকল গাড়ি দীর্ঘদিন ধরে রুট পারমিটবিহীন অবস্থায় আছে সেই গাড়ি যাতে দ্রুত পারমিট পায় সেই ব্যবস্থা করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবদুর রহিম বক্‌স, মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আলাউদ্দিন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মেহেদি প্রমুখ।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.