বদলে গেল ক্লাবপাড়ার দৃশ্যপট, তবে by শুভ্র দেব
বৃহস্পতিবার
রাত সাড়ে ১১টা। মতিঝিল থানার পেছনের গলি। ক্যাসিনোপাড়া নামেই পরিচিত।
লম্বা গলিতে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাইনবোর্ড
সম্বলিত গেট। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন মধ্য বয়সী এক লোক। অনেকটা তড়িঘড়ি করে
কাছে এসেই বললেন, আপনি কি মিডিয়ার লোক। হ্যাঁ সূচক ইঙ্গিত পেয়েই বললেন, সব
শেষ করে দিছে ভাই। দুদিন ধরে এলাকাটা স্তব্ধ হয়ে গেছে। প্রতি রাতেই এই
সময়টা থেকে শুরু করে ভোর রাত পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা থাকত। কত মানুষ যে
আসত আর যেত, তার হিসাব নাই। দামিদামি গাড়ি করে টাকার বস্তা নিয়ে আসত। যাবার
সময় কেউ হাসত আর কেউ কাঁদত। চোখের সামনে কত মানুষকে যে নিঃস্ব হতে দেখেছি।
এখানে শুধু টাকা আর টাকা উড়ত। নেতারা এই ক্লাব চালাত। আর লাখ লাখ টাকা
নিয়ে যেত। মধ্য বয়সী এই লোকের নাম শাহরিয়ার হোসেন। পরিবার নিয়ে থাকেন
মতিঝিল ব্যাংক কলোনি এলাকায়।
হঠাৎ করেই থমকে গেছে মতিঝিলের ক্যাসিনো পাড়া। ব্যাংক পাড়া নামে খ্যাত এই এলাকাটি সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য সবদিনই ব্যস্ত থাকে। তবে সন্ধ্যার পর কিছুটা নীরব হয়ে যায়। কিন্তু মতিঝিলের একটি এলাকা কখনই নীরব হয় না। বরং দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত বেশি ব্যস্ত থাকত। মতিঝিল থানা থেকে তিন শ গজের ভেতরে চারটি ক্লাব। ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। থানা রোডে আছে মোহামেডান ক্লাবসহ আরো কয়েকটি ক্লাব। ক্লাবগুলো খেলাধুলা বিষয়ক হলেও প্রতিটি ক্লাবেই চলে ক্যাসিনো। ঢাকায় এমন ৬০টি ক্যাসিনো আছে। এই প্রত্যেকটি ক্যাসিনোই পরিচালনা করতেন ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী একটি সংগঠনের প্রভাবশালী নেতারা। ক্লাবভেদে প্রতিটা ক্লাব নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বুধবার ঢাকার চারটি ক্লাবে অভিযান চালায়। ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বনানীর গোল্ডেন ক্লাব সিলগালা করে দিয়েছে। এ ছাড়া দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রিড়া চক্র, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অভিযানের খবর পেয়ে নিজেরাই বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর থেকে ক্যাসিনো পাড়ায় জুয়াড়িদের আনাগোনা কমেছে। উৎসুক জনতা এসে ভিড় করছেন ক্যাসিনো দেখার জন্য। বন্ধ হয়ে গেছে আশেপাশের দোকানিদের বিক্রি।
এদিকে বুধবার ওই এলাকার ক্যাসিনোতে র্যাব অভিযান চালালেও বৃহস্পতিবার কোনো অভিযান চালায়নি। তাই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন যদি নিয়মিত অভিযান চালানো হয় তবে ক্যাসিনো ফের চালু হয়ে যাবে। যদিও র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিটা ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হবে। আর ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামও বলেছেন, ঢাকায় কোনো ক্যাসিনো রাখা হবে না। সব বন্ধ করে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সামনের চা দোকানি খালেদ বলেন, এখন সবচেয়ে বড় ক্লাব ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। রাতদিন রাজনৈতিক বড় বড় নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, অভিনয় শিল্পি, সংগীত শিল্পি, সরকারি বড়বড় কর্মকর্তা, ধনী ঘরের ছেলেরা এখানে আসা যাওয়া করতেন। সবাই লাখ লাখ টাকা নিয়ে আসতেন। রাত গভীর হলে ক্লাবের সামনের সড়কে পা ফেলার জায়গা মিলত না। কোটি কোটি টাকার খেলা চলত। দুদিন ধরে কেমন জানি ঝিমিয়ে পড়েছে এলাকাটা। পাশাপাশি চারটি ক্লাব। তাই এখানকার ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততাও বেশি থাকত। রাতদিন সমানতালে বিক্রি হতো। ভেরাইটিজ পণ্যের দোকানি আবুল হোসেন বলেন, ক্লাব থেকে শুরু করে এখানকার দোকানপাট সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন যুবলীগ নেতারা।
দুবছর আগে এক নেতা চাঁদাদাবি করে সবকটি দোকানে তালা দিয়েছিলেন। পরে সবাই ২/৩ লাখ করে টাকা দিয়ে আবার দোকান চালু করেছেন। এখানে যে কত ধরনের ব্যবসা হয় তার হিসাব নাই। জুয়া খেলে অনেকেই হেরে যেতেন। পরে তাদের মোবাইল, মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে এখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা দিতেন। ক্লাবে যারা খেলতে আসতেন তারা অনেকেই আমাদের দোকানে এসে কেনাকাটা করতেন। কিন্তু র্যাবের অভিযানের পর থেকে সব বন্ধ হয়ে গেছে। ইয়াংমেনস ক্লাবের সামনে সায়েম বলেন, কোটি টাকা দামের গাড়ি নিয়ে আসতেন অনেকে। দামি মোটরসাইকেলে করে আসতেন অনেক ধনীর দুলালরা। সারারাত এলাকাটা জমজমাট থাকত। বুধবারে র্যাব অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে ধরে নিয়ে গেছে।
ভয় পেয়ে আশেপাশের সব ক্লাব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে বেসরকারি চাকরিজীবী আল আমিন হোসেন বলেন, ডিউটি শেষ করে আমি সন্ধ্যার পর এই এলাকায় এসে সময় কাটাতাম। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম ঢাকার ভেতরে ও বাইরের কত মানুষ যে আসতেন। রাস্তার পাশে শতাধিক মোটরসাইকেল লাইন ধরে পার্কিং করা থাকত। কত ছেলেরা খেলায় হেরে কমদামে মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিয়ে যেত। যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা ক্লাব পাড়ায় আসতেন। তারা সবাই ছিলেন, যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ ও আরেকজন কাউন্সিলরের ক্যাডার বাহিনী। বড় নেতারা স্পটে কম আসতেন। এজন্য এই ক্যাডার বাহিনীই ক্যাসিনোর দেখাশুনা করত। মোহামেডান ক্লাবের নিরাপত্তাকর্মী বুলবুল বলেন, যারা আসা যাওয়া করতেন তাদের গাড়ি পার্কিং, ভেতরে প্রবেশের জন্য গেট খুলে দেয়া এসবই আমার কাজ ছিল। এই দুদিন ধরে কেউ আসা-যাওয়া করছেন না। রাত ১২টার দিকে গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের সামনে গিয়ে দেখা যায় নেই মানুষের আনাগোনা। নীরব-নিস্তব্ধ ক্লাবটি। ক্লাবের বাইরের চা বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, দুদিন ধরে পরিচিত-অপরিচিত কাউকেই দেখছি না। ক্যাসিনো চললে দম ফেলার সময় পেতাম না। সবসময় ব্যস্ততা লেগে থাকত।
জানা যায় নেপালি নাগরিকরাই ক্লাবের আড়ালে বসিয়েছে পশ্চিমা দেশের ধাঁচে ক্যাসিনো ব্যবসা। মূলত ১১ নেপালির হাত ধরেই ঢাকায় একের পর এক ক্যাসিনো গড়ে ওঠে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট এলাকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই নেপালিরা ক্যাসিনোর বিস্তার করে। ক্যাসিনো চালানোর জন্য তারা নেপাল থেকে প্রশিক্ষিত জুয়াড়িদের এনে কাজে লাগাত। ঢাকায় ক্যাসিনো বিস্তারে নেপালি নাগরিক বিনোদ, রাজকুমার, দিনেশ শর্মা, দিনেশ কুমার, ছোট রাজ কুমার, বল্লভ, বিজয়, সুরেশ বাটেল, কৃষ্ণা, জিতেন্দ্র ও নেপালি বাবা অন্যতম। এই ১১ নেপালি নাগরিকই ঢাকায় অর্ধশত ক্যাসিনো গড়ে তুলেছে। এই চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করেন যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বিনিময়ে প্রতিটা ক্লাব থেকেই তারা প্রতিদিন নেন অন্তত ৪০ লাখ টাকা। র্যাবের হাতে আটকের পর খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এ সংক্রান্ত অনেক তথ্যই দিয়েছেন।
হঠাৎ করেই থমকে গেছে মতিঝিলের ক্যাসিনো পাড়া। ব্যাংক পাড়া নামে খ্যাত এই এলাকাটি সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য সবদিনই ব্যস্ত থাকে। তবে সন্ধ্যার পর কিছুটা নীরব হয়ে যায়। কিন্তু মতিঝিলের একটি এলাকা কখনই নীরব হয় না। বরং দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত বেশি ব্যস্ত থাকত। মতিঝিল থানা থেকে তিন শ গজের ভেতরে চারটি ক্লাব। ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। থানা রোডে আছে মোহামেডান ক্লাবসহ আরো কয়েকটি ক্লাব। ক্লাবগুলো খেলাধুলা বিষয়ক হলেও প্রতিটি ক্লাবেই চলে ক্যাসিনো। ঢাকায় এমন ৬০টি ক্যাসিনো আছে। এই প্রত্যেকটি ক্যাসিনোই পরিচালনা করতেন ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী একটি সংগঠনের প্রভাবশালী নেতারা। ক্লাবভেদে প্রতিটা ক্লাব নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বুধবার ঢাকার চারটি ক্লাবে অভিযান চালায়। ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাব, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও বনানীর গোল্ডেন ক্লাব সিলগালা করে দিয়েছে। এ ছাড়া দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব ও আরামবাগ ক্রিড়া চক্র, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অভিযানের খবর পেয়ে নিজেরাই বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর থেকে ক্যাসিনো পাড়ায় জুয়াড়িদের আনাগোনা কমেছে। উৎসুক জনতা এসে ভিড় করছেন ক্যাসিনো দেখার জন্য। বন্ধ হয়ে গেছে আশেপাশের দোকানিদের বিক্রি।
এদিকে বুধবার ওই এলাকার ক্যাসিনোতে র্যাব অভিযান চালালেও বৃহস্পতিবার কোনো অভিযান চালায়নি। তাই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন যদি নিয়মিত অভিযান চালানো হয় তবে ক্যাসিনো ফের চালু হয়ে যাবে। যদিও র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিটা ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হবে। আর ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামও বলেছেন, ঢাকায় কোনো ক্যাসিনো রাখা হবে না। সব বন্ধ করে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সামনের চা দোকানি খালেদ বলেন, এখন সবচেয়ে বড় ক্লাব ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। রাতদিন রাজনৈতিক বড় বড় নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, অভিনয় শিল্পি, সংগীত শিল্পি, সরকারি বড়বড় কর্মকর্তা, ধনী ঘরের ছেলেরা এখানে আসা যাওয়া করতেন। সবাই লাখ লাখ টাকা নিয়ে আসতেন। রাত গভীর হলে ক্লাবের সামনের সড়কে পা ফেলার জায়গা মিলত না। কোটি কোটি টাকার খেলা চলত। দুদিন ধরে কেমন জানি ঝিমিয়ে পড়েছে এলাকাটা। পাশাপাশি চারটি ক্লাব। তাই এখানকার ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততাও বেশি থাকত। রাতদিন সমানতালে বিক্রি হতো। ভেরাইটিজ পণ্যের দোকানি আবুল হোসেন বলেন, ক্লাব থেকে শুরু করে এখানকার দোকানপাট সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন যুবলীগ নেতারা।
দুবছর আগে এক নেতা চাঁদাদাবি করে সবকটি দোকানে তালা দিয়েছিলেন। পরে সবাই ২/৩ লাখ করে টাকা দিয়ে আবার দোকান চালু করেছেন। এখানে যে কত ধরনের ব্যবসা হয় তার হিসাব নাই। জুয়া খেলে অনেকেই হেরে যেতেন। পরে তাদের মোবাইল, মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে এখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা দিতেন। ক্লাবে যারা খেলতে আসতেন তারা অনেকেই আমাদের দোকানে এসে কেনাকাটা করতেন। কিন্তু র্যাবের অভিযানের পর থেকে সব বন্ধ হয়ে গেছে। ইয়াংমেনস ক্লাবের সামনে সায়েম বলেন, কোটি টাকা দামের গাড়ি নিয়ে আসতেন অনেকে। দামি মোটরসাইকেলে করে আসতেন অনেক ধনীর দুলালরা। সারারাত এলাকাটা জমজমাট থাকত। বুধবারে র্যাব অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে ধরে নিয়ে গেছে।
ভয় পেয়ে আশেপাশের সব ক্লাব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে বেসরকারি চাকরিজীবী আল আমিন হোসেন বলেন, ডিউটি শেষ করে আমি সন্ধ্যার পর এই এলাকায় এসে সময় কাটাতাম। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম ঢাকার ভেতরে ও বাইরের কত মানুষ যে আসতেন। রাস্তার পাশে শতাধিক মোটরসাইকেল লাইন ধরে পার্কিং করা থাকত। কত ছেলেরা খেলায় হেরে কমদামে মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিয়ে যেত। যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা ক্লাব পাড়ায় আসতেন। তারা সবাই ছিলেন, যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ ও আরেকজন কাউন্সিলরের ক্যাডার বাহিনী। বড় নেতারা স্পটে কম আসতেন। এজন্য এই ক্যাডার বাহিনীই ক্যাসিনোর দেখাশুনা করত। মোহামেডান ক্লাবের নিরাপত্তাকর্মী বুলবুল বলেন, যারা আসা যাওয়া করতেন তাদের গাড়ি পার্কিং, ভেতরে প্রবেশের জন্য গেট খুলে দেয়া এসবই আমার কাজ ছিল। এই দুদিন ধরে কেউ আসা-যাওয়া করছেন না। রাত ১২টার দিকে গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের সামনে গিয়ে দেখা যায় নেই মানুষের আনাগোনা। নীরব-নিস্তব্ধ ক্লাবটি। ক্লাবের বাইরের চা বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, দুদিন ধরে পরিচিত-অপরিচিত কাউকেই দেখছি না। ক্যাসিনো চললে দম ফেলার সময় পেতাম না। সবসময় ব্যস্ততা লেগে থাকত।
জানা যায় নেপালি নাগরিকরাই ক্লাবের আড়ালে বসিয়েছে পশ্চিমা দেশের ধাঁচে ক্যাসিনো ব্যবসা। মূলত ১১ নেপালির হাত ধরেই ঢাকায় একের পর এক ক্যাসিনো গড়ে ওঠে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট এলাকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই নেপালিরা ক্যাসিনোর বিস্তার করে। ক্যাসিনো চালানোর জন্য তারা নেপাল থেকে প্রশিক্ষিত জুয়াড়িদের এনে কাজে লাগাত। ঢাকায় ক্যাসিনো বিস্তারে নেপালি নাগরিক বিনোদ, রাজকুমার, দিনেশ শর্মা, দিনেশ কুমার, ছোট রাজ কুমার, বল্লভ, বিজয়, সুরেশ বাটেল, কৃষ্ণা, জিতেন্দ্র ও নেপালি বাবা অন্যতম। এই ১১ নেপালি নাগরিকই ঢাকায় অর্ধশত ক্যাসিনো গড়ে তুলেছে। এই চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করেন যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বিনিময়ে প্রতিটা ক্লাব থেকেই তারা প্রতিদিন নেন অন্তত ৪০ লাখ টাকা। র্যাবের হাতে আটকের পর খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এ সংক্রান্ত অনেক তথ্যই দিয়েছেন।
No comments