ইস্টার হত্যাযজ্ঞের নিরপেক্ষ তদন্ত চান লঙ্কার ক্ষুদ্ধ ক্যাথলিকরা
২১
এপ্রিল তিনটি চার্চে ইস্টার সানডের প্রার্থণাসভায় জঙ্গি হামলায় মূল
ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু ক্যাথলিক ও নন-ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা এখন বঞ্চিত ও
অবহেলিত হওয়ার যন্ত্রণায় ভুগছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচশ’র বেশি ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর উপর বোমা হামলার পরিণতি কি হয়েছে সেখবর মিডিয়া আসছে সামান্যই অথবা একেবারেই আসছেনা।
ভিকটিম পরিকবারগুলোর দুর্দশার ব্যাপারে সরকার উদাসীন। তবে চার্চগুলো মেরামত/পুননির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের বেশিরভাগ তদন্ত সত্য খুঁজে বের করার চেয়ে রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে।
অনেকে তাদের হাত-পা হারিয়েছেন অথবা মানসিক আঘাত পেয়েছেন। আহত ও নিহতরা যেসব পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন সেসব পরিবার অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় পড়েছে।
কিছু এনজিও ও খ্রিস্টান ধর্মগুরু ভিকটিমদের সহায়তা করার চেষ্টা করছেন কিন্তু এই ঘটনার সার্বিক মনোভাবকে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠরা নিজেদের মতো করে সিনহলা জাতীয়তাবাদী বয়ানে পরিণত করেছে। ফলে সব মনযোগ মুসলিম সংখ্যালঘুদের দিকে ঘুরে গিয়ে তারাই ‘কেস্ট’তে পরিণত হয়েছে। সব মুসলমান একটি মিনি প্রগ্রামের শিকারে পরিণত হয়েছে। মুসলিম রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের গায়ে ইসলামী চরমপন্থার লেবেল লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে এবং পুলিশ ও নির্দয় মিডিয়া তাদের দাবড়ে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু রাজনৈতিক ও মিডিয়ার এই লড়াইয়ের মাঝে দেশের ৮% ক্যাথলিক জনগণের দুর্দশা কার্পেটের নিচে চাপা পড়ে গেছে।
ইস্টার হামলাকারীরা কলম্বো ও নেগোম্বোতে দুটি ক্যাথলিক ও বাত্তিকালোয়ায় একটি নন-ক্যাথলিক গির্জাকে টার্গেট করে। এতে প্রায় ৩০০ নিহত ও ৫০০-এর বেশি পঙ্গু হয়।
হামলা তদন্তে পার্লামেন্টারি সিলেক্ট কমিটি (পিএসসি) গঠন করা হলেও বিরোধী এমপিদের একজনও এতে নেই। অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসার যৌথ বিরোধী দল ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনার শ্রীলংকা ফ্রিডম পার্টি (এসএলএফপি) কমিটিকে বয়কট করে। ফলে পিএসসি সরকার ও সরকারপন্থী দলগুলোর একটি সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
স্পষ্টভাষী কার্ডিনাল ম্যালকম রনজিতের নেতৃত্বে ক্যাথলিকরা বর্তমান সরকারের কাজের ব্যাপারে তার মতো সমালোচনা করেননি। কার্ডিনার রনজিতের কঠোর বক্তব্যগুলার কারণে কিছু বিশ্লেষক তাকে চরম জাতীয়তাবাদী বয়ানের সঙ্গে যুক্ত করতে চাচ্ছেন। সরকারের কেউ কেউ এমনও বলছে যে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা শ্রীলংকা পদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) প্রতিষ্ঠাতা মাহিন্দা রাজাপাকসার ভাষায় কথা বলছেন।
এরই প্রেক্ষাপটে ইস্টার হামলা তদন্তে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের জন্য কাথলিক এমপিরা প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে চিঠি দিয়েছেন।
তিন এমপির লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে যে, চলমান তদন্ত নিয়ে জনগণের মধ্যে গুরুতর সংশয় রয়েছে। স্বাধীন বা সত্যিকারের তদন্ত হচ্ছে না। ইউএনপি’র নিয়োগ করা পিএসসি’কে সত্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হিসেবে অভিযোগ করেন এমপিরা।
পত্রে বলা হয়, ইস্টার সানডে হামলা তদন্ত ও রিপোর্ট দেয়ার জন্য নিয়োগ করা পিএসসি সত্যিকারের অপরাধীদের আড়াল করার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এটা এখন স্পষ্ট যে মন্ত্রী রিশাদ বাথিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট চাপা দেয়া ও সকল অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার মতো জঘন্য কাজ করতে এই পিএসসি নিয়োগ করা হয়েছে।
হামলার সময় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন বাথিউদ্দিন। তিনি দেশে ধর্মীয় চরমপন্থাকে সমর্থন করেন বলে অভিযোগ করে সিনহলি, বিশেষ করে বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। তিনি প্রভাব খাটিয়ে ইস্টার হামলায় জড়িত একজন সন্দেহভাজনের মুক্তির ব্যবস্থা করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
পিএসসি এসব অভিযোগ থেকে বাথিউদ্দিনকে মুক্তি দেয়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে পিএসসি’র ছাড়পত্র পাওয়ার পর নতুন করে মন্ত্রী পদে শপথ নেন।
তবে কোন কোন বিশ্লেষক বলছেন যে বাথিউদ্দিনের চেয়ে ইস্টার্ন প্রভিন্সের সাবেক গভর্নর এল এ এম হিসবুল্লাহর ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত। বাত্তিকালোয়া জেলায় শরিয়াহ বিশবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন হিসবুল্লাহ। ইস্টার হামলার কয়েক সপ্তাহ পর হিসবুল্লাহ মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন তারা যেন ভাবে ‘বিশ্বে তারা সংখ্যালঘু নয়।’ তখন থেকে ইস্যুটির আন্তর্জাতিকীরণ প্রচেষ্টা চালানোর অভিযোগে তীব্র সমালোচনার শিকার হচ্ছেন হিসবুল্লাহ। তাকেও নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে পিএসসি।
এদিকে এসএলপিপি অভিযোগ করে বলেছে যে পিএসসি’র কারণে দেশের গোয়েন্দা বিভাগ নাজুক হয়ে পড়ছে। এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করে দিচ্ছে। সিরিসেনার কাছে আবেদনে ক্যাথলিক এমপি’র এই বিষয়টিও তুলে ধরেছেন।
কার্ডিনাল রনজিতের তীব্র সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয় এই তদন্তের উপর তার কোন আস্থা নেই। ক্যাথলিক এমপিরা সিরিসেনাকে বলেন: কার্ডিনাল রনজিত অনেক বার বলেছেন যে যেভাবে তদন্ত করা হচ্ছে তাতে তার ও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের আস্থা নেই। চরমপন্থী কাজের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের এই সরকারের কিছু নেতা যেভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে তাতে ভিকটিমরা খুবই হতাশ। তাই কারা এই হামলার জন্য দায়ী, করা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে এবং এই হামলা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কারা দায়িত্ববান কর্তৃপক্ষকে বাধা দিয়েছে তা জানা জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বোমা হালার পর বেশ বেকায়দা অবস্থায় পড়ে যান সিরিসেনা। তখন অনেক তথ্যপ্রমাণ তার বিরুদ্ধে যায়। দেখা যায় তাকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ধরনের হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলো। হামলার আগে ভারতও বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ার করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পিএসসি গঠনের বিরুদ্ধে ছিলেন সিরিসেনা। তিনি বলেন এটা সারবস্তুহীন লোকদেখানো মাত্র।
বিরোধী এমপিরা সিরিসেনাকে বলেন যে অপরাধীদের মোকাবেলা করার দায়িত্ব তার এবং সত্যিকারে কি ঘটেছিলো তা জনগণকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন তারা।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন যে বিরোধী ক্যাথলিক এমপিরা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রাজাপাসকা গ্রুপের প্রকাশ্য রাজনৈতিক উদ্যোগের মতো। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
অতি ক্ষমতাধর সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব গোটাবায়া রাজাপাকসা এসএলপিপি’র প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করা হচ্ছে। শ্রীলংকার খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংখ্যালঘু রাজনৈতিক কণ্ঠ হলেও তারা তামিল ও মুসলিম সংখ্যালঘুদের (যথাক্রমে জনসংখ্যা ১২% ও ১০%) মতো নির্বাচনী সমীকরণ পাল্টে দেয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। তাই ইউএনপি-নেতৃত্বাধিন সরকারের বিরুদ্ধে ক্যাথলিক/খ্রিস্টানদের ক্ষোভ কাজে লাগাতে পারেন রাজাপাকসা।
ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচশ’র বেশি ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর উপর বোমা হামলার পরিণতি কি হয়েছে সেখবর মিডিয়া আসছে সামান্যই অথবা একেবারেই আসছেনা।
ভিকটিম পরিকবারগুলোর দুর্দশার ব্যাপারে সরকার উদাসীন। তবে চার্চগুলো মেরামত/পুননির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের বেশিরভাগ তদন্ত সত্য খুঁজে বের করার চেয়ে রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে।
অনেকে তাদের হাত-পা হারিয়েছেন অথবা মানসিক আঘাত পেয়েছেন। আহত ও নিহতরা যেসব পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন সেসব পরিবার অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্দশায় পড়েছে।
কিছু এনজিও ও খ্রিস্টান ধর্মগুরু ভিকটিমদের সহায়তা করার চেষ্টা করছেন কিন্তু এই ঘটনার সার্বিক মনোভাবকে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠরা নিজেদের মতো করে সিনহলা জাতীয়তাবাদী বয়ানে পরিণত করেছে। ফলে সব মনযোগ মুসলিম সংখ্যালঘুদের দিকে ঘুরে গিয়ে তারাই ‘কেস্ট’তে পরিণত হয়েছে। সব মুসলমান একটি মিনি প্রগ্রামের শিকারে পরিণত হয়েছে। মুসলিম রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের গায়ে ইসলামী চরমপন্থার লেবেল লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে এবং পুলিশ ও নির্দয় মিডিয়া তাদের দাবড়ে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু রাজনৈতিক ও মিডিয়ার এই লড়াইয়ের মাঝে দেশের ৮% ক্যাথলিক জনগণের দুর্দশা কার্পেটের নিচে চাপা পড়ে গেছে।
ইস্টার হামলাকারীরা কলম্বো ও নেগোম্বোতে দুটি ক্যাথলিক ও বাত্তিকালোয়ায় একটি নন-ক্যাথলিক গির্জাকে টার্গেট করে। এতে প্রায় ৩০০ নিহত ও ৫০০-এর বেশি পঙ্গু হয়।
হামলা তদন্তে পার্লামেন্টারি সিলেক্ট কমিটি (পিএসসি) গঠন করা হলেও বিরোধী এমপিদের একজনও এতে নেই। অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসার যৌথ বিরোধী দল ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনার শ্রীলংকা ফ্রিডম পার্টি (এসএলএফপি) কমিটিকে বয়কট করে। ফলে পিএসসি সরকার ও সরকারপন্থী দলগুলোর একটি সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
স্পষ্টভাষী কার্ডিনাল ম্যালকম রনজিতের নেতৃত্বে ক্যাথলিকরা বর্তমান সরকারের কাজের ব্যাপারে তার মতো সমালোচনা করেননি। কার্ডিনার রনজিতের কঠোর বক্তব্যগুলার কারণে কিছু বিশ্লেষক তাকে চরম জাতীয়তাবাদী বয়ানের সঙ্গে যুক্ত করতে চাচ্ছেন। সরকারের কেউ কেউ এমনও বলছে যে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা শ্রীলংকা পদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) প্রতিষ্ঠাতা মাহিন্দা রাজাপাকসার ভাষায় কথা বলছেন।
এরই প্রেক্ষাপটে ইস্টার হামলা তদন্তে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের জন্য কাথলিক এমপিরা প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে চিঠি দিয়েছেন।
তিন এমপির লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে যে, চলমান তদন্ত নিয়ে জনগণের মধ্যে গুরুতর সংশয় রয়েছে। স্বাধীন বা সত্যিকারের তদন্ত হচ্ছে না। ইউএনপি’র নিয়োগ করা পিএসসি’কে সত্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হিসেবে অভিযোগ করেন এমপিরা।
পত্রে বলা হয়, ইস্টার সানডে হামলা তদন্ত ও রিপোর্ট দেয়ার জন্য নিয়োগ করা পিএসসি সত্যিকারের অপরাধীদের আড়াল করার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এটা এখন স্পষ্ট যে মন্ত্রী রিশাদ বাথিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট চাপা দেয়া ও সকল অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার মতো জঘন্য কাজ করতে এই পিএসসি নিয়োগ করা হয়েছে।
হামলার সময় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন বাথিউদ্দিন। তিনি দেশে ধর্মীয় চরমপন্থাকে সমর্থন করেন বলে অভিযোগ করে সিনহলি, বিশেষ করে বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। তিনি প্রভাব খাটিয়ে ইস্টার হামলায় জড়িত একজন সন্দেহভাজনের মুক্তির ব্যবস্থা করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
পিএসসি এসব অভিযোগ থেকে বাথিউদ্দিনকে মুক্তি দেয়। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে পিএসসি’র ছাড়পত্র পাওয়ার পর নতুন করে মন্ত্রী পদে শপথ নেন।
তবে কোন কোন বিশ্লেষক বলছেন যে বাথিউদ্দিনের চেয়ে ইস্টার্ন প্রভিন্সের সাবেক গভর্নর এল এ এম হিসবুল্লাহর ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত। বাত্তিকালোয়া জেলায় শরিয়াহ বিশবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন হিসবুল্লাহ। ইস্টার হামলার কয়েক সপ্তাহ পর হিসবুল্লাহ মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন তারা যেন ভাবে ‘বিশ্বে তারা সংখ্যালঘু নয়।’ তখন থেকে ইস্যুটির আন্তর্জাতিকীরণ প্রচেষ্টা চালানোর অভিযোগে তীব্র সমালোচনার শিকার হচ্ছেন হিসবুল্লাহ। তাকেও নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে পিএসসি।
এদিকে এসএলপিপি অভিযোগ করে বলেছে যে পিএসসি’র কারণে দেশের গোয়েন্দা বিভাগ নাজুক হয়ে পড়ছে। এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করে দিচ্ছে। সিরিসেনার কাছে আবেদনে ক্যাথলিক এমপি’র এই বিষয়টিও তুলে ধরেছেন।
কার্ডিনাল রনজিতের তীব্র সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয় এই তদন্তের উপর তার কোন আস্থা নেই। ক্যাথলিক এমপিরা সিরিসেনাকে বলেন: কার্ডিনাল রনজিত অনেক বার বলেছেন যে যেভাবে তদন্ত করা হচ্ছে তাতে তার ও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের আস্থা নেই। চরমপন্থী কাজের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের এই সরকারের কিছু নেতা যেভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দিচ্ছে তাতে ভিকটিমরা খুবই হতাশ। তাই কারা এই হামলার জন্য দায়ী, করা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে এবং এই হামলা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কারা দায়িত্ববান কর্তৃপক্ষকে বাধা দিয়েছে তা জানা জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বোমা হালার পর বেশ বেকায়দা অবস্থায় পড়ে যান সিরিসেনা। তখন অনেক তথ্যপ্রমাণ তার বিরুদ্ধে যায়। দেখা যায় তাকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ধরনের হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলো। হামলার আগে ভারতও বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ার করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পিএসসি গঠনের বিরুদ্ধে ছিলেন সিরিসেনা। তিনি বলেন এটা সারবস্তুহীন লোকদেখানো মাত্র।
বিরোধী এমপিরা সিরিসেনাকে বলেন যে অপরাধীদের মোকাবেলা করার দায়িত্ব তার এবং সত্যিকারে কি ঘটেছিলো তা জনগণকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন তারা।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন যে বিরোধী ক্যাথলিক এমপিরা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রাজাপাসকা গ্রুপের প্রকাশ্য রাজনৈতিক উদ্যোগের মতো। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
অতি ক্ষমতাধর সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব গোটাবায়া রাজাপাকসা এসএলপিপি’র প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করা হচ্ছে। শ্রীলংকার খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংখ্যালঘু রাজনৈতিক কণ্ঠ হলেও তারা তামিল ও মুসলিম সংখ্যালঘুদের (যথাক্রমে জনসংখ্যা ১২% ও ১০%) মতো নির্বাচনী সমীকরণ পাল্টে দেয়ার মতো ক্ষমতা রাখে। তাই ইউএনপি-নেতৃত্বাধিন সরকারের বিরুদ্ধে ক্যাথলিক/খ্রিস্টানদের ক্ষোভ কাজে লাগাতে পারেন রাজাপাকসা।
No comments