‘জয় শ্রীরাম’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমর্ত্য সেনের by পরিতোষ পাল
গত
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি আশাতিরিক্ত ফল করার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ‘জয়
শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে রাজ্যের পরিবেশকে বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে
নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এই স্লোগান যে বাংলার সংস্কৃতি নয়-
সে কথা জোরের সঙ্গে বলছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। তবে এবার এই জয় শ্রীরাম
স্লোগান নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন। ৫ জুলাই শুক্রবার
কলকাতায় দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জয় শ্রীরাম স্লোগান প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন
বলেছেন, বঙ্গ সংস্কৃতিতে কোনও কালেই এ ধরনের স্লোগানের কোনও জায়গা ছিল না।
বাংলায় এ সব ‘ইদানীংকালে’র আমদানি। নতুন এই সংস্কৃতি আমদানির পিছনে বিভেদের
রাজনীতি কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বঙ্গ সংস্কৃতি এবং
হিন্দুত্ববাদের ‘আস্ফালন’ নিয়ে এদিন অমর্ত্য সেন সরব হয়েছেন। তিনি বলেছেন,
যখন শুনি কাউকে রিকসা থেকে নামিয়ে কিছু একটা বুলি আওড়াতে বলা হচ্ছে এবং
তিনি বলেননি বলে মাথায় লাঠি মারা হচ্ছে, তখন শঙ্কা হয়।
বিভিন্ন জাত, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য আমরা রাখতে দিতে চাই না। ইদানীং এটা বেড়েছে। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, ধর্মীয় ভেদাভেদ থেকে হিংসা কেন? ভারতীয় সংবিধানে সমস্ত ধর্মাচরণের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাঁর স্মৃতিতে কলকাতা’ নিয়ে বলতে গিয়েও টেনে এনেছেন ধর্মীয় বিভেদের বিষয়টি। তিনি বলেছেন, আজ যখন শুনি বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ ভীত, শঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরোন এই শহরে, তখন আমার গর্বের শহরকে চিনতে পারি না। এ সব নিয়ে প্রশ্ন তোলা দরকার। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, একসময় হিন্দু মহাসভা (বিজেপির পূর্বসুরী) পশ্চিমবঙ্গে বিভেদের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করেছিল। এখন বিজেপি ঠিক সেই একই উদ্দেশ্যে বাংলায় ‘জয় শ্রীরাম’ সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করছে। নেবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, জয় শ্রীরাম, রাম নবমী, এ সব কোনও কিছুর সঙ্গেই বাঙালির কোনও যোগ নেই। এখানে দুর্গাপুজোই হয়। বিজেপির তথাকথিত গেরুয়া সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অমর্ত্য সেন প্রথম থেকেই মুখ খুলে চলেছেন। এমনকি নালন্দা বিশ্বাবিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকেও সরে এসেছিলেন।
বাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে লিফলেট
কলকাতার রাস্তায় বাইক চালকদের দৌরাত্ম্যে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি এই বাইক চালকরা রেসের নামে বেপরোয়া বাইক চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। অনেক বাইক চালকের মৃত্যু হয়েছে রেস করতে গিয়ে। কলকাতার উড়াল পুলগুলি হয়েছে রাতে বাইক চালকদের রেসিংয়ের জায়গা। সম্প্রতি পুলিশ অবশ্য রাত বাড়ার সঙ্গে উড়ালপুলে বাইক চালানো নিষিদ্ধ করেছে। বেপরোয়া বাইক চালানো নিয়ে বিভিন্ন এলাকার বস্তিতে বস্তিতে গিয়ে পুলিশ লিফলেট বিলি করে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা শুরু করেছে। পুলিশের মতে, অবাধ্য বাইক চালকদের সকলেরই বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। অনেকেরই রয়েছে দামী ও আধুনিক বাইক। বাইক চালকদের অভব্যতার শিকার হচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষ। কয়েকদিন আগেই এক মহিলা মডেল এবং এক মহিলা বক্সার বাইকারদের হাতে নিগৃহীতও হয়েছেন। অবাধ্য বাইক চালকদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন পুলিশ সার্জেন্টরাও। এসব বাইক চালকরা মাথায় কোনও হেলমেট পরেন না। এমনকি আইনি কাগজপত্রের তোয়াক্কাও করে না। বেপরোয়া বাইক চালকদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এবং এদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৫ দিন ধরে কলকাতা পুলিশ বিশেষ কিছু এলাকা চিহ্নিত করে নাকা চেকিং চালু করেছে। প্রতি রাতে বেপরোয়া বাইক চালকদের ধরপাকড় ও হাজার খানেক বাইক বাজেয়াপ্ত করে এখনও অনেককেই বাগে আনা যায় নি। সম্প্রতি পার্ক সার্কাস এলাকায় নাকা চেকিং এড়াতে এক কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্টকে কয়েকশ মিটার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এক বাইকার। এখনও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের একাংশ বাইক চালকের বেপরোয়া মনোভাব দেখে অবাক ।
শঙ্কর হলেন কলকাতার নতুন শেরিফ
কলকাতার নতুন শেরিফ নিযুক্ত হয়েছেন লেখক মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। সাহিত্য জগতে যিনি শঙ্কর নামেই সমধিক পরিচিত। আগামী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এই পদের দায়িত্ব নেবেন । কলকাতার শেরিফ পদটি এখন শুধুমাত্র অলঙ্কার। মুম্বইয়ের মতো শহরে এই পদ অনেকদিন আগেই অবলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কলকাতায় এটি এখনও টিকে রয়েছে। ১৭৭৪ সালে এক সনদের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের রাজা (তৃতীয়) এই পদটি চালু করেছিলেন। এক বছরের মেয়াদের এই পদে সাবেক আমলা, খেলোয়াড়, অভিনেতা, চিকিৎসক থেকে অনেকেই এই পদ অলংঙ্কৃত করেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা সুচিত্রা মিত্র ছিলেন প্রথম মহিলা শেরিফ। তবে এর আগে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় শেরিফ হয়েছিলেন। আর এবার শেরিফ হয়েছেন আরেক লেখক। শঙ্করের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৭ ডিসেম্বর অধুনা বাংলাদেশের যশোরের বনগ্রামে। তবে ছোটবেলা কেটেছে হাওড়ায়। জীবনের এক পর্যায়ে কলকাতা হাইকোর্টের শেষ ইংরেজ ব্যারিস্টার নোয়েল ফ্রেডরিক বারওয়েলের অধীনে কাজ করেছেন শংকর। সেই জীবন নিয়ে লিখেছেন ‘কত অজানারে’। এছাড়াও ‘চৌরঙ্গী’, ‘জনঅরণ্য’, ‘সীমাবদ্ধ’ সহ নব্বইটিরও বেশি জনপ্রিয় বইয়ের প্রণেতা তিনি। রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দকে নিয়ে ভিন্ন ধরণের একাধিক গ্রন্থও রচনা করেছেন। এখনও সক্রিয় তার কলম। এক সময় ডালপ সংস্থার জনসংযোগের দায়িত্বও পালন করেছেন। এছাড়া ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগেরও উপদেষ্টা ছিলেন তিনি দীর্ঘদিন।
কলকাতার গাছ গুনবে পুরসভা
কলকাতা শহরে কত গাছ রয়েছে এবং কত ধরণের গাছ রয়েছে, এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর জানতে চাইলে দেশের প্রাচীনতম কলকাতা পুরসভার কর্তারা নিশ্চুপ। শহরে সবুজের পরিমাণই বা কত তা নিয়ে পুরসভা অন্ধকারে। অথচ পুরসভায় রয়েছে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে দেখভালের জন্য আলাদা দপ্তর (এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেরিটেজ ডিপার্টমেন্ট)। রয়েছে পুরসভার পার্ক ও উদ্যান সংক্রান্ত আলাদা দপ্তরও। কিন্তু এই মুহূর্তে কলকাতা শহরে গাছের সংখ্যা কত, সেগুলির বয়স কত বা কয়েক বছরে কত গাছ কাটা হয়েছে, এ সংক্রান্ত কোনও তথ্যই নেই কলকাতা পুর প্রশাসনের কাছে। এমনকি কত গাছ লাগানো হয়েছে বা সেগুলি বেঁচে রয়েছে কিনা তারও কোনও তথ্য নেই। শুধু পুরসভাই নয়, রাজ্য বন দপ্তরে কাছেও এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই। ফলে শুধু রাতের অন্ধকারেই নয়, দিনেদুপুরেও এই প্রাচীন শহর থেকে গাছ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। পুরসভাও অন্যায়ভাবে গাছ কাটছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশবাদীরা। আর এই পরিবেশবাদীদের চাপে পড়েই টনক নড়েছে পুরকর্তাদের। শেষ পর্যন্ত শহরের গাছ গণনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। জানা গেছে, বরো (কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে একটি বরো) ধরে ধরে সরেজমিনে দেখা হবে কত সংখ্যক গাছ রয়েছে। সেই গাছগুলিই বা কি কি ধরণের। তাদের বয়সই বা কত, তাও খুঁজে দেখা হবে। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গাছ গণনা হলে বোঝা যাবে একটি এলাকায় কত গাছ রয়েছে এবং সেই সংখ্যা কমছে কি না। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে এ সবের নির্দিষ্ট তথ্যই নেই। অথচ পরিবেশবাদীরা জানিয়েছেন, ২০১২ সাল নাগাদ এক বার গাছ গণনায় উদ্যোগী হয়েছিল পুরসভা। তার ফল কেউ জানতে পারেনি। অথচ গাছ গণনা হলে শহরের গাছের প্রকৃত চিত্রটা উঠে আসতো। আর এর ফলে সার্বিক গাছরোপণ নীতি নিয়েও একটি সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হতো।
ইসকনের রথে যুদ্ধবিমান সুখোইয়ের চাকা
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ প্রচার সংস্থা ইসকন গত ৪৮ বছরে ধরে কলকাতায় রথযাত্রা উপলক্ষ্যে তিনটি রথ বের করে আসছে। পুরীর রথের অনুকরণে তৈরি এইসব রথের চাকা একসময় লোহার হলেও কলকাতার রাস্তার কথা ভেবে লাগানো হয়েছিল বোয়িং ৭৭৭ বিমানের চাকা। অবশ্য একমাত্র জগন্নাথ দেবের রথেই রয়েছে টায়ারের চাকা। অন্য দুটি রথে এখনও লাগানো লোহার চাকা। গত কয়েক দশক ধরে চলা টায়ারের চাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে সমস্যা। রথের প্রস্তুতকারক মার্কিন প্রকৌশলি গ্যারি উইলিয়াম রবার্টস মূল রথের চাকা পরিবর্তনের সুপারিশ করার পরই চাকার মাপজোখ নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল বোয়িংয়ের চাকা বা টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা ডানলপের সঙ্গে। কিন্তু তারা অপরগতা জানানোয় বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন ইসকনের কর্তা ব্যক্তিরা। পরে তারা বিমানের টায়ার প্রস্তুতকারক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেষপর্যন্ত ঠিক হয় যেহেতু সুখোই বিমানের জন্য নির্দিষ্ট টায়ার খুবই শক্তিশালী, তাই সেটি লাগানোরই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরেই ইসকনের কর্তারা যোগাযোগ করেছেন, সুখোইয়ের টায়ার তৈরির ভারতে একমাত্র সংস্থা এমআরএফের সঙ্গে। তারাই দেবে সুখোইয়ের টায়ার। সেটিই লাগানো হবে জগন্নাথ দেবের রথে। তবে ইসকন সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী বছরেই রথের চাকা পরিবর্তন করা সম্ভব হবে।
বিভিন্ন জাত, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য আমরা রাখতে দিতে চাই না। ইদানীং এটা বেড়েছে। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, ধর্মীয় ভেদাভেদ থেকে হিংসা কেন? ভারতীয় সংবিধানে সমস্ত ধর্মাচরণের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাঁর স্মৃতিতে কলকাতা’ নিয়ে বলতে গিয়েও টেনে এনেছেন ধর্মীয় বিভেদের বিষয়টি। তিনি বলেছেন, আজ যখন শুনি বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ ভীত, শঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরোন এই শহরে, তখন আমার গর্বের শহরকে চিনতে পারি না। এ সব নিয়ে প্রশ্ন তোলা দরকার। তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, একসময় হিন্দু মহাসভা (বিজেপির পূর্বসুরী) পশ্চিমবঙ্গে বিভেদের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করেছিল। এখন বিজেপি ঠিক সেই একই উদ্দেশ্যে বাংলায় ‘জয় শ্রীরাম’ সংস্কৃতির আমদানি ঘটানোর চেষ্টা করছে। নেবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, জয় শ্রীরাম, রাম নবমী, এ সব কোনও কিছুর সঙ্গেই বাঙালির কোনও যোগ নেই। এখানে দুর্গাপুজোই হয়। বিজেপির তথাকথিত গেরুয়া সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অমর্ত্য সেন প্রথম থেকেই মুখ খুলে চলেছেন। এমনকি নালন্দা বিশ্বাবিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকেও সরে এসেছিলেন।
বাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে লিফলেট
কলকাতার রাস্তায় বাইক চালকদের দৌরাত্ম্যে মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি এই বাইক চালকরা রেসের নামে বেপরোয়া বাইক চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। অনেক বাইক চালকের মৃত্যু হয়েছে রেস করতে গিয়ে। কলকাতার উড়াল পুলগুলি হয়েছে রাতে বাইক চালকদের রেসিংয়ের জায়গা। সম্প্রতি পুলিশ অবশ্য রাত বাড়ার সঙ্গে উড়ালপুলে বাইক চালানো নিষিদ্ধ করেছে। বেপরোয়া বাইক চালানো নিয়ে বিভিন্ন এলাকার বস্তিতে বস্তিতে গিয়ে পুলিশ লিফলেট বিলি করে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা শুরু করেছে। পুলিশের মতে, অবাধ্য বাইক চালকদের সকলেরই বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। অনেকেরই রয়েছে দামী ও আধুনিক বাইক। বাইক চালকদের অভব্যতার শিকার হচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষ। কয়েকদিন আগেই এক মহিলা মডেল এবং এক মহিলা বক্সার বাইকারদের হাতে নিগৃহীতও হয়েছেন। অবাধ্য বাইক চালকদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন পুলিশ সার্জেন্টরাও। এসব বাইক চালকরা মাথায় কোনও হেলমেট পরেন না। এমনকি আইনি কাগজপত্রের তোয়াক্কাও করে না। বেপরোয়া বাইক চালকদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এবং এদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৫ দিন ধরে কলকাতা পুলিশ বিশেষ কিছু এলাকা চিহ্নিত করে নাকা চেকিং চালু করেছে। প্রতি রাতে বেপরোয়া বাইক চালকদের ধরপাকড় ও হাজার খানেক বাইক বাজেয়াপ্ত করে এখনও অনেককেই বাগে আনা যায় নি। সম্প্রতি পার্ক সার্কাস এলাকায় নাকা চেকিং এড়াতে এক কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্টকে কয়েকশ মিটার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এক বাইকার। এখনও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের একাংশ বাইক চালকের বেপরোয়া মনোভাব দেখে অবাক ।
শঙ্কর হলেন কলকাতার নতুন শেরিফ
কলকাতার নতুন শেরিফ নিযুক্ত হয়েছেন লেখক মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। সাহিত্য জগতে যিনি শঙ্কর নামেই সমধিক পরিচিত। আগামী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এই পদের দায়িত্ব নেবেন । কলকাতার শেরিফ পদটি এখন শুধুমাত্র অলঙ্কার। মুম্বইয়ের মতো শহরে এই পদ অনেকদিন আগেই অবলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কলকাতায় এটি এখনও টিকে রয়েছে। ১৭৭৪ সালে এক সনদের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের রাজা (তৃতীয়) এই পদটি চালু করেছিলেন। এক বছরের মেয়াদের এই পদে সাবেক আমলা, খেলোয়াড়, অভিনেতা, চিকিৎসক থেকে অনেকেই এই পদ অলংঙ্কৃত করেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা সুচিত্রা মিত্র ছিলেন প্রথম মহিলা শেরিফ। তবে এর আগে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় শেরিফ হয়েছিলেন। আর এবার শেরিফ হয়েছেন আরেক লেখক। শঙ্করের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৭ ডিসেম্বর অধুনা বাংলাদেশের যশোরের বনগ্রামে। তবে ছোটবেলা কেটেছে হাওড়ায়। জীবনের এক পর্যায়ে কলকাতা হাইকোর্টের শেষ ইংরেজ ব্যারিস্টার নোয়েল ফ্রেডরিক বারওয়েলের অধীনে কাজ করেছেন শংকর। সেই জীবন নিয়ে লিখেছেন ‘কত অজানারে’। এছাড়াও ‘চৌরঙ্গী’, ‘জনঅরণ্য’, ‘সীমাবদ্ধ’ সহ নব্বইটিরও বেশি জনপ্রিয় বইয়ের প্রণেতা তিনি। রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দকে নিয়ে ভিন্ন ধরণের একাধিক গ্রন্থও রচনা করেছেন। এখনও সক্রিয় তার কলম। এক সময় ডালপ সংস্থার জনসংযোগের দায়িত্বও পালন করেছেন। এছাড়া ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই করপোরেশনের জনসংযোগ বিভাগেরও উপদেষ্টা ছিলেন তিনি দীর্ঘদিন।
কলকাতার গাছ গুনবে পুরসভা
কলকাতা শহরে কত গাছ রয়েছে এবং কত ধরণের গাছ রয়েছে, এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর জানতে চাইলে দেশের প্রাচীনতম কলকাতা পুরসভার কর্তারা নিশ্চুপ। শহরে সবুজের পরিমাণই বা কত তা নিয়ে পুরসভা অন্ধকারে। অথচ পুরসভায় রয়েছে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে দেখভালের জন্য আলাদা দপ্তর (এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেরিটেজ ডিপার্টমেন্ট)। রয়েছে পুরসভার পার্ক ও উদ্যান সংক্রান্ত আলাদা দপ্তরও। কিন্তু এই মুহূর্তে কলকাতা শহরে গাছের সংখ্যা কত, সেগুলির বয়স কত বা কয়েক বছরে কত গাছ কাটা হয়েছে, এ সংক্রান্ত কোনও তথ্যই নেই কলকাতা পুর প্রশাসনের কাছে। এমনকি কত গাছ লাগানো হয়েছে বা সেগুলি বেঁচে রয়েছে কিনা তারও কোনও তথ্য নেই। শুধু পুরসভাই নয়, রাজ্য বন দপ্তরে কাছেও এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই। ফলে শুধু রাতের অন্ধকারেই নয়, দিনেদুপুরেও এই প্রাচীন শহর থেকে গাছ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। পুরসভাও অন্যায়ভাবে গাছ কাটছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশবাদীরা। আর এই পরিবেশবাদীদের চাপে পড়েই টনক নড়েছে পুরকর্তাদের। শেষ পর্যন্ত শহরের গাছ গণনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। জানা গেছে, বরো (কয়েকটি ওয়ার্ড নিয়ে একটি বরো) ধরে ধরে সরেজমিনে দেখা হবে কত সংখ্যক গাছ রয়েছে। সেই গাছগুলিই বা কি কি ধরণের। তাদের বয়সই বা কত, তাও খুঁজে দেখা হবে। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গাছ গণনা হলে বোঝা যাবে একটি এলাকায় কত গাছ রয়েছে এবং সেই সংখ্যা কমছে কি না। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে এ সবের নির্দিষ্ট তথ্যই নেই। অথচ পরিবেশবাদীরা জানিয়েছেন, ২০১২ সাল নাগাদ এক বার গাছ গণনায় উদ্যোগী হয়েছিল পুরসভা। তার ফল কেউ জানতে পারেনি। অথচ গাছ গণনা হলে শহরের গাছের প্রকৃত চিত্রটা উঠে আসতো। আর এর ফলে সার্বিক গাছরোপণ নীতি নিয়েও একটি সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হতো।
ইসকনের রথে যুদ্ধবিমান সুখোইয়ের চাকা
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ প্রচার সংস্থা ইসকন গত ৪৮ বছরে ধরে কলকাতায় রথযাত্রা উপলক্ষ্যে তিনটি রথ বের করে আসছে। পুরীর রথের অনুকরণে তৈরি এইসব রথের চাকা একসময় লোহার হলেও কলকাতার রাস্তার কথা ভেবে লাগানো হয়েছিল বোয়িং ৭৭৭ বিমানের চাকা। অবশ্য একমাত্র জগন্নাথ দেবের রথেই রয়েছে টায়ারের চাকা। অন্য দুটি রথে এখনও লাগানো লোহার চাকা। গত কয়েক দশক ধরে চলা টায়ারের চাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে সমস্যা। রথের প্রস্তুতকারক মার্কিন প্রকৌশলি গ্যারি উইলিয়াম রবার্টস মূল রথের চাকা পরিবর্তনের সুপারিশ করার পরই চাকার মাপজোখ নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল বোয়িংয়ের চাকা বা টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা ডানলপের সঙ্গে। কিন্তু তারা অপরগতা জানানোয় বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন ইসকনের কর্তা ব্যক্তিরা। পরে তারা বিমানের টায়ার প্রস্তুতকারক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেষপর্যন্ত ঠিক হয় যেহেতু সুখোই বিমানের জন্য নির্দিষ্ট টায়ার খুবই শক্তিশালী, তাই সেটি লাগানোরই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরেই ইসকনের কর্তারা যোগাযোগ করেছেন, সুখোইয়ের টায়ার তৈরির ভারতে একমাত্র সংস্থা এমআরএফের সঙ্গে। তারাই দেবে সুখোইয়ের টায়ার। সেটিই লাগানো হবে জগন্নাথ দেবের রথে। তবে ইসকন সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী বছরেই রথের চাকা পরিবর্তন করা সম্ভব হবে।
No comments