চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে তালেবান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা, সেনা প্রত্যাহারের কাছাকাছি আমেরিকা
আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধ সম্ভবত সমাপ্তির দিকে এগুচ্ছে।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে সিনিয়র তালেবান কর্মকর্তারা ও আফগান সমাজের শীর্ষ ব্যক্তিরা কাতারের দোহায় দু’দিনের আলোচনার পর ‘শান্তির রোড ম্যাচ’ ইস্যু করেছেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন কূটনীতিবিদেরা তালেবানের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন। এরপরপরই আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ চীন হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেতে বিমানে ওঠেন পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে।
খালিলজাদ বলেন, ২৯ জুন শুরু হওয়া সর্বশেষ দফার আলোচনা ছিল গত বছর থেকে চলা আলোচনার সবচেয়ে ফলপ্রসূ অংশ। আমরা বলতে পারি, এসব আলোচনায় যুদ্ধ বন্ধে প্রথম পদক্ষেপ ফেলা হয়েছে। তবে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার যুদ্ধরত গ্রুপগুলো ও আফগান সরকারের মধ্যকার লড়াই বন্ধের নিশ্চয়তা দেয় না।
কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক দশকের সহিংসতা বন্ধের প্রবল দাবির সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি যে কুদরাতুল্লাহ জাকি (সাবেক এমপি) ২০১৮ সালের ৭ মার্চ অল্পের জন্য তালেবান হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, তিনিও চান এই যুদ্ধ যাতে আর না অব্যাহত থাকে।
তিনি এনবিসি নিউজকে বলেন, এই সঙ্ঘাতে প্রতিদিন প্রায় ২০০ আফগান মারা যাচ্ছে। এই সঙ্ঘাত আমাদের বন্ধ করতে হবে।
নাইন ইলেভেনের পর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে আফগানিস্তান থেকে তালেবান সরকারকে উৎখাত করার জন্য ২০০১ সালে আফগান অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিক, নিরাপত্তা সদস্য ও ২,৪০০-এর বেশি আমেরিকান নিহত হয়েছে।
উৎখাতের পর এখন তালেবান বাহিনী দেশটির অনেক বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে বা লড়াই করছে।
আফগানিস্তানে শান্তির জন্য প্রবল আগ্রহ থাকলেও অনেকে আশঙ্কা করছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যকার আরোচনার ফলে সঙ্ঘাত বন্ধ হবে না। এতে যা হবে তা হলো সঙ্ঘাতে আমেরিকার সম্পৃক্ততার অবসান ঘটবে। আর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ হয়ে থাকলে দেশটির নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভাববে, তালেবানের সাথে শান্তিটি আসলে কেমন হবে।
আফগান নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গঠিত একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লায়লা হায়দারি বলেন, ‘ইসলামি কাঠামোর মধ্যে’ নারীদের অধিকার প্রদান করার প্রতিশ্রুতিতে তিনি উদ্বিগ্ন।
হায়দারি বলেন, এখন আমরা ব্যবসা করতে পারি, শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আছে আমাদের। ইসলামি কাঠামোতে কি আমরা এসব কাজ করতে পারব?
তালেবান যেসব এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেখানে তারা কঠোর ও কৃচ্ছমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। তারা নারী ও মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দিচ্ছে, বাইরে কাজ করতে দিচ্ছে না।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিভাগের সহ-পরিচালক হেদার বার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, গত ১৮ বছরে নারী ও মেয়েরা যে সাফল্য পেয়েছে, তালেবানের আমলে তা হুমকিতে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, জেন্ডার সাম্যের প্রবল বিরোধিতা করছে তালেবান। আমেরিকা যদি তাড়াহুড়া করে কোনো চুক্তি করে তবে নারীদের অধিকার অবজ্ঞা করা হয়ে যেতে পারে।
তালেবান নেতারা এখন জোর দিয়ে বলছে যে তারা সংস্কার সাধন করেছে, নারী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোনো বৈষম্য করা হবে না।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক হেলমন্দ প্রদেশভিত্তিক এক কমান্ডার বলেন, নারীদের অধিকার রক্ষা করার মানে এই নয় যে তারা এখন অফিসে যেভাবে কাজ করছে, সেভাবে করে যাবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে মার্কিন সহায়তা নির্ভর করবে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি দেশটির আচরণ দেখে।
>>>আহমদ মেঙ্গলি, মোস্তাক ইউসুফজাই ও সাফোরা স্মিথ
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে সিনিয়র তালেবান কর্মকর্তারা ও আফগান সমাজের শীর্ষ ব্যক্তিরা কাতারের দোহায় দু’দিনের আলোচনার পর ‘শান্তির রোড ম্যাচ’ ইস্যু করেছেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন কূটনীতিবিদেরা তালেবানের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন। এরপরপরই আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ চীন হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেতে বিমানে ওঠেন পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে।
খালিলজাদ বলেন, ২৯ জুন শুরু হওয়া সর্বশেষ দফার আলোচনা ছিল গত বছর থেকে চলা আলোচনার সবচেয়ে ফলপ্রসূ অংশ। আমরা বলতে পারি, এসব আলোচনায় যুদ্ধ বন্ধে প্রথম পদক্ষেপ ফেলা হয়েছে। তবে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার যুদ্ধরত গ্রুপগুলো ও আফগান সরকারের মধ্যকার লড়াই বন্ধের নিশ্চয়তা দেয় না।
কিন্তু তা সত্ত্বেও কয়েক দশকের সহিংসতা বন্ধের প্রবল দাবির সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি যে কুদরাতুল্লাহ জাকি (সাবেক এমপি) ২০১৮ সালের ৭ মার্চ অল্পের জন্য তালেবান হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, তিনিও চান এই যুদ্ধ যাতে আর না অব্যাহত থাকে।
তিনি এনবিসি নিউজকে বলেন, এই সঙ্ঘাতে প্রতিদিন প্রায় ২০০ আফগান মারা যাচ্ছে। এই সঙ্ঘাত আমাদের বন্ধ করতে হবে।
নাইন ইলেভেনের পর ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে আফগানিস্তান থেকে তালেবান সরকারকে উৎখাত করার জন্য ২০০১ সালে আফগান অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিক, নিরাপত্তা সদস্য ও ২,৪০০-এর বেশি আমেরিকান নিহত হয়েছে।
উৎখাতের পর এখন তালেবান বাহিনী দেশটির অনেক বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে বা লড়াই করছে।
আফগানিস্তানে শান্তির জন্য প্রবল আগ্রহ থাকলেও অনেকে আশঙ্কা করছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যকার আরোচনার ফলে সঙ্ঘাত বন্ধ হবে না। এতে যা হবে তা হলো সঙ্ঘাতে আমেরিকার সম্পৃক্ততার অবসান ঘটবে। আর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ হয়ে থাকলে দেশটির নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভাববে, তালেবানের সাথে শান্তিটি আসলে কেমন হবে।
আফগান নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গঠিত একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লায়লা হায়দারি বলেন, ‘ইসলামি কাঠামোর মধ্যে’ নারীদের অধিকার প্রদান করার প্রতিশ্রুতিতে তিনি উদ্বিগ্ন।
হায়দারি বলেন, এখন আমরা ব্যবসা করতে পারি, শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আছে আমাদের। ইসলামি কাঠামোতে কি আমরা এসব কাজ করতে পারব?
তালেবান যেসব এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, সেখানে তারা কঠোর ও কৃচ্ছমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। তারা নারী ও মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দিচ্ছে, বাইরে কাজ করতে দিচ্ছে না।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিভাগের সহ-পরিচালক হেদার বার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, গত ১৮ বছরে নারী ও মেয়েরা যে সাফল্য পেয়েছে, তালেবানের আমলে তা হুমকিতে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, জেন্ডার সাম্যের প্রবল বিরোধিতা করছে তালেবান। আমেরিকা যদি তাড়াহুড়া করে কোনো চুক্তি করে তবে নারীদের অধিকার অবজ্ঞা করা হয়ে যেতে পারে।
তালেবান নেতারা এখন জোর দিয়ে বলছে যে তারা সংস্কার সাধন করেছে, নারী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোনো বৈষম্য করা হবে না।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক হেলমন্দ প্রদেশভিত্তিক এক কমান্ডার বলেন, নারীদের অধিকার রক্ষা করার মানে এই নয় যে তারা এখন অফিসে যেভাবে কাজ করছে, সেভাবে করে যাবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে মার্কিন সহায়তা নির্ভর করবে নারী ও সংখ্যালঘুদের প্রতি দেশটির আচরণ দেখে।
>>>আহমদ মেঙ্গলি, মোস্তাক ইউসুফজাই ও সাফোরা স্মিথ
কাবুলে ২ জুলাই এক হামলার পর হামলাস্থলের পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে এক কিশোর, ছবি: এপি |
No comments