মানুষের হৃদয় জয় করতে হবে : জেসিন্ডা আরডার্ন by মো: আবদুস সালিম
জেসিন্ডা
আরডার্ন। তার পুরো নাম জেসিন্ডা কাটে লওরেল আরডার্ন। নামটির সাথে বিশ্বের
মানুষ খুব বেশি পরিচিত না থাকলেও গত ১৬ মার্চ নিউজিল্যান্ডের
ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর থেকেই বিশ্বের
মানুষ তাকে (আরডার্ন) বেশি করে চিনতে থাকে। তিনি আর কেউ নন, তিনি
নিউজিল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। এই প্রধানমন্ত্রীর নাম মানুষ জানছে
তার নির্ভেজাল নানা কার্যক্রমের কারণেই। সন্ত্রাসী হামলায় বেশ কয়েকজনের
মৃত্যু ঘটলে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ওই সঙ্কটকালে দেশবাসীকে বলতে
থাকেনÑ ‘উই আর ওয়ান’। অর্থাৎ আমরা সবাই এক। একতাবদ্ধ হয়ে থাকলে কোনো ধরনের
সন্ত্রাসী কার্যকলাপ যেমন ঘটবে না, তেমনি এ-সংক্রান্ত কোনো ঝক্কিঝামেলাও
আমাদের কাছে আসতে পারবে না নিশ্চিত। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেনÑ
মানুষকে নয়, মানুষের হৃদয় জয় করতে হবে। পারমাণবিক অস্ত্র সঠিক পথ দেখাবে
না, সঠিক পথ দেখাবে প্রেম, ভালোবাসা, সৌহার্দ্য ইত্যাদি মানবিক গুণ।
বিশ্বে শান্তিকামীরা বলেছেন, জেসিন্ডা আরডার্ন একজন ভিন্নধর্মাবলম্বী ও ভিন্ন কৃষ্টি-সংস্কৃতির মানুষ। তথাপিও তিনি সঙ্কটকালে মুসলমানদের পাশে যেভাবে অবস্থান নিয়েছেন তা সত্যিই অতুলনীয়। তার পোশাক-আশাক, কথাবার্তা, আচরণ ইত্যাদিতেও এসব দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। মুসলমানদের মতো হিজাব পরেছেন। এমনকি দোয়া-দরুদও পাঠ করেছেন, যাতে সবাই তার কথা ও কাজে আকৃষ্ট হয়। এসব ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপও করেননি। অনভিপ্রেত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে তিনি কতটুকু বেদনাকাতর হয়েছেন তা বিশ্বের মানুষ ঠিকই বুঝেছে। তিনি বলেছেন, ‘যে আঘাত হানা হয়েছে তোমাদের ওপর, তা লেগেছে আমার গায়েও। আর সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্মও নেই।’ হামলাকারী ধর্মীয় বিশ্বাসে খ্রিষ্টান হলেও বর্ণবাদই তার হামলার প্রধান কারণ। এসব চরমপন্থীর শুধু নিউজিল্যান্ডেই নয়, তামাম জাহানে কোনো স্থান নেই। এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত।
২৬ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের রাজনীতির ক্ষেত্রে ৪০তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জেসিন্ডা আরডার্ন। ১ আগস্ট ২০১৭ থেকে লেবার পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৮ মার্চ ২০১৭ থেকে মাউন্ট আলবার্ট নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৮ সালে সংসদীয় নির্বাচনে জেসিন্ডা প্রতিনিধিত্ব সভায় প্রথম নির্বাচিত প্রতিনিধি।
২০০১-এ ওয়াইকাটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের দফতরে তিনি গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নীতি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ২০০৮-এ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব সোস্যালিস্ট ইয়ুথের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৭-তে মাউন্ট আলবার্ট নির্বাচনী এলাকায় উপনির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে তালিকাভুক্ত এমপি হিসেবে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকেন। আন্নেটে কিংয়ের পদত্যাগের পর ১ মার্চ ২০১৭-তে তিনি লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার হিসেবে সার্বিকভাবে নির্বাচিত হন।
জেসিন্ডা নিজেকে একজন সামাজিক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মানুষ বলে বর্ণনা করেন। প্রায় ৩৭ বছর বয়সে তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চপদস্থ অল্পবয়সী নারী। মরিনভিলে কলেজে লেখাপড়া করেন এই সফল নারী। ওই কলেজেই তিনি বোর্ড অব ট্রাস্টির প্রতিনিধিত্ব করেন। এরপর ওয়াইকাটা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ও জনসংযোগ বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন। জেসিন্ডার চাচী মেরিয়া এনড্রেন, যিনি দীর্ঘ দিন লেবার পার্টির মেম্বার ছিলেন, তিনিই জেসিন্ডাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। চাচীর সাথে থেকে প্রায় ১৮ বছরের ভাতিজি বিভিন্ন অভিযানে অংশ নেন। তার সাথে থেকে জেসিন্ডা এ-সংক্রান্ত নানা বিষয় সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভ করতে থাকেন। এ কারণেই তিনি প্রায় ১৭ বছর বয়সে লেবার পার্টিতে যোগ দেন এবং দলটির ইয়ং লেবার সেক্টরে বেশ বড়মাপের নেতা হন। এরপর তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি পলিসি ইউনিটের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে তিনি নীতিনির্ধারক হিসেবে সেকেন্ড টু দ্য হোম অফিসের সাথে যুক্ত হন।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব সোস্যালিস্ট ইয়ুথ নামক প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি থাকাকালে তিনি জর্দান, ইসরাইল, আলজেরিয়া, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০৮-এ নির্বাচনের আগে লেবার পার্টির তালিকায় উচ্চ অবস্থানে থেকে কর্মতৎপরতা চালিয়ে যান। পরে লন্ডন থেকে ফেরত গিয়ে ফুলটাইম অভিযানে নামেন। বিরোধীদলীয় নেতা ফিল গফ তাকে পদোন্নতি দিয়ে সংসদের সামনের বেঞ্চে বসান। এবং ইয়ুথ অ্যাফেয়ার্সের মুখপাত্র হিসেবে নামকরণ করেন।
এক দশকের মধ্যে নিউজিল্যান্ডে শিশুদারিদ্র্য অর্ধেকে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেন জেসিন্ডা আরডার্ন। এই মর্মে জুলাই ২০১৮-তে সরকার কর্তৃক প্রতিটি পরিবারের জন্য এ-সংক্রান্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সেখানে বরাদ্দ হিসেবে শিশুর অভিভাবকদের ২২ থেকে ২৬ সপ্তাহ ছুটি বৃদ্ধি থাকবে ২০২০ সাল থেকে। আর মাঝারি থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের প্রতিটি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে ৬০ ডলার করে বরাদ্দ দেয়া হবে। তিনি মানুষকে অপরাধী হওয়া ও মাদকাসক্ত হওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি স্মারকলিপি তুলে ধরেন। তার প্রচেষ্টা হচ্ছে মাদককে নিষেধ করবে নাকি আইনসিদ্ধ করবে, সে ব্যাপারে স্মারকলিপি তৈরি করেন।
ডিসেম্বর ২০১৭-তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী বলে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিলে আরডার্ন এর প্রতিবাদ করেন। বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু আন্তর্জাতিক কর্মী আমাদের সামনে যেতে না দিয়ে বরং পেছনে ঠেলে দিতে চাইছে। জাতিসঙ্ঘের সাধারণ সভায় উপস্থিত থেকে সেখানে বিবৃতি দেয়ার সময় জাতিসঙ্ঘের বহুত্ববাদ এবং সারা বিশ্বের যুবকদের সহায়তার ক্ষেত্রে সুপারিশ করেন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর ওপর দ্রুত নজর দেয়ার আহ্বান জানান।
একই সাথে নারীর ক্ষমতা ও তাদের প্রতি পেশাভিত্তিক সহানুভূতিশীল হওয়ার গুরুত্ব আরোপ করেন।
অক্টোবর ২০১৮-তে প্রধানমন্ত্রী চীনের জিনজিয়াং পুনঃশিক্ষাকেন্দ্র নিয়ে প্রসঙ্গ তোলেন এবং দেশটির উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুমের বিষয়টি তুলে ধরেন। কারণ চীন এক মিলিয়ন উইঘুর মুসলমানকে চীনের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়া এবং তাদেরকে কী শর্তে মুক্তি দেয়া যায় তার কোনো নির্দেশনা ছাড়াই বন্দী করে রাখে। মিয়ানমার কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত আচরণের বিষয়টিও তুলে ধরেন আরডার্ন। নভেম্বর ২০১৮ তিনি অং সান সু চির সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নিউজিল্যান্ডের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসব কাজের জন্য জেসিন্ডা আরডার্ন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হন, যেখানে সু চি হন নিন্দিত।
বিশ্বে শান্তিকামীরা বলেছেন, জেসিন্ডা আরডার্ন একজন ভিন্নধর্মাবলম্বী ও ভিন্ন কৃষ্টি-সংস্কৃতির মানুষ। তথাপিও তিনি সঙ্কটকালে মুসলমানদের পাশে যেভাবে অবস্থান নিয়েছেন তা সত্যিই অতুলনীয়। তার পোশাক-আশাক, কথাবার্তা, আচরণ ইত্যাদিতেও এসব দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। মুসলমানদের মতো হিজাব পরেছেন। এমনকি দোয়া-দরুদও পাঠ করেছেন, যাতে সবাই তার কথা ও কাজে আকৃষ্ট হয়। এসব ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপও করেননি। অনভিপ্রেত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে তিনি কতটুকু বেদনাকাতর হয়েছেন তা বিশ্বের মানুষ ঠিকই বুঝেছে। তিনি বলেছেন, ‘যে আঘাত হানা হয়েছে তোমাদের ওপর, তা লেগেছে আমার গায়েও। আর সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্মও নেই।’ হামলাকারী ধর্মীয় বিশ্বাসে খ্রিষ্টান হলেও বর্ণবাদই তার হামলার প্রধান কারণ। এসব চরমপন্থীর শুধু নিউজিল্যান্ডেই নয়, তামাম জাহানে কোনো স্থান নেই। এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত।
২৬ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের রাজনীতির ক্ষেত্রে ৪০তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জেসিন্ডা আরডার্ন। ১ আগস্ট ২০১৭ থেকে লেবার পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৮ মার্চ ২০১৭ থেকে মাউন্ট আলবার্ট নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০০৮ সালে সংসদীয় নির্বাচনে জেসিন্ডা প্রতিনিধিত্ব সভায় প্রথম নির্বাচিত প্রতিনিধি।
২০০১-এ ওয়াইকাটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের দফতরে তিনি গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নীতি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ২০০৮-এ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব সোস্যালিস্ট ইয়ুথের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৭-তে মাউন্ট আলবার্ট নির্বাচনী এলাকায় উপনির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে তালিকাভুক্ত এমপি হিসেবে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকেন। আন্নেটে কিংয়ের পদত্যাগের পর ১ মার্চ ২০১৭-তে তিনি লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার হিসেবে সার্বিকভাবে নির্বাচিত হন।
জেসিন্ডা নিজেকে একজন সামাজিক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মানুষ বলে বর্ণনা করেন। প্রায় ৩৭ বছর বয়সে তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চপদস্থ অল্পবয়সী নারী। মরিনভিলে কলেজে লেখাপড়া করেন এই সফল নারী। ওই কলেজেই তিনি বোর্ড অব ট্রাস্টির প্রতিনিধিত্ব করেন। এরপর ওয়াইকাটা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি ও জনসংযোগ বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন। জেসিন্ডার চাচী মেরিয়া এনড্রেন, যিনি দীর্ঘ দিন লেবার পার্টির মেম্বার ছিলেন, তিনিই জেসিন্ডাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। চাচীর সাথে থেকে প্রায় ১৮ বছরের ভাতিজি বিভিন্ন অভিযানে অংশ নেন। তার সাথে থেকে জেসিন্ডা এ-সংক্রান্ত নানা বিষয় সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভ করতে থাকেন। এ কারণেই তিনি প্রায় ১৭ বছর বয়সে লেবার পার্টিতে যোগ দেন এবং দলটির ইয়ং লেবার সেক্টরে বেশ বড়মাপের নেতা হন। এরপর তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি পলিসি ইউনিটের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে তিনি নীতিনির্ধারক হিসেবে সেকেন্ড টু দ্য হোম অফিসের সাথে যুক্ত হন।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব সোস্যালিস্ট ইয়ুথ নামক প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি থাকাকালে তিনি জর্দান, ইসরাইল, আলজেরিয়া, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০৮-এ নির্বাচনের আগে লেবার পার্টির তালিকায় উচ্চ অবস্থানে থেকে কর্মতৎপরতা চালিয়ে যান। পরে লন্ডন থেকে ফেরত গিয়ে ফুলটাইম অভিযানে নামেন। বিরোধীদলীয় নেতা ফিল গফ তাকে পদোন্নতি দিয়ে সংসদের সামনের বেঞ্চে বসান। এবং ইয়ুথ অ্যাফেয়ার্সের মুখপাত্র হিসেবে নামকরণ করেন।
এক দশকের মধ্যে নিউজিল্যান্ডে শিশুদারিদ্র্য অর্ধেকে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেন জেসিন্ডা আরডার্ন। এই মর্মে জুলাই ২০১৮-তে সরকার কর্তৃক প্রতিটি পরিবারের জন্য এ-সংক্রান্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেন। সেখানে বরাদ্দ হিসেবে শিশুর অভিভাবকদের ২২ থেকে ২৬ সপ্তাহ ছুটি বৃদ্ধি থাকবে ২০২০ সাল থেকে। আর মাঝারি থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের প্রতিটি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে ৬০ ডলার করে বরাদ্দ দেয়া হবে। তিনি মানুষকে অপরাধী হওয়া ও মাদকাসক্ত হওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি স্মারকলিপি তুলে ধরেন। তার প্রচেষ্টা হচ্ছে মাদককে নিষেধ করবে নাকি আইনসিদ্ধ করবে, সে ব্যাপারে স্মারকলিপি তৈরি করেন।
ডিসেম্বর ২০১৭-তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী বলে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিলে আরডার্ন এর প্রতিবাদ করেন। বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু আন্তর্জাতিক কর্মী আমাদের সামনে যেতে না দিয়ে বরং পেছনে ঠেলে দিতে চাইছে। জাতিসঙ্ঘের সাধারণ সভায় উপস্থিত থেকে সেখানে বিবৃতি দেয়ার সময় জাতিসঙ্ঘের বহুত্ববাদ এবং সারা বিশ্বের যুবকদের সহায়তার ক্ষেত্রে সুপারিশ করেন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর ওপর দ্রুত নজর দেয়ার আহ্বান জানান।
একই সাথে নারীর ক্ষমতা ও তাদের প্রতি পেশাভিত্তিক সহানুভূতিশীল হওয়ার গুরুত্ব আরোপ করেন।
অক্টোবর ২০১৮-তে প্রধানমন্ত্রী চীনের জিনজিয়াং পুনঃশিক্ষাকেন্দ্র নিয়ে প্রসঙ্গ তোলেন এবং দেশটির উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুমের বিষয়টি তুলে ধরেন। কারণ চীন এক মিলিয়ন উইঘুর মুসলমানকে চীনের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়া এবং তাদেরকে কী শর্তে মুক্তি দেয়া যায় তার কোনো নির্দেশনা ছাড়াই বন্দী করে রাখে। মিয়ানমার কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত আচরণের বিষয়টিও তুলে ধরেন আরডার্ন। নভেম্বর ২০১৮ তিনি অং সান সু চির সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নিউজিল্যান্ডের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসব কাজের জন্য জেসিন্ডা আরডার্ন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হন, যেখানে সু চি হন নিন্দিত।
No comments