বর্বরতার শিকার নারীর আর্তনাদ by শুভ্র দেব
বর্বর,
নির্মম, অমানবিক। মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে যৌন নির্যাতন করে রক্তাক্ত
করেছে চার দুর্বৃত্ত। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
সামনে ওই নারীকে ফেলে রেখে যায় তারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান
স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) কাতরাচ্ছেন তিনি। চিকিৎসকরা তাকে ঘুমের
ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গণধর্ষণের শিকার
এই নারীর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। নিম্নাঙ্গে অপারেশন করে ৪-৫টি
সেলাই দেয়া হয়েছে। শারীরিক দুর্বলতা আর ব্যথার কারণে তিনি মাথা তুলে
দাঁড়াতে পারছেন না। সেরে উঠতে আরো অনেক সময় লাগবে। সোমবার সকালে ঢামেক
হাসপাতালের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় এক নারীকে।
খবর পেয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে যান। তার শরীর থেকে তখন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা একটি চাদর ও গেঞ্জি পরিয়ে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। ধর্ষিতা নারীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পূর্ব সাকুয়ায়। ৭-৮ দিন আগে চাকরির উদ্দেশ্যে লঞ্চে করে তিনি ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে সুলতানা নামের এক সৎ বোনের বাসায় ওঠেন। সুলতানা খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত সে কথা জানতেন না ধর্ষিতা নারী। কিছুদিন থাকার পর সুলতানার খারাপ কাজে লিপ্ত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। এমনকি তাকেও খারাপ কাজে লাগানোর জন্য চেষ্টা চালায়। ঘটনার দিন রাতে সুলতানা তাকে তুলে দেয় চার পুরুষের কাছে। সেখান থেকে তিন পুুরুষ তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। অমানবিক নির্যাতনে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। রক্তক্ষরণের কারণে সে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষকরা তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় একটি গাড়িতে তুলে ঢামেক হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) ইনচার্জ ডা. বিলকিস বেগম বলেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এমন অবস্থায় তাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করে কয়েকটি সেলাই দিয়েছি। তার শরীরে প্রচুর ব্যথা থাকায় প্রথম থেকে আমরা ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, আমরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে তেমন কিছু বলতে পারেনি। শুধু বলেছে, তার শরীরে ব্যথা করছে ও মাথা ঘুরাচ্ছে। তাই তাকে আবার ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ২৫ বছর বয়সী ওই নারী ছোটবেলা থেকেই মানসিক রোগে ভুগছেন। তার বাবাও শারীরিকভাবে অসুস্থ। বেশ কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়ে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে সুবিধা করতে পারেননি। দেশে এসে আবার কৃষি কাজ করে সংসার চালাতেন। ৫-৬ বছর আগে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাকালে সেখানেই পরিচয় হয় রফিক নামের এক যুবকের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক থেকে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রফিক তাকে বিভিন্ন সময় টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এরই মধ্যে তাদের ঘরে একটি সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু চাহিদামতো টাকা দিতে না পারায় তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়।
এরপর থেকে ওই নারী সন্তানকে নিয়ে এক ভাই ও মা-বাবার সংসারেই থাকতেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে আরো বেশি দুর্বল হয়ে পড়েন। অভাবের সংসারে কিছু অর্থের যোগান দিতে কাজকর্মের জন্য খোঁজখবর নিতেন। আর সেই কাজের উদ্দেশ্যই তিনি ঢাকা চলে আসেন। তবে ঢাকায় এসে সুলতানা নামের যে নারীর বাসায় তিনি উঠেছেন তাকে তার পরিবারের কেউ চিনে না। এদিকে ধর্ষিতা এই নারীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। ধর্ষিতা নারীর কাছ থেকে একেকবার একের স্থানের কথা বের হয়ে আসছে। অসুস্থ থাকার কারণে তার কাছ থেকে সঠিক স্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
এমনকি সুলতানা নামের ওই নারীর বাসা শনাক্ত না করায় আসামিকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ঘটনার আশপাশে পুলিশের ওয়ারী থানা, বংশাল থানা, পল্টন থানা রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে রাখার কারণে সেটি শাহবাগ থানার আওতাধীন। এ বিষয়ে মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, ঘটনার পরপর আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি এটা পল্টন থানার আওতধীন নয়। আর শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস মানবজমিনকে বলেন, ঘটনাস্থল এখনো চিহ্নিত হয়নি। তাই কোনো থানা এখনও পুরোপুরো দায়িত্ব নিতে পারছে না। ধর্ষিতা ওই নারী সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। খোঁজখবর নিয়েছি। তার বাবা-মা ঢাকায় আসছেন।
খবর পেয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে যান। তার শরীর থেকে তখন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা একটি চাদর ও গেঞ্জি পরিয়ে তাকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। ধর্ষিতা নারীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পূর্ব সাকুয়ায়। ৭-৮ দিন আগে চাকরির উদ্দেশ্যে লঞ্চে করে তিনি ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে সুলতানা নামের এক সৎ বোনের বাসায় ওঠেন। সুলতানা খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত সে কথা জানতেন না ধর্ষিতা নারী। কিছুদিন থাকার পর সুলতানার খারাপ কাজে লিপ্ত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। এমনকি তাকেও খারাপ কাজে লাগানোর জন্য চেষ্টা চালায়। ঘটনার দিন রাতে সুলতানা তাকে তুলে দেয় চার পুরুষের কাছে। সেখান থেকে তিন পুুরুষ তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। অমানবিক নির্যাতনে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। রক্তক্ষরণের কারণে সে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষকরা তাকে বিবস্ত্র অবস্থায় একটি গাড়িতে তুলে ঢামেক হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) ইনচার্জ ডা. বিলকিস বেগম বলেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এমন অবস্থায় তাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসে। মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করে কয়েকটি সেলাই দিয়েছি। তার শরীরে প্রচুর ব্যথা থাকায় প্রথম থেকে আমরা ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, আমরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে তেমন কিছু বলতে পারেনি। শুধু বলেছে, তার শরীরে ব্যথা করছে ও মাথা ঘুরাচ্ছে। তাই তাকে আবার ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ২৫ বছর বয়সী ওই নারী ছোটবেলা থেকেই মানসিক রোগে ভুগছেন। তার বাবাও শারীরিকভাবে অসুস্থ। বেশ কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়ে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে সুবিধা করতে পারেননি। দেশে এসে আবার কৃষি কাজ করে সংসার চালাতেন। ৫-৬ বছর আগে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাকালে সেখানেই পরিচয় হয় রফিক নামের এক যুবকের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক থেকে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রফিক তাকে বিভিন্ন সময় টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এরই মধ্যে তাদের ঘরে একটি সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু চাহিদামতো টাকা দিতে না পারায় তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়।
এরপর থেকে ওই নারী সন্তানকে নিয়ে এক ভাই ও মা-বাবার সংসারেই থাকতেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে আরো বেশি দুর্বল হয়ে পড়েন। অভাবের সংসারে কিছু অর্থের যোগান দিতে কাজকর্মের জন্য খোঁজখবর নিতেন। আর সেই কাজের উদ্দেশ্যই তিনি ঢাকা চলে আসেন। তবে ঢাকায় এসে সুলতানা নামের যে নারীর বাসায় তিনি উঠেছেন তাকে তার পরিবারের কেউ চিনে না। এদিকে ধর্ষিতা এই নারীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। ধর্ষিতা নারীর কাছ থেকে একেকবার একের স্থানের কথা বের হয়ে আসছে। অসুস্থ থাকার কারণে তার কাছ থেকে সঠিক স্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
এমনকি সুলতানা নামের ওই নারীর বাসা শনাক্ত না করায় আসামিকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ঘটনার আশপাশে পুলিশের ওয়ারী থানা, বংশাল থানা, পল্টন থানা রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে রাখার কারণে সেটি শাহবাগ থানার আওতাধীন। এ বিষয়ে মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, ঘটনার পরপর আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি এটা পল্টন থানার আওতধীন নয়। আর শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস মানবজমিনকে বলেন, ঘটনাস্থল এখনো চিহ্নিত হয়নি। তাই কোনো থানা এখনও পুরোপুরো দায়িত্ব নিতে পারছে না। ধর্ষিতা ওই নারী সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। খোঁজখবর নিয়েছি। তার বাবা-মা ঢাকায় আসছেন।
No comments