আমেরিকার হাতিয়ার ইরানবিরোধী সন্ত্রাসী 'মোনাফেকিন গোষ্ঠী': পর্ব-দুই
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী রুদি জুলিয়ানি |
ফ্রান্সের
রাজধানী প্যারিসে গত ৩০ জুন ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী
'এমকেও''র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকা এবং কয়েকটি আরব
মিত্র দেশের সমর্থনে প্রতি বছর রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠে ইরান বিরোধী
সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী 'এমকেও''র বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এমকেও'র গুরুত্ব
তুলে ধরার জন্য প্রতি বছর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত বছর সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দামন্ত্রী তুর্কি ফয়সাল এমকেও'র বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। এবারের বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী ও নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুদি জুলিয়ানি বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ইরান বিরোধী বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি দেশটির ইসলামি শাসন ব্যবস্থা উৎখাতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সফল হবেন।
মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএস কিছুদিন আগে আলবেনিয়ায় অবস্থিত এমকেও'র ঘাঁটির আশেপাশের ভিডিও চিত্র প্রকাশ করে। এতে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বুল্টন ও নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও প্রেসিডেন্টের বর্তমান আইনজীবী রুদি জুলিয়ানিকে এমকেও'র সদস্যদের সঙ্গে দেখা গেছে এবং এমকেও'র সমাবেশে তাদের পক্ষে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
এনবিসি'র প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে রুদি জুলিয়ানি স্বীকার করেছেন, ২০০৮ সাল থেকে এমকেও'র সঙ্গে তার সম্পর্ক ও যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, মার্কিন সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তালিকায় এমকেওকে অন্তর্ভুক্ত করা ভুল ছিল। তিনি বলেন, এমকেও'র কাছ থেকে কি পরিমাণে অর্থ নেয়া হয়েছে তা তিনি মনে করতে পারছেননা।
যাইহোক, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী রুদি জুলিয়ানি ছাড়াও কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার ও সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী ও নিউমেক্সিক প্রদেশের সাবেক গভর্নর বিল রিচার্ডসন, মার্কিন এফবিআইএ'র সাবেক প্রধান লুইস ফারাও, সাবেক ডেমোক্রেট দলের সিনেটর রবার্ট তুরিচলি, সৌদি বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রশাসনিক কমিটির প্রধান সালমান আল আনসারি, প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক প্রধান নিউত গিনগিরিচ, ইউনেস্কোতে নিযুক্ত সাবেক ফরাসি রাষ্ট্রদূত রামা ইয়াদ, মার্কিন স্থলবাহিনীর সাবেক কমান্ডার জর্জ কেইসি, কানাডার আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন বার্ড, ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্ড কুশনার, ইয়েমেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রায়াদ ইয়াসিন, আলবেনিয়ার রিপাবলিকান দলের নেতা মাদিউ ও জার্মানির একজন প্রতিনিধি প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও'র সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। এ থেকে বোঝা যায়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে কুখ্যাতি অর্জনকারী এমকেও'র প্রতি পাশ্চাত্য ও তাদের মিত্র দেশগুলোর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এমকেও'র অতীত কর্মকাণ্ডের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ১৯৮০'র দশকে ইরানে এবং ১৯৯০এর দশকে ইরাকে তারা ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছিল।
ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও'র একটি বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের প্রতি জনসমর্থন নেই। এ কারণে তারা বিপুল অর্থ দিয়ে লোক ভাড়া করে প্রতি বছর সমাবেশের আয়োজন করে থাকে। দৈনিক গার্ডিয়ান গত ৩০ জুন প্যারিসে অনুষ্ঠিত এমকেও'র সমাবেশ সম্পর্কে এক প্রতিবেদনে লিখেছে, সমাবেশে যোগদানকারীদের অর্ধেকের বেশি এসেছে চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড ও জার্মানি থেকে। এদের মধ্যে একটি বিরাট সংখ্যক ছিল সিরিয়ান অভিবাসীরা যাদেরকে খাদ্য ও প্যারিসে থাকার জায়গার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে আনা হয়েছিল। জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ান শরণার্থীদেরকেও কিছু সুবিধার বিনিময়ে প্যারিস সম্মেলনে নিয়ে আসা হয়েছিল। দুই সন্তানের মা একজন সিরিয়ান অভিবাসী গার্ডিয়ানকে বলেছেন, "ফেইসবুকে আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা ছুটি কাটানোর জন্য প্যারিসে এসেছি। এর আগে কখনো আমি প্যারিস শহর দেখিনি এবং এমকেও সম্পর্কেও আমার কোনা ধারণা নেই।"
আমেরিকা ইরানের ব্যাপারে তার অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইরান বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এমকেওকে ব্যবহার করে। যদিও ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বলে কোনো কোনো খবরে জানা গেছে। আমেরিকার কোনো কোনো কর্মকর্তা ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাত করার জন্য দেশটির ওপর প্রবল চাপ বাড়ানোর পক্ষপাতী। আবার কেউ কেউ এমন একটি সমঝোতার মাধ্যমে ইরানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার কথা বলছেন যেখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্থান পাবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন হচ্ছেন ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের কট্টর সমর্থক। তিনি বেশ ক'বার এমকেও'র সমাবেশে অংশ নিয়েছেন এবং ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের জন্য এমকেও'র লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। দৈনিক ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর লিখেছে, জন বোল্টনও এমকেও'র সমাবেশে এই গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন এবং ইরান বিরোধী বক্তৃতা দিয়ে প্রচুর অর্থ পেয়েছেন।
আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে এমকেও'র নাম বাতিল করার জন্য যারা চেষ্টা চালিয়েছিলেন জন বোল্টন হচ্ছেন তাদের অন্যতম। তিনি বলেছেন, ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাতের জন্য মার্কিন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এমকেও হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ডিফেন্ড পোস্ট সাময়িকীর সম্পাদক জুয়ান স্টুকার বলেছেন, জন বোল্টন ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এমকেও'র পক্ষে প্রচার চালিয়ে এ পর্যন্ত এক লাখ ৮০ হাজার ডলার পেয়েছেন।
যাইহোক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে রুদি জুলিয়ানি ও জন বোল্টনের মতো উগ্র ব্যক্তিদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ট্রাম্পের ওপর রুদি জুলিয়ানি ও জন বোল্টনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। রুদি জুলিয়ানি প্যারিসে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠীর সমাবেশে বলেছেন, "ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাত করাই দেশটির ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রধান উদ্দেশ্য।" তিনি দাবি করেন, "ইরান সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র এবং যতদিন পতন না ঘটছে ততদিন দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে।"
আমেরিকা বছরের পর বছর ধরে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে নানা ষড়যন্ত্র ও সাদ্দামকে সহযোগিতার মাধ্যমে এবং জোট গঠন করে ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। কিন্তু বিপ্লবের প্রতি ইরানের জনগণের সমর্থন এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে ঐক্যের কারণে আমেরিকার কোনো প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। অন্যদিকে জনসমর্থনের অভাবে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও দুর্বল ও হতাশ হয়ে পড়েছে এবং নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তারা এখন পাশ্চাত্য ও ইসরাইলের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। আর পাশ্চাত্য ও ইসরাইলও ইরানের ব্যাপারে লক্ষ্য অর্জনের জন্য এমকেওকে ব্যবহার করছে।
গত বছর সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দামন্ত্রী তুর্কি ফয়সাল এমকেও'র বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। এবারের বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী ও নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুদি জুলিয়ানি বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ইরান বিরোধী বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি দেশটির ইসলামি শাসন ব্যবস্থা উৎখাতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সফল হবেন।
মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএস কিছুদিন আগে আলবেনিয়ায় অবস্থিত এমকেও'র ঘাঁটির আশেপাশের ভিডিও চিত্র প্রকাশ করে। এতে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বুল্টন ও নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও প্রেসিডেন্টের বর্তমান আইনজীবী রুদি জুলিয়ানিকে এমকেও'র সদস্যদের সঙ্গে দেখা গেছে এবং এমকেও'র সমাবেশে তাদের পক্ষে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।
এনবিসি'র প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে রুদি জুলিয়ানি স্বীকার করেছেন, ২০০৮ সাল থেকে এমকেও'র সঙ্গে তার সম্পর্ক ও যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, মার্কিন সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তালিকায় এমকেওকে অন্তর্ভুক্ত করা ভুল ছিল। তিনি বলেন, এমকেও'র কাছ থেকে কি পরিমাণে অর্থ নেয়া হয়েছে তা তিনি মনে করতে পারছেননা।
যাইহোক, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী রুদি জুলিয়ানি ছাড়াও কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার ও সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী ও নিউমেক্সিক প্রদেশের সাবেক গভর্নর বিল রিচার্ডসন, মার্কিন এফবিআইএ'র সাবেক প্রধান লুইস ফারাও, সাবেক ডেমোক্রেট দলের সিনেটর রবার্ট তুরিচলি, সৌদি বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রশাসনিক কমিটির প্রধান সালমান আল আনসারি, প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক প্রধান নিউত গিনগিরিচ, ইউনেস্কোতে নিযুক্ত সাবেক ফরাসি রাষ্ট্রদূত রামা ইয়াদ, মার্কিন স্থলবাহিনীর সাবেক কমান্ডার জর্জ কেইসি, কানাডার আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন বার্ড, ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্ড কুশনার, ইয়েমেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রায়াদ ইয়াসিন, আলবেনিয়ার রিপাবলিকান দলের নেতা মাদিউ ও জার্মানির একজন প্রতিনিধি প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও'র সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। এ থেকে বোঝা যায়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে কুখ্যাতি অর্জনকারী এমকেও'র প্রতি পাশ্চাত্য ও তাদের মিত্র দেশগুলোর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এমকেও'র অতীত কর্মকাণ্ডের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ১৯৮০'র দশকে ইরানে এবং ১৯৯০এর দশকে ইরাকে তারা ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছিল।
ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও'র একটি বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের প্রতি জনসমর্থন নেই। এ কারণে তারা বিপুল অর্থ দিয়ে লোক ভাড়া করে প্রতি বছর সমাবেশের আয়োজন করে থাকে। দৈনিক গার্ডিয়ান গত ৩০ জুন প্যারিসে অনুষ্ঠিত এমকেও'র সমাবেশ সম্পর্কে এক প্রতিবেদনে লিখেছে, সমাবেশে যোগদানকারীদের অর্ধেকের বেশি এসেছে চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভেনিয়া, পোল্যান্ড ও জার্মানি থেকে। এদের মধ্যে একটি বিরাট সংখ্যক ছিল সিরিয়ান অভিবাসীরা যাদেরকে খাদ্য ও প্যারিসে থাকার জায়গার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে আনা হয়েছিল। জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ান শরণার্থীদেরকেও কিছু সুবিধার বিনিময়ে প্যারিস সম্মেলনে নিয়ে আসা হয়েছিল। দুই সন্তানের মা একজন সিরিয়ান অভিবাসী গার্ডিয়ানকে বলেছেন, "ফেইসবুকে আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা ছুটি কাটানোর জন্য প্যারিসে এসেছি। এর আগে কখনো আমি প্যারিস শহর দেখিনি এবং এমকেও সম্পর্কেও আমার কোনা ধারণা নেই।"
আমেরিকা ইরানের ব্যাপারে তার অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইরান বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এমকেওকে ব্যবহার করে। যদিও ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বলে কোনো কোনো খবরে জানা গেছে। আমেরিকার কোনো কোনো কর্মকর্তা ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাত করার জন্য দেশটির ওপর প্রবল চাপ বাড়ানোর পক্ষপাতী। আবার কেউ কেউ এমন একটি সমঝোতার মাধ্যমে ইরানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার কথা বলছেন যেখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্থান পাবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন হচ্ছেন ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের কট্টর সমর্থক। তিনি বেশ ক'বার এমকেও'র সমাবেশে অংশ নিয়েছেন এবং ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের জন্য এমকেও'র লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। দৈনিক ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর লিখেছে, জন বোল্টনও এমকেও'র সমাবেশে এই গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন এবং ইরান বিরোধী বক্তৃতা দিয়ে প্রচুর অর্থ পেয়েছেন।
আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে এমকেও'র নাম বাতিল করার জন্য যারা চেষ্টা চালিয়েছিলেন জন বোল্টন হচ্ছেন তাদের অন্যতম। তিনি বলেছেন, ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাতের জন্য মার্কিন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এমকেও হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ডিফেন্ড পোস্ট সাময়িকীর সম্পাদক জুয়ান স্টুকার বলেছেন, জন বোল্টন ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এমকেও'র পক্ষে প্রচার চালিয়ে এ পর্যন্ত এক লাখ ৮০ হাজার ডলার পেয়েছেন।
যাইহোক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে রুদি জুলিয়ানি ও জন বোল্টনের মতো উগ্র ব্যক্তিদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ট্রাম্পের ওপর রুদি জুলিয়ানি ও জন বোল্টনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। রুদি জুলিয়ানি প্যারিসে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠীর সমাবেশে বলেছেন, "ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাত করাই দেশটির ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রধান উদ্দেশ্য।" তিনি দাবি করেন, "ইরান সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র এবং যতদিন পতন না ঘটছে ততদিন দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে।"
আমেরিকা বছরের পর বছর ধরে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে নানা ষড়যন্ত্র ও সাদ্দামকে সহযোগিতার মাধ্যমে এবং জোট গঠন করে ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থা উৎখাতের চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। কিন্তু বিপ্লবের প্রতি ইরানের জনগণের সমর্থন এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে ঐক্যের কারণে আমেরিকার কোনো প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। অন্যদিকে জনসমর্থনের অভাবে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠী এমকেও দুর্বল ও হতাশ হয়ে পড়েছে এবং নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তারা এখন পাশ্চাত্য ও ইসরাইলের সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। আর পাশ্চাত্য ও ইসরাইলও ইরানের ব্যাপারে লক্ষ্য অর্জনের জন্য এমকেওকে ব্যবহার করছে।
No comments