সরজমিন গাজীপুর: নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আলোচনা সর্বত্র by রুদ্র মিজান
শুরু
হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। ভোটারদের মধ্যে শুরু হয়েছে
নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা আলোচনা। প্রার্থী, প্রতীক আর দলীয় অবস্থানের চেয়ে
জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে। কেমন নির্বাচন হবে, ভোটাররা
নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন কিনা, নির্বাচন দলীয় প্রভাবমুক্ত হবে কিনা-
এমন প্রশ্ন আর শঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। গাজীপুর সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নয় জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় মূলত আওয়ামী
লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। ১১ লক্ষাধিক ভোটারের এই সিটি করপোরেশনে
জয়-পরাজয় নির্ভর করবে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের ভোটের ওপর। টঙ্গী কলেজগেট
এলাকায় নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা হয় একজন মধ্য বয়সী নারীর সঙ্গে। আমেনা নামের
ওই নারী বলেন, আমরা নানা কারণে ভয়ে আছি। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা থাকবে
কি-না, ভোট দিতে পারবো কি-না জানি না। একইভাবে বয়স্ক আব্বাস আলী বলেন, কারে
ভোট দেবো বলতে পারি না। ভোট দিতে পারলেই হলো। ২০১৩ সালের ১৬ই জানুয়ারি ৩২৯
দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সিটি করপোরেশনের
অবকাঠামোগত অবস্থা বেহাল। জয়দেবপুরের রাজবাড়ী এলাকার নতুন ভোটার মানিক মিয়া
জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন হলেও অবকাঠামোগতভাবে কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমরা
ভোট দেব উন্নয়নের জন্য। যে প্রার্থী মেয়র হলে এই এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই
ভোট দেব।
মোহাম্মদ আশরাফ আলী রাজবাড়ী এলাকার বয়স্ক এক ভোটার। তিনি বলেন, গাজীপুরে নানা অনিয়ম, অপরাধ হচ্ছে। জুয়া, মাদক থেকে তরুণদের রক্ষা করা প্রয়োজন। যে ব্যক্তি মেয়র হলে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন আমরা তাকেই ভোট দিতে চাই। এজন্য ভোটকেন্দ্রে নিরাপদ পরিবেশ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। গাজীপুরের রাজবাড়ী রোড, ছয়দানা এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকানে দেখা গেছে গরম চায়ের কাপে ধোঁয়া উড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরগরম নির্বাচনী আলোচনা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বাসা ছয়দানা এলাকায়। এখানে সরব আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক। আঞ্চলিক কারণেই ওই এলাকার স্থানীয় ভোটারদের একটা অংশ তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভোটাররা এখানে নীরব। মরিয়ম বেগম নামে একজন পোশাক শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভোট দিয়ে গরিবের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না।
জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকার পান-সিগারেট বিক্রেতা সোহাগ বলেন, গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কোনো উন্নয়ন হয়নি। মেয়র ছিলেন জেলে। এবার কাকে ভোট দেবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। সিটি করপোরেশনের পশ্চিম জয়দেবপুরের ভোটার অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই নির্বাচনে প্রার্থীদের জনসম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। দীর্ঘদিন ধরে যারা সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন তাদেরকেই মানুষ ভোট দেবে। শঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। এই শঙ্কা দূর করার জন্য নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি। শঙ্কাটা কিসের এমন প্রশ্নের জবাবে ভোটাররা জানান, গাজীপুরে ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস আগে ছিল না। বিশেষ করে এরশাদের আমল ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু গত উপজেলা নির্বাচনগুলোর পরিবেশ দেখে শঙ্কা জন্মেছে ভোটারদের মধ্যে।
বিএনপি’র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের বাড়ি টঙ্গীতে। টঙ্গীসহ পুরো সিটি এলাকাতে বিএনপি’র সমর্থকরা অনেক নীরব। রাজনৈতিক মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। গত রোববার বিকালে বিএনপি’র কার্যালয়ে নেতাকর্মী কাউকে পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অফিস সহকারী রজব আলী।
বিএনপি নেতা আবু সাঈদ বলেন, মামলা-হয়রানির কারণেই বিএনপি কর্মীরা ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা, সাবেক মেয়র এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে মামলা, তাকে কারাবন্দি করাসহ সকল হয়রানির জবাব দেবেন নেতাকর্মী-সমর্থকরা। এই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবে বলে মনে করেন তিনি। একইভাবে আওয়ামী লীগ মহানগরের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির হোসেন মিয়া মনে করেন একটি মডেল সিটি করপোরেশন গড়ার জন্যই নৌকায় ভোট দেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মানুষ। তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশেই ভোট হবে।
১৫ই মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও এই সিটির নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮৭ কাউন্সিলর প্রার্থী। ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের বিপরীতে ৮৪ নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৩শে এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন এবং ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে। গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এতে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং মহিলা ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১।
মোহাম্মদ আশরাফ আলী রাজবাড়ী এলাকার বয়স্ক এক ভোটার। তিনি বলেন, গাজীপুরে নানা অনিয়ম, অপরাধ হচ্ছে। জুয়া, মাদক থেকে তরুণদের রক্ষা করা প্রয়োজন। যে ব্যক্তি মেয়র হলে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন আমরা তাকেই ভোট দিতে চাই। এজন্য ভোটকেন্দ্রে নিরাপদ পরিবেশ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। গাজীপুরের রাজবাড়ী রোড, ছয়দানা এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকানে দেখা গেছে গরম চায়ের কাপে ধোঁয়া উড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরগরম নির্বাচনী আলোচনা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বাসা ছয়দানা এলাকায়। এখানে সরব আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক। আঞ্চলিক কারণেই ওই এলাকার স্থানীয় ভোটারদের একটা অংশ তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভোটাররা এখানে নীরব। মরিয়ম বেগম নামে একজন পোশাক শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভোট দিয়ে গরিবের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না।
জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকার পান-সিগারেট বিক্রেতা সোহাগ বলেন, গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কোনো উন্নয়ন হয়নি। মেয়র ছিলেন জেলে। এবার কাকে ভোট দেবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। সিটি করপোরেশনের পশ্চিম জয়দেবপুরের ভোটার অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই নির্বাচনে প্রার্থীদের জনসম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। দীর্ঘদিন ধরে যারা সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন তাদেরকেই মানুষ ভোট দেবে। শঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। এই শঙ্কা দূর করার জন্য নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি। শঙ্কাটা কিসের এমন প্রশ্নের জবাবে ভোটাররা জানান, গাজীপুরে ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস আগে ছিল না। বিশেষ করে এরশাদের আমল ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু গত উপজেলা নির্বাচনগুলোর পরিবেশ দেখে শঙ্কা জন্মেছে ভোটারদের মধ্যে।
বিএনপি’র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের বাড়ি টঙ্গীতে। টঙ্গীসহ পুরো সিটি এলাকাতে বিএনপি’র সমর্থকরা অনেক নীরব। রাজনৈতিক মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। গত রোববার বিকালে বিএনপি’র কার্যালয়ে নেতাকর্মী কাউকে পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অফিস সহকারী রজব আলী।
বিএনপি নেতা আবু সাঈদ বলেন, মামলা-হয়রানির কারণেই বিএনপি কর্মীরা ভোটের মাধ্যমে জবাব দেবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা, সাবেক মেয়র এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে মামলা, তাকে কারাবন্দি করাসহ সকল হয়রানির জবাব দেবেন নেতাকর্মী-সমর্থকরা। এই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবে বলে মনে করেন তিনি। একইভাবে আওয়ামী লীগ মহানগরের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির হোসেন মিয়া মনে করেন একটি মডেল সিটি করপোরেশন গড়ার জন্যই নৌকায় ভোট দেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মানুষ। তিনি বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশেই ভোট হবে।
১৫ই মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও এই সিটির নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮৭ কাউন্সিলর প্রার্থী। ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের বিপরীতে ৮৪ নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৩শে এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন এবং ২৪শে এপ্রিল প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে। গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এতে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং মহিলা ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১।
No comments