রাতটুকু কেন অপেক্ষা করা গেল না?
শুক্রবার
মধ্যরাতে বেনজির এক দৃশ্যের সাক্ষী হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অন্য কোনো
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছে কি-না নিশ্চিত হয়ে বলা যায়
না। যথারীতি দৃশ্যপটে কবি সুফিয়া কামাল হল। ১০ই এপ্রিল মধ্যরাত থেকেই
আলোচনায় রয়েছে যে হলটি। ওই রাতে ছাত্রলীগের হলনেত্রী এশার হাতে নির্যাতনের
শিকার হন কয়েক শিক্ষার্থী। পরে তাদের প্রতিবাদও যায় সীমা ছাড়িয়ে। লাঞ্ছনার
শিকার হন এশা। তার ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
বহিষ্কার। সবারই জানা, এ সবই ছিল সাময়িক। তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
হয়েছে। যারা তার বিরোধী ছিলেন তাদের জীবন এখন রীতিমতো নরক। ছাত্রলীগ থেকে
বহিষ্কৃত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও খড়গহস্ত।
এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে সুুফিয়া কামাল হলে ঘটে নানা নাটকীয়তা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। ফেসবুকে কে কী স্ট্যাটাস দিয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখেন তারা। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হল ত্যাগে বাধ্য হন। স্থানীয় অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয় তাদের। সংখ্যাটি ঠিক কত এ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। হলের প্রভোস্ট সাবিতা রেজওয়ানা ছাত্রীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারিও দেন। এই নিয়ে যখন চারদিকে তোলপাড় তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান গতকাল বলেছেন, ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য ও অপতথ্য ছড়ানোর কারণে’ তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তার ভাষায়, দোষী তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিয়ে প্রশাসন সঠিক কাজই করেছে। এটা না হলেই বরং তিনি হল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করতেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতা হয়তো সবসময়ই যুক্তিকে তাচ্ছিল্য করে। কোনো শিক্ষার্থী বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অপরাধ করতেই পারেন। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া যায়। হল থেকে বহিষ্কারের এখতিয়ারও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের রয়েছে। কিন্তু মধ্যরাতেই কেন ছাত্রীদের তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে হবে। দিনের আলোতে এ কাজ করলে কী সমস্যা ছিল তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অন্ধকারকেই কেন ভালোবাসলো তা বুঝা দায়। মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বহিষ্কারের কারণে তাদের কী ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তাতো এরই মধ্যে খবরে বেরিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাহানির ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। অতীতে এ ধরনের ঘটনায় বহুবারই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে হল। এসব ক্ষেত্রে সবসময়ই দেখা যেত রাত যতই হোক কিছু সময় দিয়ে ছেলেদের হল খালি করার নির্দেশ দেয়া হতো। কিন্তু মেয়েদের হল রাতে খালি করার নির্দেশ দেয়া হতো না। সকাল হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হতো। মাননীয় ভিসি এবং প্রভোস্ট মহোদয় হয়তো সে দিকটিও খেয়াল করেননি। একজন ছাত্রীর পিতাকে নিয়ে ভিসি যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও বিস্ময়কর। কোন সংবেদনশীল মানুষ এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না।
এশাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় অনেকেই ব্যথিত হয়েছেন। এবং সেটা বেশ যৌক্তিকও। যেকোনো নাগরিকের বেলায়ই এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটলে তার মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অবশ্য বছরের পর বছর নানা অনাচার চলে আসছে। ছাত্র নেতারাই হলের রাজা। বাকি সবাই প্রজা। শারীরিক-মানসিক নানামুখী নির্যাতনের শিকার হতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকরা দর্শক মাত্র। এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষকের ভাষায়, হলগুলো যেন মিনি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প।
বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়, জ্ঞানদায়িনী মা। আর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হচ্ছেন ভিসি এবং শিক্ষকরা। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীরা যদি অবিচারের শিকার হোন, তবে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না। ন্যায়ের বাণী যেন আজ নিভৃতে কাঁদে।
এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে সুুফিয়া কামাল হলে ঘটে নানা নাটকীয়তা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। ফেসবুকে কে কী স্ট্যাটাস দিয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখেন তারা। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হল ত্যাগে বাধ্য হন। স্থানীয় অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয় তাদের। সংখ্যাটি ঠিক কত এ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। হলের প্রভোস্ট সাবিতা রেজওয়ানা ছাত্রীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারিও দেন। এই নিয়ে যখন চারদিকে তোলপাড় তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান গতকাল বলেছেন, ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য ও অপতথ্য ছড়ানোর কারণে’ তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তার ভাষায়, দোষী তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিয়ে প্রশাসন সঠিক কাজই করেছে। এটা না হলেই বরং তিনি হল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করতেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতা হয়তো সবসময়ই যুক্তিকে তাচ্ছিল্য করে। কোনো শিক্ষার্থী বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অপরাধ করতেই পারেন। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া যায়। হল থেকে বহিষ্কারের এখতিয়ারও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের রয়েছে। কিন্তু মধ্যরাতেই কেন ছাত্রীদের তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে হবে। দিনের আলোতে এ কাজ করলে কী সমস্যা ছিল তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অন্ধকারকেই কেন ভালোবাসলো তা বুঝা দায়। মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বহিষ্কারের কারণে তাদের কী ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে তাতো এরই মধ্যে খবরে বেরিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাহানির ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। অতীতে এ ধরনের ঘটনায় বহুবারই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে হল। এসব ক্ষেত্রে সবসময়ই দেখা যেত রাত যতই হোক কিছু সময় দিয়ে ছেলেদের হল খালি করার নির্দেশ দেয়া হতো। কিন্তু মেয়েদের হল রাতে খালি করার নির্দেশ দেয়া হতো না। সকাল হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হতো। মাননীয় ভিসি এবং প্রভোস্ট মহোদয় হয়তো সে দিকটিও খেয়াল করেননি। একজন ছাত্রীর পিতাকে নিয়ে ভিসি যে মন্তব্য করেছেন তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও বিস্ময়কর। কোন সংবেদনশীল মানুষ এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না।
এশাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় অনেকেই ব্যথিত হয়েছেন। এবং সেটা বেশ যৌক্তিকও। যেকোনো নাগরিকের বেলায়ই এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটলে তার মাত্রা আরো বেড়ে যায়। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অবশ্য বছরের পর বছর নানা অনাচার চলে আসছে। ছাত্র নেতারাই হলের রাজা। বাকি সবাই প্রজা। শারীরিক-মানসিক নানামুখী নির্যাতনের শিকার হতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকরা দর্শক মাত্র। এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষকের ভাষায়, হলগুলো যেন মিনি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প।
বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়, জ্ঞানদায়িনী মা। আর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হচ্ছেন ভিসি এবং শিক্ষকরা। সে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীরা যদি অবিচারের শিকার হোন, তবে তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না। ন্যায়ের বাণী যেন আজ নিভৃতে কাঁদে।
No comments