পাকিস্তানে অভিযান শুরু
পাকিস্তানের লাহোরে সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকারকারী তালেবান জঙ্গিদের ধরতে পাকিস্তানে বড় ধরনের অভিযান শুরু হয়েছে। রোববার চালানো ওই হামলায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ জন। পাকিস্তানের তালেবানের একটি পক্ষ জামাত-উল-আহরার রোববার রাতেই এ হামলার দায় স্বীকার করে। লাহোরের গুলশান-ই-ইকবাল পার্কে হামলাটি হয়। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডে উপলক্ষে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল পার্কটিতে। জামাত-উল-আহরার পরে বিবৃতি দিয়ে বলেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল খ্রিষ্টানরাই। সংগঠনটির মুখপাত্র এহসানউল্লাহ এহসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে এই বার্তা দিতে চাই, আমরা লাহোরে ঢুকে পড়েছি।’ লাহোর পাকিস্তানের সম্পদশালী প্রদেশ পাঞ্জাবের রাজধানী। এটি নওয়াজ শরিফের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানের পেশোয়ার শহরে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে হামলার পর রোববারের হামলাটি ছিল সবচেয়ে বড়। পেশোয়ারের হামলায় নিহত হয়েছিল ১৩৪ জন। এর বেশির ভাগই ছিল স্কুলের শিক্ষার্থী। লাহোর হামলায় নওয়াজ শরিফ গতকাল তাঁর নির্ধারিত যুক্তরাজ্য সফর বাতিল করেছেন। রোববার গভীর রাতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে নওয়াজ শরিফ আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আসিম বাজওয়া গতকাল সোমবার টুইটারে বলেন, ‘আমাদের নিরপরাধ ভাই-বোন ও শিশুদের হত্যাকারীদের আমরা অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাব। এই অসভ্য, অমানবিক জঙ্গিদের আমাদের জীবন ও স্বাধীনতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।’ হামলার পর গতকাল লাহোরের সব বাজার, স্কুল ও আদালত বন্ধ থাকে। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, হামলায় অন্তত ৩৪০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলাকারীদের লক্ষ্যবস্তু: যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন জঙ্গিবিরোধী অভিযানে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে পাকিস্তান। ২০১৩ সালে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের একটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৮০ জন নিহত হয়। ২০১৪ সাল থেকে পাকিস্তানে শুরু হওয়া জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক শ জঙ্গিকে হত্যা করেছে। গ্রেপ্তারও হয়েছে অনেকে।
No comments