প্যারিসে হামলার কী পরিণাম -এএফপির বিশ্লেষণ
ফরাসির
রাজধানী প্যারিসে শুক্রবার রাতে দফায় দফায় ভয়াবহ ও নজিরবিহীন সন্ত্রাসী
হামলার পরিণাম বহুমুখী ও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। সিরিয়ায় শান্তি
প্রতিষ্ঠার আলোচনা, দেশটিতে পশ্চিমা সামরিক হস্তক্ষেপ, ইউরোপে
শরণার্থী-সংকট, ইউরোপের নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং ‘সীমানাবিহীন’ ইউরোপ—প্রতিটি
ক্ষেত্রে ওই হামলার প্রভাব পড়বে।
শুক্রবারের হামলায় সিরীয় যোগসূত্র থাকার ইঙ্গিত মিলছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর আলোচনায় বাড়তি গতি আসতে পারে। আর ইসলামি জঙ্গিবাদ দমনে করণীয় নির্ধারণের ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের মতভেদ দূর করতে চাপ দেবে ফ্রান্স। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত শনিবার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় বলেছেন, ‘সংকট নিরসনে অগ্রগতির জন্য আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সন্ত্রাসীরা প্যারিসে হামলার মাধ্যমে এ রকম বার্তাই আমাদের দিয়েছে।’
প্যারিসে হামলাকারী বন্দুকধারীদের কথাবার্তা কেউ কেউ শুনেছেন। ওই সন্ত্রাসীরা ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলায় ফ্রান্সের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে বলছিল। তা ছাড়া শুক্রবারের হামলার দায় স্বীকার করে আইএস যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতেও ওই বিমান হামলার প্রসঙ্গ রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে আইএসবিরোধী লড়াইয়ে এখন পশ্চিমা কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। ফরাসির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ অবশ্য প্যারিসে ওই ভয়াবহ হামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘নির্দয়’ জবাব দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় শরণার্থী-সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপ। সেখানে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছে। এ অবস্থায় প্যারিসে হামলার প্রভাবে শরণার্থী-সংকট মোকাবিলার কাজটা ইউরোপীয় সরকারগুলোর জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। চলতি বছর এ পর্যন্ত আট লাখ শরণার্থী গ্রিস ও ইতালি উপকূল দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে আইএসের জঙ্গি থাকার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। প্যারিসে হামলার পর শরণার্থী-সংকটের সঙ্গে ‘ইউরোপে ইসলামিকরণের’ আশঙ্কা নিয়ে কট্টর ডানপন্থীদের অনেকে বক্তব্য দিচ্ছেন।
এএফপির বিশ্লেষণ :দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় শরণার্থী-সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপ। সেখানে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছে। এ অবস্থায় প্যারিসে হামলার প্রভাবে শরণার্থী-সংকট মোকাবিলার কাজটা ইউরোপীয় সরকারগুলোর জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে শার্লি এবদো সাময়িকীর কার্যালয়ে গত জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্যারিসে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুক্রবারের হামলার পর শহরটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে। তা ছাড়া ইউরোপের ২২টি দেশের শেনগেন অঞ্চলে পাসপোর্ট-ভিসামুক্ত ভ্রমণসুবিধার ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছে। শরণার্থী-সংকট এবং সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে ইইউর কর্তাব্যক্তিরা এ ধরনের আশঙ্কার কথা ইতিমধ্যে উচ্চারণও করেছেন। ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও জার্মানি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। পাশাপাশি শেনগেন অঞ্চলের প্রতিটি দেশের সীমান্তে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনের সময় আরও বেশি তল্লাশি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
প্যারিসে সর্বশেষ হামলার পর জনপ্রিয় কট্টর ডানপন্থী দলগুলো আরও বেশি ঘৃণা ছড়ানোর উসকানি দিতে পারে। শার্লি এবদোয় হামলার পর থেকেই ফ্রান্সে নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেল স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় হাজারো সেনা মোতায়েন করা হয়। এখন নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা স্পষ্টত আরও জোরালো হবে।
শুক্রবারের হামলার পর ফ্রান্সসহ গোটা ইউরোপের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। যেমন: পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বড়দিনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্যের বাজারে মন্দাভাব শুরু হতে পারে। আর আইএসের মতো সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব তো অর্থনীতিতে অবশ্যই পড়বে।
জিহাদিদের দমন এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের মতো লক্ষ্য অর্জনে পশ্চিমা দেশগুলো এখন আরও বেশি সক্রিয়তা দেখাবে। সিরিয়ার যাবতীয় সমস্যার জন্য যাঁরা প্রেসিডেন্ট বাশারকেই দায়ী করেন, তাঁদের মধ্যে ফরাসি সরকারও রয়েছে। আর সেই অবস্থান ধরে রেখেই ফ্রান্স নিজের ওপর আঘাতের জবাব দেবে আগামী দিনগুলোয়।
শুক্রবারের হামলায় সিরীয় যোগসূত্র থাকার ইঙ্গিত মিলছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর আলোচনায় বাড়তি গতি আসতে পারে। আর ইসলামি জঙ্গিবাদ দমনে করণীয় নির্ধারণের ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের মতভেদ দূর করতে চাপ দেবে ফ্রান্স। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত শনিবার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় বলেছেন, ‘সংকট নিরসনে অগ্রগতির জন্য আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সন্ত্রাসীরা প্যারিসে হামলার মাধ্যমে এ রকম বার্তাই আমাদের দিয়েছে।’
প্যারিসে হামলাকারী বন্দুকধারীদের কথাবার্তা কেউ কেউ শুনেছেন। ওই সন্ত্রাসীরা ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলায় ফ্রান্সের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে বলছিল। তা ছাড়া শুক্রবারের হামলার দায় স্বীকার করে আইএস যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতেও ওই বিমান হামলার প্রসঙ্গ রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে আইএসবিরোধী লড়াইয়ে এখন পশ্চিমা কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। ফরাসির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ অবশ্য প্যারিসে ওই ভয়াবহ হামলার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘নির্দয়’ জবাব দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় শরণার্থী-সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপ। সেখানে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছে। এ অবস্থায় প্যারিসে হামলার প্রভাবে শরণার্থী-সংকট মোকাবিলার কাজটা ইউরোপীয় সরকারগুলোর জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। চলতি বছর এ পর্যন্ত আট লাখ শরণার্থী গ্রিস ও ইতালি উপকূল দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে আইএসের জঙ্গি থাকার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। প্যারিসে হামলার পর শরণার্থী-সংকটের সঙ্গে ‘ইউরোপে ইসলামিকরণের’ আশঙ্কা নিয়ে কট্টর ডানপন্থীদের অনেকে বক্তব্য দিচ্ছেন।
এএফপির বিশ্লেষণ :দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় শরণার্থী-সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপ। সেখানে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছে। এ অবস্থায় প্যারিসে হামলার প্রভাবে শরণার্থী-সংকট মোকাবিলার কাজটা ইউরোপীয় সরকারগুলোর জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে শার্লি এবদো সাময়িকীর কার্যালয়ে গত জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্যারিসে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুক্রবারের হামলার পর শহরটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে। তা ছাড়া ইউরোপের ২২টি দেশের শেনগেন অঞ্চলে পাসপোর্ট-ভিসামুক্ত ভ্রমণসুবিধার ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছে। শরণার্থী-সংকট এবং সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে ইইউর কর্তাব্যক্তিরা এ ধরনের আশঙ্কার কথা ইতিমধ্যে উচ্চারণও করেছেন। ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও জার্মানি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। পাশাপাশি শেনগেন অঞ্চলের প্রতিটি দেশের সীমান্তে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনের সময় আরও বেশি তল্লাশি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
প্যারিসে সর্বশেষ হামলার পর জনপ্রিয় কট্টর ডানপন্থী দলগুলো আরও বেশি ঘৃণা ছড়ানোর উসকানি দিতে পারে। শার্লি এবদোয় হামলার পর থেকেই ফ্রান্সে নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেল স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় হাজারো সেনা মোতায়েন করা হয়। এখন নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা স্পষ্টত আরও জোরালো হবে।
শুক্রবারের হামলার পর ফ্রান্সসহ গোটা ইউরোপের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। যেমন: পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বড়দিনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পণ্যের বাজারে মন্দাভাব শুরু হতে পারে। আর আইএসের মতো সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব তো অর্থনীতিতে অবশ্যই পড়বে।
জিহাদিদের দমন এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের মতো লক্ষ্য অর্জনে পশ্চিমা দেশগুলো এখন আরও বেশি সক্রিয়তা দেখাবে। সিরিয়ার যাবতীয় সমস্যার জন্য যাঁরা প্রেসিডেন্ট বাশারকেই দায়ী করেন, তাঁদের মধ্যে ফরাসি সরকারও রয়েছে। আর সেই অবস্থান ধরে রেখেই ফ্রান্স নিজের ওপর আঘাতের জবাব দেবে আগামী দিনগুলোয়।
No comments