নেপথ্যে পরকীয়া by রুদ্র মিজান
পরকীয়া
প্রেমকে কেন্দ্র করে শুধু সংসারই ভাঙছে না। কখনও কখনও ঘটছে খুন-খারাবির
ঘটনাও। সম্প্রতি সংঘটিত হত্যাকা-গুলোর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরকীয়া।
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিজস্ব সমাজ-সংস্কৃতিকে লালন করে এরমধ্য থেকেই
এগিয়ে যেতে হবে। যে কোন নারী বা পুরুষের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হতে পারে।
নিজ স্বামী বা স্ত্রী থাকার পর এ ধরণের ভালোবাসায় না জড়ানোই উত্তম বলে
জানান তারা। এজন্য ভিনদেশী অপসংস্কৃতি অনুসরণ, নৈতিক স্খলন ও মাদকাসক্ততা
থেকে দূরে থাকার আহবান জানিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে কোনভাবেই স্বামী-স্ত্রী
সংসার করতে না চাইলে সামাজিকভাবে চাপ দিয়ে সংসার করানোও উচিত না বলে
মন্তব্য করেন সমাজবিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে বলে মনে
করেন তারা।
গত ২৬শে জুন রাতে কর্মস্থল বসুন্ধরা সিটি থেকে রিকশায় বাসায় ফেরার পথে সার্কুলার রোডে হত্যা করা হয় ওবায়দুলকে। কোয়ালিটি আইসক্রিমের সাব জিরো ব্র্যান্ডের ব্যবস্থাপক ওবায়দুল হকের বাড়ি চট্টামে। তিনি প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ভাগ্নে। এই হত্যাকা-ের নেপথ্যে ছিলো তার স্ত্রীর পরকীয়া। কিলিং মিশনে অংশ গ্রহণকারী মাহমুদুল হাসান মিঠু ও তানভীর আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ওবায়দুল হত্যার নেপথ্যের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্ত ও সিসিটিভির ফুটেজ ধরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবির কাছে স্বীকার করেছে, ওবায়দুলের স্ত্রী তাসমিন খাদিজা সোনিয়ার সঙ্গে প্রেম রয়েছে তাদের মামা সাইফুল্লাহ রুবেলের। তারা দুজনেই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের মধ্যে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওবায়দুলের সঙ্গে বিয়ের পরও রুবেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। সুযোগ পেলেই রুবেল-সোনিয়ার দেখা সাক্ষাত হতো। একসময় দুজনেই ঘর ভেঙে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। এজন্য ওবায়দুলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন এই জুটি। স্বামীকে হত্যার জন্য প্রেমিক রুবেলের হাতে নগদ ৬০ হাজার টাকা তোলে দেন সোনিয়া। এরপরেই ভাগ্নেদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায় রুবেল।
১৯শে জুন কদমতলীর নিজ বাসায় বটি দিয়ে কুপিয়ে স্বামী আবু জাফরকে হত্যা করেন স্ত্রী নূরজাহান। এই হত্যাকা-ের পেছনেও ছিলো পরকীয়া। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে নূরজাহান। হত্যাকা-ের কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন আবু জাফর। ওই সময়ে একই বাড়িতে ভাড়াটে ছিলেন রতন নামক যুবক। একই জেলার বাসিন্দা রতন। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের ইসলামপুরে হওয়ায় রতনের সঙ্গে সহজেই সখ্যতা গড়ে ওঠে নূরজাহানের। দেশে আসার পর বিষয়টি জেনে যান আবু জাফর। এরপর প্রায় প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এমনকি নূরজাহান নিজে স্বামী আবু জাফরের গায়ে হাত তোলেন বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় একসময় আবু জাফরও অন্য নারীর প্রেমে জড়িয়ে যান। ওই সময়ে রায়েরবাগের মিরাজনগরের প্রবাসী আবদুল লতিফের স্ত্রী হালিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। বিষয়টি জানাজানি হলে লতিফের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তিন সন্তানের জননী হালিমার। এ নিয়ে নূরজাহানের সঙ্গে প্রতিদিনই কলহ হতো আবু জাফরের। এসব ঘটনার জের ধরেই নিজ হাতে তাকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আবু জাফরের পরকীয়া এবং ওই প্রেমিকাকে বিয়ের মাধ্যমে সম্পত্তি বিভক্তি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই এই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান। রাজধানীর কদমতলীর মেরাজনগরের বি ব্লকের ১৩৬২ নম্বর বাড়িটি আবু জাফরের।
একইভাবে নিজ স্ত্রীর হাতে খুন না হলেও স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে জীবন দিতে হয়েছে মিরপুরের গিয়াস উদ্দিন মাতব্বররকে। দুই সন্তানের জননী লাভলী আক্তার লীনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিলো একাদশ শ্রেণীর ছাত্র তানভীর আহমেদের। কাজীর কাছে নিজ বিয়ের কথা গোপন রেখে তানভীরকে বিয়েও করে লীনা। গত বছরের ১৯শে অক্টোবর রাতে মিরপুর ১০-এর সি ব্লকে গিয়াসকে হত্যা করে তার স্ত্রী লীনার প্রেমিক ও বন্ধুরা। রাত সাড়ে ১০টার পর গিয়াস বাসায় ঢুকতেই তাকে স্টাম্প দিয়ে আঘাত করে তানভীর। এরপর এলোপাতাড়ি তাকে আঘাত করে তানভীর ও তার দুই বন্ধু। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গিয়াস মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর বিএন কলেজের ছাত্র তানভীর জানিয়েছিলো, লিনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক জানার পর লীনাকে মারধর করতেন গিয়াস। এতে গিয়াসের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে লীনা। তাকে লীনা প্রায়ই বলতো, তাদের ভালবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে গিয়াস। তাকে ডিভোর্স দিলেও সে শান্তিতে থাকতে দেবে না তাদের। এ জন্য গিয়াসকে মেরে ফেলতে হবে। শেষ পর্যন্ত নিজ স্ত্রীর নির্দেশেই হত্যা করা হয় গিয়াস উদ্দিন মাতব্বরকে।
এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের ক্রিমোনলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বলেন, এটি সামাজিক একটা অবক্ষয়। এজন্য প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীর ভালোবাসা। সেইসঙ্গে সচেতনতা, নৈতিকতার চর্চা, মানবিক মূল্যবোধ, পারিবারিক দৃঢ় বন্ধন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমাদের সমাজ একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতির দিকে যাচ্ছে। সমাজ যতো আধুনিক হবে মানুষের মধ্যে ততো দ্বন্দ্ব বাড়বে। আধুনিক বিশ্বের সব ধরণের উপাদান প্রভাব বিস্তার করছে সমাজে। পরকীয়ার ক্ষেত্রে কিছু টিভি সিরিয়াল নৈতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। এজন্য সচেতনতার সঙ্গে অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। যা কিছু ভালো তাই গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি।
গত ২৬শে জুন রাতে কর্মস্থল বসুন্ধরা সিটি থেকে রিকশায় বাসায় ফেরার পথে সার্কুলার রোডে হত্যা করা হয় ওবায়দুলকে। কোয়ালিটি আইসক্রিমের সাব জিরো ব্র্যান্ডের ব্যবস্থাপক ওবায়দুল হকের বাড়ি চট্টামে। তিনি প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ভাগ্নে। এই হত্যাকা-ের নেপথ্যে ছিলো তার স্ত্রীর পরকীয়া। কিলিং মিশনে অংশ গ্রহণকারী মাহমুদুল হাসান মিঠু ও তানভীর আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ওবায়দুল হত্যার নেপথ্যের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্ত ও সিসিটিভির ফুটেজ ধরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবির কাছে স্বীকার করেছে, ওবায়দুলের স্ত্রী তাসমিন খাদিজা সোনিয়ার সঙ্গে প্রেম রয়েছে তাদের মামা সাইফুল্লাহ রুবেলের। তারা দুজনেই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের মধ্যে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওবায়দুলের সঙ্গে বিয়ের পরও রুবেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। সুযোগ পেলেই রুবেল-সোনিয়ার দেখা সাক্ষাত হতো। একসময় দুজনেই ঘর ভেঙে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। এজন্য ওবায়দুলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন এই জুটি। স্বামীকে হত্যার জন্য প্রেমিক রুবেলের হাতে নগদ ৬০ হাজার টাকা তোলে দেন সোনিয়া। এরপরেই ভাগ্নেদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটায় রুবেল।
১৯শে জুন কদমতলীর নিজ বাসায় বটি দিয়ে কুপিয়ে স্বামী আবু জাফরকে হত্যা করেন স্ত্রী নূরজাহান। এই হত্যাকা-ের পেছনেও ছিলো পরকীয়া। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে নূরজাহান। হত্যাকা-ের কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন আবু জাফর। ওই সময়ে একই বাড়িতে ভাড়াটে ছিলেন রতন নামক যুবক। একই জেলার বাসিন্দা রতন। তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের ইসলামপুরে হওয়ায় রতনের সঙ্গে সহজেই সখ্যতা গড়ে ওঠে নূরজাহানের। দেশে আসার পর বিষয়টি জেনে যান আবু জাফর। এরপর প্রায় প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এমনকি নূরজাহান নিজে স্বামী আবু জাফরের গায়ে হাত তোলেন বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় একসময় আবু জাফরও অন্য নারীর প্রেমে জড়িয়ে যান। ওই সময়ে রায়েরবাগের মিরাজনগরের প্রবাসী আবদুল লতিফের স্ত্রী হালিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। বিষয়টি জানাজানি হলে লতিফের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তিন সন্তানের জননী হালিমার। এ নিয়ে নূরজাহানের সঙ্গে প্রতিদিনই কলহ হতো আবু জাফরের। এসব ঘটনার জের ধরেই নিজ হাতে তাকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। আবু জাফরের পরকীয়া এবং ওই প্রেমিকাকে বিয়ের মাধ্যমে সম্পত্তি বিভক্তি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই এই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান। রাজধানীর কদমতলীর মেরাজনগরের বি ব্লকের ১৩৬২ নম্বর বাড়িটি আবু জাফরের।
একইভাবে নিজ স্ত্রীর হাতে খুন না হলেও স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে জীবন দিতে হয়েছে মিরপুরের গিয়াস উদ্দিন মাতব্বররকে। দুই সন্তানের জননী লাভলী আক্তার লীনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিলো একাদশ শ্রেণীর ছাত্র তানভীর আহমেদের। কাজীর কাছে নিজ বিয়ের কথা গোপন রেখে তানভীরকে বিয়েও করে লীনা। গত বছরের ১৯শে অক্টোবর রাতে মিরপুর ১০-এর সি ব্লকে গিয়াসকে হত্যা করে তার স্ত্রী লীনার প্রেমিক ও বন্ধুরা। রাত সাড়ে ১০টার পর গিয়াস বাসায় ঢুকতেই তাকে স্টাম্প দিয়ে আঘাত করে তানভীর। এরপর এলোপাতাড়ি তাকে আঘাত করে তানভীর ও তার দুই বন্ধু। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গিয়াস মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর বিএন কলেজের ছাত্র তানভীর জানিয়েছিলো, লিনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক জানার পর লীনাকে মারধর করতেন গিয়াস। এতে গিয়াসের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে লীনা। তাকে লীনা প্রায়ই বলতো, তাদের ভালবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে গিয়াস। তাকে ডিভোর্স দিলেও সে শান্তিতে থাকতে দেবে না তাদের। এ জন্য গিয়াসকে মেরে ফেলতে হবে। শেষ পর্যন্ত নিজ স্ত্রীর নির্দেশেই হত্যা করা হয় গিয়াস উদ্দিন মাতব্বরকে।
এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের ক্রিমোনলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বলেন, এটি সামাজিক একটা অবক্ষয়। এজন্য প্রয়োজন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীর ভালোবাসা। সেইসঙ্গে সচেতনতা, নৈতিকতার চর্চা, মানবিক মূল্যবোধ, পারিবারিক দৃঢ় বন্ধন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমাদের সমাজ একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতির দিকে যাচ্ছে। সমাজ যতো আধুনিক হবে মানুষের মধ্যে ততো দ্বন্দ্ব বাড়বে। আধুনিক বিশ্বের সব ধরণের উপাদান প্রভাব বিস্তার করছে সমাজে। পরকীয়ার ক্ষেত্রে কিছু টিভি সিরিয়াল নৈতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। এজন্য সচেতনতার সঙ্গে অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। যা কিছু ভালো তাই গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি।
No comments