আইনে ‘যদি’ ‘তবে’ ‘কিন্তু’ শর্ত মানা হবে না
বাল্যবিবাহ
প্রতিরোধ আইনে ‘যদি’, ‘কিন্তু’, ‘তবে’ এ ধরনের কোনো শর্ত জুড়ে দিলে, তা
মানা হবে না। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত
‘বিবাহযোগ্য বয়স এবং শিশু বিবাহ: বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে
আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে শর্ত বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শর্ত বাল্যবিয়ের হার না কমিয়ে বাড়িয়ে দেবে। সরকার যে যুক্তিতে বিয়ের বয়স কমাতে চায়, তা-ও গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকারের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের খসড়া আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের সম্মতিতে এবং আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে ১৬ বছরের কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে বলে শর্ত রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা যদি পালিয়ে যায় বা বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে, তবে বিশেষ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করার কথা চিন্তাভাবনা চলছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের করা আইনের খসড়াটি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাইবাছাই চলছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে বাল্যবিবাহের বয়স এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। দেশের সাতটি বিভাগের ২৪টি জেলার ২৪টি উপজেলায় গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ২৩৭ জন বাল্যবিবাহের শিকার নারী ও তার পরিবারের সদস্য এবং কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনা করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ফলাফল অনুযায়ী, ২৪টি জেলায় বিয়ের গড় বয়স ছিল ১৫ দশমিক ৫৩ বছর। এসব এলাকায় ৬৫ শতাংশেরই পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ১৬ বছর বয়সের আগে। বিয়ের সময় প্রায় ৬৪ শতাংশই ছিল শিক্ষার্থী। ১ হাজার ২৩৭ জনের মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ভালোবেসে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করে। পালিয়ে বা বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার কারণে বিয়ে হয় ১ দশমিক ৫ শতাংশের। তবে ১৬ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রেই পালিয়ে বা বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বনশ্রী মিত্র নিয়োগী এবং মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন বিভাগের প্রধান জুবায়ের আলী খান। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় ২৬ শতাংশ মা-বাবা মেয়েকে কম বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন। দারিদ্র্যের কারণে ১৯ এবং সামাজিক রীতিনীতির কারণে প্রায় ২৩ শতাংশ মা-বাবা মেয়েকে বিয়ে দেন। বিবাহিত মেয়েদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশের পরিবারই ছিল অতিদরিদ্র। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৭৬ দশমিক ২২ শতাংশ মেয়ের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর, এটা বলতে পেরেছে। ছেলেদের ন্যূনতম বিয়ের বয়স ২১ বলতে পেরেছে মাত্র ২৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বিয়ের সময় ৫৫ শতাংশ মেয়ের মতামত নেওয়া হয়নি।
বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, মাঠপর্যায়ে অনেকে ধরে নিয়েছেন, সরকার মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে ফেলেছে। ফলে তাঁরা উল্টো প্রশ্ন করেন, কেন বিয়ের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের কথা বলা হচ্ছে।
আলোচনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘সরকার ১৯২৯ সালের বিদ্যমান আইনের সংশোধন করতে গিয়ে আইনে যে ধরনের শর্ত দিতে চাইছে, এতে আমরা বিস্মিত, দুঃখিত। সমাজ অগ্রসর করার মূল চাকাটি যে নারীরা ঠেলছে, সেই নারীদের কয়েক শ বছর পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে সরকার। আমরা কথাটি খুব পরিষ্কার করে হাজারবার বলছি, আইনে “কোনো”, “কিন্তু”, “তবে” এ ধরনের অব্যয়ের ব্যবহার চলবে না।’
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘সরকার অনেক সময়ই নারী আন্দোলনের কথা শুনেছে। আশা করছি এবারও শুনবে। সরকার যতদিন কথা না শুনবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা বলেন, ‘আইনে শর্ত দিয়ে ১৬ বছর বয়সের কথা উল্লেখ করার কোনো প্রয়োজন নেই। ১৮ বছর বয়সের আগেও মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে, শুধু মানুষের মধ্যে এ ধারণা দেওয়ার জন্যই আইন করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শর্ত বাল্যবিয়ের হার না কমিয়ে বাড়িয়ে দেবে। সরকার যে যুক্তিতে বিয়ের বয়স কমাতে চায়, তা-ও গ্রহণযোগ্য নয়।
সরকারের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের খসড়া আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের সম্মতিতে এবং আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে ১৬ বছরের কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে বলে শর্ত রাখার চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা যদি পালিয়ে যায় বা বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে, তবে বিশেষ পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করার কথা চিন্তাভাবনা চলছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের করা আইনের খসড়াটি বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাইবাছাই চলছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে বাল্যবিবাহের বয়স এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। দেশের সাতটি বিভাগের ২৪টি জেলার ২৪টি উপজেলায় গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ২৩৭ জন বাল্যবিবাহের শিকার নারী ও তার পরিবারের সদস্য এবং কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনা করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ফলাফল অনুযায়ী, ২৪টি জেলায় বিয়ের গড় বয়স ছিল ১৫ দশমিক ৫৩ বছর। এসব এলাকায় ৬৫ শতাংশেরই পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ১৬ বছর বয়সের আগে। বিয়ের সময় প্রায় ৬৪ শতাংশই ছিল শিক্ষার্থী। ১ হাজার ২৩৭ জনের মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ভালোবেসে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করে। পালিয়ে বা বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার কারণে বিয়ে হয় ১ দশমিক ৫ শতাংশের। তবে ১৬ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রেই পালিয়ে বা বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বনশ্রী মিত্র নিয়োগী এবং মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন বিভাগের প্রধান জুবায়ের আলী খান। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় ২৬ শতাংশ মা-বাবা মেয়েকে কম বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হন। দারিদ্র্যের কারণে ১৯ এবং সামাজিক রীতিনীতির কারণে প্রায় ২৩ শতাংশ মা-বাবা মেয়েকে বিয়ে দেন। বিবাহিত মেয়েদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশের পরিবারই ছিল অতিদরিদ্র। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৭৬ দশমিক ২২ শতাংশ মেয়ের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর, এটা বলতে পেরেছে। ছেলেদের ন্যূনতম বিয়ের বয়স ২১ বলতে পেরেছে মাত্র ২৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বিয়ের সময় ৫৫ শতাংশ মেয়ের মতামত নেওয়া হয়নি।
বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, মাঠপর্যায়ে অনেকে ধরে নিয়েছেন, সরকার মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে ফেলেছে। ফলে তাঁরা উল্টো প্রশ্ন করেন, কেন বিয়ের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের কথা বলা হচ্ছে।
আলোচনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘সরকার ১৯২৯ সালের বিদ্যমান আইনের সংশোধন করতে গিয়ে আইনে যে ধরনের শর্ত দিতে চাইছে, এতে আমরা বিস্মিত, দুঃখিত। সমাজ অগ্রসর করার মূল চাকাটি যে নারীরা ঠেলছে, সেই নারীদের কয়েক শ বছর পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে সরকার। আমরা কথাটি খুব পরিষ্কার করে হাজারবার বলছি, আইনে “কোনো”, “কিন্তু”, “তবে” এ ধরনের অব্যয়ের ব্যবহার চলবে না।’
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘সরকার অনেক সময়ই নারী আন্দোলনের কথা শুনেছে। আশা করছি এবারও শুনবে। সরকার যতদিন কথা না শুনবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা বলেন, ‘আইনে শর্ত দিয়ে ১৬ বছর বয়সের কথা উল্লেখ করার কোনো প্রয়োজন নেই। ১৮ বছর বয়সের আগেও মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে, শুধু মানুষের মধ্যে এ ধারণা দেওয়ার জন্যই আইন করা হচ্ছে।’
No comments