হজ মৌসুমে ৪০ বছরে ৩ সহস্রাধিক মুসল্লির মৃত্যু
হজ করতে লাখ লাখ মানুষ সৌদি আরব যান। শত শত বছর ধরে ধর্মীয় এ আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন সারা বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠী। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ বিবেচনা করা হয় এ হজকে। গত ৪০ বছরের ইতিহাসে পবিত্র হজ পালনে এসে দুর্ঘটনা রোগে ভুগে তিন সহস্রাধিক মুসল্লি মারা গেছেন। তবে সুদূর অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুর্ঘটনার হার বেশি। বাড়তি ভিড় সামলাতে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাই এর পেছনে দায়ী কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। শুক্রবারের ঘটনার আগে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনের সময় সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ছিল- মিনায় শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ৩৪০ জনের মৃত্যুর ঘটনা। মিনার জামারাত ব্রিজে হুড়োহুড়িতে আহত হন আরও অন্তত ২৯০ জন।
ওই বছর হজ পালন করতে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি। এ দুর্ঘটনার পরই জামারাত ব্রিজ প্রশস্ত করার জন্য নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। জামারাত ব্রিজে আগেও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। ২০০৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে গিয়ে এই একই স্থানে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ২৫১ জন। আহত হন ২৪৪ জন। ২০০৩ সালে পাথর নিক্ষেপের আনুষ্ঠানিকতায় গিয়ে একইভাবে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১৪ মুসল্লি। ২০০১ সালে একইভাবে মারা যান ৩৫ জন। ১৯৯৮ সালে জামারাত ব্রিজে পদদলিত হয়ে মারা যান অন্তত ১১৮ জন হাজি। ওই ঘটনায় আহত হন প্রায় ১৮০ জন। ১৯৯৪ সালের ২৩ মে পাথর নিক্ষেপের সময় জামারাতে মারা যান ২৭০ জন। ১৯৯০ সালের ২ জুলাই মক্কায় হাজিদের চলাচলের একটি টানেলের ভেতর পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান এক হাজার ৪২৬ মুসল্লি। এসব ঘটনাই ছিল পদদলিত হয়ে নিহতের। তবে অন্য ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটেছে। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান কয়েক ডজন হাজি। ২০০৬ সালে মক্কার কাবা শরিফের অদূরে বহুতল আল-গাজা হোটেল ভেঙে পড়ে নিহত হন ৭৬ জন। আহত হন আরও অন্তত ৬৪ জন। ১৯৯৭ সালের ১৫ এপ্রিল মিনায় তাঁবুতে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান ৩৪০ জন মুসল্লি। ওই সময় আহত হন আরও প্রায় দেড় হাজার। ২০০৬ সালের আগে জামারাহ ব্রিজ : ১৯৮৯ সালের ৯ জুলাই মক্কায় দুটি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন এক হাজি এবং আহত হন আরও ১৬ জন। ১৯৮৭ সালের ৩১ জুলাই মক্কায় সৌদি নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে শিয়াদের সংঘর্ষে ৪০২ জন হাজি নিহত হন। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন ইরানি। ওই ঘটনায় আহত হন ৬৪৯ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে তাঁবুতে আগুন লেগে গেলে নিহত হন ২০০ হাজি। এপি।
No comments