‘বিশ্বের এখন বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবা উচিত’
এ
বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতালে পেট্রলবোমায়
আগুনে পুড়ে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। বছরের মাঝামাঝি এসে সাগরে বিদেশ পাড়ি
দিতে গিয়ে অসংখ্য বাংলাদেশি আটক হলো এবং দেশেও ফেরে অনেকে। এ ছাড়াও
বিচার ‘বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা ‘গুম’ও হয়েছেন। এসব
ঘটনার প্রেক্ষিতে হাফিংটন পোস্টের এক নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘এখন
সবার বাংলাদেশ নিয়ে ভাবা উচিত’। ডোমেনিখ মোসবার্গেন এটি লিখেছেন এ মাসের
শুরুতে। তাঁর মন্তব্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
হরতাল-অবরোধে এভাবেই যানবাহন ভাঙচুর চালানো হয় বাংলাদেশে। ছবি: প্রথম আলো |
শুরুতেই
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ফোনালাপের
কথা বলা হয়েছে। শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ফোন
করেছিলেন। ৩৭ মিনিটে তাঁদের ফোনালাপের বড় অংশজুড়েই ছিল পাল্টাপাল্টি
আক্রমণ, ছিল উত্তেজনা। ফোনালাপের একটি অংশ ছিল এমন-
হাসিনা: আমরা ঝগড়া করতে চাই না।
খালেদা: আপনি তো ঝগড়াই করছেন।
হাসিনা: আপনি একাই একতরফা বলে যাচ্ছেন। আমাকে তো কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছেন না।
খালেদা: আমি একতরফা বলব কেন। আপনি বলছেন আমি শুধু জবাব দিচ্ছি।
হাসিনা: আমি তো আপনার সঙ্গে কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।
দুই নেত্রীর ফোনালাপকে লেখক তাহমিমা আনাম নিউইয়র্ক টাইমসের এক নিবন্ধে ‘প্যারোডির মতো’ বা ‘ব্যাঙ্গরসাত্মকের মতো’ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এক দৃষ্টিতে দেখলে এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির আসল চিত্র যেখানে ‘হাসিনা-খালেদা’ একই বৃত্তে ঘোরপাক খাচ্ছে এবং একে অপরকে সরিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেন। ১৯৯১ সালের পর থেকে একবার শেখ হাসিনা এবং একবার খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দায়িত্ব পালনে দুজনেরই বেশ কিছু সফলতা থাকলেও ‘ভোট কারচুপি’ করে ক্ষমতায় যাওয়া, দুর্নীতি এবং অদক্ষভাবে শাসন চালানোর অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলে থাকার সময় দুজনই দাবি আদায়ে হরতাল-অবরোধসহ সহিংসতার পথ বেছে নেন।
এ ব্যাপারে এ বছরের প্রথমের দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার মন্তব্য করেন, শেখ হাসিনা (৬৭) ও খালেদা জিয়ার (৬৯) ‘স্বৈরাচারী আচরণের কারণেই বাংলাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং সুশীল সমাজও বিভক্ত’।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে হাসিনা ও খালেদার মধ্যেকার দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ জাতীয়তা উল্লেখ করে ডোমেনিখ মোসবার্গেন বলেন, শেখ হাসিনার সমর্থকেরা ধর্ম নিরপেক্ষ এবং খালেদার সমর্থকেরা ইসলামপন্থী।
হাসিনা: আমরা ঝগড়া করতে চাই না।
খালেদা: আপনি তো ঝগড়াই করছেন।
হাসিনা: আপনি একাই একতরফা বলে যাচ্ছেন। আমাকে তো কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছেন না।
খালেদা: আমি একতরফা বলব কেন। আপনি বলছেন আমি শুধু জবাব দিচ্ছি।
হাসিনা: আমি তো আপনার সঙ্গে কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।
দুই নেত্রীর ফোনালাপকে লেখক তাহমিমা আনাম নিউইয়র্ক টাইমসের এক নিবন্ধে ‘প্যারোডির মতো’ বা ‘ব্যাঙ্গরসাত্মকের মতো’ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এক দৃষ্টিতে দেখলে এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির আসল চিত্র যেখানে ‘হাসিনা-খালেদা’ একই বৃত্তে ঘোরপাক খাচ্ছে এবং একে অপরকে সরিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেন। ১৯৯১ সালের পর থেকে একবার শেখ হাসিনা এবং একবার খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দায়িত্ব পালনে দুজনেরই বেশ কিছু সফলতা থাকলেও ‘ভোট কারচুপি’ করে ক্ষমতায় যাওয়া, দুর্নীতি এবং অদক্ষভাবে শাসন চালানোর অভিযোগও আছে তাঁদের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলে থাকার সময় দুজনই দাবি আদায়ে হরতাল-অবরোধসহ সহিংসতার পথ বেছে নেন।
এ ব্যাপারে এ বছরের প্রথমের দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার মন্তব্য করেন, শেখ হাসিনা (৬৭) ও খালেদা জিয়ার (৬৯) ‘স্বৈরাচারী আচরণের কারণেই বাংলাদেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং সুশীল সমাজও বিভক্ত’।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে হাসিনা ও খালেদার মধ্যেকার দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ জাতীয়তা উল্লেখ করে ডোমেনিখ মোসবার্গেন বলেন, শেখ হাসিনার সমর্থকেরা ধর্ম নিরপেক্ষ এবং খালেদার সমর্থকেরা ইসলামপন্থী।
এ বছরের জানুয়ারিতে বিএনপি জোটের ডাকা টানা অবরোধে বগুড়ার এক ব্যবসায়ীর আলুর ট্রাকে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই ব্যবসায়ীর কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ছবি: প্রথম আলো |
খালেদা
জিয়ার বর্জনের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে হাসিনার নেতৃত্বে
আওয়ামী লীগের জয়ী হয়। এ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিএনপি জোটের আন্দোলন
অবরোধে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে জ্বালাও পোড়াও এবং ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি
চলে। দেশটির ইতিহাসে এমন ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি অতীতে আর দেখা যায়নি। খালেদা
জিয়া ওই নির্বাচনকে ‘কলঙ্কজনক প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছেন। এ বছরের প্রথম
দিকে খালেদা জিয়া অবরোধের ডাক দিয়ে বলেন, নতুন নির্বাচনের ঘোষণা না
দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে তিনি সফল হননি। তিন মাসের ওই আন্দোলনে
বোমা হামলা ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ফলে শতাধিক লোক পুড়ে নিহত হন। আহত হন
শত শত। এ সময় বিরোধী দলের ১০ হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা
হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশের অর্থনীতির ২২০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে
এবং এই ক্ষতির পরিমাণ প্রবৃদ্ধির ১ শতাংশ বলে, মত বিশ্বব্যাংকের।
কানাডা ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা জন লাওটার ফেব্রুয়ারিতে হরতাল-অবরোধের সময় ঢাকায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের পক্ষেই মত ছিল জনগণের এবং হরতাল-অবরোধের কারণে দৈনন্দিন জীবনে বিড়ম্বনায় পড়ে সাধারণ মানুষ।’ ঢাকায় বাস পোড়া দেখার কথা অভিজ্ঞতা কথা জানিয়ে লাওটার বলেন, ‘একদিন বিকেলের দিকে আমাদের অফিসের কাছেই জটলা কাটিয়ে গাড়ি নিয়ে পার হয়ে যাচ্ছিলাম, এমন সময় আগুনের শিখা দেখতে পেলাম। লক্ষ্য করলাম অনেকে খুব আগ্রহ নিয়ে তা দেখছে। আমরা দেখলাম একটি বাস জ্বলছে। সেখানকার লোকের কথোপকথন শুনে মনে হলো তাঁদের কাছে এটা নতুন কিছু নয়।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে দুই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) বিরোধের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের হল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘এ জন্য দেশটি চরম মূল্য দিচ্ছে।’ রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে ও রাজনৈতিক পরিবেশে ভেঙে পড়ছে। ইসলামি চরমপন্থীরা আবার দেশটিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ বছরের শুরুতে ‘ইসলামি মৌলবাদে’র বিরুদ্ধে লেখার কারণে তিন ব্লগারকে খুন হয়েছেন।
এ অবস্থার মধ্যেই সাগর পথে বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে ধরা পড়ছে বাংলাদেশের মানুষ। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও ঘটছে। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বড় হচ্ছে। শতকরা ৭০ জন লোক গ্রামে থাকেন এবং এক-তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ কারণে ২০৫০ সালে দেশটির প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা ডুবে যাবে এবং এক কোটি ৮০ লাখ লোক বসতি হারাবে। এর সঙ্গে পোশাক খাতের উন্নতির কারিগর পোশাক শ্রমিকেরা বিশেষ করে নারী কর্মী নিপীড়নের ঘটনাও ঘটছে। দুর্নীতিও বাড়ছে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশটিতে।
বাংলাদেশ থেকে কাজের খোঁজে বিদেশে যাওয়ার হারটাও বেশি। ভাগ্যান্বেষণে প্রতি বছর ৫ লাখ লোক বৈধ পথে বিদেশে যায়। বিদেশে পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশিরা অদক্ষ এবং আধা দক্ষ হিসেবে কাজ করতে যায়। বিদেশে যাওয়া শ্রমিকেরা অধিকাংশই অস্থায়ী ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যায়। বিশ্বব্যাংকের মতে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম দেশ। এ ব্যাপারে ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘নানা কারণে বৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। রাজনৈতিক সহিংসতা, সুশাসনের অভাব, পরিবেশের ভারসাম্য কমে আসা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ কমায় মানুষের জীবনযাপনের সক্ষমতা কমছে।’
কানাডা ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা জন লাওটার ফেব্রুয়ারিতে হরতাল-অবরোধের সময় ঢাকায় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের পক্ষেই মত ছিল জনগণের এবং হরতাল-অবরোধের কারণে দৈনন্দিন জীবনে বিড়ম্বনায় পড়ে সাধারণ মানুষ।’ ঢাকায় বাস পোড়া দেখার কথা অভিজ্ঞতা কথা জানিয়ে লাওটার বলেন, ‘একদিন বিকেলের দিকে আমাদের অফিসের কাছেই জটলা কাটিয়ে গাড়ি নিয়ে পার হয়ে যাচ্ছিলাম, এমন সময় আগুনের শিখা দেখতে পেলাম। লক্ষ্য করলাম অনেকে খুব আগ্রহ নিয়ে তা দেখছে। আমরা দেখলাম একটি বাস জ্বলছে। সেখানকার লোকের কথোপকথন শুনে মনে হলো তাঁদের কাছে এটা নতুন কিছু নয়।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে দুই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) বিরোধের কথা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের হল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘এ জন্য দেশটি চরম মূল্য দিচ্ছে।’ রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে ও রাজনৈতিক পরিবেশে ভেঙে পড়ছে। ইসলামি চরমপন্থীরা আবার দেশটিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ বছরের শুরুতে ‘ইসলামি মৌলবাদে’র বিরুদ্ধে লেখার কারণে তিন ব্লগারকে খুন হয়েছেন।
এ অবস্থার মধ্যেই সাগর পথে বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে ধরা পড়ছে বাংলাদেশের মানুষ। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও ঘটছে। বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বড় হচ্ছে। শতকরা ৭০ জন লোক গ্রামে থাকেন এবং এক-তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ কারণে ২০৫০ সালে দেশটির প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা ডুবে যাবে এবং এক কোটি ৮০ লাখ লোক বসতি হারাবে। এর সঙ্গে পোশাক খাতের উন্নতির কারিগর পোশাক শ্রমিকেরা বিশেষ করে নারী কর্মী নিপীড়নের ঘটনাও ঘটছে। দুর্নীতিও বাড়ছে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশটিতে।
বাংলাদেশ থেকে কাজের খোঁজে বিদেশে যাওয়ার হারটাও বেশি। ভাগ্যান্বেষণে প্রতি বছর ৫ লাখ লোক বৈধ পথে বিদেশে যায়। বিদেশে পাড়ি দেওয়া বাংলাদেশিরা অদক্ষ এবং আধা দক্ষ হিসেবে কাজ করতে যায়। বিদেশে যাওয়া শ্রমিকেরা অধিকাংশই অস্থায়ী ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যায়। বিশ্বব্যাংকের মতে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম দেশ। এ ব্যাপারে ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘নানা কারণে বৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। রাজনৈতিক সহিংসতা, সুশাসনের অভাব, পরিবেশের ভারসাম্য কমে আসা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ কমায় মানুষের জীবনযাপনের সক্ষমতা কমছে।’
সাগর পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়েই এরা আটক হন। ছবি: প্রথম আলো |
বাংলাদেশের
জনশক্তি, কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণ বুর্যো (বিএমইটি) বলছে, বর্তমানে ৮০
লাখ প্রবাসী বিদেশি কর্মরত আছে। তবে সরকারের দেখানো এ সংখ্যা আসল সংখ্যার
চেয়ে অনেক কম। প্রবাসে কত লোক অবৈধভাবে আছে এর সঠিক কোনো তথ্য নেই। ধারণা
করা হয় ১ থেকে দেড় কোটি লোক শুধু ভারতেই অবৈধভাবে আছেন।
যথোপযুক্ত, সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা না পেয়ে অনেকে প্রবাসে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন হাফিংটন পোস্টকে বলেন, ‘অনুন্নয়ন, দারিদ্র্য ও উন্নত জীবনের হাতছানির কারণে অবৈধভাবে হলেও অনেকে বাইরে যাচ্ছে।’
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বাংলাদেশকে এড়িয়ে চলে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের লোকেরা অবৈধভাবে সাগর পথে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে খুব একটা তোড়জোড় ছিল না। ছোট ছোট নৌকায় খাবার ও পানি ছাড়া সাগরে ভাসতে থাকা দুই দেশের লোকদের কোনো কোনো দেশ আশ্রয় না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে ওই দেশগুলো। এই ঘটনাকে ‘পিং পং’ (ছোট টেবিলে দু পাশ থেকে বল পেটানো) গেমের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
অনাহারে দীর্ঘদিন ধরে সাগরে অমানবিক কষ্টে কাটানো নারী-পুরুষদের খবর বিশ্ব মিডিয়ার প্রচারের পরই আলোচনায় আসে বাংলাদেশ। সাগরে ভাসতে ভাসতে নৌকা ডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি সাইদুল ইসলামের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকায়। সেখানে সাইদুল বলেন, ‘একটি নৌকায় ৭০০ জন ছিলাম, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। খাবার চাওয়া হলে নৌকার ক্যাপটেন আঘাত করেছে।’ ওই নৌকার বেচেঁ যাওয়া অপর যাত্রী আমিন বলেন, খাবার চাওয়ায় একজনকে গুলি করা হয়েছে।
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার হিসেবে বঙ্গোপসাগর দিয়ে বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে প্রায় ২৫ হাজার লোক পাচার হয়। গত বছরের এ সময়ের চেয়ে এ সংখ্যা দ্বিগুণ। মানব পাচার নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার কর্মী চেরিস লেওয়া-ই প্রথম বাংলাদেশের মানব পাচারের খবর বিশ্বের দৃষ্টিতে আনেন। তিনি বলেন, এ সময় পাচার হওয়া অধিকাংশই বাংলাদেশের। অভিবাসী নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত অন্তত এক হাজার লোক মারা গেছে। একসঙ্গে এত লোকের সাগরে পাড়ি দেওয়া ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। মানব পাচারকারীরা এ কাজ সহজেই করতে পারছে, কারণ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু লোক এ দুষ্কর্মে সহযোগিতা করছেন এবং সরকারি কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিও এ কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রনোদনামুলক নানা কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।’ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বিরাজ করলেই কেবল তা সম্ভব বলে ইঙ্গিত তাঁর।
দুই নারী (হাসিনা-খালেদা) এবং তাঁদের দলের মধ্যে সমস্যা সেই একই, অর্থাৎ সাধারণ ‘শত্রুতা’ বিদ্যমান-এ মন্তব্য বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করা লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক ডেভিড লুইজের। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল দুটো গণতান্ত্রিক না হলে এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে অতীতে এই দুই দল গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে একসঙ্গে কাজ করেছে। ২০০৮ সালেও এই দুই নেত্রী একত্রে গণতন্ত্রের জন্য সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে চাপে রেখেছিল। এখন মনে হচ্ছে দুই নেত্রীর আবার গণতন্ত্রের জন্য এক জায়গায় আসা দরকার।
যথোপযুক্ত, সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা না পেয়ে অনেকে প্রবাসে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন হাফিংটন পোস্টকে বলেন, ‘অনুন্নয়ন, দারিদ্র্য ও উন্নত জীবনের হাতছানির কারণে অবৈধভাবে হলেও অনেকে বাইরে যাচ্ছে।’
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বাংলাদেশকে এড়িয়ে চলে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের লোকেরা অবৈধভাবে সাগর পথে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে খুব একটা তোড়জোড় ছিল না। ছোট ছোট নৌকায় খাবার ও পানি ছাড়া সাগরে ভাসতে থাকা দুই দেশের লোকদের কোনো কোনো দেশ আশ্রয় না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে ওই দেশগুলো। এই ঘটনাকে ‘পিং পং’ (ছোট টেবিলে দু পাশ থেকে বল পেটানো) গেমের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
অনাহারে দীর্ঘদিন ধরে সাগরে অমানবিক কষ্টে কাটানো নারী-পুরুষদের খবর বিশ্ব মিডিয়ার প্রচারের পরই আলোচনায় আসে বাংলাদেশ। সাগরে ভাসতে ভাসতে নৌকা ডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি সাইদুল ইসলামের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকায়। সেখানে সাইদুল বলেন, ‘একটি নৌকায় ৭০০ জন ছিলাম, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। খাবার চাওয়া হলে নৌকার ক্যাপটেন আঘাত করেছে।’ ওই নৌকার বেচেঁ যাওয়া অপর যাত্রী আমিন বলেন, খাবার চাওয়ায় একজনকে গুলি করা হয়েছে।
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার হিসেবে বঙ্গোপসাগর দিয়ে বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে প্রায় ২৫ হাজার লোক পাচার হয়। গত বছরের এ সময়ের চেয়ে এ সংখ্যা দ্বিগুণ। মানব পাচার নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার কর্মী চেরিস লেওয়া-ই প্রথম বাংলাদেশের মানব পাচারের খবর বিশ্বের দৃষ্টিতে আনেন। তিনি বলেন, এ সময় পাচার হওয়া অধিকাংশই বাংলাদেশের। অভিবাসী নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত অন্তত এক হাজার লোক মারা গেছে। একসঙ্গে এত লোকের সাগরে পাড়ি দেওয়া ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। মানব পাচারকারীরা এ কাজ সহজেই করতে পারছে, কারণ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু লোক এ দুষ্কর্মে সহযোগিতা করছেন এবং সরকারি কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিও এ কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ভূমিত্র চাকমা বলেন, ‘অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রনোদনামুলক নানা কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।’ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বিরাজ করলেই কেবল তা সম্ভব বলে ইঙ্গিত তাঁর।
দুই নারী (হাসিনা-খালেদা) এবং তাঁদের দলের মধ্যে সমস্যা সেই একই, অর্থাৎ সাধারণ ‘শত্রুতা’ বিদ্যমান-এ মন্তব্য বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করা লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক ডেভিড লুইজের। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল দুটো গণতান্ত্রিক না হলে এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে অতীতে এই দুই দল গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে একসঙ্গে কাজ করেছে। ২০০৮ সালেও এই দুই নেত্রী একত্রে গণতন্ত্রের জন্য সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে চাপে রেখেছিল। এখন মনে হচ্ছে দুই নেত্রীর আবার গণতন্ত্রের জন্য এক জায়গায় আসা দরকার।
No comments