ক্যানসারের ‘জলোচ্ছ্বাসের’ মুখোমুখি বিশ্ব: জাতিসংঘ
বিশ্বজুড়ে ক্যানসারে আক্রান্তের হার ২০৩০ সালের মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে৷ গত সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের বৈশ্বিক বিশ্লেষণমূলক এক প্রতিবেদনে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, পৃথিবী এখন ক্যানসারের ‘জলোচ্ছ্বাসের’ মুখোমুখি৷ বিশ্ব ক্যানসার দিবসের প্রাক্কালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থার (আইএআরসি) ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে (২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী) প্রতিবছর এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছে৷ ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দুই কোটি ১৬ লাখে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে৷ আর ক্যানসারে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিবছর ৮২ লাখ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এক কোটি ৩০ লাখে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে৷ জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপনের অভ্যাসকে ক্যানসারের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচতে ধূমপান, স্থূলতা ও পানাসক্তি নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্যানসারের বিস্তারের হার আশঙ্কাজনক বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়৷ আইএআরসির পরিচালক ক্রিস ওয়াইল্ড বলেন, ক্যানসার চিকিৎসার খরচ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে৷
এমনকি উচ্চ আয়ের দেশগুলোতেও এই রোগের চিকিৎসা ব্যয় সীমাহীন৷ ক্যানসার প্রতিরোধের ব্যাপারটি বেশ জটিল এবং কখনো কখনো বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে৷ ডব্লিউএইচওর চলতি বছরের বিশ্ব ক্যানসার প্রতিবদনে বলা হয়, প্রতিরোধযোগ্য ক্যানসারের মূল কারণের মধ্যে রয়েছে ধূমপান, সংক্রমণ, অ্যালকোহল, স্থূলতা ও কর্মবিমুখতা, তেজস্ক্রিয়তা (সূর্য এবং চিকিৎসার্থে স্ক্যান উভয় উৎস থেকে), বায়ুদূষণ ও অন্যান্য পরিবেশগত কারণ৷ নারীদের দেরিতে সন্তান নেওয়া, অল্প সন্তানধারণ ও শিশুদের বুকের দুধ না দেওয়া তাঁদের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সাধারণ কারণ৷ আর গলায় ক্যানসারের হার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আফ্রিকা অঞ্চলে৷ তা ছাড়া, ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশই পুরুষ এবং এই রোগে মৃত্যু হওয়া ৫৭ শতাংশই পুরুষ৷ ২০১২ সালে নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে চীনে৷ প্রতিবেদনটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বার্নার্ড স্টুয়ার্ট বলেন, আগামী দিনগুলোতে বিশ্বজুড়ে ক্যানসারের ‘জলোচ্ছ্বাস’ মোকাবিলার ক্ষেত্রে এই রোগ প্রতিরোধের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে৷ এএফপি ও বিবিসি৷
No comments